Description
মানুষ ভুল করে
অগোচরে নাড়ে পাপ
উন্মেষ রাখে তার
উপলব্ধির ছাপ।
মাসুলে মানুষ করে
সে ভুলের অনুতাপ;
অমানুষ অজুহাতে
ঢাকে গ্লানির উত্তাপ।
$ 0.56 $ 0.94
কিছু একটা বলাটাই যখন বাধ্যবাধকতাÑবাহুল্য এবং আপেক্ষিক বাতুলতা বাদ রাইখা মাহবুব লীলেন থাইকা ধার কইরা বলতে হয়Ñ ‘আনফিট মিসফিট হইয়া হামাগুড়ি দিয়া হাঁটি, আর রাত্তিরে ক্যালেন্ডারের পাতায় দাগ টাইনা চিক্কুর দিয়া কইÑ যাহ শালা বাঁইচা গেলাম আরও একটা দিন।’
এইটা বড়োবেশি জৈবিক বাঁচা
মানবিক বাঁচনের স্বপ্নও দেখি না বহুদিন
বড়ো তরাসে আছি
বড়ো বেশি চাইপা আছি, নিজের গলা নিজে।
মানুষ ভুল করে
অগোচরে নাড়ে পাপ
উন্মেষ রাখে তার
উপলব্ধির ছাপ।
মাসুলে মানুষ করে
সে ভুলের অনুতাপ;
অমানুষ অজুহাতে
ঢাকে গ্লানির উত্তাপ।
Weight | 0.67 kg |
---|---|
Published Year |
সিদ্দিক প্রামানিক। জন্ম: ২১শে আগস্ট ১৯৭৯, কুস্টিয়ার কুমারখালী থানার চরভবানীপুরগ্রামে। বাংলা সাহিত্যে মাস্টার্স শেষ করে বর্তমানে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন এবং বাম প্রগতিশীল সংগঠনের সক্রিয় সংগঠক ও সংস্কৃতকর্মী। প্রথম বই ‘হাঙরের সমুদ্রে মননশীল মাছ’।
উন্মাদের কনসার্ট
কামরুজ্জামান কাজল বয়সে অনেক নবীন হওয়া সত্ত্বেও [জন্ম ২৫ মার্চ ১৯৯১] এবং অণুগল্প চর্চায় খুব বেশিদিন অতিবাহিত না করলেও ‘দলছুট শালিকগণ’ নামে যে বইটি প্রকাশিত হল;-এর বৈচিত্র্যপুর্ণ বিষয়বস্তু এবং অণুগল্প সম্পর্কিত ধারণার সাথে লেখকের যে নিবিড় ঐক্য স্থাপিত হয়েছে- বইটির পাঠশেষে এই কথাটাই মনে করবেন বিজ্ঞপাঠকগণ।
পাবনার ঈশ্বরদী থেকে আসা এই যুবকের ইতিপুর্বে ‘ শ্যাম পাহাড়ের আড়ালে’ নামে একটি কাব্যগ্রন্থও প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৬’র একুশে বইমেলায়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এগ্রিকালচারে স্নাতক শেষ করে লেখক বর্তমানে শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্তিকা বিজ্ঞানে মাস্টার্স করছেন।
‘দলছুট শালিকগণ’ কামরুজ্জামান কাজলের প্রথম অণুগল্পগ্রন্থ। অণুগল্পের ভিত্তি, বিকাশ এবং প্রচারে এই বইটি একটি মাইলফলক হিসেবে ভবিষ্যতে উচ্চারিত হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।
দলছুট শালিকগন
সাঈদা মিমি। জন্ম ২৯ ফেব্রুয়ারী, ১৯৬৮। বরিশালে। পেশাগত দৈনিক সংবাদ প্রতিদিনের সাহিত্য সম্পাদক। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা পাঁচটি। শ্রাবন প্রকাশনী থেকে ২০০৮ এ প্রকাশিত হয় প্রথম কবিতার বই ‘সব নিয়ে গ্যাছে এক সময়ের লুটেরা বাতাস।’ দীর্ঘ বিরতির পর আগুনমুখা থেকে ‘ফারাও কুমারী’ Ñ২০১৪ সালে। বাংলার ই-বুক থেকে ই-বই ‘কীর্তনখোলা।’ -২০১৫ সালে। ২০১৬ তে অনুপ্রাণন থেকে কাব্যগ্রন্থ ‘একজন মৃতের ডায়েরী’ এবং কালজয়ী প্রকাশ থেকে ‘শুশুনিয়া পাহাড়’।
ঔরঙ্গজেবের নীল ঘোড়া
ভূমিকা
‘সীমান্তিনী’ আমার লেখা দীর্ঘ কবিতার মধ্যে অন্যতম। বারোটি কবিতা নিয়ে এই বইটি। কবিতায় প্রকাশ পেয়েছে প্রেমের পাশাপাশি পাহাড়ি সৌন্দর্য, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী গারো, হাজং প্রভৃতি আদিবাসীদের সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও তাদের জীবনধারা। পাহাড়ি নারীর সৌন্দর্য, বালুকণা, সমুদ্র, আঁকাবাঁকা-উঁচুনিচু পথের দৃশ্যও এই বইতে চিত্রিত হয়েছে। প্রতিটি কবিতার পাতা রাঙানো হয়েছে ভালোবাসার রঙে।
কিসিঞ্জার ভূঁইয়া
০১ সেপ্টেম্বর, ২০২০
সীমান্তিনী
কিরণ আকরামুল হক এর “অহেতুক মানুষ” বইয়ের কবিতাগুলি আমাকে পড়তে হয়েছে নানকারণে। প্রথম বই প্রকাশের পর দু’বছর বিরতি দিয়ে কবি নিজেকে প্রস্তুত করেছেন। কবিতার ভেতরের শিল্পকে বুঝতে চেষ্টা করেছেন। রূপক, উপমার সেলাই শিখেছেন। সাথে প্রগতিশীলতার চর্চা থাকায়, ‘অহেতুক মানুষ’ গ্রন্থের প্রায় প্রতিটি কবিতাই কবিতা হয়ে উঠেছে। সমকালীন চিন্তা, বিষয় ভাবনা, আর পরিমিত নির্বাচিত শব্দ-প্রয়োগে অহেতুক মানুষ গ্রন্থের কবিতাগুলিকে কবি কিরণ আকরামুল হক এর ভাবনার পরিণত বুনন বলা যায়। গ্রন্থখানার দারুণ পাঠকপ্রিয়তা আশা করছি।
-ফিরোজ আহমেদ
অহেতুক মানুষ
ডালিয়া চৌধুরী। তোলারাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্স মাস্টার্স শেষ করেছেন। কবিতার প্রতি ভালোবাসা থেকে কবিতা লেখার সূত্রপাত। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ, ‘অনুভবে সুখ’ ‘মেঘময় নিকুঞ্জে রধুন‘ ও ‘জলজ কামনা’।
নীল গোধূলি
তুহিন দাস, কবি ও লিটলম্যাগ কর্মী। জন্ম: ১১ জানুয়ারি ১৯৮৫, জল ও কবিতার শহর বরিশালে। ছোটবেলা থেকেই লেখালেখি শুরু করেন। প্রথম কবিতার শিরোনাম ‘সমাধিপৃষ্ঠা’। ২০০০ সালে ‘আরণ্যক’ সাহিত্যপত্র সম্পাদনা শুরু করেন। সম্পাদনার জন্যে ২০১১ সালে ‘চিহ্ন সন্মাননা’ পেয়েছেন। বর্তমানে ‘আরক’ পত্রিকা ও প্রকাশনায় কর্মরত আছেন। তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ছয়, ‘বনসাই প্রকল্পের মানুষ’ ‘অসুখময় দিনরাত্রি’ ‘বিষাদনীলঘোড়া’ ‘কাজল বিক্রেতার স্বপ্ন’ ‘বাগান সিরিজ’ ও ‘দূরের পাড়া কাছের বাড়ি’।
কাঠের মুখ
নাহিয়ান ফাহিম। জন্ম: ২৩শে মার্চ, ১৯৮৪। ময়মনসিংহ জেলা। ঢাকাতে বেড়ে ওঠা। মূলতঃ পাঠক, ফলতঃ লেখক। সাহিত্য পত্রিকা ‘জলমাঝি’র সম্পাদক। মার্কেংটিং বিভাগে স্নাতকোত্তর। পেশাগত জীবনে একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত। প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ভিনদুপুরের নোটবই’।
মধ্যবিত্ত কবিতা
সাঈদা মিমি। জন্ম: ২৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৮। বরিশালে। শৈশবের পুরোটাই এবং অর্ধেক কৈশোর কেটেছে পদ্মাপাড়ে, মানিকগঞ্জের ঘোনাপাড়া গ্রামে। লেখালেখির শুরু ছাত্রজীবনে। প্রথম প্রকাশিত হয় ইত্তেফাকে। ফ্রীল্যান্স সাংবাদিকতা, স্কুল মাস্টারিং, বায়িং হাউজের এডমিন, হাউজিং কোম্পানির এক্সিকিউটিভ ইত্যাদি বিচিত্র কর্মজীবন মেষে অতঃপর গৃহিণী। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘সব নিয়ে গেছে এক সময়ের লুটেরা বাতাস’ ‘ফারাও কুমারী’ ও ই-বুক ‘কীর্তনখোলা’।
একজন মৃতের ডাইরি
বিলাল হোসেন-
জন্ম: ১ জানুয়ারি, ১৯৭৪।
জন্মস্থান- মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার রাজারচর কাজিকান্দি গ্রামে।
প্রকাশিত বই-
১. কাব্যগ্রন্থ- বিরুপা’র শূঁড়িবাড়ি(২০১৪)
২. অণুগল্প সংকলন- পঞ্চাশ(২০১৫)
৩. মহাপ্রভু ও অন্যান্য অণুগল্প(২০১৬)
৪. কাব্যগ্রন্থ- একজ্বলাপঙক্তি(২০১৬)
স¤পাদিত বইসমূহ-
সেরা ১০০ অণুগল্প(২০১৫) (প্রিন্ট ভার্সন)
ই-বুক স¤পাদনা-
দেখবে এসো তিলের বাগান
অয়ন্ত ইমরুল। জন্ম: ১২ই এপ্রিল ১৯৮৭ইং, মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর থানার আজিমনগর গ্রামে। পদ্মা নদীর ভয়াল গ্রাসে শৈশবেই ঠিকানার পরিবর্তন ঘটে বর্তমানে সাভার আশুলিয়ায় বসবাসরত। এটি লেখকের প্রথম প্রকাশিত বই।
ছায়াসমুদ্র
রনক জামান। জন্ম:১৬ই ডেসেম্বর ১৯৯১, মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলায়। লেখালেখির হাতেখড়ি ছোটবেলাতেই কবিতার প্রতি মুগ্ধতা থেকেই তার প্রতি ভালোবাসা। এটাই কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ। এছাড়াও প্রকাশিত হয়েছে, যৌথ কবিতাগুচ্ছ ‘মায়ানগরীর বৃষ্টিকথন’, কবিতার ই-বুক ‘শরীর ছোঁয়া আঙুলগুলো’ এবং অনুবাদ উপন্যাস ‘ললিতা’।
ঘামগুলো সব শিশিরফোঁটা
লেখক পরিচিতি :
সরসিজ আলীম। জন্ম: ৩রা ভাদ্র ১৩৭৪, ১৭ই আগস্ট ১৯৬৭। ঢাকায় বসবাস। পেশা হিসেবে লেখালেখি প্রথম আগ্রহ। সম্পাদনা করছেন ‘ভনে’Ñ একটি গ্রন্থচিন্তার কাগজ। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থগুলো- ‘পাতাটি যতই মেজাজ দেখাক’ ‘একঝাঁক পাখি ডাকাডাকি’ ‘বাঙালি আর বাউল পরান থৈথৈ জল’ ‘ঝমঝমানো’ ও ‘ঘোড়দৌড়’।
কুমীরের ডিমবসতি
নাহিয়ান ফাহিম। জন্ম: ২৩শে মার্চ, ১৯৮৪। ময়মনসিংহ জেলা। ঢাকাতে বেড়ে ওঠা। মূলতঃ পাঠক, ফলতঃ লেখক। সাহিত্য পত্রিকা ‘জলমাঝি’র সম্পাদক। মার্কেংটিং বিভাগে স্নাতকোত্তর। পেশাগত জীবনে একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত। প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ভিনদুপুরের নোটবই’।
মধ্যবিত্ত কবিতা
লেখক পরিচিতিঃ
নিজেকে ঘটা করে পরিচয় করিয়ে কি লাভ । আমার এই উপন্যাস পছন্দ হলে এতেই আমার স্বার্থকতা। সবাই ভালবাসুক এই গল্পটা।সবাই ধারণ করুক এই বইটা।
এই পর্যন্ত বইয়ের সংখ্যা ৯টি
১) আমার মা(ভোরের শিশির প্রকাশন
২) বার্লিনে বন্ধুত্ব(ভোরের শিশির প্রকাশন)
৩) ভুতের স্বর্নতাবিজ( বেহুলা বাংলা প্রকাশন)
৪) অল্প কথার গল্প (দ্যুপ্রকাশন)
৫) লাভার্স পয়েন্ট (বেহুলা বাংলা)
৬)তিন প্রজন্মের কাব্য (ছায়ানীড়)
৭) দার্জিলিং কনফেশন (ছোট গল্প) অনুপ্রাণন
৮) উইনিং সেলস এন্ড মার্কেটিং (বেহুলা বাংলা)
৯) পূর্বজদের গুহায় বুদ্ধের দর্শন।(অনুপ্রাণন)
পূর্বজদের গুহায় বুদ্ধের দর্শন
“ছোট প্রাণ ছোট ব্যথা, ছোট দুঃখ ছোট কথা… অন্তরে অতৃপ্তি রবে সাঙ্গ করি মনে হবে শেষ হয়ে হইল না শেষ।।” -কথাগুলো ছোট গল্পের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে রবিন্দ্রনাথ তাঁর ‘বর্ষাযাপন’ কবিতায় বলেছিলেন।
ইংরেজি সাহিত্য অধ্যায়নের শুরুর দিকে পড়া জেমস জয়েসের অনবদ্য ছোট গল্প ‘এরাবি’। রবিন্দ্রনাথের কথার মতই গল্পের ছোট ছোট ব্যথাগুলো ছোট করে গভীর দাগ কেটে গিয়েছিল মনে। তখনও ভাবিনি কোনদিন এমন গল্প অনুবাদ করার সাহস করতে পারব। বেশ কয়েক বছর পর ছোট গল্পের প্রতি তীব্র টান আর অদ্ভুত এক তাড়নায় গল্প অনুবাদ শুরু করলাম প্রিয় গল্প ‘এরাবি’ দিয়ে। অতঃপর একে একে আরও অনেক বিদেশী ছোট গল্প যোগ হতে লাগল প্রিয় গল্পের তালিকায়। এর মধ্যে বিশ্ব বিখ্যাত ছোট গল্পকার মান্টো, প্যাট্রিক ওয়াডিংটন, কেইট শোপেন, শার্লি জ্যাকশন আর গারশিনের মত লেখকের কিছু গল্প মাতৃভাষায় রূপান্তরের লোভ সামলানো গেল না। চমৎকার ১১ টি গল্পের অনুবাদ নিয়েই তৈরি এই নির্বাচিত ভিনদেশী গল্প গ্রন্থ।
নির্বাচিত ভিনদেশী গল্প
মাতৃভাষা, সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয়
বিভিন্ন দেশ, জাতি ও সমাজের অস্তিত্ব ও আত্মপরিচয় মুছে দিয়ে চিরকালের জন্য নিজ শাসন ও শোষণের আওতায় নিয়ে আসার জন্য এক একটি জাতি ও উপজাতির নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতিকে আক্রমণ করে দুর্বল করে দিয়ে সুকৌশলে একক একটি ভাষা ও সংস্কৃতি জাতিতে জাতিতে চাপিয়ে দেয়া- সাম্রাজ্যবাদী শোষণ বিস্তারের প্রাথমিক পরিকল্পনারই একটি অপকৌশল। আধুনিক বিশ্বে বাঙ্গালীর জাতীয়তাবাদী চেতনা জাগ্রত করা ও বাংলাকে রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য ’৫২ এর ভাষা আন্দোলন আমাদের জাতীয় ইতিহাস ও ঐতিহ্যের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, যে অধ্যায়ের মধ্যে আমাদের ভাষা, সাহিত্য শুধু নয়, আমাদের সাংস্কৃতিক অস্তিত্ব এবং আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠা ও প্রসারের মহান সংগ্রামেরই ঐতিহাসিক সূত্রপাত। ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের স্মরণে প্রতিবছর ফেব্রুয়ারিতে অমর একুশে বইমেলা- বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে তথা বাঙালী চেতনাকে সম্প্রসারিত ও সুদৃঢ় করে তোলার কাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। আমাদের জাতীয় জীবনে অমর একুশে বইমেলার অপরিসীম ভূমিকাকে গুরুত্বের সাথে আমাদের অনুধাবন করতে হবে এবং এই বইমেলার গুণগত মান এমনভাবে পরিকল্পিত ও সুসংগঠিত করতে হবে যেন এর সুফল সারা বছর জুড়ে আমাদের জাতীয় জীবনে সফলভাবে কার্যকরী থাকে।
ভাষা, শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তির উৎকর্ষ সাধনের যে কোন প্রচেষ্টায় দেশের গণমানসের অন্তর্নিহিত শক্তিকে মানসম্পন্ন কাজে রূপান্তরিত করাটাই জরুরী। তাছাড়া, প্রতিনিয়ত নতুন চিন্তার উন্মেষ ঘটানো এবং সেসব নতুন নতুন চিন্তার বাস্তবায়ন একটি জাতির সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে সুদৃঢ়ভাবে সচল রাখতে এবং সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন মোকাবেলা করতে সবল ও সক্ষম করে তুলতে পারে। একুশে বইমেলাকে ঘিরে সেসব কাঙ্ক্ষিত রূপান্তর ঘটাতে আমরা কতটুকু সক্ষম হচ্ছি- এটাই আমাদের সামনে মূল প্রশ্ন। গণমানসের অনুবাদই প্রতিভার একমাত্র ধর্ম নয়। গনমানসের সংগঠনে সাংস্কৃতিক উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে উপযোগী রূপান্তর ঘটানোর প্রচেষ্টাই একুশে বইমেলার মতো এই বিরাট কর্মকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। কিন্তু, আমরা এই বিরাট কর্মযজ্ঞের মাঝে গনমানসের সংগঠনে রূপান্তর ঘটার মত সৃজনশীল কর্মসূচি গ্রহণ করতে দেখি না। আত্মকেন্দ্রিক পুনরাবৃত্তির মধ্যে একুশে বইমেলাকে বন্দী রাখার মত অপচয় কীভাবে বন্ধ করার যায়- এ নিয়ে আমাদের গভীরভাবে ভেবে দেখা দরকার। সত্যের এই পরিণতি মনে রাখাটা খুবই জরুরী- যে সাধনার অগতি বন্ধ্যত্ব আনে, সেই বন্ধ্যত্বের মাঝেই স্বকীয়তা, স্বাতন্ত্র্য, আত্মমর্যাদা ও আত্মপরিচয়ের বিনাশ ঘটে। আমাদের সচেতন থাকতে হবে যে, একটি জাতির নিজস্ব প্রতিভা ও সৃজনশীলতার চর্চাকে বিপথে পরিচালিত করার অপচেষ্টা নিয়ে সাম্রাজ্যবাদ সবসময় চটকদার কর্মসূচি আমাদের মাঝে হাজির করবে।
গত শতাব্দীর শেষভাগে, নিয়ন্ত্রিত শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চা বনাম মুক্ত ও স্বাধীনভাবে শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চার সুফলতা ও কুফলতা নিয়ে বিতর্কের এক রকম অবসান ঘটায় এখন দেশে দেশে মুক্ত ও স্বাধীন শিল্প ও সাহিত্যের চর্চার পক্ষেই জনমত গড়ে উঠেছে। কিন্তু, মুক্তচিন্তার প্রকাশের কারনে শাসক শ্রেণি বিব্রত হয় বলে শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চার ক্ষেত্রে কোথাও কোথাও নিয়ন্ত্রণ একেবারে উঠে যায় নি। সেন্সরশিপ আরোপ এবং গত কয়েক দশকে মুক্তচিন্তা চর্চাকারীদের উপর কট্টরপন্থীদের সশস্ত্র আক্রমণ ছাড়াও রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নানা বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ ও নিবর্তনমূলক আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ হতে দেখা যাচ্ছে। এসব প্রচেষ্টা শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিকাশের পথে বাধা। শত শত বছরের ইতিহাস এই সাক্ষ্য দেয় যে নতুন ও মুক্ত চিন্তার চর্চা ও সম্পৃক্ততা ছাড়া শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে গনমানুষের নান্দনিক অভিব্যক্তি বাধাহীন বিকাশ লাভ করে না। নিয়ন্ত্রিত বিকাশ যে বাস্তবে ঘটে না এবং অবশেষে বন্ধ্যত্ব ও স্থবিরতার কবলে পরে ধ্বংস হয়ে যায় এর ঐতিহাসিক প্রমাণ যেমন দুঃখজনক তেমনই বাস্তব।
কিন্তু, এটাও মনে রাখতে হবে যে মুক্ত, স্বাধীন ও প্রতিযোগিতামূলক শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চার নামে নৈরাজ্য একেবারেই কাম্য নয়। বলতে গেলে, দেখা যাচ্ছে যে সাহিত্য চর্চা ও প্রকাশনার ক্ষেত্রে দুধরনের প্রবণতা এই ক্ষেত্রটিকে দারুণ ক্ষতির সামনে দাড় করিয়েছে। কর্পোরেট পৃষ্ঠপোষকতা যতই মান বিচারে নিরপেক্ষতার কথা বলুক না কেন, বাস্তব কিন্তু তা বলে না। ফলে এমন একটি সুবিধাভোগী শিল্পী ও সাহিত্যিক চক্র তৈরি হচ্ছে যাদের তৈরি শিল্প-সাহিত্যের মান সম্পর্কে ক্রমাগতভাবে ভুল বার্তা দিয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে একটি গড় মানের মধ্যে আটকিয়ে রাখা হচ্ছে। ফলে প্রতিভাবান শিল্পী ও সাহিত্যিকদের মাঝে এমন একটা হতাশা তৈরি হচ্ছে যে তাদের হাত দিয়ে বাংলা শিল্প ও সংস্কৃতিতে যে উচ্চ স্তরের বিকাশ ঘটানো সম্ভব ছিল সেই পথ দুঃখজনকভাবে রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে যে ঘটনাটি ঘটছে, সেটাও খুব দুঃখজনক। একুশে বইমেলাকে কেন্দ্র করে এর উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্মে একদল শিক্ষানবিস লেখক নিজ খরচে বই প্রকাশ করে এবং তাঁর পক্ষে দল পাকিয়ে নিজেকে কবি-শিল্পী-সাহিত্যিক হিসেবে আত্মপ্রচারনায় লিপ্ত হচ্ছেন। এসব সাহিত্যকর্ম একেবারেই মানসম্পন্ন নয় ফলে প্রজন্ম বাংলা সাহিত্যের মান সম্পর্কে ভুল ধারণা প্রাপ্ত হচ্ছেন। অনুপ্রাণন আশা করে যে, শিল্পী, সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের মধ্যে মননশীল, সৃজনশীল ও মানসম্পন্ন শিল্প ও সাহিত্যের চর্চা ও সাধনার পক্ষে গভীর সচেতনতা নিয়ে একটি মুক্ত ও স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠবে।
সপ্তম বর্ষ প্রথম সংখ্যা
কিছু কিছু সম্পর্ক থাকে, যার কোনো নাম হয় না; নামকরণও করা যায় না। এই নামহীন সম্পর্কগুলো আয়নায় লাগা জলের দাগের মতো লেগে থাকে। জল দিয়ে সেই দাগ মুছতে গেলে লেগে যায় আরো জলের দাগ। প্রতিবিম্বের গায়ে সেইসব জন্মদাগের মতো চিহ্ন রেখে যায়—সম্পর্ক এমনও হয়।
গ্রন্থভুক্ত কবিতাগুলো কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক নয়। কারো সঙ্গেই কোনো ঐক্য নেই। তবে এ অনৈক্যের মাঝেও এক আন্ত আছে বৈকি! ওরা সকলেই শিরোনামহীন-সম্পর্কে আবদ্ধ।
নামহীন মৃত্যুর শিরোনাম
‘জল পড়ে, পাতা নড়ে’। ‘পাতা নড়ে’ এর স্পন্দনটা যদি এখানেই শেষ হয়ে যেত তাহলে কোনো কথাই ছিল না। আসলে তো ঝরেপড়া জলবিন্দু পাতার সাথে আমাদের অন্তরাত্মাকে নাড়াতে নাড়াতে নিয়ে যায় সমুদ্র থেকে মহাসমুদ্রে। অণুগল্প সে-রকমই কিছু।
রুখসানা কাজলের অণুগল্প
শাহিনুর, যাত্রাদলের এক সুন্দরী নর্তকী। বিধবা এ মেয়েটি ভিন্ন জাতের এক গানওয়ালার প্রেমে পড়লে ধর্ম ও সমাজ থেকে ছিটকে পড়ে। তার নাচ দেখতে এসে প্রেমে পড়ে যায় কিশোর বদি। শাহিনুরও এই কিশোরের প্রেমে হারিয়ে ফেলে জীবনের খেই। একসময় ভেঙে যায় ‘দি মাঝি অপেরা’। হারিয়ে যায় শাহিনুর। পর্দার আড়ালে থেকে এই নর্তকী তার প্রেমিকার প্রতিষ্ঠা পেতে অবদান রাখে। দীর্ঘ তেরো বছর পর জীবনের মঞ্চে আবার শাহিনুরের আবির্ভাব।
‘কৃষ্ণপক্ষের আলো’ নদী তীরবর্তী প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর এক অসাধারণ আলেখ্য। ঔপন্যাসিক আশ্চর্য কুশলতায় উঠিয়ে এনেছেন আবহমান বাঙলার অন্ত্যজ শ্রেণির শিল্প, সাহিত্য, ধর্ম, রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা। সুনিপুণভাবে চিত্রিত হয়েছে বাঙালি জাতির মহান অর্জন মুক্তিযুদ্ধের প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির সূক্ষ্ম দিকসমূহ। ধর্মান্ধতা, সাম্প্রদায়িকতা, পুরুষতান্ত্রিকতার নগ্ন থাবা লেখকের ক্ষুরধার তীর্যক আঁচড়ে অতি চমৎকাররূপে বাঙময় হয়ে উঠেছে।
বিয়োগাত্মক এ গল্পে কেন্দ্রীয় চরিত্র শাহিনুর পতিত শ্রেণির এক বঞ্চিতা নারী। গল্পকার তার মুনসিয়ানা দিয়ে বাস্তবসম্মতভাবে পতিত এ নারীকে পাঠকের কাছে উপস্থাপন করেন মহীয়সী রূপে।
শিল্পের সব ধারায় কাজ করলেও আনোয়ার হোসেন বাদল মূলত এক শক্তিমান কবি ও কথাশিল্পী। তার প্রকাশিত প্রত্যেকটি উপন্যাস নিঃসন্দেহে শিল্পগুণসমৃদ্ধ এবং সুখপাঠ্য। কৃষ্ণপক্ষের আলো বাংলাসাহিত্যে এক অমূল্য সম্পদ হয়ে থাকবে প্রত্যাশা রইলো।
সৈয়দ মাজহারুল পারভেজ
বহুমাত্রিক লেখক ও সাহিত্যজন
কৃষ্ণপক্ষের আলো
তোমার নন্দনে ক্রন্দিত আমি একাকিত্বে লুণ্ঠিত দাস
কণ্টকিত গোলাপে পোষণ করিনি আজও লালিত আশ্রয়
এই নিঃসঙ্গতা কেবল আমার এক অগ্নিদগ্ধ অধ্যায়
তবু জানো রক্ষিত অরণ্যে এখনও থমকে আছে সময়
তাকে ছোঁয় অসময়ের পলাতক–বীণায় অচেনা ঢেউ
পেছনে যে ধায় সে অন্য কেউ নয়–আত্মসুখী পথঘোর
বিনিদ্র আমি জখমের কাছে অসম্ভবে খুলি বাহুভাঁজ
তুমিই আগুন বদলে দাও এই ডানা মেলার জন্মান্তর
পুনশ্চ অদম্য অর্জুন
সূর্যের ঘরের নামতাতে
কলকাতার স্মৃতিকথা
আমাদের অণুগল্প দুনিয়ায় একজন অসামান্য অণুগল্পকার আছেন। তার অণুগল্পের অনেকগুলি বৈশিষ্ট্যের মধ্যে একটি হল- বিষয় নির্বাচন। এই অণুগল্পকার মনে করেন অণুগল্প অণুগল্প হয়ে উঠল কি না সেটা প্রাথমিকভাবে নির্ভর করে গল্পটির বিষয়বস্তু কি- সেটার ওপর। তারপর অন্যান্য উপাদানের সমন্বয়ে গড়ে উঠবে। এইসব ভাবনা থেকেই হয়ত তার গল্পের মধ্যে বিচিত্র বিষয় এসে ধরা দেয় ভিন্নরূপে।
যার সম্পর্কে কথা বলছি তিনি- শাহেদ সেলিম। শাহেদ সেলিম অণুগল্পভাবুক।
অনেক বিষয় নিয়ে তার অণুগল্পচর্চা, কিন্তু একটি বিশেষ বিষয়ে তার দক্ষতা অপ্রতিরোধ্য।
সায়েন্স ফিকশন অণুগল্প হিসেবে শাহেদ সেলিম এর তুলনা নেই। নজরকাড়া উন্নতমানের সায়েন্স ফিকশন লিখেছেন। তার ভেতরে একজন সায়েন্স ফিকশন লেখক বাস করে। ‘বিজ্ঞান এবং কল্পনা’ -এই দুইয়ের যথাযথ সংকরায়নে তৈরি হয় যে বিজ্ঞান কল্পকাহিনী, শাহেদ সেদিক থেকে পরিপূর্ণ। সে ইচ্ছে করলেই লিখতে পারে সায়েন্স ফিকশন অণুগল্প -এ বিশ্বাস আমার ছিল অনেক আগে থেকেই।
বর্তমান গ্রন্থটি সায়ন্স ফিকশন ছাড়াও অন্যান্য অণুগল্পের মিশেলে অসামান্য একটি প্রকাশনা।
-বিলাল হোসেন
হারাধনের ঝোলা
জন্ম ১৯৮৬, মেহেরপুর। ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। পেশায় সাংবাদিক। ‘অরনি ছোটগল্প’ পুরস্কার ২০১২ ও ‘বৈশাখি টেলিভিশন তোমার গল্পে সবার ঈদ’ পুরস্কার ২০১৩ পেয়েছেন। দ্বিধা, আদিম বুদবুদ অথবা কাঁচামাটির বিগ্রহ সহ আরো প্রকাশিত গ্রন্থ রয়েছে।
বিশ্বগল্পের বহুমাত্রিক পাঠ
কবিতা জীবনের কথা বলে, জীবন বদলানোর কথা বলে। জীবনের নানাবিধ ঘটনাবলী একজন কবির মনে যে উদ্দীপনা জোগায় কবিতা তার সকল বাহির-রূপ প্রকাশে। কবি সামাজিক মানুষ, সমাজের অভিজ্ঞতাই কবির চেতনাকে আলোড়িত করে। তাই কবিতা কতো রকম, এবং সবটাই কবির চেতনা নির্ভর। কবি দ্বীপ সরকার এর কবিতায় আধুনিকতা অভিজ্ঞতার জাগরণে যে পঙক্তিমালা আমাদের কাব্যপ্রেমীদের কাছে উপস্থিত তাতে হয়তো নির্মাণ দূর্বলতা রয়েছে, কিন্তু আমার স্থির বিশ্বাস কবি এই শুরুর পর্যায় থেকে লাগাতার কাব্যপ্রীতির মধ্যদিয়ে একদিন কাব্যরাজ্যের সকল মনিকাঞ্চন কুড়িয়ে নিতে পারবেন তার কবিতায়। যেমন তিনি বলেছেন ‘আমার প্রকাশ্য এবং গোপন/কথাদের মর্মার্থ একটাই ‘মানুষ হও/ধর্ম একটা পতাকামাত্র;/মানুষ মানেই সকল ধর্মের মধুফুল’ (….ভারতবর্ষ থেকে হেঁটে হেঁটে তাঁবেদার ঘোড়া)। কিংবা যখন বলেন ‘এখনও এই উঠোনে কথারা নাচলে/ কিছু সুপ্ত কথা ঝুনুর ঝুনুর বাজে’ (…প্রাক্তন কথারোদ)। এমনি ভাষ্যগুলো আধুনিক মনোবৃত্তিকে ধারণ করে হয়ে ওঠে মুখরিত শব্দবলীর এক অন্তরধ্বনি যা খানিকটা চমকে দেয় আমাদের।
কবিতার রাজ্যে কবি দ্বীপ সরকার এখনও প্রস্তুতি পর্বে, তারপরও কবিতার প্রারম্ভিক ভাষ্য থেকে বেরিয়ে আসা উপ-ভাষ্যগুলোর উপস্থাপন তার কবিতা মনোবৃত্তিরই স্ফূর্ততা। গতি বিজ্ঞানের এই সময়ে কবিতার যে স্বাস্থ্যশ্রী রূপ বদল ঘটেছে কবি দ্বীপ সরকার তাকে খানিকটা হলেও ধারণ করেন এবং বহুল চর্চার মধ্যদিয়ে একদিন তিনি আরো বেশি সক্রিয় পঙক্তিমালা নির্মাণের উপকরণ পেয়ে যাবেন সমৃদ্ধ বাংলা কাব্য ভূমিতে।
আমি তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ভিন্ন ভাষার গোলাপজল’ প্রকাশনা মুহূর্তে সকল সফলতা কামনা করি।
মতিন বৈরাগী
কবি, প্রাবন্ধিক ও সমালোচক
ভিন্ন ভাষার গোলাপজল
Get access to your Orders, Wishlist and Recommendations.
There are no reviews yet.