Additional information
Weight | 0.67 kg |
---|---|
Published Year |
$ 0.53 $ 0.71
ভূমিকা
‘সীমান্তিনী’ আমার লেখা দীর্ঘ কবিতার মধ্যে অন্যতম। বারোটি কবিতা নিয়ে এই বইটি। কবিতায় প্রকাশ পেয়েছে প্রেমের পাশাপাশি পাহাড়ি সৌন্দর্য, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী গারো, হাজং প্রভৃতি আদিবাসীদের সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও তাদের জীবনধারা। পাহাড়ি নারীর সৌন্দর্য, বালুকণা, সমুদ্র, আঁকাবাঁকা-উঁচুনিচু পথের দৃশ্যও এই বইতে চিত্রিত হয়েছে। প্রতিটি কবিতার পাতা রাঙানো হয়েছে ভালোবাসার রঙে।
কিসিঞ্জার ভূঁইয়া
০১ সেপ্টেম্বর, ২০২০
Weight | 0.67 kg |
---|---|
Published Year |
হায়াসিন্থ হাউজ
ঝুমকি
কত পথ পার হলাম ঝুমকি;
তবু মানুষ চেনা হলো না!
বারো প্যাচের নারী, চোখে জড়িচুমকির খেল্ দেখালো
অমলেশ সেই দেখে দেখে শেষে উন্মাদের খাতায় নাম লেখালো
পত্রিকার শেষ পাতায় ওকে নিয়ে কতো ফিচার হলো
তবুও অমলেশকে কেউ ভালোবাসলো না।
ঝুমকি পৃথীবির সবচে’ হিংস্র প্রাণী মানুষের
গায়ে বিপদের গন্ধ লেগে আছে;
ফাঁক পেলেই নষ্টামি করতে লেগে যায়
কেউ কেউ বলে সত্যিকারের ভালোবাসা নেই
বড় র্দূভাগা ওরা!
সত্যিকারের ভালোবাসাই দেখেনি চোখে; পাবে কোত্থেকে
প্রেমালিঙ্গম
সরদার ফারুক। জন্ম ১৯৬২ সালের ৯ নভম্বের, কপোতাক্ষ নদের তীরে খালিশপুরে। পৈত্রিক নিবাস বরিশালের কাশীপুর। পেশায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। ছাত্রজীবন থেকেই প্রগতিশীল ছাত্র-শ্রমিক-কৃষক আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন। বরিশালে ঘাট শ্রমিকদের ?আন্দোলন, ডেমরায় শ্রমিক কর্মচারি ঐক্য পরিষদের সংগ্রাম ও বাজিতপুরের জেলেদের লড়াইয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
নব্বইয়ের ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য তিনি সরকারী চাকরি ছেড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৮৯ সালে ডাকসু নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনও করেন।
ছাত্রজীবন থেকেই বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লিখছেন। ১৯৮০ সালে বরিশালের অধুনালুপ্ত ‘সাপ্তাহিক লোকবাণী’ পত্রিকায় প্রথম লেখা প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে শামসুর রাহমান সম্পাদিত সাপ্তাহিক বিচিত্রা, দৈনিক দেশ, সংবাদসহ দেশ-বিদেশের নানা পত্র-পত্রিকা, সাহিত্য সাময়িকীতে তার লেখা কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
নোনা শহর
ভূমিকা-
আমার ৪টি কবিতার বই বিভিন্ন সময়ে কলকাতা এবং আগরতলা থেকে প্রকাশিত হয়েছে।
বাংলাদেশের পাঠক বইগুলো হাতে পাননি বলেই সেখান থেকে ১০০টি কবিতা বাছাই করে এই প্রকাশনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অনুপ্রাণন প্রকাশনের প্রাণপুরুষ শ্রদ্ধাভাজন আবু এম ইউসুফ ভাইয়ের সহৃদয় সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞ।
অনুজপ্রতিম তুহিন ভূঁইয়ার অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯
রূপনগর আবাসিক এলাকা
মিরপুর, ঢাকা।
সরদার ফারুকের ১০০ কবিতা
বিলাল হোসেন-
জন্ম: ১ জানুয়ারি, ১৯৭৪।
জন্মস্থান- মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার রাজারচর কাজিকান্দি গ্রামে।
প্রকাশিত বই-
১. কাব্যগ্রন্থ- বিরুপা’র শূঁড়িবাড়ি(২০১৪)
২. অণুগল্প সংকলন- পঞ্চাশ(২০১৫)
৩. মহাপ্রভু ও অন্যান্য অণুগল্প(২০১৬)
৪. কাব্যগ্রন্থ- একজ্বলাপঙক্তি(২০১৬)
স¤পাদিত বইসমূহ-
সেরা ১০০ অণুগল্প(২০১৫) (প্রিন্ট ভার্সন)
ই-বুক স¤পাদনা-
দেখবে এসো তিলের বাগান
কাজী রহমান। পরবাসী লেখক নিজের পছন্দ মতো বাঁচতে দু-যুগ আগে মার্কিন মুলুকে চলে আসেন স্ত্রী ও প্রথম শিশুকন্যা সাথে নিয়ে। বড় হয়েছেন পুরনো ঢাকার গেন্ডারিয়া’য়। জ্ঞান হবার পরপরই নিজেকে আবিষ্কার করেছেন ঘরের পাশের গ্রন্থাগারে, বিভিন্ন শিশু সংগঠন আর সমাজসেবামূলক সংগঠনের আলোছায়ায়। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার দুরন্ত কিশোর স্বাধীনতার যুদ্ধ দেখেছেন কাছ থেকে আর আতঙ্কের দিন গুনেছেন সারাক্ষণ মুক্তিযোদ্ধা দু’ভাইয়ের ঘরে ফেরার অপেক্ষায়। গ্রাজুয়েশন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কর্মজীবন কেটেছে বিদেশী এয়ার লাইন্সের কর্মকর্তা হিসেবে।
তারাধুলো জল ও নস্টালজিয়া
আবু জাঈদ। জন্ম: ২২শে জুলাই ১৯৮৩, ঢাকা। পড়াশুনা অসমাপ্ত রেখে একসময় কবি বাউণ্ডুলে জীবনের এলোমেলো আলপথে নেমে যান বেঁচে থাকার প্রয়োজনে, তাই বলে কাব্যচর্চা থেমে থাকেনি। এক সন্তানের জনক। এটি লেখকের প্রথম প্রকাশিত বই।
মানচিত্রের ফাঁসি চাই
রাজন্য রুহানি। পরিবারের দেওয়া সনদসাক্ষ্য নাম মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। জন্ম: ২রা নভেম্ভর ১৯৮০, জামালপুর জেলা শহরের হাটচন্দ্রায়। কলেজে পা দেবার সাথে সাথেই সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন। স্থানীয় কয়েকটি দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকার বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। মফস্বল সাংবাদিকতার পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে না পেরে বারবার কবিতার কছেই ফেরা। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং। ১৯৯৮ থেকে কবিতার ভাঁজপত্র শব্দদূত সম্পাদনার সাথে যুক্ত। ঐ বছরই অন্যান্য লেখক সহযোগে আলোচনাগ্রন্থ- ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ; আতিয়ার রহমানের ৭টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। এটি লেখকের প্রকাশিত এককবই।
গল্প সমাপ্তির গান
গ্রামের পাশে যে বিশাল বাদাম ক্ষেত আর ক্ষেতের পাশে যে ছোট নদী, সে নদীতে মাঝারি সব ঢেউ ওপার থেকে এপাড়ে আসে খড়কুটো মুখে নিয়ে। আর কত কিছু ভেসে আসে আর চলেও যায়—সারা দিনভর ছোটনেরা সেইসব দেখে পাড়ে বসে বসে।
ছোটনেরা মানে হলো—হাবিবুল, রতন, মোবারক, শেফালি বকুল এরা। কালিয়াখোল গ্রামের ছোটরা। তারা প্রতিদিন নদীতে আসে আর কাঁচা বাদাম খেতে খেতে লক্ষ করে নদীটাকে। নদীর ভেতরে কত কিছু। কাদাখোঁচা একটি দুটি। বালিয়া হাঁসের সাদা পাখনা উড়তে থাকে। আর ওপারের মেঘ যখন উড়তে উড়তে এপারে আসে তখন জলিল কাকার সময় হয় জোয়ালের গাই দুটাকে গোসল দেয়ার। গাই দুটার গোসল দেখতে দেখতে আর বাদাম খেতে খেতে দলের মধ্যে মোবারক নামে যে আছে, সে একটা প্রস্তাব দিল। প্রস্তাব দেয়ার আগে বিজ্ঞ বিজ্ঞ ভাব নিয়ে কয়েকটা জানাশোনা তথ্যও দিল। যেমন—এই নদীতে কিছুই ডোবে না।
বাকিরা মাথা নাড়ে—হুম।
গরু ডোবে না, খড় ডোবে না। নাও-লঞ্চ কিছুই ডোবে না। ভেলা ডোবে না।
সবাই মাথা নাড়ে। কাঁচা বাদাম খায়।
—চল আজকে একটা খেলা খেলি। মিনুরে ডুবাই দেই। দেখি ডোবে কি না?
ছোটনরা একজন আরেকজনের দিকে তাকায়। প্রস্তাবে জোর সমর্থন দেয় নুরু। প্রস্তাব সমর্থন নিয়ে নুরু কারো দিকে তাকায় না। নদীর পেটে জলের প্রবাহ দেখতে দেখতে তারা স্কুলঘর দেখে। দূরের আকাশছোঁয়া মিনার মসজিদ দেখে।
—মিনুও ডুবত না। এই নদীতে কিছুই ডোবে না–বলে সাহস দেয় নুরু। ততক্ষণে মিনুকে নিয়ে এসেছে মোবারক।
মিনু জল দেখে ভয় পায়। বলে—মিঁউ!
বিশাল নদী। বিশাল চর। মিনু ভয় পায়। ডাকাডাকি শুরু করে দেয়—মিঁউ মিঁউ।
মিনুকে কোলে নেয় হাবিবুল। হাবিবুল থেকে নেয় রতন। রতন থেকে নেয় শেফালি। শেফালি থেকে নেয় রাজন। রাজন থেকে নেয়া নুরু। নুরু থেকে কেউ নেয় না। কারণ নুরু কাউকে দেয় না। সে মিনুকে ছুড়ে দেয় নদীতে।
সবাই হাসে। মিনু সাঁতার কাটে। ঠিকমতো পারে না। নদীতে ঢেউ। তলিয়ে যায়। ছোট্ট মাথা। ডোবে ভাসে। সবাই হাসে–খুশিতে হাততালি দেয়।
দুই ঢেউয়ের চাপে পড়ে মিনু ডাকে—মিঁউ মিঁউ।
প্রাণপণ চেষ্টা করে মিনু কচি পা দিয়ে পাড়ে আসতে পারে না। দূরে সরে যায়। আবার আসে। পাড়ের কাছে আসেও। কিন্তু নুরুরা ঢিল ছোড়ে। হি হি করে হাসে। হাত তালি দেয়।
মিঁউ মিঁউ করতে করতে নদীর ভেতরে চলে যায় মিনু। ঢেউয়ের ভাঁজের ভেতরে চলে যায়। ডুবে যায়। পাড়ে বসে রাজন শিস দেয়।
…………
রাতের বেলায় বিছানায় শুয়ে শুয়ে পুরো ব্যাপারটা আবার দেখে ছোটন। মিনু ডুবে যাচ্ছে। ভেসে উঠছে। চিৎকার করে ওঠে ছোটন। ঘামে নেয়ে ওঠে সে। কিন্তু তার ঘুম ভাঙে না। ঘুমের মধ্যেই ছোটন বোঝে ঘুম না ভাঙলে সে নদী থেকে আর মিনুকে উঠাতে পারবে না।
সকালবেলা তাড়াতাড়ি মিনু যে কাজটি করে তা হলো ছোটনের বাবা-মাকে নিয়ে নদীর পাড় চলে এলো। তারা দেখল—নদীর ভেতরে একটা লাল জামা ভাসছে ছোটনের।
২৪১৯
কালিয়াখোল গ্রামের ছোটরা
নাহিয়ান ফাহিম। জন্ম: ২৩শে মার্চ, ১৯৮৪। ময়মনসিংহ জেলা। ঢাকাতে বেড়ে ওঠা। মূলতঃ পাঠক, ফলতঃ লেখক। সাহিত্য পত্রিকা ‘জলমাঝি’র সম্পাদক। মার্কেংটিং বিভাগে স্নাতকোত্তর। পেশাগত জীবনে একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত। প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ভিনদুপুরের নোটবই’।
মধ্যবিত্ত কবিতা
রনক জামান। জন্ম:১৬ই ডেসেম্বর ১৯৯১, মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলায়। লেখালেখির হাতেখড়ি ছোটবেলাতেই কবিতার প্রতি মুগ্ধতা থেকেই তার প্রতি ভালোবাসা। এটাই কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ। এছাড়াও প্রকাশিত হয়েছে, যৌথ কবিতাগুচ্ছ ‘মায়ানগরীর বৃষ্টিকথন’, কবিতার ই-বুক ‘শরীর ছোঁয়া আঙুলগুলো’ এবং অনুবাদ উপন্যাস ‘ললিতা’।
ঘামগুলো সব শিশিরফোঁটা
ডালিয়া চৌধুরী। তোলারাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্স মাস্টার্স শেষ করেছেন। কবিতার প্রতি ভালোবাসা থেকে কবিতা লেখার সূত্রপাত। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ, ‘অনুভবে সুখ’ ‘মেঘময় নিকুঞ্জে রধুন‘ ও ‘জলজ কামনা’।
নীল গোধূলি
মৃত্যু সংবাদ এমনই একটা বিষয় মুহূর্তে পৃথিবীর গতি স্তব্ধ করে দেয়। পরিচিত বা কাছের জনের মৃত্যু হলে তা আরও ভারী বোধহয়। মনে হয় যেন নিজেরই একটা অংশ মরে গেছে। এত সুন্দর মায়াময় প্রভাতটা নিমেষের মধ্যে অর্থহীন, শ্রীহীন হয়ে যায়।
একটি স্বেচ্ছামৃত্যু ও কিছু রসিকতা
বুদ্ধদেব বলেছেন- জীবন দুঃখময়। কথাটা সর্বাংশে সত্য কিনা সংশয় রয়েছে মনে। তবে এটা সত্যি যে, বারে বারে দুঃখ আসে জীবনে। আসে বলতে মানুষ জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতে তার কামনা-বাসনার দ্বারা দুঃখকে ডেকে আনে। যদিও দুঃখকে কেউ চায় না। কিন্তু না চাইতেই মহাসমারোহে হানা দেয় জীবনে। কারণ, আলো-আঁধারের মত সুখ-দুঃখও হাত ধরাধরি করে চলে। তাই কোনমতেই দুঃখকে বাদ দিয়ে শুধু সুখ লাভ সম্ভব হয় না। কিন্তু মানুষ চায় সুখের বন্দরে নোঙ্গর গেড়ে জীবনটা কাটাতে। সেখানে পৌঁছতে গেলে দুঃখের পথ অতিক্রম করেই যেতে হয়। জীবনে দুঃখকে জয় করার মধ্যেই আছে পৌরুষ, আছে বীর্যবত্তা। তাই তাকে শক্তিধারণ করতে হয় দুঃখ জয় করার। “দুঃখ জয়ের গান” পাঠকের অন্তরে সেই প্রেরণা জোগাবে যাতে সে কর্ম-সাধনার মধ্য দিয়ে জীবনটাকে সঙ্গীতমুখর করে তুলতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।
পরিশেষে, বইটির পান্ডুলিপি পাঠ করে মূল্যবান মতামত দিয়েছেন বাংলা সাহিত্যের প্রভাষক নির্জন মজুমদার, কবি দেবী চিত্রলেখা মন্ডল, সাহিত্যিক অমল হালদার, কবি ড. অশোক মিস্ত্রী। তাদের সকলকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। সুস্মিতা ও শ্রেষ্ঠা আমার দুই মেয়ে নিরন্তর স্বপ্ন দেখে চলে কবে বাবার লেখা নতুন বই প্রকাশিত হবে। ওদের প্রেরণা আমার সব সময়ের পাথেয়। প্রথম উপন্যাস প্রকাশ-লগ্নে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। মুদ্রণজনিত ভুল-ত্রুটি পরিহারের যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। তারপরও অজ্ঞাতসারে কিছু প্রমাদ থেকেই যেতে পারে। সেজন্যে পাঠকের কাছে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি প্রত্যাশা করছি।
সন্তোষ কুমার শীল
শ্রীরামকাঠী, পিরোজপুর।
দুঃখ জয়ের গান
কবির য়াহমদ-
জন্ম ৩০ ডিসেম্বর, চন্দনপুর, আলীনগর, বিয়ানীবাজার, সিলেট।
বাবা- আজিজ উদ্দিন চৌধুরী, মা- ফখরুননেছা আজিজ। অনুপ্রাণন সম্পাদনা পরিষদের সাথে যুক্ত।
প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: রাত আর ঘুমের কৃষ্ণপাঠ, আমাদের ঈশ্বরের অ্যাপয়েন্টমেন্ট দরকার, নিরবচ্ছিন্ন পাখিসমূহ।
জাগরণের পূর্বাপর
লেখকের কথা
জাপানের প্রাতঃস্মরণীয় মনীষী শিল্পাচার্য ওকাকুরা (কাকুজোও) তেনশিন বলেছিলেন, জাপান এশিয়ার জাদুঘর। আমি বলি, জাপান একটি বৈশ্বিক দর্পণ। বিশ্বের চতুর্দিক তথা চারটি মহাদেশের ছবি এই দর্পণে প্রতিফলিত হয়ে আসছে হাজার বছর ধরে। বিশ্বের প্রায় সব সংস্কৃতিরই ধারা এসে মিলিত হয়েছে জাপানের মূলধারার সঙ্গে। বিশেষ করে ধর্ম ও সংস্কৃতির অপূর্ব সমন্বয় ঘটেছে এই দেশের জনধারায়। সন্দেহ নেই যে, চীন ও ভারতের প্রভাব অত্যন্ত গভীর। মধ্য যুগ পর্যন্ত ক্রমাগত জাপান প্রভাবিত হয়েছে প্রাচীন চীন ও ভারতের ধর্ম, দর্শন, ইতিহাস, পুরাণদ্বারা। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন জাতি, গোষ্ঠী, গোত্রের মানুষ প্রাচীনকালেই প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপবর্তী জাপানের ভূখণ্ডে এসে স্থানীয়দের সঙ্গে মিলেমিশে গেছে। যে কারণে জাপানিরা সংকর জাতির লোক। আর এর ফলেই জাপান হয়ে উঠেছে সংস্কৃতির মনোরম বৈচিত্র্যপূর্ণ একটি দেশ। যার তুলনা খুঁজে পাওয়া যায় না। যে সংস্কৃতির টানে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পাঁচবার ভ্রমণ করেছেন জাপান। প্রতিবারই তিনি জাপানকে নতুন করে আবিষ্কার করেছেন।
জাপানে যারা আসেন প্রথমে তাদের কাছে সবকিছুই অদ্ভুত প্রতিভাত হয়। কেননা জাপানিদের জীবনধারাটাই স্বাতন্ত্রিক। কিন্তু দীর্ঘদিন এ দেশে বসবাস করলে পরে তাদের আর বুঝতে বাকি থাকে না যে, তারা সঠিক দেশেই এসে পড়েছেন! এখানে জীবনযাপন যেমন খুব বাস্তব ও কঠিন তেমনি স্বপ্নের বাস্তবায়ন বা ইচ্ছেপূরণের সমূহ সম্ভাবনাও বিদ্যমান। বিদ্যমান সামাজিক নিরাপত্তা। কাজের দেশ জাপান, ইচ্ছে করলে কাজ জোগাড় করা কঠিন কিছু নয়। আর রয়েছে উচ্চশিক্ষার বিস্তর সুযোগ। তবে, অবশ্যই জাপানিদের নিয়মনীতি মেনে চলা প্রথম ও শেষ শর্ত। কেননা, যতোই তারা বহির্বিশ্বের প্রভাব গ্রহণ করে একটি সর্বজনীন সংস্কৃতি ও বাতাবরণ নির্মাণ করে থাকুন না কেন, জাপানিরা কিন্তু মনেপ্রাণে ও আদর্শে জাপানিই। “জাপানিজম” বা “জাপানিত্ব” তাদের মধ্যে সর্বক্ষণ সর্বক্ষেত্রে জাগরুক। শান্তি ও বিশ্বাস এই দেশের মূল ভিত্তি। বিশ্বাস হারালে জাপানে আর বসবাস সম্ভবপর নয়, শান্তি বিঘিœত হওয়ার মতো কাজ জাপানিরা প্রশ্রয় দেন না। আস্থা, বিশ্বাস, কঠোর পরিশ্রম, মহাধৈর্যগুণ, অনুচ্চকণ্ঠ, সময়ানুগ, প্রতিবেশী-সম্প্রীতি, সহমর্মিতা, সমবায়মনস্কতা, অনুসন্ধিৎসা জাপানিদের চারিত্রিক পরিচয়। আর এইসব গুণাগুণ জাপানি সংস্কৃতি, সৃজনশীলতা ও কর্মকাণ্ডের মধ্যে নিহিত আছে।
জাপান প্রবাসের চার দশক হতে চললো। এই দীর্ঘ সময়ে জাপানকে দেখা, জানা ও পড়ার মধ্য দিয়ে যে ধারণা ও অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়েছে তারই প্রতিফলন রয়েছে এই গ্রন্থের ২৫টি ছোটবড় প্রবন্ধের পরতে পরতে। প্রবন্ধগুলো ২০১৫ থেকে ২০০২১ পর্যন্ত বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার উপসম্পাদকীয়, সাহিত্য সাময়িকী, সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন এবং সাহিত্য সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। সংকলনভুক্ত করার তাগিদে নতুন করে তথ্য-উপাত্ত সংশোধিত ও সংযোজিত করার প্রয়াস নিয়েছি। আশা করি পাঠক বহুকিছু জানতে পারবেন এই প্রবন্ধগুলো থেকে যা বাঙালির ব্যক্তিজীবন ও সমাজজীবনকে উন্নত করার জন্য শিক্ষণীয় বলে বিশ্বাস করি। সেইসঙ্গে জানা যাবে বাংলাদেশ ও জাপান সম্পর্কবিষয়ক তথ্যসমূহ যা দুর্লভ বলেই বিবেচিত।
উদীয়মান “অনুপ্রাণন প্রকাশন” কর্তৃপক্ষ এর আগে “জানা অজানা জাপান” ৩য় খণ্ড প্রকাশ করে আমাকে কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করেছেন। এবারও ৪র্থ খণ্ড প্রকাশ করে আমাকে চিরঋণী করছেন। এজন্য জানাই আনত ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। যেহেতু প্রবন্ধগুলো গবেষণামূলক, তাই ভুলভ্রান্তি যেমন থাকবে, তেমনি লেখকের মতামতের সঙ্গে পাঠকের মতভিন্নতা থাকাই স্বাভাবিক। তার জন্য সকল দায়দায়িত্ব লেখকেরই, প্রকাশকের নয়।
Jana Ajana Japan Part-4 By Probir Bikash Sarkar
শিল্প-সাহিত্যের ত্রৈমাসিক, অনুপ্রাণনের একাদশ বর্ষের ৪টি সংখ্যায় বাংলাদেশের ১০০জন নির্বাচিত কবি ও তাদের কবিতা নিয়ে আলোচনার তৃতীয় পর্বে এসে এই সংখ্যায় ২৩জন কবি ও তাদের কবিতা নিয়ে আলোচনা সমুহ সংকলিত হয়েছে। উল্লেখ্য যে, অনুপ্রাণন ত্রৈমাসিকের একাদশ বর্ষ অর্থাৎ এ-বছরের প্রথম ও দ্বিতীয় সংখ্যায় বাংলাদেশের ১০০জন নির্বাচিত কবি তালিকা থেকে প্রতিটি সংখ্যায় ২৭জন করে মোট ৫৪জন কবির জীবনী, প্রকাশনা, প্রাপ্ত সম্মাননা ও পুরষ্কার, উল্লেখযোগ্য কবিতা এবং কবিতা নিয়ে বিশেষ আলোচনা ইতোমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় এই সংখ্যায় অর্থাৎ ৩য় পর্বে ২৩ জন এবং পরবর্তী ৪র্থ পর্বে আরো ২৩ জন কবি ও কবিতা নিয়ে মোট ১০০ জন কবির জীবনী, প্রকাশনা, পুরষ্কার ও সম্মাননা, উল্লেখযোগ্য কবিতা এবং কবিতা নিয়ে আলোচনা সংকলন সম্পন্ন হবে বলে আশা রাখছি।
বাংলাদেশের কবি ও তাদের কবিতা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে আমরা দেখি যে, বাংলা সাহিত্যে বাংলাদেশের কবিদের অপরিসীম ভূমিকা ও অবদান রয়েছে। সাহিত্যমান বিবেচনায় তুলনামূলকভাবে কবিতাগুলো যে অত্যন্ত উচ্চস্থান দখল করে আছে, এটা নিঃসন্দেহেই বলা যায়। একদিকে নান্দনিক বিবেচনায় কবিতাগুলো যেমন উত্তীর্ণ, অন্যদিকে ঠিক তেমনই চলমান সমাজ, রাজনীতি, শোসিত মানুষের সংগ্রাম, জাতীয়তাবাদ, দেশপ্রেম ও মানবিক চেতনায় উদ্ভাসিত কবিতামালা গণমানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে। বাংলাদেশের কবিদের মূল বিষয় হিসেবে বাঙলার প্রকৃতি, মানবতা, মানব প্রেম, মাতৃস্নেহ, পিতৃস্নেহ, ভ্রাতৃত্ব, সামাজিক সম্প্রীতি, অসাম্প্রদায়িকতা, ধর্মীয় ও সামাজিক মৌলবাদ বিরোধিতা, নারীবাদ ইত্যাদী বিষয়গুলো যেমন এসেছে ঠিক তেমনই পাশাপাশি জায়গা করে নিয়েছে মানব-মানবীর প্রেম, বিরহ অথবা ব্যক্তি পরিচয়, আত্মানুসন্ধান, আত্মজিজ্ঞাসামূলক দার্শনিক বিষয়গুলো। ব্যক্তি, সমাজ ও দেশ কোনটাই অবহেলিত থাকেনি। জয়-পরাজয়, আশা-হতাশা, সংগ্রাম, সংক্ষুব্ধতা অথবা আপসকামিতা ছাড়িয়ে তাদের কবিতা হয়েছে মূলত জীবনধর্মী। তাই বাংলাদেশের কবিদের কবিতায় বহুলাংশে প্রকৃতি, প্রেম ও জীবনের অপার সৌন্দর্য সবসময় উঁচুতে তুলে ধরতে দেখা গেছে।
শিল্প-সাহিত্যের ত্রৈমাসিক, অনুপ্রাণন, একাদশ বর্ষ তৃতীয় সংখ্যা
পৃথিবীতে অনেক বিচিত্র বিষয় আছে। আমরা প্রায়শই বাহ্যিক বৈচিত্র দেখে অভিভূত হই। তবে এমন অনেক বিচিত্র বিষয় আছে যেগুলি বাহ্যিকভাবে চোখে দেখা যায়না, সেরকম বৈচিত্রগুলি অনুভবে বুঝে নিতে হয়। ক্ষেত্রবিশেষে অনুভবের বৈচিত্র বাহ্যিকভাবে উপস্থিত বৈচিত্রের চেয়ে আমাদেরকে অনেক বেশি বিস্মিত করে – অনুপ্রাণিত করে। মানুষের মন তেমনি একটি বিমূর্ত বৈচিত্রের আধার। বস্তুত মানুষের মনের চেয়ে অধিক বৈচিত্রের উপস্থিতি বুঝি এ বিশ্বলয়ে দ্বিতীয়টি নেই।
একজন মানুষের মনে একইসময়ে, একইসাথে লক্ষ-কোটি দ্বন্দ্ব-সংঘাত ক্রিয়া করে। এ মানসিক দ্বন্দ্বের উপর ব্যক্তির আসলে কোন নিয়ন্ত্রণই থাকেনা। তবে হ্যা, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই একজন ব্যক্তির শ্রেণিগত ও পেশাগত ভিন্নতার কারণে ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে এ দ্বন্দ্বসমূহের আচরণগত বৈশিষ্টে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। পেশায় ব্যাংকার জনাব মো: আবদুল মতিন তার পেশাগত কারণেই প্রতিদিন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে মিশেছেন, সে সুবাদে তাদের মনের দ্বন্দ্ব-সংঘাতের প্রকৃতি বোঝার চেষ্টা করেছেন এবং তারই লব্ধজ্ঞানে মানুষের মনের কথাগুলো এ কাব্যগ্রন্থের অধিকাংশ কবিতায় প্রকাশ করার চেষ্টা করেছেন। তাছাড়াও সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে একজন মানুষের করনীয়, মানুষের সাথে মানুষের আচরণ, মানবিক মূল্যবোধ ইত্যাদি কেমন হওয়া উচিৎ সে বিষয়গুলিও উঠে এসেছে তার কবিতায়। উঠে এসেছে প্রকৃতি ; বাদ যায়নি সাম্প্রতিক করোনা মহামারীসহ স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সমসাময়িক বিষয়াদিও ।
‘ক্রোধ’ কাব্যগ্রন্থটি জনাব মো: আবদুল মতিন এর প্রথম কাব্যগ্রন্থ হলেও বোদ্ধা পাঠকমহলে এটি সমাদৃত হবে, আশা করা যায়।
ক্রোধ - Krodh
খোঁচা
খোঁচা খুব ঔষধী
খোঁচা খুব বেয়াড়া,
খেলে খায় খুশিতে
কারো লাল চেহারা।
খোঁচা খায় বঁধুয়া
কলতান হাসিতে,
খোঁচা চায় প্রেমিকা
চায় ভালোবাসিতে।
খোঁচা দাও বাবুকে
সারাক্ষণ জ্বালাতো,
হবে ভাব ত্বরিতে
আগে দূর পালাতো।
খোঁচা দাও সুযোগে
খোঁচা দাও বুঝিয়া
খোঁচা দাও সমাজে
খোঁচা দাও খুঁজিয়া।
খোঁচা দাও জাগাতে
যারা ঘুম জাগে না,
বসে দাও চেয়ারে
যাঁরা পদ মাগে না।
খোঁচা
বর্তমান শতাব্দীর দ্বিতীয় দশক চলছে। এ দশকে কিছু নবীন কবিদের দেখা মেলে। যাদের শব্দশিল্প, অনুভবভেদ্য চিন্তাশৈলী নিজস্ব কাব্যভাষার নির্মাণের অভিঘাতে শিল্পিত হয়ে উঠতে দেখি। নতুন শতাব্দীর এসব কবিগণও বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্য থেকে সরে আসেননি, বরং শিল্পের দায় স্বীকার এবং এর চাহিদার সঙ্গে মানবিক উৎকর্ষতা সন্নিবেশনে ছিলেন আত্মপ্রত্যয়ী। তাঁদেরই একজন কবি বঙ্গ রাখাল।
এই কবি সময়কে জীবনের অনুষঙ্গ মেনে চিত্তের মৌনতা ও দ্রোহকে কবিতার ক্যানভাসে তুলে আনেন, যা যাপিত জীবনের পরম্পরা ও সমূহ সত্যটিকে নিবিড় পর্যবেক্ষণসহ উদ্ভাসিত করে। কবির মনোজলোকে কামনা-বাসনার জটিল আবর্তে তাকে পরিগ্রহ হতে দেখি। তখন কবিতা হয়ে ওঠে রূপবিশ্বের অমেয় আঁধারের শক্তিশালী এক রূপকল্প। তবে এ বিষয়টি কবি বঙ্গ রাখালের গদ্যফর্মে লিখিত কবিতার মধ্যে বেশি পরিলক্ষিত হয়।
বঙ্গ রাখালের কবিতাকেও কখনো কখনো উদ্দেশ্যহীনভাবে গন্তব্যমুখী হতে দেখা যায়। এই দ্বন্দ্ব মূলত কবির দৃষ্টিভঙ্গিগত এবং সামষ্টিক মূল্যবোধের ক্ষেত্রে স্পষ্ট। সাম্প্রতিক কবিদের কবিতার নিবিড় পাঠে এই সত্য নিদারুণভাবে উঠে আসে। তথাপি বঙ্গ রাখালের কবিতায় মা-মাটি-মানুষের গন্ধ যে নেই তা বলা যাবে না। বিশেষত এই কাব্য লণ্ঠনের গ্রাম-এর ‘পদ্মপুরাণ: অর্ধেক জীবন অর্ধেক ছেদন’ পর্বের কবিতাগুলোতে তা প্রত্যক্ষ হয়ে উঠেছে। বঙ্গ রাখালের কবিতায় পাঠক যেমন বিজ্ঞানচেতনার নিরাসক্তি খুঁজে পাবেন, তেমনি আবেগ ও মননশীলতার উজ্জীবনও উপলব্ধি করবেন।
-মামুন মুস্তাফা
লণ্ঠনের গ্রাম
সময়ের চেয়ে বড় ও অনপেক্ষ সমালোচক পৃথিবীতে বিরল। যে কোন ব্যক্তি বা ঘটনাকে বর্তমানে বসে অবলোকনের চেয়ে কালান্তরে পর্যালোচনার প্রয়াসই উত্তম ও নির্মোহ। ঊনবিংশ শতাব্দীতে জন্ম নেওয়া রবীন্দ্রনাথকে একবিংশ শতাব্দীতে এসে পর্যালোচনা করলে যে নিরপেক্ষ নির্যাস পাওয়া যায় তাই-ই হলো সত্যিকারের রবীন্দ্্রনাথ। এর মাঝেই নিহিত আছে রবীন্দ্র-মাধুর্যের প্রকৃত পরিচয়। বাঙালির বাতিঘর রবীন্দ্রনাথের বড় পরিচয় কবি হিসেবে নয়, বরং দার্শনিক হিসেবে। রবীন্দ্রবাক্য সহজ বটে তবু অতল গভীর। রবীন্দ্রনাথের চর্মচক্ষুর চেয়ে অন্তর্চক্ষুর দার্শনিক ব্যাপ্তি অনেক বেশি। ব্যক্তি রবীন্দ্রনাথ কালের আলোয় আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। দার্শনিক রবীন্দ্রনাথ একজন কালের শিক্ষক। তাঁর সমবায় কৃষি এবং কৃষিব্যাংকের ভাবনা এনে দিয়েছে ব্রাত্যজনের মাঝে প্রগতির প্রবাহ। হাজারো বিরুদ্ধ-স্রোত ঠেলে রবীন্দ্রনাথ মনুষ্যত্বের জয়গান গেয়ে গেছেন জীবনের পথে। ব্যক্তি নয়, ব্যক্তির সুকর্মকে প্রাধান্য দিয়েই রবীন্দ্রনাথ ‘সোনার তরী’র স্বপ্ন দেখেছেন। কর্মের ফসলেই তিনি খুঁজে পেয়েছেন মানবজীবনের সার্থকতা।
SHEKARER RABINDRANATH O BIBIDHO - Pijush Kanti Barua
“সৃজনশীলতা, কল্পনাশক্তি, বিজ্ঞানী আইনস্টাইন, পিংক ফ্লয়েড, এনাদার ব্রিক ইন দ্যা ওয়াল, এনাদার ফাকিং ব্রিক ইন দ্যা ওয়াল! দরোজা ভাঙো, শেকল ছেঁড়ো, দেয়াল ভাঙো, এই এডুকেশন সিস্টেম তোমাকে বিকলাঙ্গ করে দিয়েছে। তোমরা এর নেপথ্য কারিগর হে চতুষ্পদ এবং আলখাল্লা। তোমাদের কারণে আজ তাতিন কলা অনুষদে পড়ে শর্টকার্টে রকেট সায়েন্স শেখার মওকা খোঁজে। আজ একটা হেস্তনেস্ত হবে’
চমৎকার শোনা গেলো এখন দেখা যাক প্রতিপক্ষ কী উত্তর দেয়,
“দুধ দিয়ে আনারস খাওয়ার কারণে শত শত শিশু মারা যাচ্ছে।
সাবধান!
ব্রিজে শত শত শিশুর কাটা মাথা আর রক্তপি- পড়ে আছে
সাবধান!
এইখানে পাপ, ঐখানে পাপ, এইটা করলে গুনা, বুঝলা আমার সুনা?
সাবধান!
অবশ্য এর প্রতিবিধান আছে। তাবিজ কবজ এবং দুয়া-দুরূদ। আপনারা আলোর পথে আসুন। আপনাদের চোখে শক্তিশালী টর্চলাইট মারা হবে। এ দে দিনি ঐডে হেনে”।
আমরা দেখতে পাচ্ছি আলখাল্লা পরিহিত প্রাণীটির হাতে একটি শক্তিশালী টর্চলাইট। তিনি আলো ফেলছেন দুই এলিয়েনের চোখে। চমৎকার একটি আক্রমণ। প্রতিপক্ষকে বেশ মুষড়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে। এদিকে চতুষ্পদ প্রাণীটি সন্তুষ্ট হয়ে ডাকছে তার নিজের মোটা সুরে। খেলার এ পর্যায়ে পানি পানের বিরতি।
ছহি রকেট সায়েন্স শিক্ষা
শব্দের পাঁজর ছুঁয়ে
আইসক্রিম হাতে
স্কুল পালানো কিশোরী,
কিংবা
অপলক তাকিয়ে থাকা কিশোর,
কিংবা একটা মধ্য দুপুর,
আমাকেও ডেকে নিতে পারতো
ছায়াসঙ্গী হতে।
কিংবা বলতে পারতো মেঘ ডেকে আনা
অচিন বাঁশীবাদকের কাছে
তৃষ্ণার বর চেয়ে আনতে।
আমি অনেক গ্রীষ্মে
অপেক্ষায় থেকেছি, ঝরা পাতার মত
পায়ের নীচে বিছিয়ে
আমার পাঁজর বেয়ে হেটে যাবে
উদোম কিশোরী।
আমি লাল পাহাড়ের মত
সাদা বুক বকের কাছে চেয়েছি
একটা পালক,
কাকের কাছে চেয়েছি
একটা নখ।
আমি অপেক্ষায় থেকেছি
কিশোরীর স্কুল শেষে ফিরে আসার,
কিশোরের অপলক চোখের,
কিংবা উচ্ছল দুপুর রোদের।
আমাকে দাড় করিয়ে রাখতে পারতো
একটা প্রত্যাঘাত,
কিংবা একটা প্রতিশ্রুতি।
শব্দের পাঁজর ছুঁয়ে
জন্ম ১৯৪৭ সালের ১৪ই এপ্রিল। টাঙ্গাইলের মীরের বেতুকা গ্রামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করেন। করটিয়ার সা’দত কলেজ ও স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করেছেন। সহকারী সম্পাদক ছিলেন সাপ্তাহিক বিচিত্রা ও দৈনিক সংবাদ Ñএ। ১৯৭৮-৮০ সালে ছিলেন গণচীনের রেডিও পেইচিং এর ভাষা বিশেষজ্ঞ। ১৯৯৪-২০০৪ সালে ছিলেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ, গবেষণা, শিশুতোষসহ গ্রন্থের সংখ্যা ৭০ এর বেশি।
গল্প সংগ্রহ
অনিন্দ্য আসিফ। জন্ম- ২৩ মে, ১৯৮১। কতিয়াচর, কিশোরগঞ্জ। পিতা- মোঃ আব্দুল হাই, মা- হাওয়া আক্তার।
শাদা অথবা শূন্য
কবিতায় ভালোবাসার রূপ দিতে ভালো লাগে। ল্যাণ্ডস্কেপের কবিতাগুলি নানাভাবে বিভাজিত। তাই সকল সৌন্দর্য প্রায় একত্রে সন্নিবেশিত হয়েছে। অবৈতনিক আশ্রয়ের ভিতর গ্রন্থিত হয়েছে রুলটানা কাগজে আঁকা কিছু অবাস্তব বারুদ। যদি স্ফুলিঙ্গ ছাড়া জ্বলে ওঠে, ভালো। তোমার প্রজাপতি, আমার বাগান। তা হোক, সমুদ্রলিপি এখানেই রচিত হলো এবং আরো কিছু রয়ে গেলো পরবর্তীকালের জন্য। রয়ে গেলো একটি চন্দ্রগ্রস্ত মুখ। ঘোরগ্রস্ত চোখ, বাংলা ভাষা-ভাষী তো বটেই পৃথিবীর অন্যান্য ভাষা-ভাষীদেরও যদি পছন্দ হয়। কারণ গ্রন্থের সবগুলি কবিতা স্নিগ্ধ কিংবা সুখপাঠ্য হবে এমন নয়। মানুষের জীবনেরও সবগুলো অধ্যায় সুন্দর হয় না।
রাই সরিষার কাল
Get access to your Orders, Wishlist and Recommendations.
There are no reviews yet.