Additional information
Weight | 0.255 kg |
---|---|
Published Year |
$ 1.76 $ 2.35
সত্যি কথা বলতে গেলে রূঢ় এবং অসঙ্গত শোনাবে। তারপরও সত্য কখনো মূল্য হারায়না, সেই বিশ্বাসেই বলছি- যে অনুর্বর সামাজিক বলয়ে জন্ম থেকে বেড়ে ওঠা, সাহিত্য সৃষ্টির মত মহান ব্রত সেখানে স্বপ্নেরও অগোচর। তবু সেই স্বপ্ন আমায় দুঃসাহসী করে তুলল। সাধারণের উপহাস তুচ্ছ জ্ঞান করে দুঃস্বপ্নের হাতছানি ভরা পথে চলতে গিয়ে কখন যেন এই দুর্গম পথের পথিক হয়ে উঠি। পথ ভালবেসে চলায় ছন্দ আসে। অন্তরের গভীরে নিভৃত এক সংকল্প জাগে- “সৃষ্টিশীলতায় নিমগ্ন হয়ে থাকাই আমার সাধনা। এর মধ্যে দিয়েই আমি জগৎ, জীবন এবং পরমেশ্বরের আনন্দ উপলব্ধি করার চেষ্টা করব।’’ একনিষ্ঠা ধরে রাখতে পারিনি- হয়তো দৃঢ় মনোবলের অভাবে কিন্তু পথভ্রষ্ট হবার ভয়কে জয় করেছি। জীবনে এর চেয়ে উৎকৃষ্ট কোন কাজের সন্ধান জানা নেই। তাই সাহিত্য সাধনাই আমার একমাত্র সুন্দরের উপাসনা। তার ধারাবাহিকতায় “রবীন্দ্রনাথের বাবা স্বপ্ন দেখেছিলেন’’ ষষ্ঠ গল্প সঙ্কলন হিসেবে গ্রন্থিত হয়ে আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে। লেখক মাত্রই পাঠক প্রিয়তার প্রত্যাশা করেন। আত্মপ্রকাশের ক্ষেত্রে শঙ্কিত এ দূরাশা রইলই আগামীকালের জন্য।
পরিশেষে একথাটুকু না বললে বোধকরি সত্যের অপলাপ হবে- এই বন্ধুর পথ একেবারেই সঙ্গীবিহীন ছিল না। বন্ধু হয়ে, প্রেরণা হয়ে কেউ কেউ এসেছে মনের কাছে। ধন্যবাদ জানিয়ে তাদের ছোট করার স্পর্ধা আমার নেই। প্রতিনিয়ত পরামর্শ দিয়ে কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ করেছেন শ্রদ্ধাষ্পদ ড. অশোক মিস্ত্রী। প্রকাশনার কাজে সহধর্মীনী শ্রীমতি জয়া বিশ্বাস-এর সহযোগিতা না থাকলে বই প্রকাশ দুরূহ হত। ভুল-ভ্রান্তি যথা সম্ভব পরিহারের চেষ্টা সত্ত্বেও অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টি কামনা করছি।
Weight | 0.255 kg |
---|---|
Published Year |
মোঃ জিয়াউল হক; জন্ম : ১৯৮১ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি, গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার গোবিন্দী গ্রামে। পিতা- মোঃ নাছির উদ্দীন, মাতা- মোছাঃ জাহানারা বেগম। পড়াশোনা : এম.এ (রাষ্ট্রবিজ্ঞান)। পেশা : দীর্ঘ এক যুগ ‘গ্রাফিক ডিজাইনার’ ও ‘পেইন্টার’ হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করার পর, বর্তমান পেশা শিক্ষকতা।লেখালেখির হাতে খড়ি হয় ১৯৯৫ সালে। লেখালেখির শুরুটা মফস্বল এলাকার নাট্যপ্রেমী ছেলেদের জন্য মঞ্চ নাটকের কাহিনি রচনার মধ্য দিয়ে স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকায় কবিতা ও ছড়া লেখার চেষ্টা, বহুদিন। সেই চেষ্টা থেকেই ২০০০ সালে প্রকাশিত ‘দৈনিক ঘাঘট’ পত্রিকায় ‘আঁড় চোখে দেখা’ শিরোনামে বিদ্রুপাত্মক ছড়া নিয়মিত লেখালেখি। এই সময় সাহিত্যপ্রেমী বন্ধুদের সাথে নিয়ে ‘অগ্নিরথ’ নামক একটি অনিয়মিত মাসিক সাহিত্য ম্যাগাজিন সম্পাদনা ও প্রকাশনা কাজেও যুক্ত। কিন্তু ইতিমধ্যে রুটিরুজির জীবনযুদ্ধ শুরু হলে কবিতা-ছড়া বিলিন হয়ে যায় জীবন থেকে।
অন্তর্দাহ
১৯৬২ সালের ৫ ডিসেম্বর, ময়মনসিংহে কবি আশুতোষ পাল ও শিউলি পালের সংসারে জন্ম।
লেখাপড়া- বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষিবিজ্ঞানে স্নাতক এবং সুইডেন থেকে পরিবেশ বিজ্ঞানে ডিপ্লোমা।
পেশা- এনজিও কর্মী দিয়ে শুরু এবং বর্তমানে সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত।
প্রকাশিত অন্যান্য বই- রাতপঞ্জি (২০০৩),পুননির্বাচিত আমি- ২০১১।
Asochorachor
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়েছে লেখকের নাম হাসান মাহবুব। তিনি নাড়–গোপাল দত্ত অথবা ইসমাইল আহমেদ নন। তিনি রবীন্দ্রনাথ বা আগাথা ক্রিস্টি নন। তিনি দূর আকাশের নীল নক্ষত্র, ধোঁয়া ওঠা কফির মগ, বাজারে মেয়েটির অপরিচ্ছন্ন অন্তর্বাস, ট্রাফিক পুলিশের সিগন্যাল বাঁশি অথবা লোম কাটার মওসুমের ভেড়ার দীর্ঘশ্বাসও নন। তিনি লেখেন। তবে ‘তিনি’ই লেখেন কি-না এই নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ লেখার মতো পরিশ্রমের কাজে বছরের পর বছর এত শ্রম দিয়েছেন, দুটো বইও বের করেছেন (প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত এবং আনন্দভ্রম) তার সাথে এসব ঠিক যায় না। এত সব প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও তিনি হাসান মাহবুব হবার চেষ্টা করছেন এবং তারই ফলশ্রুতিতে আরো একটি বই প্রকাশ করে ফেললেন। তিনি সকলের দোয়া প্রার্থী!
নরকের রাজপুত্র
আমি কী আর জন্মেছিলাম মানুষ হিশেবে?
জন্মেছিল আবু তাহের, এই লোকটা কে?
মুখ চিনি না তবু মুখের আদল ধরে হাঁটি
শরীর খুলে বাইরে এসে ছায়ায় পরিপাটি।
আমি হয়তো ছায়ার মানুষ, শরীর আরেকজন
তার শরীরেই আড়াল হয়ে বাঁচার আয়োজন।
কার সে জীবন আমার কাঁধে, আমি-ই যে হায় কার
একই সাথে খাচ্ছি-দাচ্ছি ঘুমোচ্ছি আবার।
আমার যে, সে কোথায় থাকে? কোথায় বাড়িঘর?
তার সাথে কী বদলেছে এই আমার টিনের ঘর?
গোধূলির জাদুকর
শাশ্বত নিপ্পন। জন্ম: মেহেরপুর, মে ১৮, ১৯৭০। পেশা: শিক্ষকতা ও সাংবাদিকতা। এবং সংস্কৃতিকর্মী ও নাট্যকর্মী। তার আরো দুটি প্রকাশিত গ্রন্থ রয়েছেÑ অনতিক্রম (২০১৩), পুনরুত্থান (২০১৪)।
অশনির ছন্দ
সরদার ফারুক। জন্ম ১৯৬২ সালের ৯ নভম্বের, কপোতাক্ষ নদের তীরে খালিশপুরে। পৈত্রিক নিবাস বরিশালের কাশীপুর। পেশায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। ছাত্রজীবন থেকেই প্রগতিশীল ছাত্র-শ্রমিক-কৃষক আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন। বরিশালে ঘাট শ্রমিকদের ?আন্দোলন, ডেমরায় শ্রমিক কর্মচারি ঐক্য পরিষদের সংগ্রাম ও বাজিতপুরের জেলেদের লড়াইয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
নব্বইয়ের ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য তিনি সরকারী চাকরি ছেড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৮৯ সালে ডাকসু নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনও করেন।
ছাত্রজীবন থেকেই বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লিখছেন। ১৯৮০ সালে বরিশালের অধুনালুপ্ত ‘সাপ্তাহিক লোকবাণী’ পত্রিকায় প্রথম লেখা প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে শামসুর রাহমান সম্পাদিত সাপ্তাহিক বিচিত্রা, দৈনিক দেশ, সংবাদসহ দেশ-বিদেশের নানা পত্র-পত্রিকা, সাহিত্য সাময়িকীতে তার লেখা কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
নোনা শহর
অনিন্দ্য আসিফ। জন্ম- ২৩ মে, ১৯৮১। কতিয়াচর, কিশোরগঞ্জ। পিতা- মোঃ আব্দুল হাই, মা- হাওয়া আক্তার।
শাদা অথবা শূন্য
সাঈদা মিমি। জন্ম ২৯ ফেব্রুয়ারী, ১৯৬৮। বরিশালে। পেশাগত দৈনিক সংবাদ প্রতিদিনের সাহিত্য সম্পাদক। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা পাঁচটি। শ্রাবন প্রকাশনী থেকে ২০০৮ এ প্রকাশিত হয় প্রথম কবিতার বই ‘সব নিয়ে গ্যাছে এক সময়ের লুটেরা বাতাস।’ দীর্ঘ বিরতির পর আগুনমুখা থেকে ‘ফারাও কুমারী’ Ñ২০১৪ সালে। বাংলার ই-বুক থেকে ই-বই ‘কীর্তনখোলা।’ -২০১৫ সালে। ২০১৬ তে অনুপ্রাণন থেকে কাব্যগ্রন্থ ‘একজন মৃতের ডায়েরী’ এবং কালজয়ী প্রকাশ থেকে ‘শুশুনিয়া পাহাড়’।
ঔরঙ্গজেবের নীল ঘোড়া
বিলাল হোসেন। জন্ম ১লা জানুয়ারি ১৯৭৪। মাদারিপুর জেলার রাজারচর কাজীকান্দি গ্রামে। প্রথম প্রকাশিত বই বিরুপা’র শুঁড়িবাড়ি, সেরা ১০০ অণুগল্প। গল্প সংকলনÑ পঞ্চাশ। অণুগল্পের বিষয়-বৈচিত্র্যের অনুসন্ধান। ‘কালজয়ী পঙক্তিমালা’ নামক অনলাইন পত্রিকার সম্পাদক।
মহাপ্রভু ও অন্যান্য অণুগল্প
সোলায়মান সুমনÑ জন্ম ১মে ১৯৭৯, চাঁপাই নবাবগঞ্জ। তরুণ বয়সে লেখালেখি শুরু। বর্তমানে ঢাকায় বসবাস। পেশায় শিক্ষক। ত্রৈমাসিক অনুপ্রাণন প্রকাশনের সাথে যুক্ত।
ছায়াগুলো জেগে থাকে
আবু সাঈদ আহমেদের জন্ম ১০ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৫। অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যায়নের সময়েই জনপ্রিয় সাপ্তাহিক সন্দ্বীপে প্রতিবেদন লেখার মাধ্যমে লেখক জীবনে প্রবেশ। কলেজ জীবন হতে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে কবিতা ও প্রবন্ধ লিখেছেন। কিন্তু লেখাকে কখনোই গুরুত্বের সাথে নেন নাই। তিনিই বাংলা ব্লগের অন্যতম জনপ্রিয় ব্লগার ‘হরবোলা’। অনলাইনে নির্মোহ রাজনৈতিক প্রবন্ধ, তীক্ষ্ম স্যাটায়ার, কবিতা আর অণুগল্প তাকে এনে দিয়েছে ব্যাপক পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা। আমমানুষের পক্ষের একজন লেখক ও এক্টিভিস্ট হিসেবে একাধিকবার শারীরিক হামলার স্বীকার হয়েছেন, কিন্তু নীরব হন নাই।
লংকা কিন্তু জ্বলছে না
মঞ্জু সরকার, বাংলাদেশের অন্যতম কথা সাহিত্যিক। জন্ম ১ সেপ্টেম্বর ১৯৫৩, রংপুর। ছোটগল্প উপন্যাস ও শিশু-কিশোর গ্রন্থ মিলিয়ে প্রকাশিত গ্রন্থ অর্ধশতাধিক। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছেÑ মৃত্যুবাণ, উচ্ছেদ উচ্ছেদ খেলা, যৌথ একাকিত্ব, তমস, নগ্ন আগন্তুক, ছোট্ট এক বীরপুরুষ ইত্যাদি। বাংলা একাডেমি, ফিলিপস, ব্যাংক সাহিত্যসহ বিভিন্ন পুরস্কার পেয়েছেন।
রূপান্তরের গল্পগাথা
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়েছে লেখকের নাম হাসান মাহবুব। তিনি নাড়–গোপাল দত্ত অথবা ইসমাইল আহমেদ নন। তিনি রবীন্দ্রনাথ বা আগাথা ক্রিস্টি নন। তিনি দূর আকাশের নীল নক্ষত্র, ধোঁয়া ওঠা কফির মগ, বাজারে মেয়েটির অপরিচ্ছন্ন অন্তর্বাস, ট্রাফিক পুলিশের সিগন্যাল বাঁশি অথবা লোম কাটার মওসুমের ভেড়ার দীর্ঘশ্বাসও নন। তিনি লেখেন। তবে ‘তিনি’ই লেখেন কি-না এই নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ লেখার মতো পরিশ্রমের কাজে বছরের পর বছর এত শ্রম দিয়েছেন, দুটো বইও বের করেছেন (প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত এবং আনন্দভ্রম) তার সাথে এসব ঠিক যায় না। এত সব প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও তিনি হাসান মাহবুব হবার চেষ্টা করছেন এবং তারই ফলশ্রুতিতে আরো একটি বই প্রকাশ করে ফেললেন। তিনি সকলের দোয়া প্রার্থী!
নরকের রাজপুত্র
সাহিত্য নিয়ে আমি ভাবি।এরমাঝে,কবিতা আমার আরাধ্য বিষয়।কবিতার বিশ্বমাঠে
আমি বিচরণ করতে ভালোবাসি। এই যে বিচরণ,তা থেকে অনেক পুষ্প,অনেক পাতা
আমি ঘরে তুলি। সেগুলো বার বার ফিরে দেখি।
এই যে চয়নপর্ব- তা থেকে আকর নিয়ে আমি লিখি আমার মতো করে।
বিভিন্ন ভাষার সাহিত্য,কবিতার মাঝে আমি বাঙালি কবিদের প্রাধান্য এজন্যে দিই-
কারণ আমিও এই ভাষারই একজন লেখক।এই গ্রন্থে তেমনই কিছু প্রিয় লেখক,তাঁদের
লেখা, শিল্প-সংস্কৃতি-কবিতার বিভিন্ন জ্যোতিরেখা নিয়ে আমি লিখেছি।
‘যতিকল্পের প্রতিপৃষ্ঠা’-নামটি এক আধ্যাত্মিক আদেশে পাওয়া। কারণ এই বইয়ের নাম আমি চার বার বদলিয়েছি মনে মনে। যা সাধারণত আমি করি না। আমার বইয়ের নাম এক ভাবনায়ই ঠিক হয়ে যায়। এই বইটির নাম,একটি ঝলকের মাধ্যমে একটি শক্তি আমাকে পৌঁছে দিয়েছে। সে এক মহান অভিজ্ঞতা। এর বেশি এখানে শেয়ার করা সঙ্গত হবে না।
বইয়ে ৩৩টি প্রবন্ধ আছে। পাঠকসমাজ, পড়ে নিজের মত মিলিয়ে দেখতে পারেন। এই বইটি খুব যত্নের সাথে প্রকাশ করেছে- অনুপ্রাণন প্রকাশন,ঢাকা।
এর স্বত্বাধিকারী শ্রদ্ধেয় আবু এম ইউসুফ ও তাঁর টিমের কাছে বিনীত কৃতজ্ঞতা।
সাহিত্য মানুষকে ভাবায়। আর সেই ভাবনার উদ্রেক করতে যারা কাজ করেন তারা সত্যিই মহান। আমাদের সকলের মহানুভবতা,সাহিত্যকে মানুষের আরও
কাছাকাছি নিয়ে আসুক।
সুপ্রিয় পাঠক-পাঠিকা, এই গ্রন্থ থেকে অন্তত কিছু লেখা আপনাদের ভালো লাগলেই
আমার সার্থকতা ।
অনেক প্রীতি সবাইকে।
ফকির ইলিয়াস
২৮ ডিসেম্বর ২০২১
নিউইয়র্ক
যতিকল্পের প্রতিপৃষ্ঠা
শীতের বিকেলে পিঠে রোদ লাগিয়ে আরাম করে শুয়ে ছিল হাতি। পাশের এক মাটির ঢিবি থেকে পিনপন নামের পিঁপড়েটি পিল পিল করে হাতির সামনে এসে বলে, কথা দিয়েছিলে চাঁদ দেখাবে। কই ডাকলে না তো। বিকেলের নরম রোদে আরামে চোখ বুজে এসেছিল হাতির, পিঁপড়ের গলা পেয়ে চোখ পিটপিট করে বলে, বলেছি যখন তখন দেখাব। আজ রাতেই দেখাব।
রাতে কেন এখনই দেখাও না।
আরে চাঁদ তো রাতে দেখা যায়। এই বনের সবাই যখন ঘুমায়, তখন চাঁদ চুপিচুপি আকাশের গায়ে ওঠে।
হাতির কথা মতো রাতে চাঁদ দেখতে হাজির হয় পিঁপড়েটি। হাতি বলে, কী দেখ? পিনপন বলে, লাঠির মতো কিছু একটা, আবার আমগাছের মতোও মনে হয়। দাঁড়াও একটু চড়ে আসি, দেখি কোনো বাসাটাসা বানানো যায় কি না। পিঁপড়েটি হাতির পা বেয়ে ওপরে উঠে যায়।
হাতি বলে, পেলে কিছু?
অনেক কিছু কিছুমিছু?
হাতি ভাবে মহা মুশকিলে পড়া গেল তো! এই পিঁপড়েটাকে নিয়ে চাঁদ দেখার আয়োজন করাটাই ভুল হয়েছে, তবু কথা যখন দিয়েছি, তা তো রাখতেই হবে। পিঁপড়ে বলে, বেশ মজা হচ্ছে, এখানেই বাসা বানাব ভাবছি।
নেমে এসো বলছি। আমার কেমন সুড়সুড়ি লাগছে।
চাঁদে আমি ঘর বানাব শুনে তোমার কি না সুড়সুড়ি লাগে, হে হে ভারি মজা তো!
আরে ওটা চাঁদ নয়, ওটা আমার … উঁ উঁ বলে চিৎকার করে ওঠে হাতিটি। পিঁপড়ে বলে, চাঁদে বেশ মজা চিমটিও কাটা যায়। দেখবে এসো।
আরে ওটা চাঁদ নয় ওটা আমার পা।
তোমার পা! হেহে এখন বলবে তো চাঁদের তোমার পা পড়েছে। মনের দুঃখে হাতি এবার বসে পড়ল।
…………………………………………………
…………………………………………………
…………………………………………………
হাতি ও পিঁপড়ের চাঁদ দেখা
মাতৃভাষা, সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয়
বিভিন্ন দেশ, জাতি ও সমাজের অস্তিত্ব ও আত্মপরিচয় মুছে দিয়ে চিরকালের জন্য নিজ শাসন ও শোষণের আওতায় নিয়ে আসার জন্য এক একটি জাতি ও উপজাতির নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতিকে আক্রমণ করে দুর্বল করে দিয়ে সুকৌশলে একক একটি ভাষা ও সংস্কৃতি জাতিতে জাতিতে চাপিয়ে দেয়া- সাম্রাজ্যবাদী শোষণ বিস্তারের প্রাথমিক পরিকল্পনারই একটি অপকৌশল। আধুনিক বিশ্বে বাঙ্গালীর জাতীয়তাবাদী চেতনা জাগ্রত করা ও বাংলাকে রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য ’৫২ এর ভাষা আন্দোলন আমাদের জাতীয় ইতিহাস ও ঐতিহ্যের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, যে অধ্যায়ের মধ্যে আমাদের ভাষা, সাহিত্য শুধু নয়, আমাদের সাংস্কৃতিক অস্তিত্ব এবং আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠা ও প্রসারের মহান সংগ্রামেরই ঐতিহাসিক সূত্রপাত। ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের স্মরণে প্রতিবছর ফেব্রুয়ারিতে অমর একুশে বইমেলা- বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে তথা বাঙালী চেতনাকে সম্প্রসারিত ও সুদৃঢ় করে তোলার কাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। আমাদের জাতীয় জীবনে অমর একুশে বইমেলার অপরিসীম ভূমিকাকে গুরুত্বের সাথে আমাদের অনুধাবন করতে হবে এবং এই বইমেলার গুণগত মান এমনভাবে পরিকল্পিত ও সুসংগঠিত করতে হবে যেন এর সুফল সারা বছর জুড়ে আমাদের জাতীয় জীবনে সফলভাবে কার্যকরী থাকে।
ভাষা, শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তির উৎকর্ষ সাধনের যে কোন প্রচেষ্টায় দেশের গণমানসের অন্তর্নিহিত শক্তিকে মানসম্পন্ন কাজে রূপান্তরিত করাটাই জরুরী। তাছাড়া, প্রতিনিয়ত নতুন চিন্তার উন্মেষ ঘটানো এবং সেসব নতুন নতুন চিন্তার বাস্তবায়ন একটি জাতির সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে সুদৃঢ়ভাবে সচল রাখতে এবং সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন মোকাবেলা করতে সবল ও সক্ষম করে তুলতে পারে। একুশে বইমেলাকে ঘিরে সেসব কাঙ্ক্ষিত রূপান্তর ঘটাতে আমরা কতটুকু সক্ষম হচ্ছি- এটাই আমাদের সামনে মূল প্রশ্ন। গণমানসের অনুবাদই প্রতিভার একমাত্র ধর্ম নয়। গনমানসের সংগঠনে সাংস্কৃতিক উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে উপযোগী রূপান্তর ঘটানোর প্রচেষ্টাই একুশে বইমেলার মতো এই বিরাট কর্মকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। কিন্তু, আমরা এই বিরাট কর্মযজ্ঞের মাঝে গনমানসের সংগঠনে রূপান্তর ঘটার মত সৃজনশীল কর্মসূচি গ্রহণ করতে দেখি না। আত্মকেন্দ্রিক পুনরাবৃত্তির মধ্যে একুশে বইমেলাকে বন্দী রাখার মত অপচয় কীভাবে বন্ধ করার যায়- এ নিয়ে আমাদের গভীরভাবে ভেবে দেখা দরকার। সত্যের এই পরিণতি মনে রাখাটা খুবই জরুরী- যে সাধনার অগতি বন্ধ্যত্ব আনে, সেই বন্ধ্যত্বের মাঝেই স্বকীয়তা, স্বাতন্ত্র্য, আত্মমর্যাদা ও আত্মপরিচয়ের বিনাশ ঘটে। আমাদের সচেতন থাকতে হবে যে, একটি জাতির নিজস্ব প্রতিভা ও সৃজনশীলতার চর্চাকে বিপথে পরিচালিত করার অপচেষ্টা নিয়ে সাম্রাজ্যবাদ সবসময় চটকদার কর্মসূচি আমাদের মাঝে হাজির করবে।
গত শতাব্দীর শেষভাগে, নিয়ন্ত্রিত শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চা বনাম মুক্ত ও স্বাধীনভাবে শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চার সুফলতা ও কুফলতা নিয়ে বিতর্কের এক রকম অবসান ঘটায় এখন দেশে দেশে মুক্ত ও স্বাধীন শিল্প ও সাহিত্যের চর্চার পক্ষেই জনমত গড়ে উঠেছে। কিন্তু, মুক্তচিন্তার প্রকাশের কারনে শাসক শ্রেণি বিব্রত হয় বলে শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চার ক্ষেত্রে কোথাও কোথাও নিয়ন্ত্রণ একেবারে উঠে যায় নি। সেন্সরশিপ আরোপ এবং গত কয়েক দশকে মুক্তচিন্তা চর্চাকারীদের উপর কট্টরপন্থীদের সশস্ত্র আক্রমণ ছাড়াও রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নানা বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ ও নিবর্তনমূলক আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ হতে দেখা যাচ্ছে। এসব প্রচেষ্টা শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিকাশের পথে বাধা। শত শত বছরের ইতিহাস এই সাক্ষ্য দেয় যে নতুন ও মুক্ত চিন্তার চর্চা ও সম্পৃক্ততা ছাড়া শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে গনমানুষের নান্দনিক অভিব্যক্তি বাধাহীন বিকাশ লাভ করে না। নিয়ন্ত্রিত বিকাশ যে বাস্তবে ঘটে না এবং অবশেষে বন্ধ্যত্ব ও স্থবিরতার কবলে পরে ধ্বংস হয়ে যায় এর ঐতিহাসিক প্রমাণ যেমন দুঃখজনক তেমনই বাস্তব।
কিন্তু, এটাও মনে রাখতে হবে যে মুক্ত, স্বাধীন ও প্রতিযোগিতামূলক শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চার নামে নৈরাজ্য একেবারেই কাম্য নয়। বলতে গেলে, দেখা যাচ্ছে যে সাহিত্য চর্চা ও প্রকাশনার ক্ষেত্রে দুধরনের প্রবণতা এই ক্ষেত্রটিকে দারুণ ক্ষতির সামনে দাড় করিয়েছে। কর্পোরেট পৃষ্ঠপোষকতা যতই মান বিচারে নিরপেক্ষতার কথা বলুক না কেন, বাস্তব কিন্তু তা বলে না। ফলে এমন একটি সুবিধাভোগী শিল্পী ও সাহিত্যিক চক্র তৈরি হচ্ছে যাদের তৈরি শিল্প-সাহিত্যের মান সম্পর্কে ক্রমাগতভাবে ভুল বার্তা দিয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে একটি গড় মানের মধ্যে আটকিয়ে রাখা হচ্ছে। ফলে প্রতিভাবান শিল্পী ও সাহিত্যিকদের মাঝে এমন একটা হতাশা তৈরি হচ্ছে যে তাদের হাত দিয়ে বাংলা শিল্প ও সংস্কৃতিতে যে উচ্চ স্তরের বিকাশ ঘটানো সম্ভব ছিল সেই পথ দুঃখজনকভাবে রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে যে ঘটনাটি ঘটছে, সেটাও খুব দুঃখজনক। একুশে বইমেলাকে কেন্দ্র করে এর উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্মে একদল শিক্ষানবিস লেখক নিজ খরচে বই প্রকাশ করে এবং তাঁর পক্ষে দল পাকিয়ে নিজেকে কবি-শিল্পী-সাহিত্যিক হিসেবে আত্মপ্রচারনায় লিপ্ত হচ্ছেন। এসব সাহিত্যকর্ম একেবারেই মানসম্পন্ন নয় ফলে প্রজন্ম বাংলা সাহিত্যের মান সম্পর্কে ভুল ধারণা প্রাপ্ত হচ্ছেন। অনুপ্রাণন আশা করে যে, শিল্পী, সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের মধ্যে মননশীল, সৃজনশীল ও মানসম্পন্ন শিল্প ও সাহিত্যের চর্চা ও সাধনার পক্ষে গভীর সচেতনতা নিয়ে একটি মুক্ত ও স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠবে।
সপ্তম বর্ষ প্রথম সংখ্যা
বুদ্ধদেব বলেছেন- জীবন দুঃখময়। কথাটা সর্বাংশে সত্য কিনা সংশয় রয়েছে মনে। তবে এটা সত্যি যে, বারে বারে দুঃখ আসে জীবনে। আসে বলতে মানুষ জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতে তার কামনা-বাসনার দ্বারা দুঃখকে ডেকে আনে। যদিও দুঃখকে কেউ চায় না। কিন্তু না চাইতেই মহাসমারোহে হানা দেয় জীবনে। কারণ, আলো-আঁধারের মত সুখ-দুঃখও হাত ধরাধরি করে চলে। তাই কোনমতেই দুঃখকে বাদ দিয়ে শুধু সুখ লাভ সম্ভব হয় না। কিন্তু মানুষ চায় সুখের বন্দরে নোঙ্গর গেড়ে জীবনটা কাটাতে। সেখানে পৌঁছতে গেলে দুঃখের পথ অতিক্রম করেই যেতে হয়। জীবনে দুঃখকে জয় করার মধ্যেই আছে পৌরুষ, আছে বীর্যবত্তা। তাই তাকে শক্তিধারণ করতে হয় দুঃখ জয় করার। “দুঃখ জয়ের গান” পাঠকের অন্তরে সেই প্রেরণা জোগাবে যাতে সে কর্ম-সাধনার মধ্য দিয়ে জীবনটাকে সঙ্গীতমুখর করে তুলতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।
পরিশেষে, বইটির পান্ডুলিপি পাঠ করে মূল্যবান মতামত দিয়েছেন বাংলা সাহিত্যের প্রভাষক নির্জন মজুমদার, কবি দেবী চিত্রলেখা মন্ডল, সাহিত্যিক অমল হালদার, কবি ড. অশোক মিস্ত্রী। তাদের সকলকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। সুস্মিতা ও শ্রেষ্ঠা আমার দুই মেয়ে নিরন্তর স্বপ্ন দেখে চলে কবে বাবার লেখা নতুন বই প্রকাশিত হবে। ওদের প্রেরণা আমার সব সময়ের পাথেয়। প্রথম উপন্যাস প্রকাশ-লগ্নে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। মুদ্রণজনিত ভুল-ত্রুটি পরিহারের যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। তারপরও অজ্ঞাতসারে কিছু প্রমাদ থেকেই যেতে পারে। সেজন্যে পাঠকের কাছে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি প্রত্যাশা করছি।
সন্তোষ কুমার শীল
শ্রীরামকাঠী, পিরোজপুর।
দুঃখ জয়ের গান
লেখক পরিচিতি :
হামীম ফারুক। পুরো নাম: গোলাম ফারুক হামীম। জন্ম: ২৪শে অক্টোবর, ১৯৬৩, ঢাকা। প্রথম তারুণ্যে কাজ করেছেন ইংরেজি পত্রিকা নিউ নেশন-এ। সাংবাদিকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করে এখন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন। মূলস্রোতের সাহিত্য পত্রিকাগুলোতে একটানা লিখেছেন ১৯৮৭ পর্যন্ত। মাঝখানে বিরতি দিয়ে পুনরায় আগমন প্রথম কবিতার বই ‘রোদ ও ক্রোধ, মাঝখানে সাঁকো’ দিয়ে। একটি ই-বুক আছে, ‘নক্ষত্রের চিরকূট’। এটি লেখকের তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ।
প্রকৃতি পুরাণ
ভূমিকা
বাংলাদেশের বিশিষ্ট কবি ও কথাসাহিত্যিক আনোয়ার হোসেন বাদল চিকিৎসার জন্যে কিছুদিন আগে দক্ষিণ ভারতের ভেলোর শহরে গিয়েছিলেন। সাথে ছিলেন তার আজীবন সহযাত্রী, সহযোদ্ধা আমাদের প্রিয় সুলতানা ভাবী। বাদল ভাই ভাবীর সাথে নানান জায়গার ছবি তুলছেন আর তাৎক্ষণিক অভিজ্ঞতা লিখে পোস্ট দিচ্ছেন। আমিও মজা করে কমেন্ট করে যাচ্ছি সেইসব পোস্টে। প্রথমদিকে সাদামাটা পোস্ট ভেবেই গভীরে তেমন ঢোকার চেষ্টা করিনি। কিন্তু সময় যতোই যেতে থাকে পোস্টগুলো আমাকে চুম্বকের মতো টানতে থাকে। একসময়ে অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে বাদল ভাইয়ের ভ্রমণবৃত্তান্তের অপেক্ষায় থাকি, কখন তিনি পোস্ট দিবেন, কখন সেই আখ্যানগুলো পড়বো। অবস্থা যখন এমন পর্যায়ে একদিন বলেই ফেললাম যে লেখাগুলোকে মলাটবদ্ধ করলে একটি ভালো বই হতে পারে। উপযাচক হয়ে এটাও বললাম যে যদি কখনো লেখাগুলো মলাটবদ্ধ হয় আমিই লিখবো এর মুখবন্ধ।
বলেতো দিয়েছি কিন্তু তখন কি আর জানতাম যে এই গুরুদায়িত্ব আমার ঘাড়েই চাপবে! সেদিন হঠাৎই বাদল ভাইয়ের ফোন, ‘কমরেড, ভারতে কয়েকদিন নামের বইটি আসছে আগামী বইমেলায়। ভূমিকা কিন্তু আপনাকেই লিখতে হবে।’ আমিতো সপ্তম আসমান থেকে পড়লাম একেবারে জমিতে।
যাইহোক, সচরাচর ভ্রমণকাহিনী বলতে আমরা যা বুঝি আনোয়ার হোসেন বাদল এর ‘ভারতে কয়েকদিন’ সে অর্থে কিন্তু কোনো ভ্রমণকাহিনী নয়। বরং এটি হচ্ছে সাদা চোখে দেখা সাদামাটা অভিজ্ঞতার এক নির্মোহ বিবরণ, কিছু জানা কথা, কিছু অজানা তথ্যের প্রকাশ।
বইটি এমন সহজ-সরল ভাষায় লিখিত যে—পড়ার সময় মনে হতে পারে পাঠক বই পড়ছেন না বরং লেখকের সাথে সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ভারতের নানান শহর। নিজের চোখেই পাঠক দেখছেন ভারতের ইতিহাস-ঐতিহ্য, স্থাপনা আর বিচিত্র প্রকৃতি।
আলোচ্য বইটিতে পাঠকের পরিচয় ঘটবে ভারতের ঐতিহাসিক শহর কোলকাতা, তৃতীয় বৃহত্তম শহর দক্ষিণ ভারতের চেন্নাই আর ভেলোরের ইতিহাস-ঐতিহ্য, শিল্পসংস্কৃতি ও স্থাপত্যকর্মের সাথে।
বইটি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক অমরকীর্তি হিসেবে স্বীকৃত হবে বলে আমার বিশ্বাস।
কবি হানিফ মোহাম্মদ
তালেপুর, কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা।
ভারতে কয়েকদিন
কামরুজ্জামান কাজল বয়সে অনেক নবীন হওয়া সত্ত্বেও [জন্ম ২৫ মার্চ ১৯৯১] এবং অণুগল্প চর্চায় খুব বেশিদিন অতিবাহিত না করলেও ‘দলছুট শালিকগণ’ নামে যে বইটি প্রকাশিত হল;-এর বৈচিত্র্যপুর্ণ বিষয়বস্তু এবং অণুগল্প সম্পর্কিত ধারণার সাথে লেখকের যে নিবিড় ঐক্য স্থাপিত হয়েছে- বইটির পাঠশেষে এই কথাটাই মনে করবেন বিজ্ঞপাঠকগণ।
পাবনার ঈশ্বরদী থেকে আসা এই যুবকের ইতিপুর্বে ‘ শ্যাম পাহাড়ের আড়ালে’ নামে একটি কাব্যগ্রন্থও প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৬’র একুশে বইমেলায়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এগ্রিকালচারে স্নাতক শেষ করে লেখক বর্তমানে শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্তিকা বিজ্ঞানে মাস্টার্স করছেন।
‘দলছুট শালিকগণ’ কামরুজ্জামান কাজলের প্রথম অণুগল্পগ্রন্থ। অণুগল্পের ভিত্তি, বিকাশ এবং প্রচারে এই বইটি একটি মাইলফলক হিসেবে ভবিষ্যতে উচ্চারিত হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।
দলছুট শালিকগন
পৃথিবীর একমাত্র পতাকা যার একটি নাম রয়েছে: ইউনিয়ন জ্যাক। এটি লেখকের দ্বিতীয় দেশ, বিলেতের। তাঁর পঞ্চাশ বছর বয়সে ঐ দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। বৈধভাবে তাঁকে নাগরিকত্ব দিয়েছিল বিলেতের কর্তৃপক্ষ।
প্রায় আড়াইশ বছর আগের এক জুন মাসে ওদের পূর্বপুরুষেরা লেখকের জন্মভূমি অধিকার করে নিয়েছিল অবৈধভাবে। ঐ দ্বন্দ্ব ও লেখকের ভেতরে প্রবহমান দুটো সংস্কৃতির সংঘাত ও সম্মীলন এ বইটি: ইউনিয়ন জ্যাক ও জুন ট্র্যাজেডি। আশা করা যায় দুটো সংস্কৃতির মিথষ্ক্রিয়া উপভোগ করবেন বইটির পাঠকগণ।
ইউনিয়ন জ্যাক ও জুন ট্র্যাজেডি - Union Jack O June Tragedy
সত্যি কথা বলতে গেলে রূঢ় এবং অসঙ্গত শোনাবে। তারপরও সত্য কখনো মূল্য হারায়না, সেই বিশ্বাসেই বলছি- যে অনুর্বর সামাজিক বলয়ে জন্ম থেকে বেড়ে ওঠা, সাহিত্য সৃষ্টির মত মহান ব্রত সেখানে স্বপ্নেরও অগোচর। তবু সেই স্বপ্ন আমায় দুঃসাহসী করে তুলল। সাধারণের উপহাস তুচ্ছ জ্ঞান করে দুঃস্বপ্নের হাতছানি ভরা পথে চলতে গিয়ে কখন যেন এই দুর্গম পথের পথিক হয়ে উঠি। পথ ভালবেসে চলায় ছন্দ আসে। অন্তরের গভীরে নিভৃত এক সংকল্প জাগে- “সৃষ্টিশীলতায় নিমগ্ন হয়ে থাকাই আমার সাধনা। এর মধ্যে দিয়েই আমি জগৎ, জীবন এবং পরমেশ্বরের আনন্দ উপলব্ধি করার চেষ্টা করব।’’ একনিষ্ঠা ধরে রাখতে পারিনি- হয়তো দৃঢ় মনোবলের অভাবে কিন্তু পথভ্রষ্ট হবার ভয়কে জয় করেছি। জীবনে এর চেয়ে উৎকৃষ্ট কোন কাজের সন্ধান জানা নেই। তাই সাহিত্য সাধনাই আমার একমাত্র সুন্দরের উপাসনা। তার ধারাবাহিকতায় “রবীন্দ্রনাথের বাবা স্বপ্ন দেখেছিলেন’’ ষষ্ঠ গল্প সঙ্কলন হিসেবে গ্রন্থিত হয়ে আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে। লেখক মাত্রই পাঠক প্রিয়তার প্রত্যাশা করেন। আত্মপ্রকাশের ক্ষেত্রে শঙ্কিত এ দূরাশা রইলই আগামীকালের জন্য।
পরিশেষে একথাটুকু না বললে বোধকরি সত্যের অপলাপ হবে- এই বন্ধুর পথ একেবারেই সঙ্গীবিহীন ছিল না। বন্ধু হয়ে, প্রেরণা হয়ে কেউ কেউ এসেছে মনের কাছে। ধন্যবাদ জানিয়ে তাদের ছোট করার স্পর্ধা আমার নেই। প্রতিনিয়ত পরামর্শ দিয়ে কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ করেছেন শ্রদ্ধাষ্পদ ড. অশোক মিস্ত্রী। প্রকাশনার কাজে সহধর্মীনী শ্রীমতি জয়া বিশ্বাস-এর সহযোগিতা না থাকলে বই প্রকাশ দুরূহ হত। ভুল-ভ্রান্তি যথা সম্ভব পরিহারের চেষ্টা সত্ত্বেও অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টি কামনা করছি।
রবীন্দ্রনাথের বাবা স্বপ্ন দেখেছিলেন
মানুষের কখন যে কী হয়―তা হিসাব করে কেউ কখনো বলতে পারে না! হঠাৎ করেই মানুষ অন্যরকম হয়ে ওঠে। এই যে শফিকের সঙ্গে একই অফিসে কতদিন একসঙ্গে সকাল-সন্ধ্যা কাজ করেছে নমিতা―কোনোদিন তাকে এত মনোযোগ দিয়ে দেখেনি শফিক। কিন্তু আজ যে তার কী হলো!
নমিতা আজ খুব সুন্দরভাবে একটা শাড়ি পরে অফিসে এলো। আর আজই শফিকের খুব ভালো লেগে গেল নমিতাকে। তাই, অফিস-ছুটির পর সে তাকে রেস্টুরেন্টে চা-কফির আমন্ত্রণ জানায়। কিন্তু নমিতা তাকে জানালো, আজ তার হাতে একদম সময় নেই। আজ তাকে পাত্রপক্ষ দেখতে আসবে বাসায়। আর তাকে, তাদের পছন্দ হলে আজই বিয়ে হয়ে যেতে পারে!
নমিতা একরকম বাধ্য হয়ে চলে যায় শফিককে পাশ কাটিয়ে। কিন্তু শফিকের খুব মনখারাপ হয়। আর বাসায় ফিরতে ইচ্ছে করে না তার। মনটা তার ভীষণ উতলা হয়ে ওঠে নমিতার জন্য। সে একমুহূর্তে কেমন যেন হয়ে যায়! নমিতাকে কিছুতেই সে ভুলতে পারে না।
সে নমিতাকে খুব ভালোবেসে ফেলেছে। আর ভাবে―নমিতাকে ছাড়া তার চলবে না। আজ নমিতাকে খুব ভালো লেগেছে তার। ভাবতে-ভাবতে নমিতার জন্য শফিক যেন একেবারে পাগল হয়ে যায়! কিন্তু নমিতার যে আজই বিয়ে হয়ে যেতে পারে!
শফিক রাস্তায় হাঁটতে থাকে উদভ্রান্তের মতো। সে কি আজ বাসায় ফিরতে পারবে? শেষ পর্যন্ত কী হয়েছিল―তা জানতে হলে পড়তে হবে এই অনবদ্য একটি বালিকার গল্প।
এটি ১০০% রোম্যান্টিক প্রণয়োপাখ্যান।
একটি বালিকার জন্য
লেখক পরিচিতি :
তানভীর আহমেদ হৃদয়। জন্ম: ৩ডিসেম্বর, ১৯৮৫ইং। মুন্সিগঞ্জ, বিক্রমপুর। প্রকাশিত গ্রন্থের তালিকায় আছে কবিতা, গল্প, উপন্যাস, ছড়া। এছাড়া সম্পাদিত গ্রন্থের তালিকায় আছে কবিতা ও গল্প। লেখকের লেখা প্রতিনিয়ত দেশে ও বিদেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে।
অচেনা রৌদ্রের রঙ
নাম : সৈয়দ ইলিয়াস আখতার ফারুকী
লেখালেখি যে নামে : ইলিয়াস ফারুকী
জন্ম : ১৯/০১/১৯৫৯ইং
জেলার নাম : চাঁদপুর সদর
লেখালেখি শুরু : ১৯৭৬ইং সাল থেকে
লেখার ধরন : কবিতা, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, গান
প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা : সাতটি
আরশি (কবিতা) ২০১৬ইং
মঞ্জুরিত যতিপাত (কবিতা) ২০১৮ইং
ভালোবাসার জন্য (ছোটগল্প) ২০১৮ইং
ভালোবাসার নানান রঙ (ছোটগল্প) ২০১৯ইং
নীলপদ্ম (ছোটগল্প) ২০১৯ইং
রোদ বিকেলের ছায়া (ছোটগল্প) ২০২০ইং
শিমুলের যত রঙ (কবিতা) ২০২০ইং
ছয়টি গানের অডিও সিডি জিগীষা পরস্কারপ্রাপ্তি : ব্রিলিয়ান্ট সোসাইটি কর্তৃক ছোটগল্পের জন্য ‘নজরুল সম্মাননা’ ২০১৮ইং
সভাপতি, জিগীষা সাহিত্য ও গবেষণা পরিষদ। নয়াপল্টন (বালুর মাঠ), ঢাকা
শিক্ষাগত যোগ্যতা : এমএসসি (ভূগোল) ঢাকা বিশ্ববদ্যিালয়, এমবিএ (বিপণন) ‚
ইবাইস বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
সংসার জীবন : মা, স্ত্রী ও দই পুত্র
বর্তমান ঠিকানা : ৩৯৭ পূর্ব গোড়ান,
খিঁলগাও,
ঢাকা।
পেশা : জাতীয় বিক্রয় ব্যবস্থাপক, জেনিথ ফার্মাসিউটিক্যালস লি.
ঢাকা।
মোবাইল : ০১৭১৫-১৪৮৫৯৯
অনেকগুলো মানুষ
Get access to your Orders, Wishlist and Recommendations.
There are no reviews yet.