Additional information
Weight | 0.200 kg |
---|---|
Published Year |
$ 1.41 $ 1.88
ভূমিকা
‘ভাঙনের ডাক’ উপন্যাসটি ভাঙন কবলিত গ্রাম বাংলার প্রতিচ্ছবি। উপন্যাসটিতে গ্রামের কৃষক জীবন, সবুজে ঢাকা গ্রাম নদী ভাঙনের ফলে কিভাবে তার সক্রিয়তা হারায়, সেই সাথে উঠে এসেছে ঐতিহাসিক একটি বাজারের বর্ণনা ও ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের আর্তনাদ।
‘ভাঙনের ডাক’ উপন্যাস নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রম বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। এখানে গ্রাম্য বধূর সবিস্তার কাহিনী সরলার চরিত্রের মাধ্যমে রূপায়িত হয়েছে। তাছাড়া করিম শেখ ও অন্তুর কাহিনীও এখানে প্রযুক্ত হতে দেখা যায়। বেজগাঁও গ্রামে রাজা রাজবল্লভের বাড়ি, দিঘলী বাজার, কদম পাগলের মাজার ঘিরে মেলা এখানে বর্ণিত হয়েছে।
‘ভাঙনের ডাক’ উপন্যাসে সত্যিকার অর্থেই ভাঙনের একটা সচিত্র ছড়িয়ে রয়েছে। এর মধ্যে আবেগ, কৌতূহল, স্বপ্ন আকস্মিকতা উৎকণ্ঠা বজায় রয়েছে। যা পাঠক সাধারণের মনকে একটা সন্মোহ সীমানায় ধরে রাখতে সক্ষম। তাছাড়া এই উপন্যাসে সমাজ মানসের কিছু বিশ্বস্ত চিত্রগাথা পরিস্ফুট উঠার সুযোগ পায়। যা শুধু এদেশীয় সংস্কৃতির আদলে গড়ে ওঠেছে। যেমন ভেলা ভাসানি, বৈশাখী মেলা, কদম পাগলের বার্ষিক মেলা, বৃষ্টি প্রার্থনার জন্য মেঘরানী উৎসব। সেই সাথে ফুটে উঠেছে একটি কৃষক পরিবারের অভাব-অনটন ও প্রকৃতির বৈরিতা। পদ্মার ভাঙন আর ঝড়ে নিঃস্ব হওয়া মানুষের আর্তনাদ, যা পাঠ করে অনাস্বাদিত জগতের উপমিত আস্বাদন করা সম্ভব।
Weight | 0.200 kg |
---|---|
Published Year |
কলকাতার স্মৃতিকথা
হামিম কামাল। জন্ম ১৯৮৭ সালের ৯ অগাস্ট, ঢাকায়। আহসানুল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তড়িৎ প্রকৌশলে স্নাতক।প্রকাশিত গ্রন্থ- জঠর (২০১৬), কারখানার বাঁশি (২০১৮)।
জঠর
ভূমিকা
বাংলাদেশের বিশিষ্ট কবি ও কথাসাহিত্যিক আনোয়ার হোসেন বাদল চিকিৎসার জন্যে কিছুদিন আগে দক্ষিণ ভারতের ভেলোর শহরে গিয়েছিলেন। সাথে ছিলেন তার আজীবন সহযাত্রী, সহযোদ্ধা আমাদের প্রিয় সুলতানা ভাবী। বাদল ভাই ভাবীর সাথে নানান জায়গার ছবি তুলছেন আর তাৎক্ষণিক অভিজ্ঞতা লিখে পোস্ট দিচ্ছেন। আমিও মজা করে কমেন্ট করে যাচ্ছি সেইসব পোস্টে। প্রথমদিকে সাদামাটা পোস্ট ভেবেই গভীরে তেমন ঢোকার চেষ্টা করিনি। কিন্তু সময় যতোই যেতে থাকে পোস্টগুলো আমাকে চুম্বকের মতো টানতে থাকে। একসময়ে অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে বাদল ভাইয়ের ভ্রমণবৃত্তান্তের অপেক্ষায় থাকি, কখন তিনি পোস্ট দিবেন, কখন সেই আখ্যানগুলো পড়বো। অবস্থা যখন এমন পর্যায়ে একদিন বলেই ফেললাম যে লেখাগুলোকে মলাটবদ্ধ করলে একটি ভালো বই হতে পারে। উপযাচক হয়ে এটাও বললাম যে যদি কখনো লেখাগুলো মলাটবদ্ধ হয় আমিই লিখবো এর মুখবন্ধ।
বলেতো দিয়েছি কিন্তু তখন কি আর জানতাম যে এই গুরুদায়িত্ব আমার ঘাড়েই চাপবে! সেদিন হঠাৎই বাদল ভাইয়ের ফোন, ‘কমরেড, ভারতে কয়েকদিন নামের বইটি আসছে আগামী বইমেলায়। ভূমিকা কিন্তু আপনাকেই লিখতে হবে।’ আমিতো সপ্তম আসমান থেকে পড়লাম একেবারে জমিতে।
যাইহোক, সচরাচর ভ্রমণকাহিনী বলতে আমরা যা বুঝি আনোয়ার হোসেন বাদল এর ‘ভারতে কয়েকদিন’ সে অর্থে কিন্তু কোনো ভ্রমণকাহিনী নয়। বরং এটি হচ্ছে সাদা চোখে দেখা সাদামাটা অভিজ্ঞতার এক নির্মোহ বিবরণ, কিছু জানা কথা, কিছু অজানা তথ্যের প্রকাশ।
বইটি এমন সহজ-সরল ভাষায় লিখিত যে—পড়ার সময় মনে হতে পারে পাঠক বই পড়ছেন না বরং লেখকের সাথে সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ভারতের নানান শহর। নিজের চোখেই পাঠক দেখছেন ভারতের ইতিহাস-ঐতিহ্য, স্থাপনা আর বিচিত্র প্রকৃতি।
আলোচ্য বইটিতে পাঠকের পরিচয় ঘটবে ভারতের ঐতিহাসিক শহর কোলকাতা, তৃতীয় বৃহত্তম শহর দক্ষিণ ভারতের চেন্নাই আর ভেলোরের ইতিহাস-ঐতিহ্য, শিল্পসংস্কৃতি ও স্থাপত্যকর্মের সাথে।
বইটি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক অমরকীর্তি হিসেবে স্বীকৃত হবে বলে আমার বিশ্বাস।
কবি হানিফ মোহাম্মদ
তালেপুর, কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা।
ভারতে কয়েকদিন
কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর (১৯৬৩-২০১৫)। চিকিৎসা বিজ্ঞানে একাডেমিক পড়াশুনা করেন চট্টগ্রামে। লেখালেখি ছিল তার কাছে অফুরন্ত সর্ব আনন্দ ব্যাকুল এক জীবনপ্রবাহের নাম। কথাসাহিত্যের ছোটকাগজ ‘কথা’র সম্পাদক ছিলেন। তার অন্যান্য প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে স্বপ্নবাজি, পদ্মাপাড়ের দ্রৌপদী, গল্পের গল্প ইত্যাদি।
হৃদমাজার
মানুষের জীবন তো গল্পময়। গল্প ছাড়া জীবন হয় না। কেউ সে গল্প অপরকে শুনিয়ে তৃপ্তি পায়। কেউ নিজের মধ্যে গল্প পুষে রেখে জীবনকে ভোগ করে। কোনো একজনকে গল্প শুনাতে ইচ্ছে ছিল। সে গল্পের মধ্যে ডুব দেওয়া আর হয়নি। সে গল্পটা সামনাসামনি শুনাতেও পারিনি ।
তবে শুরুটা করেছিলাম গল্প শোনানোর জন্য, সেই শুরুটা নেশাতে পরিণত হয়ে গেছে। সেই কোনো একজন তো চোখের আড়ালে থাকে, মনের আড়াল হয়নি। তাই গল্প শুনাই আড়ালে-আবডালে- অন্তরালে।
গল্পের কথা বলার কারণ, আমি আসলে গল্পই লিখি। লিখতে লিখতে গল্পটি উপন্যাসে রূপ নেবে কিনা, সেটাও আমার জানা নেই। উপন্যাস তো বৃহৎ পরিসরের বিষয়। তাই এক্ষেত্রে আমি শিশুই। একটি কথা জোর দিয়েই বলতে পারি, অভিজ্ঞতার বাইরে আমি লিখতে পারি না। যেভাবেই হোক অভিজ্ঞতাটা তার জায়গা দখল করে নেয়। অর্থাৎ বলতে চাচ্ছি, বাস্তবতার বাইরে আমার লেখাতে কাল্পনিক বলে কিছু নেই। যদি আগেই বুঝতাম গল্প দিয়ে জীবন চলে তাহলে হয়তো লিখতাম ঘণ্টার পর ঘণ্টা, আষাঢ়ে বৃষ্টি পড়ার মত।
আমার গল্প প্রকাশ হবে, ছড়িয়ে যাবে, এমন ভাবনা মাথায় ছিল না। শিল্প-সাহিত্যের ত্রৈমাসিক ‘অনুপ্রাণন’ গল্প প্রকাশের মধ্য দিয়ে আমার চেতনাকে জাগ্রত করে দিয়েছে। গল্প লিখতে লিখতে তিনটি উপন্যাসও লিখে ফেলেছি।
“স্বপ্ন জলে জ্যোৎস্না” তৃতীয় উপন্যাস। পাণ্ডুলিপি পাঠিয়ে বিমুখ হইনি। বরং বুকভরা আনন্দ পেয়েছি। কৃতজ্ঞতা জানাই অনুপ্রাণন প্রকাশকের স্বত্বাধিকারী শ্রদ্ধেয় আবু এম ইউসুফ ভাইকে।
মফস্বলে থেকে লেখক হয়ে, বই প্রকাশ করা বড়ই কঠিন কাজ। অথচ সেই কঠিন কাজটা অনেক অনেক সহজ করে দিয়েছে অনুপ্রাণন প্রকাশন। আবারও অসংখ্য ধন্যবাদসহ ও কৃতজ্ঞতা জানাই অনুপ্রাণন প্রকাশনের সাথে জড়িতে সকলকে।
স্বপ্ন জলে জ্যোৎস্না
জন্ম ২৩ নভেম্বর, গোপালগঞ্জ জেলায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতকোত্তর শেষে বর্তমানে একটি বেসরকারি কলেজের অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত। শৈশব থেকেই লেখলেখিতে আগ্রহী। প্রথম প্রকাশিত বই ‘চাঁদ চোয়ানো জোৎস্নায় ফিরে এসো নদীবতী মেয়ে’।
তোমার জন্য মেয়ে
বুদ্ধদেব বলেছেন- জীবন দুঃখময়। কথাটা সর্বাংশে সত্য কিনা সংশয় রয়েছে মনে। তবে এটা সত্যি যে, বারে বারে দুঃখ আসে জীবনে। আসে বলতে মানুষ জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতে তার কামনা-বাসনার দ্বারা দুঃখকে ডেকে আনে। যদিও দুঃখকে কেউ চায় না। কিন্তু না চাইতেই মহাসমারোহে হানা দেয় জীবনে। কারণ, আলো-আঁধারের মত সুখ-দুঃখও হাত ধরাধরি করে চলে। তাই কোনমতেই দুঃখকে বাদ দিয়ে শুধু সুখ লাভ সম্ভব হয় না। কিন্তু মানুষ চায় সুখের বন্দরে নোঙ্গর গেড়ে জীবনটা কাটাতে। সেখানে পৌঁছতে গেলে দুঃখের পথ অতিক্রম করেই যেতে হয়। জীবনে দুঃখকে জয় করার মধ্যেই আছে পৌরুষ, আছে বীর্যবত্তা। তাই তাকে শক্তিধারণ করতে হয় দুঃখ জয় করার। “দুঃখ জয়ের গান” পাঠকের অন্তরে সেই প্রেরণা জোগাবে যাতে সে কর্ম-সাধনার মধ্য দিয়ে জীবনটাকে সঙ্গীতমুখর করে তুলতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।
পরিশেষে, বইটির পান্ডুলিপি পাঠ করে মূল্যবান মতামত দিয়েছেন বাংলা সাহিত্যের প্রভাষক নির্জন মজুমদার, কবি দেবী চিত্রলেখা মন্ডল, সাহিত্যিক অমল হালদার, কবি ড. অশোক মিস্ত্রী। তাদের সকলকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। সুস্মিতা ও শ্রেষ্ঠা আমার দুই মেয়ে নিরন্তর স্বপ্ন দেখে চলে কবে বাবার লেখা নতুন বই প্রকাশিত হবে। ওদের প্রেরণা আমার সব সময়ের পাথেয়। প্রথম উপন্যাস প্রকাশ-লগ্নে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। মুদ্রণজনিত ভুল-ত্রুটি পরিহারের যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। তারপরও অজ্ঞাতসারে কিছু প্রমাদ থেকেই যেতে পারে। সেজন্যে পাঠকের কাছে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি প্রত্যাশা করছি।
সন্তোষ কুমার শীল
শ্রীরামকাঠী, পিরোজপুর।
দুঃখ জয়ের গান
হুমায়ুন কবির।
জন্ম ১৯৫৯ সালে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার দেউটি গ্রামে। বাবা জালাল আহমেদ ও মা জফুরা বেগম। লেখালেখির শুরু ছাত্রাবস্থায়। মাঝে দীর্ঘ বিরতি। আবারও ফিরে এসেছেন লেখালেখিতে। কবিতা, উপন্যাস, গল্পগ্রন্হসহ তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা আটটি। ইতোপূর্বে প্রকাশিত তার উপন্যাস ‘ কানফুল, আনছার আলীর গৃহত্যাগ এবং কবিতা অন্তহীন দীর্ঘশ্বাস পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে। সাহিত্যকর্মে অবদানের জন্য জিগীষা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ তাকে জিগীষা সাহিত্য সম্মাননা -২০১৯ প্রদান করেছে।
সাবেক সরকারি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বর্তমানে দৈনিক বাংলার সাহিত্য সম্পাদক। তিনি সালমা ফৌজিয়া সুমি, ডা. শারমিন ফৌজিয়া ও সাইফুল কবির সোয়েবের বাবা। স্ত্রী নাজমুন নাহার লক্ষ্মী গৃহিণী।
প্রকাশিত বই সমুহঃ-
কবিতা-
আমি তাকে ফিরছি খুঁজে
অন্তহীন দীর্ঘশ্বাস
উপন্যাস-
দায়
কানফুল
মেঘনাপারের শেফালী
আনছার আলীর গৃহত্যাগ
গল্পগ্রন্থ-
শাহজাদী উপাখ্যান
আমিও ডিকশনারি দেখেছি কিন্তু পাইনি।
জ্বিনকন্যা নার্গিসের প্রেম
একাত্তরের কথকতা
শৌখিন ফটোগ্রাফার শুভ্র। তার পৃথিবী মমতাহীন শূন্যতায় ভরা। একে একে কাছের মানুষদের প্রস্থান তার জীবনকে ক্যামেরার ক্লিকের সাথে বন্দি করে ফেলে। এক সময় তার নিঃসঙ্গ জীবনে আসে দুঃখ ভাগ করে নেওয়ায় আগ্রহী মানুষেরা। হয়তো তারা একই মানুষ। ভিন্ন তাদের নাম। তারা সেতু-ঋতু-রূপা অথবা স্বাতী। যারা শুভ্রর মনস্তাত্ত্বিক ভাবনা-যৌন বিশ্বাস-উড়ন্ত নেশা ও বিপন্ন ক্ষতের সাথে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় জড়িয়ে যায়। অথবা তারা কেউ না। শুধু শুভ্র। শুধু নিঃসঙ্গ একজন মানুষ। নিজস্বতায় নিমগ্ন। যে ক্রমশ ঢুকে যায় অচেনা এক জগতে! নিষিদ্ধ ভাষা ও চিঠির ভাঁজে…
গুহা
জহিরুল হক বাপি। জন্ম ১৯৭৯ সালে নোয়াখালির এক মফস্বলী ঝড়ো সন্ধ্যায়।
চলচ্চিত্র শিক্ষায় স্নাতক। ব্লগার ও গণজাগরণ কর্মী।
লেখকের প্রকাশিত অন্যান্য বই:
ঈস্রাফীলের শিঙ্গা বাজছে (উপন্যাস)
শোকগাথা’৭১ (উপন্যাস)
আমি আমাকে খেয়ে বেঁচে আছি (কবিতা)
মাটির বাকসো লড়োচড়ো
অনুপ্রাণন ১১তম বর্ষ ১ম সংখ্যা- সম্পাদকীয়
শিল্প-সাহিত্যের ত্রৈমাসিক, অনুপ্রাণনের সূচনা সংখ্যা প্রকাশিত হয় নভেম্বর, ২০১২। এ-পর্যন্ত ৩২টি সংখ্যা প্রকাশ করে ত্রৈমাসিক অনুপ্রাণন ১০ টি বছর অতিক্রম করেছে। এ দশটি বছর অনুপ্রাণন’কে নানা চড়াই-উৎরাই পার হয়েই এগিয়ে যেতে হয়েছে। আজ একাদশ বর্ষের প্রথম সংখ্যাটি প্রকাশ করার মুহূর্তে পেছনের দশটি বছরের দিকে ফিরে স্মৃতিতে অনেক কিছুই ভেসে আসে। লেখক, পাঠক এবং সম্পাদনা পরিষদের সাথে ভাগ করে নেয়ার মতো অনেক কথাই হয়তো বলার থাকে, বলার ছিল। কেননা ১০ বছর তো কম সময় নয়। তবে, শিল্প-সাহিত্যের পত্রিকা অথবা লিটল ম্যাগ প্রকাশের ইতিহাসে প্রায় একই ধরনের ঘটনা হয়তো হর-হামেশাই ঘটে থাকে।
টেকসই সংগঠন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তি এবং সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে সম্পর্ক নির্মাণে পেশাদারিত্বের অভাব আমাদের সমাজের সব ক্ষেত্রেই বিদ্যমান। এখনো সেখানে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অহমবোধ প্রতিটি সংগঠনের ভিত কুরে কুরে খাচ্ছে। বাইরের থেকে যেটা দেখা যায় সেটা ঠিক ভেতরের চিত্র না। আর তাছাড়া অর্থনীতির বিষয়টা তো আছেই। আর সেটার গুরুত্ব অনুধাবন করার ঘাটতি আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বত্রই বিদ্যমান। আমাদের দেশের শিল্প-সাহিত্য এবং সংস্কৃতির জগতে সাধারণভাবেই অর্থের সংকট রয়েছে। সাধারণভাবেই বলা যায় যে, শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির সমৃদ্ধির গুরুত্ব আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্র এখনো যথার্থভাবে বুঝতে ব্যর্থ। ভাবা হচ্ছে ভৌত কাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়নের মধ্য দিয়ে উন্নতির চাকা ঘুরলে দেশের উন্নয়ন হবে। কিন্তু আমরা জানি উন্নত সভ্যতা মানেই হচ্ছে উন্নত শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতি।
তাই, অনুপ্রাণন যেসব সাংগঠনিক সমস্যা মোকাবেলা করে টিকে আছে সেসবের সাথে অন্যান্য শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য বা ব্যতিক্রম হয়তো নির্মাণ করা যায়নি। কেননা আমরা শেষ পর্যন্ত, এদেশের প্রকৃতি ও মনুষ্যসমাজেরই অঙ্গ। দেশের সমাজ, অর্থনীতি, রাজনীতি- এসবের সংকট ও সম্ভাবনা থেকে অনুপ্রাণন বিচ্ছিন্ন কোনো দ্বীপ তো নয়।
এটা ঠিক অনুপ্রাণন পত্রিকাটিকে ঘিরে এই দশ বছরে লেখক-পাঠক ও সুভানুধ্যায়ীদের একটি বৃত্ত তৈরি হয়েছে। এই বৃত্ত কোনো বিশেষ সীমানা রেখা দিয়ে ঘেরা কোনো বৃত্ত না। এই বৃত্ত শিল্প-সাহিত্যের মুক্ত চর্চার মতোই উন্মুক্ত। অনুপ্রাণন মুক্ত চিন্তার চর্চাকেই সবসময় সমর্থন করেছে, অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করেছে। আর অনুপ্রাণন চেষ্টা করেছে এদেশের তরুণরা যেন বেশী বেশী করে বই পড়া আর শিল্প-সাহিত্যের চর্চায় আগ্রহী হয়ে উঠে। সারাদেশ জুড়ে অনুপ্রাণনকে ঘিরে আছে একদল তরুণ-তরুণী, যারা নিয়মিত শিল্প-সাহিত্য চর্চার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। তারাই অনুপ্রাণনের প্রাণশক্তি। যাদের সাথে অনুপ্রাণনের সম্পর্ক হয়ে উঠেছে স্বাভাবিক সৌহার্দের। একে আরেকের পরিপূরক।
দশ বছর নিয়মিত বিভাগ নিয়ে ছাপার সংস্করণ আকারে অনুপ্রাণন পত্রিকাটি প্রকাশ করার পথে লেখক ও পাঠকদের কাছ থেকে ক্রমেই দুটি দাবী জোরালো হয়ে উঠেছে। প্রথমটি হচ্ছে, অনুপ্রাণনের একটি অন্তর্জাল সংস্করণ প্রকাশ করা। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে ত্রৈমাসিক অনুপ্রাণনের মুদ্রিত সংস্করণে সাহিত্য ও শিল্পের বিশেষ ধারা, ধরন অথবা বিষয়ভিত্তিক বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করা।
ইতোমধ্যেই গত ৯ ফেব্রুয়ারি অনুপ্রাণনের পক্ষ থেকে, শিল্প-সাহিত্যের অন্তর্জাল, অনুপ্রাণনের সূচনা সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে। অন্তর্জালভিত্তিক এই সংখ্যাটিতে থাকছে ২০ টি বিভাগ। যথাক্রমে- শ্রদ্ধাস্মরণ, স্মৃতিচারণ, প্রবন্ধ, অনুবাদ প্রবন্ধ, গুচ্ছ কবিতা, যুগল কবিতা, একক কবিতা, অনুবাদ কবিতা, বড়ো গল্প, ছোট গল্প, অণুগল্প, অনুবাদ গল্প, মুক্তগদ্য, ভ্রমণকাহিনী, বই আলোচনা, ম্যাগ আলোচনা, পাঠ প্রতিক্রিয়া, চলচ্চিত্রকথা, ধারাবাহিক উপন্যাস, নাট্যকথা এবং শিল্প-সাহিত্য সংবাদ।
শিল্প-সাহিত্যের ত্রৈমাসিক, অনুপ্রাণন ইতিমধ্যে অনিয়মিতভাবে ৬ টি বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করেছে। সেগুলো হচ্ছে, (১) তৃতীয় বর্ষ চতুর্থ সংখ্যা- প্রিয় উপন্যাস সংখ্যা; (২) অষ্টম বর্ষ প্রথম সংখ্যা- গল্প সংখ্যা; (৩) অষ্টম বর্ষ তৃতীয় সংখা- অণুগল্প সংখ্যা; (৪) অষ্টম বর্ষ চতুর্থ সংখ্যা- কুহক মাহমুদ স্মৃতি সংখ্যা; (৫) নবম বর্ষ দ্বিতীয় সংখ্যা- কবি ও কবিতা সংখ্যা; এবং (৬) দশম বর্ষ তৃতীয় সংখ্যা- বাংলাদেশের ১৫টি সেরা গল্প- পাঠ ও আলোচনা সংখ্যা।
একাদশ বর্ষ প্রথম সংখ্যার মধ্য দিয়ে শিল্প-সাহিত্যের ত্রৈমাসিক, সকল মুদ্রিত সংস্করণে নিয়মিতভাবেই শুধুমাত্র দেশের শিল্প, সাহিত্য, ভাষা, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে আরো নিবিড়ভাবে তুলে ধরার জন্য বিশেষ ধরন, বিশেষ বিভাগ, বিশেষ ধারা অথবা বিশেষ বিষয় নিয়ে লেখা প্রকাশ করার সূচনা করতে চায়।
লেখক, পাঠক এবং অনুপ্রাণনের সম্পাদনা পরিষদের সেই চাওয়া থেকেই ত্রৈমাসিক অনুপ্রাণনের একাদশ বর্ষের প্রথম সংখ্যাটি নির্বাচিত কবি ও কবিতা সংখ্যা- প্রথম পর্ব হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে। এই সংখ্যাটিতে বাংলাদেশের ২৭ জন নির্বাচিত কবির জীবনী, প্রকাশনা, পুরস্কার ও সম্মাননা, উল্লেখযোগ্য কবিতা এবং আলোচনা প্রকাশিত হয়ছে। বাংলাদেশের নির্বাচিত প্রবীণ ও তরুণ কবিদের নিয়ে এই ধরনের লেখা ও আলোচনা নিয়ে আরো কয়েকটি পর্ব প্রকাশিত হবে বলে আমরা আশা করি।
বাংলাদেশের বিশিষ্ট কবিদের জীবনী ও সাহিত্য কর্ম নিয়ে শিল্প-সাহিত্যের ত্রৈমাসিকের কয়েকটি পর্বের এই আয়োজনগুলোর মধ্য দিয়ে আশা করি আমাদের দেশের তরুণ সমাজ বাংলাদেশের কবিদের কবিতার সাথে সুপরিচিত হবেন এবং আমাদের দেশের সম্মানিত এই কবিদের কবিতা নিয়ে আলাপ, আলোচনা এবং আড্ডার অনুষ্ঠানের আয়োজনের মধ্য দিয়ে দেশের শিল্প ও সাহিত্য চর্চার বৃত্তটিকে প্রসারিত করতে পারবেন।
অনুপ্রাণন ১১ম বর্ষ ১ম সংখ্যা
Get access to your Orders, Wishlist and Recommendations.
There are no reviews yet.