সীমান্তের দুই পারে – মো. রেজাউল করিম

Sheemanter Dui Paree by Md. Rezaul Karim

Author: মো. রেজাউল করিম
Cover By: আইয়ুব আল আমিন
ISBN: ৯৭৮-৯৮৪-৯৯১৫৫-১-৫
Publish Date: সেপ্টেম্বর ২০২৪

$ 5.12

25% Off
In Stock
Highlights:

১৯৪৭ সালে ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয় ভারতকে দ্বিখণ্ডিত করার মধ্য দিয়ে। অনাকাঙ্ক্ষিত হলেও সত্য যে ব্রিটিশরাজ ভারতকে হিন্দু সংখ্যা-প্রধান ও মুসলমান সংখ্যা-প্রধান হিসেবে দুটি দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে দিয়ে যায়। এ-সময় বাংলার কিছু নেতা বাংলাকেও ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করতে সচেষ্ট হয়। ১৯০৫ সালে যে সব দল ও নেতা ব্রিটিশ কর্তৃক বাংলা বিভাগের বিরোধিতা করেন, তারাই ভারতের স্বাধীনতার প্রাক্কালে বাংলা বিভাগে সচেষ্ট হয়। কেননা তাঁদের বিশ্লেষণ ছিল এমন যে, বাংলা প্রদেশে হিন্দু জনগোষ্ঠী শিক্ষাসহ সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকলেও সংখ্যাধিক্যের জন্য মুসলমানরাই বাংলাকে শাসন করবে। যে-কারণে তাদের নেতৃবৃন্দ বাংলার একাংশ, মূলত পশ্চিমবঙ্গকে হিন্দু ধর্ম-প্রধান ভারতের অঙ্গীভূত করতে চায়। ১৯৪৬ সাল থেকেই শুরু হয় উত্তেজনা।
১৯৪৬ সালে কলকাতায় হয় মহাদাঙ্গা, যা ইতিহাসে ‘দ্য গ্রেট কিলিং’ নামে অভিহিত হয়েছে। কলকাতা দাঙ্গাই বাংলাভাগের মাইলফলক হয়ে দাঁড়ায়। হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষই মনে করতে থাকে ভাংলা ভাগেই রয়েছে সমাধান।
ব্রিটিশরাজও রাজি হয়ে যায়। পশ্চিমবঙ্গ ভারতে এবং পূর্ব-বাংলা হয় পাকিস্তানের প্রদেশ। উভয় বাংলা থেকেই মানুষের দেশান্তর চলতে থাকে; যা ’৪৬ সালে শুরু হয়ে ষাটের দশক পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। একটি প্রদেশ যখন ভাগ হয় এবং দুই অংশ দুই দেশের অংশ হয়ে যায়, মানুষ তখন উভয় প্রদেশের মানুষ এক অংশ ত্যাগ করে অপর অংশে গমণ করে; তখন তাদের পরিচয় হয় ‘শরণার্থী’। এক দেশের মানুষ অন্য দেশে শরণার্থী হিসেবে বসবাস জন্য আবাসন, কর্মসংস্থান, লেখাপড়া, মোট কথা জীবনের সর্বক্ষেত্রে নেমে আসে চূড়ান্ত অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা।
বাংলা ভাগ নিয়ে ‘৪৬ এর ১৫ই আগস্ট থেকে ’৪৭ এর পুরো আগস্ট জুড়ে ঘটতে থাকে একটার পর একটা ঘটনা। হিন্দু-মুসলমান প্রায় সমান হওয়ার কারণে সেখানে গণভোট হলো। গণভোটে সিলেটবাসী পাকিস্তানে যোগদানের ইচ্ছা পোষণ করলেও মুসলিমপ্রধান করিমগঞ্জ মহকুমায় ১৪ই আগস্ট থেকে পাকিস্তানী পতাকা উড়লেও ৭দিন পরে মহকুমাটি কেন, কিভাবে ভারতের অন্তভর্ভূক্ত হলো? মুসলিমপ্রধান মুর্শিদাবাদ ও মালদা কেন, কিভাবে ভারতের অন্তর্ভূক্ত হলো?
উপন্যাসের প্রধান চরিত্র আবুল ফয়েজ, যার বাড়ি বহরমপুর তথা মুর্শিদাবাদ। ১৯৪৬ সালের আগস্টে সে পড়াশোনা করত কলকাতা মেডিকেলের প্রথম বর্ষে। তরুন ফয়েজ দাঙ্গার সম্ভাবনা আঁচ করতে পারেনি। দাঙ্গা হতে যাচ্ছে সে বুঝতে পারে ১৫ই আগস্ট যখন কলকাতা শহরে মানুষের স্বাভাবিক চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সে কোনোক্রমে আশ্রয় নেয় মুসলিম ছাত্রাবাস- বেকার হোস্টেলে। দাঙ্গা থামলে বহরমপুরে গিয়ে জানতে পারে জলঙ্গিতে তাদের আদি পৈত্রিক নিবাস পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, তার বাবার জমি দখল হয়ে গিয়েছে। বহরমপুরেও তার জীবনাশংকা দেখা দিলে রাজশাহীতে চাচার বাসায় চলে আসে। তিন মাস পরে কলকাতায় ফিরে জানতে পারে দীর্ঘদিন অনুপস্থিতির কারণে তাকে ক্লাস করার সুযোগ দেয়া হবে না। বহরমপুরেও বসবাস কঠিন হয়ে উঠলে রাজশাহীতে গিয়ে দুই বছর মেয়াদী গ্রাজুয়েশানে ভর্তি হয়। লেখাপড়া শেষে চাকরি নেয় কুষ্টিয়াতে। দুই বোনকে পর্যায়ক্রমে এদেশ নিয়ে আসে। তার মা আসতে চাইলেও সরকারি চাকুরে বাবা আসতে চায় না; উপরন্তু তার বাবা হারানো জমি উদ্ধারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এরই মধ্যে পদ্মার পানিপ্রবাহের মতো জীবনপ্রবাহও বইতে থাকে- ঘটতে একের পর এক ঘটনা। বাংলা বিভাগের সাথে সাথে ফয়েজের পরিবারও দ্বিখণ্ডিত হয়ে পড়ে। ইতিহাসের প্রেক্ষিতে উপন্যাস লেখার কষ্টকর দিক হচ্ছে উপন্যাসের চরিত্রসমূহকে ইতিহাসের সাথে সম্পৃক্তকরণ। ‘সীমান্তের দুই পারে’ সেই কাজটিই সম্পন্ন হয়েছে দক্ষতার সাথে। রাজনৈতিক ঘটনাক্রম ফয়েজের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনকে কিভাবে পর্যুদস্ত করে তুলল তার নির্মম অথচ নির্মোহ বয়ান লেখক উপন্যাসে তুলে ধরেছেন। পরিশেষে ফয়েজের পরিবার মর্মান্তিক পরিস্থিতির শিকার হয়।

Description

Description

মো. রেজাউল করিম ১৯৬৪ সালে কুষ্টিয়া শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮৮ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান-এ প্রথম শ্রেণি নিয়ে স্নাতকোত্তর পর্ব শেষ করেন। ১৯৮৯-এ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কর্মজীবন শুরু করেন। কিশোর বয়সে কবিতা লেখা দিয়ে লেখালেখিতে তাঁর হাতেখড়ি। কর্মজীবনে তিনি উন্নয়ন বিষয়ক লেখালেখি করতেন। তাঁর উন্নয়ন বিষয়ক বহুসংখ্যক লেখা জাতীয় দৈনিক ও সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। এ সময়ে তাঁর বেশ কয়েকটি উন্নয়ন বিষয়ক বইও প্রকাশিত হয়। পেশাগত জীবনে ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তন’ নিয়ে তিনি কাজ করেছেন। তাঁর লেখা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক গ্রন্থ, প্রশিক্ষণ ম্যানুয়েল ও নির্দেশিকা দেশে ও বিদেশে প্রকাশিত হয়েছে।

২০১৩ সালের শেষার্ধে নিয়মিত চাকুরি থেকে তিনি অবসর নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি ‘দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরামর্শক’ হিসেবে কাজ করছেন।

২০১৩ থেকে ’২৪ এ সময়কালে তাঁর ১৮টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর লেখালেখির ক্ষেত্র বহুমাত্রিক। তাঁর প্রকাশিত উপন্যাসসমূহ, ‘বিষণ্নতার অপচ্ছায়া’, ‘আয়নাল হক উপাখ্যান’, ‘অনাবাসী’ ও ‘একাত্তরের সাবিহা’। ‘সীমান্তের দুই পারে’ তাঁর পঞ্চম উপন্যাস। ছোটগল্পের বই দু’টি: ‘নতমুখের কোলাহল’ ও ‘বিবর্ণ বসন্ত’

তিনি ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে প্রায়শই লেখেন। তাঁর লেখা ‘ইতিহাস ও স্থাপত্য ঐতিহ্যের নগরী ঢাকা’ বইটি বাংলাদেশ ও কলকাতায় সমাদৃত হয়েছে। ‘কুষ্টিয়ার প্রত্ননিদর্শন’ কুষ্টিয়া জেলার সমৃদ্ধ স্থাপত্য-কর্মের সমৃদ্ধ এক গ্রন্থ। শীঘ্রই প্রকাশিত হবে তাঁর লেখা ‘কুষ্টিয়া জেলার ইতিহাস’।

শিশু ও কিশোরদের জন্যও তিনি লেখেন। তাঁর লেখা দুটি শিশুতোষ ও দুটি কিশোর-গল্পগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে, এগুলো হচ্ছে যথাক্রমে ‘হাইলান দ্বীপের রাজকন্যা’, ‘খোকা-খুকুর গপ্পো’, ‘ভূতের শাস্তি’ ও ‘শামিমের ৭১’। কর্মোপলক্ষে তিনি বেশ কিছু দেশ ভ্রমণ করেছেন। নেপালে ৬ বার ভ্রমণের ওপরে ভিত্তি করে তাঁর লেখা ভ্রমণভিত্তিক ছোটোগল্পের সমাহার ‘হিমালয়ের দেশে’ পাঠকপ্রিয় একটি গ্রন্থ। ৪টি দেশের আরও ৮টি ভ্রমণভিত্তিক ছোটোগল্প নিয়ে ‘আদি’ থেকে প্রকাশিত হয়েছে ‘দিগন্তে আঁকি পদচিহ্ন’।

Additional information

Additional information

Weight0.410 kg
Published Year

Reviews (0)
0 ★
0 Ratings
5 ★
0
4 ★
0
3 ★
0
2 ★
0
1 ★
0

There are no reviews yet.

Be the first to review “সীমান্তের দুই পারে – মো. রেজাউল করিম”

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll To Top
Close
Close
Shop
Sale
0 Cart
Close

My Cart

Shopping cart is empty!

Continue Shopping