Additional information
Weight | 0.200 kg |
---|---|
Published Year |
$ 0.85 $ 1.41
মাহবুব মিত্র বিশ্বাস করেন মানুষই শিল্প; মানবতাই ধর্ম। মানুষবিহীন পৃথিবী শস্যহীন প্রান্তরের মতো। তিনি মনে করেন সৃষ্টি জগতের শ্রেষ্ঠ শিল্প মানুষের সৌন্দর্য। তাঁর প্রিয় বিখ্যাত দু’টি উক্তিÑ “মানুষ দেখার আনন্দে তুমি কখনো ক্লান্ত হয়ো না”, “ভুল মানুষের কাছে আমি নতজানু নই।” নীতির সাথে আপোসহীন চির প্রতিবাদী সতত ডানার মানুষ এক ক্লান্তিহীন গেয়ে যান ভালোবাসার গান, সমতার গান, মানবতার গান, সুন্দরের গান।
মাহবুব মিত্র বস্তুবাদী দার্শনিক মতবাদে বিশ্বাসী। আবার ভাববাদী দর্শনও মাঝে-মধ্যে তাঁকে ভাবায়। এই দুই মতবাদের ভিতর দিয়ে পথ হাঁটছেন। তিনি বুকে ধারণ করে আছেন সৃষ্টি জগতের সকল সুন্দরের নির্যাস। সাহিত্য ও শিল্পের বাগানে শব্দ বুনে-বুনে তৈরী করছেন মানব হৃদয়ের নৈবেদ্য। এই নিবিড় সংসারে একাকি নিঃসঙ্গ পথিক এক খুঁজে পেয়েছেন জীবনের সৌন্দর্যের অবিরাম ধারাপাত। তিনি মানব হৃদয়ে খুঁজে বেড়ান সুন্দরের স্বর্গভূমি।
তিনি সর্বদা আশাবাদী একজন প্রাণবন্ত-প্রফুল্ল মানুষ। তুমুল অন্ধকারের মাঝে খুঁজে ফেরেন আলোর ফোয়ারা। মানুষ তখনই মৃত যখন তার ভিতরের আনন্দ মরে যায়। চিরন্তন সুন্দরের জন্য হাহাকার-আকাক্সক্ষা, নৈতিক মূল্যবোধের উপলব্ধি, স্বতন্ত্র বোধের-চেতনার আলোয় উদ্ভাসিত তাঁর ভাবনার আকাশ। তাঁর সুকুমার কোমল প্রবৃত্তি আপন আলোয় ভাস্বর, দীপ্ত-শোভান্বিত, সদা জাগ্রত।
Weight | 0.200 kg |
---|---|
Published Year |
মেঘ অদিতি। কবি ও গল্পকার হিসেবে ‘দু’বাংলাতে পরিচিত। জন্ম: ৪মে, জামালপুর। বর্তমানে গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে কর্মরত। প্রকাশিত গ্রন্থ: ‘জলডুমুরের ঘুম (কাব্য)’ ‘অস্পষ্ট আলোর ঘোড়া (গল্প)’ ‘অদৃশ্যতা হে অনিশ্চিতি (কাব্য)’ এবং ‘সময় শূন্যতার বায়োস্কোপ (মুক্তগদ্য)।
প্রবেশিধকার সংরক্ষিত
লেখক পরিচিতি :
তানভীর আহমেদ হৃদয়। জন্ম: ৩ডিসেম্বর, ১৯৮৫ইং। মুন্সিগঞ্জ, বিক্রমপুর। প্রকাশিত গ্রন্থের তালিকায় আছে কবিতা, গল্প, উপন্যাস, ছড়া। এছাড়া সম্পাদিত গ্রন্থের তালিকায় আছে কবিতা ও গল্প। লেখকের লেখা প্রতিনিয়ত দেশে ও বিদেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে।
অচেনা রৌদ্রের রঙ
মুর্শিদা জামান। জন্ম: ১৯৮৩ সনে বর্তমান বরিশাল বিভাগের ঝালকাঠি জেলায়। শৈশব ও বেড়ে ওঠা দক্ষিণের খুলনা শহরে। বাংলায় অনার্স সহ এমএ করেন ইডেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখির সূত্রপাত। কবিতা লেখার পাশাপাশি বিভিন্ন ছোট কাগজ ও সাহিত্য বিষয়ক মাসিক পত্রিকাতে ছোটগল্প প্রকাশিত হয়েছে। প্রকৃতি ও পশু-পাখির প্রতি অগাধ ভালোবাসা ও সখ্যতা রয়েছে। বর্তমানে তিনি লেখালেখি নিয়েই ব্যস্ত।
অদৃশ্য ছায়ার প্রজাপতি
অরণ্যক তপু। জন্ম: ১৯৯৪ সালের ৮ই সেপ্টেম্বর, ঢাকার ঝিগাতলা। পৈত্রিক নিবাস বরিশালের পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি উপজেলায়। বর্তমানে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত। এটি লেখকের প্রথম প্রকাশিত বই।
ব্যথিত ভায়োলিন
হাসানআল আব্দুল্লাহ। জন্ম: ১৪ই এপ্রিল, ১৯৬৭। গোপালগঞ্জ জেলার গোপিনাথপুর গ্রামে। তিনি প্রবর্তন করেছেন নুতনধারার সনেট। তার মৌলিক কাব্যগ্রন্থর সংখ্যা দশ। বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার কবিতার অনুবাদে প্রকাশ করেছেন বিশ্ব কবিতার কয়েকছত্র। অন্যান্য প্রকাশিত গ্রন্থ- সনেটগুচ্ছ ও অন্যান্য কবিতা, আঁধারের সমান বয়স, এক পশলা সময় প্রভৃতি। ২০০৭ ও ২০১৫ সালে নিউইয়র্কের কুইন্স শহরের পোয়েট লরিয়েট ফাইনালিস্টের সন্মান পেয়েছেন।
বৃত্তের কেন্দ্রেও কবিতার মুখ
লেখক পরিচিতি :
হামীম ফারুক। পুরো নাম: গোলাম ফারুক হামীম। জন্ম: ২৪শে অক্টোবর, ১৯৬৩, ঢাকা। প্রথম তারুণ্যে কাজ করেছেন ইংরেজি পত্রিকা নিউ নেশন-এ। সাংবাদিকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করে এখন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন। মূলস্রোতের সাহিত্য পত্রিকাগুলোতে একটানা লিখেছেন ১৯৮৭ পর্যন্ত। মাঝখানে বিরতি দিয়ে পুনরায় আগমন প্রথম কবিতার বই ‘রোদ ও ক্রোধ, মাঝখানে সাঁকো’ দিয়ে। একটি ই-বুক আছে, ‘নক্ষত্রের চিরকূট’। এটি লেখকের তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ।
প্রকৃতি পুরাণ
কিছু একটা বলাটাই যখন বাধ্যবাধকতাÑবাহুল্য এবং আপেক্ষিক বাতুলতা বাদ রাইখা মাহবুব লীলেন থাইকা ধার কইরা বলতে হয়Ñ ‘আনফিট মিসফিট হইয়া হামাগুড়ি দিয়া হাঁটি, আর রাত্তিরে ক্যালেন্ডারের পাতায় দাগ টাইনা চিক্কুর দিয়া কইÑ যাহ শালা বাঁইচা গেলাম আরও একটা দিন।’
এইটা বড়োবেশি জৈবিক বাঁচা
মানবিক বাঁচনের স্বপ্নও দেখি না বহুদিন
বড়ো তরাসে আছি
বড়ো বেশি চাইপা আছি, নিজের গলা নিজে।
দ্বান্দ্বিক দ্বন্দ্ব বিষয়ক আজাইরা প্রলাপ
ডালিয়া চৌধুরী। তোলারাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্স মাস্টার্স শেষ করেছেন। কবিতার প্রতি ভালোবাসা থেকে কবিতা লেখার সূত্রপাত। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ, ‘অনুভবে সুখ’ ‘মেঘময় নিকুঞ্জে রধুন‘ ও ‘জলজ কামনা’।
নীল গোধূলি
আবু জাঈদ। জন্ম: ২২শে জুলাই ১৯৮৩, ঢাকা। পড়াশুনা অসমাপ্ত রেখে একসময় কবি বাউণ্ডুলে জীবনের এলোমেলো আলপথে নেমে যান বেঁচে থাকার প্রয়োজনে, তাই বলে কাব্যচর্চা থেমে থাকেনি। এক সন্তানের জনক। এটি লেখকের প্রথম প্রকাশিত বই।
মানচিত্রের ফাঁসি চাই
রাজন্য রুহানি। পরিবারের দেওয়া সনদসাক্ষ্য নাম মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। জন্ম: ২রা নভেম্ভর ১৯৮০, জামালপুর জেলা শহরের হাটচন্দ্রায়। কলেজে পা দেবার সাথে সাথেই সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন। স্থানীয় কয়েকটি দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকার বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। মফস্বল সাংবাদিকতার পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে না পেরে বারবার কবিতার কছেই ফেরা। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং। ১৯৯৮ থেকে কবিতার ভাঁজপত্র শব্দদূত সম্পাদনার সাথে যুক্ত। ঐ বছরই অন্যান্য লেখক সহযোগে আলোচনাগ্রন্থ- ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ; আতিয়ার রহমানের ৭টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। এটি লেখকের প্রকাশিত এককবই।
গল্প সমাপ্তির গান
আলী রেজা। জন্ম: ১৯৫৭। মুক্তিযুদ্ধে আলোড়িত কবি, সত্তর দশকে মূলত ছোটকাগজে লেখালেখি শুরু করেন। সদ্য অবসরে যাওয়া একটি রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠানের বিপণন ব্যবস্থাপক। এটি কবির প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ।
আলী রেজা
লেখক পরিচিতি :
শঙ্করী দাস। জন্ম: ৮ই মে, ১৯৫৮ সনে নিজ জেলা জামালপুরে। কবি প্রকাশিত অন্যান্য গ্রন্থগুলোÑ গল্প: ‘প্রতিবিম্ব ও অন্যান্য গল্প’ ‘জলমাটির গল্প’ ও ‘রাহুর চন্দ্রগ্রাস’। কবিতাÑ ‘ঘাসবোনা গ্রাম তাঁতবোনা গ্রাম’। স্মৃতিচারণমূলকÑ ‘গণমানুষের স্মৃতিতে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ’। গল্পের জন্যে পেয়েছেন পাক্ষিক ঐকতান (বর্ধমান) পত্রিকা পদক। শিশু কবি রকি সাহিত্য পুরস্কার ও নক্ষত্র সাহিত্য পুরস্কার।
বিহান বেলার ঈশ্বর
মির্জা মুজাহিদ। পেশাগতভাবে বিজ্ঞাপন শিল্পের সাথে জড়িত। জন্মেছেন নড়াইল শহরে। এখন ঢাকায় থাকেন। চেষ্টা করে যাচ্ছেন নিয়মিত ‘কথা’র শিল্পী হতে।
বিপ্রতীপ
আবু তাহের সরফরাজ। সবার মাঝে থেকেও সে আলাদা। দৃশ্যের ভেতরও অদৃশ্য। বেঁচে থাকতে চান লেখালেখির মাঝে।
যখন আঁধার যখন কুয়াশা
ফজিলা ইসলাম ফৌজি নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরে ১৯৭২ সালের ৮ই মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতৃনিবাস মেহেরপুর জেলার কোলা গ্রামের বাবু পাড়ায়। পিতার নাম মোঃ হাফিজ উদ্দিন মাতার নাম মোছাঃ রাকিবা বেগম।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হিসাববিজ্ঞান বিভাগ (অনার্স মাষ্টার্স) শেষ করে ১৯৯৯ সালে রাজশাহীর ইসলামিয়া কলেজে শিক্ষক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে কলেজ পরিবর্তন করে বর্তমানে তিনি মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার গাংনী মহিলা ডিগ্রী কলেজে হিসাববিজ্ঞানের প্রভাষক হিসাবে নিয়োজিত আছেন।
মানচিত্রে রক্তক্ষরণ
একাত্তরের কথকতা
লেখক পরিচিতি :
ফকির ইলিয়াস। মূলত: কবি। এছাড়া অবাধ যাতায়াত আছে প্রবন্ধ ও গ্রন্থসমালোনায়। সাংবাদিক হিসাবেও ব্যাপক পরিচিতি আছে। প্রবাসে বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি, কৃষ্টি-লালন ও চর্চায় তিনি নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। এযাবৎ প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা তেরটি। বিভিন্ন দেশের সাহিত্য পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে নিয়মিত লেখা ছাপা হচ্ছে। ‘ঠিকানা শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ পুরস্কার’ ‘ফোবানা সাহিত্য পুরস্কার’সহ আরও অনেক পুরস্কারে তিনি ভূষিত হয়েছেন দেশে ও বিদেশে। বর্তমানে স্বপরিবারে নিউইয়র্কে বসবাস করছেন।
গৃহীত গ্রাফগদ্য
সৈয়দ রায়হান বিন ওয়ালী। লেখক নাম: সৈয়দ ওয়ালী। জন্ম: ১৭ই জানুয়ারি ১৯৬৭। জন্মস্থান: পুরাতন ঢাকা। পিতা: সৈয়দ ওয়ালী হোসেন সুলতান। মাতা: সোহেলি ফেরদৌসী। পৈত্রিক ভিটে: কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি উপজেলার ইসলামপুর গ্রাম।
বেড়ে উঠা: সৈয়দ ওয়ালীর শৈশবের প্রথম কয়েক বছর কাটে পুরাতন ঢাকার বংশালে। তবে দেশ স্বাধীন হবার বছর খানেক পর পারিবারিক আর্থিক সংকটের কারণে পিতার নানী-বাড়ি গাজীপুরের কালিয়াকৈর-জমিদার- বাড়ির গ্রামীণ পরিবেশে কাটে শৈশব ও কৈশোরের পরবর্তী কয়েক বছর। যার সুবাদে সে শহর ও গ্রামের দ্বৈত জীবনের অভিজ্ঞতায় বেড়ে উঠার সুযোগ পায়। যে দ্বৈত-জীবনের অভিজ্ঞতার বিবিধ বৈশিষ্ট তার বিভিন্ন কবিতায় গদিয়ান। শিশুকাল থেকে সাহিত্যের অন্যান্য মাধ্যমের প্রতি তীব্র টান অনুভব করলেও মূলত যৌবনে এসেই সৈয়দ ওয়ালী ধীরে ধীরে কবিতা জগতের প্রতি মুগ্ধ হতে থাকে এবং নিজের কবিতা সৃজনের তৃষ্ণা নিজের ভেতর অনুভব করতে থাকে, যে তৃষ্ণা পরিশেষে তাকে কবিতা চর্চায় নিমগ্ন করে; সৃষ্টিশীলতা শুরুর বছর বিচারে যা ইংরেজি বর্ষপঞ্জির ১৯৮৯/১৯৯০। সেই থেকেই সৈয়দ ওয়ালী কবিতার ভাব ভাষা ছন্দ ও শৈলী নিয়ে বিচিত্র পরীক্ষা নিরীক্ষা করা ও এইসব উপাদানের যথাযথ সমন্বয়ের মাধ্যমে সৃজন করে চলেছেন তার কবিতার নিজস্ব ও স্বতন্ত্র এক জগৎ, যা আজ অবধি চলমান।
প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থঃ ‘তুমি ও তোমাদের হাত ছুঁয়ে ছুঁয়ে’, ‘বিনত খসড়া’।
……………………………
জলজ স্বাক্ষর
‘পুরো সিরিজটির মধ্যে টের পাই, তুমি শক্তিমত্তা নিয়ে ধেয়ে আসছ।’ বেশ কিছুদিন হয় মারুফ আহমেদ নয়ন ‘ডেকে নিও গোপনে’ পাণ্ডুলিপিটি মেইল করে পড়তে দিলে পাঠপ্রতিক্রিয়ায় উপর-উদ্ধৃত বাক্যটি লিখেছিলাম। আজ সেই পাণ্ডুলিপির পুণঃপাঠে ওই বাক্যটিকে রেখেই কথা বলতে হচ্ছে। নয়ন বয়সে নবীন, তুলনায় ওঁর কবিতা অনেক ম্যাচিউর। অবাক হতে হয়, পাণ্ডুলিপির কবিতাগুলো সদ্য বয়সন্ধিকাল পেরিয়ে আসা একজন কবির লেখা। সে ক্ষেত্রে পোলিশ কবি রেনিয়া স্পাইগেলের কথা মনে পড়ে। যদিও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হলোকস্টের শিকার হয়ে রেনিয়া’র কিশোর বয়সেই দুঃখজনক মৃত্যু হয়েছিল, তা বাদে কবিতার বোধ ও চেতনার দিক থেকে নয়ন যেন রেনিয়ার উত্তরাধিকার। মারুফ আহমেদ নয়নের কবিতায় আবহমান বাংলা কবিতার আবেগ আছে, তবে তা বাড়াবাড়ি পর্যায়ের মনে হয় না। আবেগের লাগাম টেনে ধরে তার যথার্থ ব্যবহারের সক্ষমতা আছে নয়নের। ওঁর কবিতায় চিত্রকল্প ও কল্পচিত্রের ব্যবহারগুলো মুগ্ধ করে। ওঁর ভাষা বয়ন সুন্দর-স্বচ্ছ। কবিতায় অনুকরণ অনুসরণ নিয়ে আজ কথা উঠছে। কারও কবিতার ভাষা বা শৈলী পাঠক সমাজে সামান্য মান্যতা পেলে তাকেই মুদ্রার মতো ভাঙিয়ে লিখছেন অনুজ ও সমসাময়িকরা। সে ক্ষেত্রে মারুফ আহমেদ নয়ন নিজেকে অপর দূরত্বে রাখেন। শিল্পের জন্য কবিতার জন্য যা স্বাস্থ্যকর। আবহমান বাংলা কবিতার মুকুটে মারুফ আহমেদ নয়ন একটি নতুন পালকের সংযুক্তি হিসেবে স্মরণীয় হোক।
মাসুদার রহমান
সোনাপাড়া
১৬/১১/২০২১
ডেকে নিও গোপনে
সুজন হাজারী-
জন্ম :- ১৫ মে, ১৯৫৩
জন্মস্থান :- উজল, হিলি দক্ষিণ দিনাজপুর, পশ্চিম বাংলা, ইন্ডিয়া; মাতুলালয়।
শিক্ষা :- ব্যচলার অফ আর্টস।
বৈবাহিক তথ্য :- বিবাহিত।
স্ত্রীর নাম :- মোসাম্মৎ নাসরিন আখতার।
সন্তানদের নাম :- সুবর্ণ সম্ভার, সুদিপ্ত সম্ভার, সুহিত সম্ভার।
ভাইবোন :- চার ভাই, এক বোন।
সিদাম পাহান
এক.
বর্তমান ইরাকের মসুল যে শহর, প্রাচীনকালে তাকে বলা হতো নিনেভেহ। সে সময়ের আসিরীয় রাজা আসুরবানিপালের লাইব্রেরির ধ্বংসাবশেষ থেকে ১৮৪৩ সালে গবেষকরা প্রাচীন আক্কাডিয়ান ভাষায় লেখা কিছু মাটির ফলক খুঁজে পেয়েছিলেন। আসুরবানিপালের সময়ে লেখার পদ্ধতি ছিল এমন যে, প্রথমে মাটির ফলকে খোদাই করে লেখা হতো। তারপর সেটাকে স্থায়ী রূপ দিতে পোড়ানো হতো। তখনকার দিনে লেখার এই পদ্ধতিকে ‘কিউনিফর্ম’ বলা হতো। বহু কাঠখড় পুড়িয়ে গবেষকরা মাটির ফলকের সেই লেখার অর্থ উদ্ধার করেছিলেন, যা ছিল আধুনিক সাহিত্যবিশ্বের জন্য চমকস্বরূপ। মোট ১২টি মাটির ফলক থেকে উদ্ধার হয় এমন এক অসাধারণ কল্পকাহিনী, যা পরবর্তীতে ‘উর শহরের রাজা গিলগামেশ ও তার বন্ধু এনকিদুর কাহিনী’ হিসেবে সমাদৃত হয় বিশ্বসাহিত্যের বোদ্ধাদের কাছে! ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে পৃথিবীর প্রথম লিখিত গল্প এটাকেই ধরা হয়ে থাকে। মাটির ফলকগুলোতে গবেষণা চালিয়ে জানা যায়, সেগুলোর বয়স ছিল প্রায় ৪০০০ থেকে ৪৫০০ বছর, যা শুধু রামায়ণ বা মহাভারতই নয়, গ্রিসের অডিসি আর ইলিয়ডের চেয়েও পুরোনো ছিল।
সাহিত্য জগতে প্রচলিত একটা কথা আছেÑ ‘যারা গল্প বা উপন্যাস লেখেন, তাঁরা স্বভাবজাত নিঃসঙ্গ হন’। এই নিঃসঙ্গতাই লেখককে বিভিন্ন গল্পের ভিতরে একাকার করে দেয়, উদ্বুদ্ধ করে গল্প রচনায়। কথাটা একটু ঘুরিয়ে বললে এভাবেও বলা যায়, ‘গল্পের ভিতরে যা কিছু থাকে, তা লেখকের মনোজগতে বিচরণ করা পুঞ্জিভূত বিভিন্ন ঘটনা, চরিত্র আর দিনরাত্রির গুচ্ছভাবনা’। লেখকের মনোজগতের যে বিশাল সময়ভা-ার, তা টইটম্বুর থাকে এসব ঘটনা, চরিত্র আর দিনকাল দিয়ে। ঘটনা, চরিত্র, দিনকাল বলতে গল্পের ভিতর যা কিছু থাকে, তা তো লেখকের ভাবনারই ‘কার্বনকপি’। সুতরাং ভাবনার জগতে লেখক কোনো অর্থেই নিঃসঙ্গ নন! বরং পার্থিব জগতের যে কোনো মানব-মানবীর অভ্যস্ত সমাজ-জীবনের চেয়ে লেখক অনেক বেশি সামাজিক এবং ব্যস্ত! লেখকের পার্থিব জীবন বিবিধ ‘অনুষঙ্গে’ পূর্ণ থাকলে গল্পের যে ঘটনা, চরিত্র বা আবহাওয়াগুলো থাকে, তা সৃষ্টিতে হয়তো লেখক সেভাবে সফল হতে পারতেন না। তাহলে কি লেখক সামাজিক জীব নন? লেখক কি তাহলে সংসারত্যাগী এমন কেউ যাকে সন্ন্যাসী, বাউল বা ব্রহ্মচারী বলে? এর জবাব কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৯৪ সালের ২৭ জুন শিলাইদহ থেকে ইন্দিরা দেবীকে এভাবেই দিয়েছিলেন- ‘আজকাল মনে হচ্ছে যদি আমি আর কিছু না করে ছোট ছোট গল্প লিখতে বসি, তাহলে কতকটা মনের সুখে থাকি এবং কৃতকার্য হতে পারলে হয়তো পাঁচজন পাঠকেরও মনের সুখের কারণ হওয়া যায়। গল্প লেখার একটা সুখ এই, যাদের কথা লিখব তাঁরা আমার দিনরাত্রির সমস্ত অবসর একেবারে ভরে রেখে দেবে, আমার একলা মনের সঙ্গী হবে, বর্ষার সময় বদ্ধঘরের সংকীর্ণতা দূর করবে এবং রৌদ্রের সময় পদ্মাতীরের উজ্জ্বল দৃশ্যের মধ্যে আমার চোখের পরে বেরিয়ে বেড়াবে’! রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্প রচনার প্রাথমিক প্রেরণা বা উদ্দেশ্যের যে রূপকল্প, তার কিছুটা আভাস এই কথাগুলোর ভিতরেই পাওয়া যায়।
রেহানা বীথি এমনই একজন গল্প-লেখক। বীথির পৈতৃক নিবাস চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহাডাঙা গ্রামে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ থেকে এলএলবি (অনার্স) ও এলএলএম পাস করার পর ২০০১ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় একজন আইনজীবী হিসেবে বীথির কর্মজীবন শুরু হয় এবং বর্তমানে তিনি অ্যাসিস্ট্যান্ট পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। কলকাতা থেকে প্রকাশিত ‘শনিবারের আসর’ নামে একটি সংকলনে তাঁর প্রথম গল্পটি প্রকাশ হওয়ার মধ্য দিয়ে রেহানা বীথির গল্প-লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ।
রেহানা বীথি মোট চৌদ্দটি বাছাইকৃত ছোটগল্প দিয়ে সাজিয়েছেন তাঁর ‘আলো আসে ওখানেও’ বইটি। এটাই বীথির প্রথম বই। প্রথম বই প্রকাশের সময় সব লেখকই প্রচ- স্নায়ুচাপে থাকেন। এটা অবশ্য নিয়ম নয়; তবে অবধারিত! বই প্রকাশের বিভিন্ন চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন কাজটি হচ্ছে বইয়ের একটা যুৎসই নাম দেয়া। শুধুমাত্র নাম খুঁজতে গিয়ে লেখককে অনেক রাত নির্ঘুম কাটাতে হয়, সলাপরামর্শ করতে হয় সজ্জনদের সাথে। তারপরেও কি লেখক সন্তুষ্ট হতে পারেন! ‘বইয়ের শ্রেষ্ঠ নাম পৃথিবীর কোনো লেখকই কোনোদিন খুঁজে পেয়েছেন বলে শুনিনি’। রেহানা বীথির ক্ষেত্রেও হয়তো এর ব্যত্যয় হয়নি! একটা বইয়ে অনেকগুলো গল্প, কবিতা বা প্রবন্ধ থাকতে পারে এবং সেখান থেকে কোনো একটা লেখার ‘শিরোনাম বা নাম’ ব্যবহার করে বইয়ের নামকরণ করাটা বেশ পুরোনো প্রথা, যা বীথির বইয়ের ক্ষেত্রেও হয়েছে। বইয়ে ব্যবহৃত নামটি যে লেখার শিরোনাম বা নাম থেকে নেয়া হয়, সেই লেখাটি তখন একই সাথে অন্যান্য লেখাগুলো থেকে কিছুটা আলাদা গুরুত্ব বা মর্যাদা পায় এবং বইয়ের অন্যান্য লেখাগুলোর প্রতিনিধিত্ব করে। সুতরাং এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বইয়ের নামকরণের ক্ষেত্রে লেখককে যথেষ্ট সচেতন এবং মুন্সিয়ানার পরিচয় দিতে হয়, যাতে ‘বইয়ের নাম’ পড়ে পাঠকের বুঝে নিতে অসুবিধা না হয় বাকি লেখাগুলোর আদি-অন্তের খবর এবং সেই সাথে বইয়ের পরিশোধিত আগাম কিছুটা স্বাদ!
দুই.
রেহানা বীথির চৌদ্দটি গল্পের একটি ‘আলো আসে ওখানেও’ এবং এই গল্পের নামেই লেখক মূল বইয়ের নামকরণ করেছেন। স্বভাবত কারণেই গল্পটির গুরুত্ব বা মর্যাদা বইয়ের অন্যান্য গল্পের চেয়ে কিছুটা আলাদা হয়েছে! ‘আলো আসে ওখানেও’ গল্পটি সমাজ-জীবনের হাজারো অনুচ্চারিত যে অধ্যায়গুলো রয়েছে তাঁদেরই একটি, যেখানে অন্ধগলির এক ববিতার কথা লিখেছেন বীথি। তাঁর বর্ণনায় ফুটে উঠেছে অন্ধকার গলির বাসিন্দাদের কথা। ‘দিনের আলোয় ঘুমিয়ে থাকে তাঁরা। দিন শেষে যখন রাত নামে, জেগে ওঠে ওরা। সাজানো পসারের মতো নিজেদের সাজিয়ে অপেক্ষায় থাকে দোকানের মতো ঘরগুলোর সামনে; খদ্দেরের আশায়! উৎকট সাজ আর শরীরের মোহময় বিভঙ্গে খদ্দেরকে আকৃষ্ট করার প্রয়াসে ঢাকা পড়ে যায় পাহাড়সম বুকের মাঝে জমে থাকা কষ্টগুলো। কোনো অবসরে কষ্টগুলো কখনো-সখনো জেগে ওঠে, মনে করিয়ে দেয় অতীতের ভাসা ভাসা কিছু সুখস্মৃতি! ‘ফুলি’ নাম থেকে ববিতা হয়ে ওঠা নারীর মৃত বৃদ্ধ স্বামীর গায়ের আতরের কড়া গন্ধ আর হামানদিস্তায় পান ছেঁচার মতো কদর্য হাসি গায়ে জ্বালা ধরায়। মনে পড়ে যায় সময়ের সাথে হারিয়ে যাওয়া ফুলির কথা, দুখিনী মা, সবুজ গ্রাম…’। গল্পের মূল নায়িকার ফুলি থেকে ববিতা হয়ে ওঠার অবিচারে ভরা অসম যে পথ, রেহানা বীথি চমৎকার শব্দশৈলীতে তা ফুটিয়ে তোলার প্রয়াস পেয়েছেন এই গল্পে। আদিকাল থেকে বাংলাসাহিত্যে এ-ধরনের গল্পের পটভূমি পাঠকদের কাছে নতুন নয়। তবুও রেহানা বীথির ‘আলো আসে ওখানেও, পাঠকদের কাছে এক ‘ভিন্নতার’ স্বাদ এনে দেবে!
ধবধবে জ্যোৎস্নায় সিঁড়ি ভেঙ্গে ছাদে গিয়ে দেখা যায় ডাকঘর, যেখানে গচ্ছিত রয়েছে প্রিয়জনদের অসংখ্য চিঠি। অথচ কেউ সেখানে নেই! সিঁড়ির সবক’টা ধাপ পেরিয়ে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছে স্বপ্নভঙ্গের এক অনবদ্য গল্প ‘সামনে সিঁড়িপথ’। ‘স্বপ্নচাষী’ গল্পে একজন টিউশন মাস্টারের স্বপ্নহীন জীবন কীভাবে একটু একটু করে রঙিন স্বপ্নের বুননে বদলে দেয়া যায়, তারই গল্প! বাস্তবতার পরাশৃঙ্খলতাকে অস্বীকার করে অলীক স্বপ্নের জালে বোনা অবাস্তব জীবনের যে উপাখ্যান, লেখক শব্দের নিপুণ কারুকার্যতায় ফুটিয়ে তুলেছেন তাঁর ‘স্বপ্নচাষী’ গল্পে। গ্রামের সহজ-সরল ভ্যানচালকের গল্প ‘আলাদিনের চেরাগ এবং…’। আধুনিক গল্পের সাথে রূপকথার অনবদ্য সংমিশ্রণ ঘটিয়ে গল্পকারের ভূমিকায় লেখক রেহানা বীথি এক অনবদ্যতার ছাপ রেখেছেন এই গল্পে, যেখানে যথেষ্ট সতর্কতার সাথে তিনি দারিদ্র্যের কষাঘাতে পতিত নিম্ন-মধ্যবিত্তের মনস্তাত্ত্বিক ঘোর-প্যাঁচগুলোকে বিশ্লেষণ করেছেন। বেদে বহরের মেয়ে ললিতার ডাঙার প্রতি আকর্ষণ, ডাঙার ছেলে গণেশের সাথে তার প্রেম এবং সংসার বাঁধার স্বপ্ন, ‘এই তিনকে’ বেঁধেছেন লেখক তাঁর ‘মধুমতির বেদেনী’ গল্পটিতে। এছাড়াও বইটিতে রয়েছে নগরে দেবদূত, অতিক্রম, দলছুট প্রজাপতি, সুখকেদারা এবং অতসীপ্রেম, বিষধর, ফেরা, কাঁসার বাটি, শোরগোল অতঃপর…ইত্যাদি শিরোনামের অত্যন্ত সুপাঠ্য গল্পগুলো।
প্রাচীন মেসোপটেমিয়ার সবচেয়ে উন্নত ও সমৃদ্ধ শহর উরের রাজা ছিলেন গিলগামেশ। একাধারে তিনি ছিলেন অত্যাচারী এবং খামখেয়ালী। তিনি শারীরিকভাবে তিনভাগের দুই ভাগ ছিলেন দেবতা। ভাবতেন, দেবতাদের মতো তিনিও ছিলেন অসীম ক্ষমতাশালী এবং অসাধ্য বলে তাঁর ভাবনায় কিছু ছিল না। গিলগামেশের গল্পটি ছিল মূলত ‘অহংবোধ ভেঙ্গে একজন সাধারণ মাটির মানুষে রূপান্তর হওয়ার’ গল্প। ‘রাজা গিলগামেশ’ গল্পে রূপকের ব্যবহার অত্যন্ত প্রাঞ্জল। কয়েক হাজার বছরের পুরোনো গল্পে রূপকের ব্যবহারে এবং তার মাত্রায় যে পা-িত্যের বহর দেখা যায়, তা গল্পটিকে করেছে অনেক বেশি শক্তিশালী এবং পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্য। রেহানা বীথির গল্পগুলোতেও রয়েছে রূপকের অকৃপণ ব্যবহার। তাঁর প্রতিটা গল্পে একই সাথে রয়েছে জীবনের বিবিধ বৈচিত্র্য এবং অবিচারে পতিত জীবন, যা খোলা চোখে দেখা গেলেও লেখকের বর্ণনাশৈলীতে হয়েছে আরো বেশি প্রাঞ্জল।
‘রাজা গিলগামেশ’ যদি পৃথিবীর প্রথম স্বীকৃত গল্প হয়, তাহলে তারই ধারাবাহিকতায় আজ-অবধি যত গল্প লেখা হয়েছে এবং রেহানা বীথির গল্পগুলোও একই ধারাবাহিকতায় এবং ফ্রেমে বাঁধা বললে অত্যুক্তি করা হবে না। বইয়ের প্রতিটা গল্পে রূপক ব্যবহারের আধিক্য, সূক্ষ্ম বিবেচনায় সমাজ-সংসারের চুলচেরা বিশ্লেষণ, জীবনের বিস্তৃত স্বপ্ন, গল্পের ছলে বিবিধ সমস্যার সমাধান ইত্যাদি বিষয়াদিগুলো গল্পকে শুধু গল্পের সীমারেখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখেননি, আগবাড়িয়ে ক্ষেত্রবিশেষে তার সমাধানও দিয়েছেন লেখক। বীথির প্রতিটি গল্পে যে মিলের জায়গাটি রয়েছে, তা হলো ’স্বপ্ন’। গল্পের উপাদান হিসেবে স্বপ্নের ব্যবহার একটি স্বভাব বা অভ্যাস। সে কারণে গল্প-লেখক হিসেবে রেহানা বীথির ‘লেখক-চিহ্ন’ হতে পারে ‘স্বপ্ন’, যা তাঁকে পাঠকসমাজে স্বতন্ত্রভাবে উপস্থাপন এবং স্বপ্রতিভূ করবে!
গল্প লেখার মানুষ পৃথিবীতে খুব বেশি নেই; তবে গল্প বলতে পারে প্রায় সবাই। গল্প লেখা আর গল্প বলা এক জিনিস নয়। গল্প লেখা এক ধরনের কাজ, যা তৈরি করতে হয়। ‘ঘরে তো মানুষই থাকে। কিন্তু ঘর বানাতে পারে কয়জন’! গল্প লেখারও কিছু শৈলী এবং কলাকৌশল আছে, যা সবাই রপ্ত করতে পারেন না। এ ব্যাপারে কয়েকজন লেখকের সাথে একাধিকবার আলাপও হয়েছে আমার। সবাই একমত হয়েছেন যে, গল্প লেখা গল্পবাজদের কাজ নয়। গল্প লেখার সুনির্দিষ্ট কলাকৌশল বা ব্যাকরণ হয়তো নেই। তবে যা কিছু আছে, তা নিজ থেকেই আয়ত্ত করতে হয়। লেখকের সিদ্ধতা লাভ হয় নিজ তাগিদেই। গল্প লেখা ‘গুরুমুখী বিদ্যা নয়’! পৃথিবীর সবকিছুই সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে চলে। গল্প লেখারও কিছু নিয়ম আছে, যার অনুসরণে লেখকের সিদ্ধতার পরিমাপ হয়। ভিন্ন কথায়, একজন লেখকের সাথে অন্য লেখকের পার্থক্যের জায়গাটা মূলত তাঁদের সিদ্ধতা পরিমাপের মধ্য দিয়েই হয়। আর এই পরিমাপের গুরুদায়িত্বটি পালন করেন পাঠক! ২০২০ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় রেহানা বীথির প্রথম প্রকাশিত গল্পের বই ‘আলো আসে ওখানেও’ নিঃসন্দেহে পাঠকদের কাছে সমাদৃত হবে।
সাব্বির খান, লেখক ও সাংবাদিক
আলো আসে ওখানেও
কামরুজ্জামান কাজল বয়সে অনেক নবীন হওয়া সত্ত্বেও [জন্ম ২৫ মার্চ ১৯৯১] এবং অণুগল্প চর্চায় খুব বেশিদিন অতিবাহিত না করলেও ‘দলছুট শালিকগণ’ নামে যে বইটি প্রকাশিত হল;-এর বৈচিত্র্যপুর্ণ বিষয়বস্তু এবং অণুগল্প সম্পর্কিত ধারণার সাথে লেখকের যে নিবিড় ঐক্য স্থাপিত হয়েছে- বইটির পাঠশেষে এই কথাটাই মনে করবেন বিজ্ঞপাঠকগণ।
পাবনার ঈশ্বরদী থেকে আসা এই যুবকের ইতিপুর্বে ‘ শ্যাম পাহাড়ের আড়ালে’ নামে একটি কাব্যগ্রন্থও প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৬’র একুশে বইমেলায়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এগ্রিকালচারে স্নাতক শেষ করে লেখক বর্তমানে শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্তিকা বিজ্ঞানে মাস্টার্স করছেন।
‘দলছুট শালিকগণ’ কামরুজ্জামান কাজলের প্রথম অণুগল্পগ্রন্থ। অণুগল্পের ভিত্তি, বিকাশ এবং প্রচারে এই বইটি একটি মাইলফলক হিসেবে ভবিষ্যতে উচ্চারিত হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।
দলছুট শালিকগন
হাসানআল আব্দুল্লাহ। জন্ম: ১৪ই এপ্রিল, ১৯৬৭। গোপালগঞ্জ জেলার গোপিনাথপুর গ্রামে। তিনি প্রবর্তন করেছেন নুতনধারার সনেট। তার মৌলিক কাব্যগ্রন্থর সংখ্যা দশ। বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার কবিতার অনুবাদে প্রকাশ করেছেন বিশ্ব কবিতার কয়েকছত্র। অন্যান্য প্রকাশিত গ্রন্থ- সনেটগুচ্ছ ও অন্যান্য কবিতা, আঁধারের সমান বয়স, এক পশলা সময় প্রভৃতি। ২০০৭ ও ২০১৫ সালে নিউইয়র্কের কুইন্স শহরের পোয়েট লরিয়েট ফাইনালিস্টের সন্মান পেয়েছেন।
বৃত্তের কেন্দ্রেও কবিতার মুখ
জুলিয়ান সিদ্দিকী। জন্মÑ ১৯৬৮, পাকশী, পাবনা। বর্তমান আবাসস্থলÑ সৌদি আরব, পেশাÑ চাকুরী। গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ লেখেন। প্রকাশিত অন্যান্য গ্রন্থÑ উত্তাপ কিংবা উষ্ণতা, কম্পেন্ডার, ছায়াম্লান দিন, ভালবাসার যাতনা যত প্রভৃতি। বাংলা লাইভ ডট কম সেরা গল্প পুরস্কার পেয়েছেন।
বিশ্বাসের দহন ও অন্যান্য গল্প
লেখক পরিচিতি :
সরদার ফারুক। জন্ম: ৯ই নভেম্বর, ১৯৬২। কপোতাক্ষ নদের তীর খালিশপুরে, পৈত্রিক নিবাস বরিশালের খালিশপুর। পেশায় বিশষজ্ঞ চিকিৎসক। ছাত্রজীবন থেকেই প্রগতিশীল ছাত্র-শ্রমিক-কৃষক আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন। বরিশালে ঘাট শ্রমিকদের আন্দোলন, ডেমরায় শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সংগ্রাম ও বাজিতপুরের জেলেদের লড়াইয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। কবির প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘অন্যদের তর্কে ঢুকে পড়ি’ সহ মোট ৭টি।
অন্যদের তর্কে ঢুকে পড়ি
আশরাফ উদ্দীন আহ্মদ
কবি-কথাশিল্পী-প্রাবন্ধিক।
জম্ম- ১৬ কার্তিক, ১৩৮৪ বাং, বোয়ালমারী, ফরিদপুর।
আম্মা- বেগম সালেহা আহ্মদ,
আব্বাÑআফতাব উদ্দীন আহ্মদ,
শিক্ষা- স্নাতকোত্তর (বাংলা ভাষা ও সাহিত্য) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
লেখালেখি কৈশোরেই, ছড়া দিয়ে হাতেখড়ি, কবিতা-ছোটগল্প-উপন্যাস-প্রবন্ধ লেখা মূলত। বাংলা একাডেমী পরিচালিত ১৯৯৬ এর ‘তরুণ লেখক প্রকল্প’ র তৃতীয় কোর্সে অংশ এবং প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘ সীমান্তরেখা ’ ১৯৯৭ সালে প্রকাশ, দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ ‘ চতুর্ভূজ’ (যৌথ) ২০০২ সালে প্রকাশ বইমেলায়, তৃতীয় গল্পগ্রন্থ‘ ভালোবাসা ও এসব নিছক গল্প’ ২০০৬ সালের বইমেলায় প্রকাশ, চতুর্থ গল্পগ্রন্থ ‘পদ্মাপাড়ের গল্প (যৌর্থ) ২০০৭ সালে প্রকাশ বইমেলায়, পঞ্চম প্রকাশ, প্রবন্ধগ্রন্থ ‘কথাকার ও কথাসাহিত্য’ ২০১৬ সালে বইমেলায়, ষষ্ট প্রকাশ, প্রবন্ধগ্রন্থ ‘ মুলধারা সাহিতের রকমফের’ ২০১৯, সপ্তম প্রকাশ, গল্পগ্রন্থ ‘তারপর অন্ধকার দুঃসময়’ ২০১৯, অষ্টম প্রকাশ, গল্পগ্রন্থ ‘ হামিদালীর সুখ-স্বপ্ন ও অন্যান্য গল্প’ ২০২০ সালের একুশে বইমেলায়, নবম প্রকাশ, গল্পগ্রন্থ ‘ সেদিনও উঠেছিলো চাঁদ দিয়েছিলো জ্যোৎস্না’ (প্রকাশিতব্য)।
পৈত্রিক আদিনিবাস পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার শান্তিপুরে, সীমান্ত-সীমান্তের এপার-ওপারের প্রকৃতি ও মানুষ এবং তাদের জীবন ও জীবিকার পিচ্ছিল বিড়ম্বনা গল্পের মূল বিষয়-আশয়। সে সমস্ত চরিত্রগুলো ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে গল্পের আখ্যানে কাহিনীর মেজাজ বা স্বরে, কখনো মনে হয় তারাই গল্পের স্বপ্নবীজ, স্বপ্নের আঙ্গিকে নির্মিত হয়েছে কাঠামো, বাস্তবিকই মানুষ যেন মানুষের আবরণে শুধুই খোলস পাল্টে দন্ডায়মান, চেনা খুবই কঠিন, সেই কঠিনের আধোছায়ায় মোক্ষম যে পৃথিবী, তারই রূপ বর্ণিত হয়েছে গল্পবীক্ষায়।
ভালো লাগে নিভৃতে কবিতা-গল্প লিখতে নিজের মতো করে, সাহিত্যিক অগ্রজ বন্ধুদের পরামর্শে, লিটল ম্যাগাজিন বা দৈনিক সাহিত্য সম্পাদক বন্ধুদের কল্যাণে প্রবন্ধ লেখা, সাহিত্য বিষয়ক প্রবন্ধের প্রতি বরারবই ঝোঁক, সে’ কারণে প্রবন্ধ লেখা। যা লিখি, পড়তে ভালো লাগে সময়ে-অসময়ে, নেশা বলতে পড়া, ইতিহাস-সাহিত্য-নৃতত্বদর্শন নানাবিষয়। পেশা, বেসরকারী চাকুরী, জীবনধারণের জন্য যা আবশ্যক, তার বাইরে অবলম্বন সাহিত্যই । ###
কথাসাহিত্যের বারান্দায়
শঙ্করী দাস
জন্ম: ০৫ মে, ১৯৫৮ সন, জামালপুর।
প্রকাশিত গ্রন্থ গল্প:
প্রতিবিম্ব ও অন্যান্য গল্প
জলমাটির গল্প
পায়ের চিহ্ন
রাহুর চন্দ্রগ্রাস
প্রকাশিত গ্রন্থ কবিতা:
ঘাসবোনা গ্রাম তাঁতবোনা গ্রাম
বিহান বেলার ঈশ্বর
বল তোমার কুশল শুনি
গবেষণামূলক:
গণমানুষের স্মৃতিতে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ
সম্মাননা:
জলমাটির গল্পের জন্য পাক্ষিক ঐকতান (বর্ধমান) পত্রিকা পদক। শিশুকবি রকি সাহিত্য পুরস্কার ও নক্ষত্র সাহিত্য পুরস্কার।
শঙ্করী দাসের ষোলটি গল্প
Get access to your Orders, Wishlist and Recommendations.
There are no reviews yet.