Additional information
Weight | 0.210 kg |
---|---|
Published Year |
$ 0.99 $ 1.65
লেখকের কথা-
পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টের ঐতিহাসিক মূল্য অনেক। এর দ্বারা একটি সময়ে সংঘটিত নানান ঘটনার বিশ্লেষণ করা যায়। তাই, মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক ও বহুমুখী দিকগুলো অনুধাবন ও বিশ্লেষণ করতে সেই সময়ে প্রকাশিত পত্রিকার রিপোর্টগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম।
২০১৬’র নভেম্বরে দৈনিক ইত্তেফাকের সাংবাদিক আশফাক ভাই একদিন বললেন, মুক্তিযুদ্ধের শেষ ১৭ দিনে (ডিসেম্বর ০১ – ডিসেম্বর ১৭) আন্তর্জাতিক পত্রিকায় প্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক রিপোর্টগুলোর অনুবাদ নিয়ে একটি ধারাবাহিক সিরিজ করে দেয়ার জন্য। শুনেই আমি রাজি হয়ে যাই। দৈনিক ইত্তেফাকে ২০১৬’এর ০১ ডিসেম্বর হতে ১৫ ডিসেম্বর (১৪ ডিসেম্বর বাদে) পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে ১৪টি রিপোর্টের অনুবাদ প্রকাশ হয়েছিল।
এই বইতে সেই ১৪টি রিপোর্টের অনুবাদ সহ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মোট ২০টি রিপোর্টের অনুবাদ রয়েছে। ডিসেম্বর ০১-১৭ এর ১৮টি রিপোর্ট ও মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সময় মার্চের ০২ টি রিপোর্টের অনুবাদ সংযুক্ত হলো।
অনুবাদগুলো ভাবানুবাদ এবং পত্রিকার রিপোর্টগুলো মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ ট্রাস্টের সংগ্রহশালা হতে সংগ্রহীত।
এই অনুবাদ রিপোর্টগুলো বই আকারে প্রকাশের জন্য উৎসাহ দিয়েছেন সহযোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ ট্রাস্টের সভাপতি শান্তা আনোয়ার।
Weight | 0.210 kg |
---|---|
Published Year |
প্রত্যেক মানুষের জীবনে স্মৃতি থাকে। স্মৃতি মানেই ঘটনা। অমøমধুর, বেদনাবিধুর যতো ঘটনা ঘটে মানুষের জীবনে সে-সবই স্মৃতি।
স্মৃতি- স্মৃতিকাতর করে অর্থাৎ নস্টালজিক করে তোলে মানুষকে। স্মৃতির সঙ্গে সম্পর্ক থাকে মানুষের। তারা নানা মুখাবয়বের, নানা পেশার এবং নানা চরিত্রের। আবার তাদেরকে ঘিরে আরও অনেক মানুষের সম্পর্ক জড়িত থাকে। আর এই নিয়েই মানবজীবন।
আমার জীবননৌকোও অগণন স্মৃতিসম্ভারে ভরপুর, সজ্জিত। বিশেষ করে, আমার শৈশব থেকে যৌবনের উত্থানকালের ২৪-২৫টি বছরের অসংখ্য স্মৃতি আছে, যেগুলো নিয়েই এই আত্মজৈবনিক উপন্যাস “অতলান্ত পিতৃস্মৃতি” গ্রন্থটি। আমার এই সময়টাকে আমি যাঁর চোখ দিয়ে ফিরে দেখতে চেয়েছি তিনি আমার জন্মদাতা পরম শ্রদ্ধেয় পিতা। যা কিছু ঘটেছে, যা আজকে স্মৃতি- সবকিছুরই সাক্ষী আমার বাবা। আর সেখানেই পিতা-পুত্রের সম্পর্কটা সৃষ্টি হয়েছে। কী সেই সম্পর্ক? সেই সম্পর্ক যা সহজে লেখা যায় না। না পড়লে তা জানাও যাবে না।
পড়ার পর হয়তো অনেকেই মিলিয়ে দেখবেন তাঁদের জীবনের সঙ্গে, কেউ কেউ বিষণœও হতে পারেন। কেউ কেউ পড়ে বিস্মিত হবেন! আবার কেউবা ক্ষোভ প্রকাশ করবেন, ক্ষুব্ধ হবেন। কিন্তু যা সত্য, তাই তুলে ধরতে গিয়ে আদৌ কার্পণ্য করিনি। কাউকে ছোটও করিনি, কাউকে বড়ও করিনি। মানুষ হিসেবে এখানেই আমার সীমাবদ্ধতা, পরিপূর্ণতা এবং তৃপ্তি বলে মনে করি।
অতলান্ত পিতৃস্মৃতি
১৯০৬ সাল থেকে রচিত মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণাদায়ী ক্ষুরধার গানগুলো নিয়ে কাজ করার তীব্র অনুভবে তাড়িত হই। গান নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখা না-করার অভাব থেকে এ গবেষণার জন্ম। সুযোগ আসে ২০০৯ সালে। তা অবশ্য কিছু দূর এগোনোর পর শেষও হয়ে যায়। ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে আবার কাজটি শুরু হয় সরকারি অর্থায়নে। তখন নতুন করে সাজাই ফেলোশিপ গবেষণার সূচিপত্র।
আগে চেয়েছিলাম সময়ক্রমে গবেষণা কাজটা করতে; পরে ‘মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রেরণা-সৃষ্টিতে দেশাত্মবোধক গানের ভূমিকা (১৯৪৭-৭১)’ গবেষণার অধ্যায় বিভাজন করি—
ভূমিকা, দেশাত্মবোধক গানের পটভূমি, ১৯৪৭-৫২ সনের ভাষা আন্দোলন পর্বের গান, ১৯৬৯-৭০ সনের গণ-অভ্যুত্থান পর্বের গান এবং ১৯৭১ সনে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ পর্বের গান।
তবে শেষের পর্বটিতে তিনটি সেমি-পর্ব যুক্ত হয়—প্রেরণামূলক বঙ্গবন্ধুর গান, সংগ্রামে-সংগীতে নারীর অবদান এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান।
গ্রন্থটিতে ভাষা সৈনিক আবদুল মতিন এবং নজরুল স্বরলিপিকার সুধীন দাস এবং বিশিষ্ট গণ সংগীতশিল্পী শুভেন্দু মাইতি (যিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অর্থ সংগ্রাহক ছিলেন)—তিন বিশিষ্ট জনের সাক্ষাৎকার সংযোজিত হয়েছে। প্রায় ৯০০টি দেশপ্রেরণামূলক গানের তালিকা দেয়া হয়েছে।
গবেষণার দীর্ঘ পথে অনেক বাঁধার সম্মুখীন হই। তবে ধৈর্য ধারণ করে সবটা সহ্য করেছি; গবেষণা কর্মের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে। পরম করুণাময়ের অপার কৃপায় কাজটি শেষ করতে পেরেছি। তিনি সর্বোতভাবে সাহায্য করেছেন; সে প্রমাণ প্রতি মুহূর্তেই পেয়েছি। বাকিটা বিবেচনার ভার সম্মানিত পাঠকদের।
ফেলোশিপ গবেষণাটির প্রকল্প পরিচালক হিসেবে সার্বিক দায়িত্বে ছিলাম আমি।
যাদের আন্তরিকতা, সহযোগিতা পেয়েছি, তারা হলেন—
শ্রী গোবিন্দলাল দাস, শ্রী করুণাময় অধিকারী, জনাব ড. মূহ: আব্দুর রহীম খান, লিপিকা ভদ্র, সঞ্জয় কুমার বণিক, মল্লিকা দাস, ড. সাইম রানা, ড. সেলুবাসিত, ড. মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন (গিয়াস শামীম), ড. রঘুনাথ ভট্টাচার্য, আবদুল মতিন, সুধীন দাস, শুভেন্দু মাইতি, মোবারক হোসেন খান, সেলিম রেজা প্রমুখ সুহৃদগণ। সবাইকে কৃতজ্ঞ-চিত্তে স¥রণ করছি।
সময়ে-অসময়ে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় যাদের, তারা হলেন আমার পূজনীয় শিক্ষক—ড. সাঈদ-উর রহমান এবং অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক।
গবেষণা কাজটির মূল্যায়ন করেছেন আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক। তার আশীর্বাদকে ভক্তি জানাই।
‘মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রাম’-এ প্রেরণাদায়ী গানগুলোর যাদুমন্ত্রে যুদ্ধ জয়ের নেশায় বীর বাঙালি দুর্বার গতিতে ছিনিয়ে এনেছে স্বাধীনতা।
সেই গানগুলোর পটভূমি এবং গানগুলো সম্পর্কে সকলে জানতে পারবেন যার সহযোগিতা, সহমর্মিতায় তিনি—অনুপ্রাণন প্রকাশনের সত্ত্বাধিকারী আবু এম ইউসুফ ভাই। এই ফেলোশিপ গবেষণা ও সমীক্ষা ধর্মীগ্রন্থটি অনুমোদন ও প্রকাশের উদ্যোগ নেবার জন্য তার প্রতি অপরিসীম আন্তরিকতা প্রকাশ করছি। ২০২০ সালের বইমেলার বই-প্রকাশনার সীমাহীন ব্যস্ত সময়ের মধ্যেও গ্রন্থটির নামকরণ করে তিনি কৃতজ্ঞাপাশেবদ্ধ করেছেন।
ড. শিল্পী ভদ্র
ঢাকা।
মুক্তি-সংগ্রামের গান
জন্ম ২৩ নভেম্বর, গোপালগঞ্জ জেলায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতকোত্তর শেষে বর্তমানে একটি বেসরকারি কলেজের অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত। শৈশব থেকেই লেখলেখিতে আগ্রহী। প্রথম প্রকাশিত বই ‘চাঁদ চোয়ানো জোৎস্নায় ফিরে এসো নদীবতী মেয়ে’।
তোমার জন্য মেয়ে
আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রচিত সাহিত্যকর্ম খুবই অপ্রতুল। অথচ আমরা আমাদেরকে বীরের জাতি বলে শ্লাঘা বোধ করতে কার্পণ্য করি না। কিন্তু হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে বিশাল পটভূমিতে আমাদের স্বাধিকারের লড়াই আমাদের সাহিত্যকর্মে বিস্ময়কর রকমে অনুপস্থিত।
বাংলাদেশের বিজয় অর্জনের পঞ্চাশ বছর পরে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিশাল পটভূমিতে রচিত হল, ”চন্দনা উড়ে গেছে” উপন্যাস। কালের ব্যবধান থাকা সত্বেও এ কাহিনীর বিস্ময়কর ঘটনাপ্রবাহ, গেরিলা যুদ্ধের বুদ্ধিদীপ্ত সাহসিকতা, সফলতা, তাদের বীরত্ব ও বিশাল ত্যাগের বলিষ্ঠ চিত্রায়ন পাঠককে এক মুগ্ধতার আবেশে মোহাবিষ্ট করে শেষ পাতা পর্যন্ত আঠার মত জুড়ে রাখবে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বড় অংশটি ছিল গণযোদ্ধার। এরা সংখ্যার দিক থেকে নিয়মিত বাহিনীর চেয়ে অনেক বড় ছিল। এই গণযোদ্ধারা কয়েক সপ্তাহের ট্রেনিং নিয়ে বাংলার গ্রাম-গঞ্জে, হাটে-বাজারে, শহরে-বন্দরে ছড়িয়ে পড়ে গেরিলা যুদ্ধের কৌশল অবলম্বন করে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদরকে কোণঠাসা করে রাখে। মুক্তিবাহিনীর এ সব গণযোদ্ধা গেরিলাদের নিয়ে খুব একটা সাহিত্যকর্ম রচিত হয়নি। তাই আমাদের মহান গেরিলা যুদ্ধের অনেক কাহিনী এখনো অজানা। এ উপন্যাসের ঘটনা প্রবাহ এমন এক স্বকীয় বৈশিষ্ট্য ও অপার দক্ষতায় বিন্যাস করা হয়েছে, যা পাঠককে কব্জা করে রাখে।
এ উপন্যাসের বিশাল পটভূমিতে রয়েছে, শহর-বন্দর, গ্রাম-গঞ্জ থেকে প্রত্যন্ত হাট-বাজার, পাহাড়ী নৃ-গোষ্ঠীর জনপদ, তাদের জুমিয়া জীবন ও মাতৃভুমিকে হানাদারদের দখল মুক্ত করার বিস্ময়কর সম্প্রীতি নিয়ে গণযোদ্ধাদের প্রতিরোধ ও প্রতি-আক্রমণ, এক তেজোদীপ্ত বীরত্ব গাথার উপাখ্যান। এবং যুদ্ধ শেষে মানবিক উষ্ণতায় বীর বন্দনা।
এটি শুধু বলিষ্ঠ দক্ষতায় কারুকার্যময় এক কাহিনীই নয়, এটি সত্তর দশকের শুরুর দিকের এক এনালগ সমাজের বিশ্বাসযোগ্য সামাজিক দলিল, যার আজকের ডিজিটাল যুগে মহামূল্যবান গুরুত্ব রয়েছে। উপন্যাসটির পরতে পরতে আছে সত্তর দশকের আর্থসামাজিক, মানবিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার বর্ণনা, আছে বাংলাদেশের তরুণ-যুবাদের প্রতিরোধ যুদ্ধের কাহিনী, কিভাবে তারা খুবই স্বল্প প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রায় খালি হাতে গেরিলা পদ্ধতিতে পাকিস্তানি হানাদার ও তাদের দোসর জামাত, রাজাকার, আলবদর বাহিনীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাদেরকে রুখে দিয়েছিল। কীভাবে তাদের বাংলার কাদা-মাটিতে পর্যুদস্ত করেছিল, সেইসব ঘটনার রোমহর্ষক অনুপুঙ্খ বর্ণনা। আছে গেরিলাদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব , দুঃখ-কষ্ট, আপোষহীন লড়াই, আত্ম-বলিদান, বীরত্ব এবং. গৌরব গাথা।
বিজয়ের পঞ্চাশ পরেও বাঙালীর বিজয় গাঁথার এই অনন্য আখ্যান পাঠককে মুগ্ধতার আবেশে বিমোহিত করে রাখবে, তাদের পূর্বসূরির মহান বীরত্বের কাহিনী তাদেরকে ও তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে ধারাবাহিকভাবে উজ্জীবিত করবে। নিঃসন্দেহে এ উপন্যাস এক উচ্চমার্গীয় সাহিত্যমূল্য ধারণ করে।
স্বাধিকার, অধিকার, ভালবাসা, গন্ধক, রক্ত, এবং নাইট্রিক এসিডের সংমিশ্রণে এ এক মুক্তির পথ যাত্রা।
Chandana Ure Gache - Ali Reza
‘মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা এবং স্বাধীন দেশ দেখে গেলেন ইমনের মা। কিন্তু স্বাধীন দেশে নিজের বাসায় আর জীবিতাবস্থায় ফিরতে পারলেন না। শেষ নিশ্বাস ত্যাগের পর মায়ের মরদেহটা ইমন সেই কম্বলটি দিয়ে ঢেকে দেয়, যে কম্বলটি সে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পেয়েছিল। এছাড়া কি-ই বা ছিল তার?
মাকে নেয়া হয় শ্মশানে। স্বাধীনতা অর্জনের মাত্র ক’দিনের ব্যবধানে মাকে হারালো ইমন!
এ পর্যায়ে এসে ইমন চৌধুরী বলে, মায়ের কথা এখনো খুব মনে পড়ে। মা! পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ, সুন্দর এবং পবিত্র একটি শব্দ। যা কিনা মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা এবং এই দেশ মাতৃকার মতই যথাক্রমে বিশাল, মহান এবং সুন্দর। একাত্তরে মাকে হারিয়েছি সত্য, তবে পেয়েছি স্বাধীনতা এবং মানচিত্র।
আমার মায়ের স্মৃতির সাথে জড়িয়ে যায় এদেশের জন্মকথাও। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা এবং এদেশটাই এখন আমার মা।’
ময়মনসিংহ অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অবলম্বনে রচিত কিশোর উপন্যাসটি নিছক কোনো ডকু-ফিকশন নয়। আশার করা যায়, এটি এমন একটি ফিকশন হয়ে উঠেছে, যা কিশোর উপযোগী পাঠকসহ সব শ্রেণীর পাঠকের উপন্যাস পাঠের আনন্দ দেবে। পাশাপাশি ময়মনসিংহ অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কেও ধারণা দেবে।
স্বাধীনতার জন্য
জন্ম ১৯৫৯ সালে পাবনার বেড়া উপজেলায়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। পিএইচডি করেন ১৯৯৯-এ। রাজশাহী বিশ্ব বিদ্যালয় ফোকলোর বিভাগে কর্মরত। বিশেষ আগ্রহের বিষয় লোক সংগীত, দর্শন, ধর্ম।
প্রকাশিত গ্রন্থÑ বাংলাদেশের লোকসংগীতে প্রেম চেতনা, রবীন্দ্রকাব্যে লোক উপাদান, বাংলা লোকসংগীতে নারী।
রঙ্গনামা
বাঙালির ইতিহাসে, বাঙালির জীবনে গর্ব করার মত যত অধ্যায় আছে, তার মধ্যে সবচে বড় অধ্যায় ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধ বাঙালির অহঙ্কার, মাথা উঁচু করে চলার দৃপ্ত অঙ্গীকার। সৌভাগ্যক্রমে আমার জন্ম হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের ছয় বছর পূর্বে, তাই ছয় বছর বয়সে আমিও হতে পেরেছিলাম মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন অংশীদার।
আমার অনেকদিনের ইচ্ছে, আমাদের শৈশব কৈশোরের দিনলিপি নিয়ে ‘চোখ যায় যদ্দুর’ নামে তিন পর্বে বই লিখবো। তিন পর্বে থাকবে মুক্তিযুদ্ধ পূর্বকাল, মুক্তিযুদ্ধকাল ও মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীকাল।
মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল ১৯৭১ সালে, ঊনপঞ্চাশ বছর পেরিয়ে গেছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, বাঙালির অহঙ্কারের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্ম খুব বেশি কিছু জানে না। আজও তারা বিভ্রান্ত হয় মুক্তিযোদ্ধা আর রাজাকার শব্দ দুটো নিয়ে। কারণ কে মুক্তিযোদ্ধা কে রাজাকার, সেই তালিকা আজও নির্ণিত হয়নি।
বর্তমান প্রজন্ম জানে, মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা ছিল, পাকবাহিনী ছিল, রাজাকার ছিল, মিত্রবাহিনী ছিল।
বর্তমান প্রজন্ম জানে না, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে মুক্তিযোদ্ধা আর রাজাকার ছাড়াও রিফিউজি নামে আরেকটি শ্রেণির সৃষ্টি হয়েছিল। রিফিউজিদের কথা কেউ আলাদা করে বলেনি, রিফিউজিদের কথা কেউ আলাদা করে লিখে না। তাই বর্তমান প্রজন্ম রিফিউজি শ্রেণির সাথে পরিচিত নয়।
রিফিউজি কারা ছিল, কেন তারা রিফিউজি হয়েছিল! কেমন ছিল রিফিউজিদের জীবন! রিফিউজি হওয়া কি স্বস্তির নাকি বেদনার! ভয়াবহ যুদ্ধ চলাকালে রাজাকারের চোখ এড়িয়ে, পাকসেনাদের গুলি বাঁচিয়ে বন বাদাড়, মাঠঘাট, নদী নালা পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে পৌঁছে নিজেকে রিফিউজি ঘোষণা করা যে কী নিদারুণ কষ্টের আত্মসমর্পণ, অন্যের দয়ায় দিনাতিপাত করা কতখানি গ্লানিকর তা অতীত বর্তমান কোনো প্রজন্মই অনুধাবন করতে পারবে না।
অতীত এবং বর্তমান প্রজন্ম রিফিউজি সম্পর্কে জানে না, কিন্তু ভবিষ্যত প্রজন্ম জানুক রিফিউজিদের কথা।
মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিল সাড়ে ছয় বছর, বড়দা ছিল কিশোর, মেজদা বালক, ছোট ভাই চার বছর বয়সের শিশু।
না, আমরা কেউ বন্দুক হাতে মুক্তিযুদ্ধ করিনি। চারটে ছেলেমেয়ে যুবতী স্ত্রী বৃদ্ধা মাকে পাকবাহিনীর গোলার মুখে ফেলে বন্দুক হাতে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার মত দুঃসাহস আমাদের বাবার ছিল না। বাবা তাই সবাইকে নিয়ে প্রাণ বাঁচাতে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পৌঁছে রিফিউজি হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কেউ সাধ করে আশ্রিতের জীবন বেছে নেয় না।
এক দিনে আমরা ভারতে পৌঁছাইনি, দীর্ঘ পনের দিন লেগেছে নারায়ণগঞ্জ থেকে আগরতলা হয়ে কলিকাতা পৌঁছাতে। সেই যাত্রাপথ কেমন ছিল, কি কি ঘটেছিল, অথবা কি কি ঘটতে পারতো, কলিকাতা পৌঁছে আমরা কেমন ছিলাম, কলিকাতাবাসী আমাদের প্রতি কতখানি আন্তরিক ছিল, এসব সত্য যদি লিপিবদ্ধ না থাকে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পূর্ণ হবে না।
ইতিহাস সৃষ্টি হয় সত্যের ওপর ভর দিয়ে, ইতিহাস দাঁড়ায় সত্যের ভিত্তির ওপর। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ মিছে নয়, মুক্তিযুদ্ধ বানানো কাহিনি নয়, মুক্তিযোদ্ধা আর রাজাকার নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ নয়, সেখানে রিফিউজি নামে মুক্তিযুদ্ধের যে নীরব সাক্ষী আছে, সেই রিফিউজিরাও মুক্তিযুদ্ধের অংশ, তারাও মুক্তিযোদ্ধা।
শিশুরা মিথ্যা বলে না, শিশুরা মিথ্যা দেখে না। শিশুরা ছল চাতুরী জানে না, আদালতে শিশুরা মিথ্যে সাক্ষ্য দেয় না। মাঝে মাঝে শিশুরাই হতে পারে ন্যায় বিচারক।
একাত্তরে আমরা ছিলাম শিশু বালক বালিকা, আমরাই হয়েছিলাম রিফিউজি, আমরাই ছিলাম মুক্তিযুদ্ধের সত্যদর্শী সাক্ষী। রিফিউজিদের কথা যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানতে পারে, সেই দায় মাথায় নিয়ে আমাদের বাল্যকালের সত্যনিষ্ঠ স্মৃতিভান্ডার থেকে কুড়িয়ে যতটুকু সত্য আহরণ করতে পেরেছি, সেটুকুই ‘চোখ যায় যদ্দুর’র মুক্তিযুদ্ধকাল পর্ব ‘একাত্তরের বালক বালিকা’ খণ্ডে লিপিবদ্ধ করে রাখতে চেয়েছি। একাত্তরের বালক বালিকা পর্বটি সত্যদর্শী বালক বালিকার সত্য বয়ানের লিপিবদ্ধ রূপ।
Chokh Zay Joddur - চোখ যায় যদ্দুর (একাত্তরের বালক বালিকা) - দ্বিতীয় মুদ্রণ
ভূমিকা-
১৯৭১সাল। তখন আমি খুবই ছোট।চারিদিকে অবিরাম গুলাগুলির শব্দ।নারকেল গাছের মাথা ছুঁয়ে উড়ে যাচ্ছে যুদ্ধ বিমান।বড়দের কাছে শুনেছি- শেখসাবকে বন্ধি করে পাকিস্তান নিয়ে গেছে।শান্তি প্রিয় বাঙ্গালিরা সেদিন- যতটাই না হয়েছিলো আতঙ্কিত!ততবেশিই হয়েছিলো ক্ষুব্ধ এবং অপ্রতিরোধ্য। চাপা ক্ষোভে ছিলো দাবানলের তীব্রতা।
মাঝে মাঝে বাতাসে ভেসে আসছে- অগ্নি সংযোগ,ধর্ষণ লুন্ঠন আর বিবর্ষ অত্যাচারের গন্ধ।আর রক্তহিম করা মানুষের করুণ চিৎকার! । চারিদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।বাতাসে কান পাতলেই শোনা যায়- অসহায় মানুষের অসহায় হাহাকার! শক্ত মনেও ধরেছিলো,মাঘের কাঁপুনি। মানসিকভাবে অনেকেরই ভেঙে পড়েছিলো সেদিন।মান আর প্রাণ বাঁচাতে লক্ষ লক্ষ মানুষ,বাধ্য হয়েছিলো,দেশ ছাড়তে।কারণ সেদিন দেশের কিছু সংখ্যক মানুষ, দেশের সাথে এবং দেশের মানুষের সাথে বেইমানি করেছিলো।তারা বিশেষ এক সম্প্রদায়কে টার্গেট করে,চালাছিলো-তাদের অপারেশন ব্লু-প্রিন্ট।
সেদিনের আতঙ্কগ্রস্থ দিনগুলোর ঘটানারই একটা সরল চিত্র, এই লেখার উপকরণ। যা আমারই চোখের সামনে ঘটেছে।সেদিন যেমনটা দেখেছিলাম- তেমনটাই বলার চেষ্টাই-এই লেখার প্রেক্ষাপট।বিবেকের তাড়নাই- আমাকে এই লেখা লিখতে প্উৎসাহ যোগিয়েছে।
আজ যাদের অনুপ্রেরণা আর আত্মিক প্রচেষ্টায় এই লেখাটা আলোর মুখ দেখতে প্রয়াস পেয়েছে! তাদের কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ।আর তারা হলেন- আমারই অতি প্রিয় বোন লিনা ফেরদৌস।আরো আছেন- মনির ভাই।যাঁরা আমাকে উৎসাহ ও সাহস যোগিয়ে এগিয়ে আসতে অনুপ্রানিত করেছেন।পরিচয় করিয়েছেন-অনুপ্রাননের কর্ণধার আবু,ম ইউনুস ভাইয়ের সাথে।তাঁর কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।আজ তাঁর আত্মিক উৎসাহেই আমার লেখা জীবন পেলো।
আরো অনেকের কাছেই আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।যারা সর্বদা আমার পাশে থেকেছেন,সাহস যোগিছেন।ভরসা দিয়েছেন।তারা যে আমার কতটা আত্মীয়! এবং আপনার আর আপন জন! প্রকাশের ভাষা নেই।সকলকেই আমি কৃতজ্ঞ চিত্তে স্বরণ করছি।এই লেখা কারো মনে একটুও দাগ ফেলতে পারলেই- মনে করবো,আমার লেখা কিছুটা হলেও সার্থক হয়েছে।পরিশেষে সকল পাঠকদের প্রতি থাকলো- আমার শুভেচ্ছা ও আন্তরিক ভালোবাসা।
— লেখক
৭১ এর এক সন্ধ্যায়
জন্ম ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট, ঢাকায়। শৈশব কৈশোর কেটেছে হাইকোর্ট কম্পাউন্ডের সবুজ গাছ, অবারিত খেলার মাঠ আর টিনের চালে রিমঝিম বৃষ্টির সাথে। প্রথাগত পড়াশোনায় ইতি ঘটে প্রবল অনাগ্রহে। প্রকৌশল বিদ্যা শেষ না করে বেরিয়ে পড়েন শব্দের সন্ধানে। লম্বা সময় বোহেমিয়ান ঘুরে বেড়িয়েছেন। এ দেশ-ও দেশ আর অলি-গলি পেরিয়ে রাজপথ। পেশায় গীতিকার।
পরিচিত গান- আজ তোমার মন খারাপ মেয়ে, বৃষ্টি পড়ে, আই সি সি বিশ্বকাপ ২০১১-এর থিম সং মার ঘুরিয়ে প্রভৃতি।
রুল টানা খাতা
আফরোজা আলমের গদ্য পড়তে ভালো লাগে। একটা আটপৌরে ভাব আছে আর আছে একটা ভিতর থেকে টান। বিষয় যখন পরিবারের কথা নিজের স্মৃতি-গ্রন্থের পাতাগুলি উল্টে যাওয়া, প্রায় নিজের পুরোনো ডায়েরি খুলে পড়ার মতো তখন ভালো তো লাগবেই। তার সঙ্গে যদি যোগ হয় আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতার কিছু বর্ণনা। এইসব কারণে আফরোজার লেখা ভালো লাগলো।
হাসান আজিজুল হক
Fanush - ফানুস
খোঁচা
খোঁচা খুব ঔষধী
খোঁচা খুব বেয়াড়া,
খেলে খায় খুশিতে
কারো লাল চেহারা।
খোঁচা খায় বঁধুয়া
কলতান হাসিতে,
খোঁচা চায় প্রেমিকা
চায় ভালোবাসিতে।
খোঁচা দাও বাবুকে
সারাক্ষণ জ্বালাতো,
হবে ভাব ত্বরিতে
আগে দূর পালাতো।
খোঁচা দাও সুযোগে
খোঁচা দাও বুঝিয়া
খোঁচা দাও সমাজে
খোঁচা দাও খুঁজিয়া।
খোঁচা দাও জাগাতে
যারা ঘুম জাগে না,
বসে দাও চেয়ারে
যাঁরা পদ মাগে না।
খোঁচা
নাফ নদীর জলে স্নান করে পিছিয়ে পড়ে বুনো দল। আকাশ নীল ছুঁয়ে মনের সুপ্ত ছোট্ট চারাগাছ পরিণত হয়। ছুটির ঘণ্টা হাতে দাঁড়িয়ে থাকেন স্রষ্টা। যিনি ভালোবেসে আগলে রাখেন। এইখানে নামান্তরের গল্প এতো দীর্ঘ যে, ক্ষণজন্মা পার্থিব আয়োজনে দেখা পাওয়া প্রত্যেক পথিককে কৃতজ্ঞতা। তবে এই জন্মে ম্যাজিক সেøটে হাতেখড়ি নির্ঝর দা’র কাছে।
বন্ধুপ্রিয় আর প্রজাপতির সান্নিধ্যে সুপ্তপরীর আলিঙ্গনে এক পৃথিবীর বেড়ে ওঠা পবিত্র দু’টি ফুলের ছায়ায়। সেখানে জলশাস্ত্রে শাওন আর স্বতন্ত্র ভ্রƒণে কুসুম, এককতারায় তাদেরই আত্মজাফুল!
ঘুমপত্র
Get access to your Orders, Wishlist and Recommendations.
There are no reviews yet.