Additional information
Weight | 0.200 kg |
---|---|
Published Year |
$ 1.13 $ 1.88
বিমূর্ত ভাবনার মূর্ত প্রকাশ কবিতা। কবি ঘোরলাগা নেশার ঘোরে মননে সৃষ্টি করেন কবিতার অন্তর্নিহিত ভাব। অন্তর্নিহিত ভাবে কবি ভাবনার শিল্প-দ্যোতনায় তৈরি হয় নান্দনিকতা। সংবেদনশীল কবিমনই কবিতার জন্মভূমি। কবিমন জীবন ও জগতের সংস্পর্শে এসে ভাবাবেগে স্পন্দিত হয়ে ছন্দিত বাণী বিকশিত করে। কবিতার ছন্দময় শরীরে চরম শৈল্পিক উৎকর্ষতায় কবি কবিতার আত্মা সৃষ্টি করেন। চিত্রকল্প, রূপকল্প, উপমা, উৎপ্রেক্ষা, অলঙ্কার, চৈতন্যে মুগ্ধতার আবেশ ইত্যাদি দিয়ে সাজিয়ে তোলেন দেহসৌষ্ঠব। কবিতা হয়ে ওঠে আলো-আঁধারি। বোঝা না বোঝার রহস্য জাদু প্রতিভাত। যেন শীতের শেষ বিকেলের রোদ, ছুঁতে ছুঁতে না ছোঁয়া। বাঁশের ঝাড়ে হঠাৎ ওঠা ক্ষ্যাপা বাতাসের চেনা অথচ অচেনা সুর। ডঃ হুমায়ূন আজাদ বলেছেন, ‘কবিতা বোঝার জিনিস নয়। কবিতা অনুভবের, উপলব্ধির।’ কবিতা দুজ্ঞেয় কিন্তু স্বতঃস্ফূর্ত প্রণোদনা। বাস্তবের সঙ্গে কল্পনার, নিজের সঙ্গে অন্যের, বর্তমানের সঙ্গে অবর্তমানের, সমকালের সঙ্গে মহাকালের যোগ যত নিবিড় হয় কবিতা তত মহার্ঘ হয়ে ওঠে। কবির বিমূর্ত ভাবনায় কবিতা কখনো শোকাহত হৃদয়ের আর্তনাদ, বেদনা বিধুর কান্না, আবার কখনো অধিকার বঞ্চিত শোষিত, নিপীড়িত মানুষের ধ্বনি এবং স্বাধীনতা মন্ত্রে উজ্জীবিত সৈনিক। কবিতা এভাবেই কালের প্রতিভূ হয়ে এসেছে। হয়ে উঠেছে শাশ্বত। কবির ভাব প্রকাশের সর্বোৎকৃষ্ট মাধ্যম কবিতা, কেননা এই শিল্পটি নান্দনিকতা ও জীবনমুখীনতায় ভরপুর। কবি এর মাধ্যমে বুদ্ধিভিত্তিক স্ফুরণ ও মননশীলতার নিখুঁত চিত্রকর্মটি সম্পাদন করতে পারেন।
কবিতার ভেতরে থাকে উন্মাদনা, উত্তেজনা, ভাব-সাধনা। যে কোনো শিল্পের ভাবই প্রধান। কবির কবিতার ছন্দ, বুনন, অলঙ্করণ, রস ইত্যাদির ভিন্নতা প্রাপ্তি হয় বটে, কিন্তু সংবেদনশীলতা অপূর্ণ থাকে না। ক্ষুণœ হয় না শিল্পগুণ। কবিতা বিশুদ্ধ মননচর্চার ফসল। যে ফসলের পরিচর্যা কবি নিরন্তর করেন। তবে কবিতার আত্মা ও শরীরের শৈল্পিক আচ্ছাদনই কবিতার সার্থকতা। কবিতা বহুরৈখিক, সরল একরৈখিকভাবে সংজ্ঞায়িত করা যাবে না। কবিতা বোদ্ধারা অনেক কথা বলেছেন। কীটস মনে করেন, কবিতা যুদ্ধ করবে তার সূক্ষ্ম অপরিমেয়তা, ঝংকারে নয়। বোদলেয়ার কবিতাকেই কবিতার শেষ কথা বলেছেন। তাই কবিতা নিয়ে বলা যায়, ‘বল বল তোমার কুশল শুনি, তোমার কুশলে কুশল মানি।’
Weight | 0.200 kg |
---|---|
Published Year |
দেবাশীষ ধর। জন্ম: ৫ই জানুয়ারি, ১৯৮৯। চট্টগ্রাম। কবিতার ছোটকাগজ ‘বাঙাল’ এর সম্পাদক। কবির এটি প্রথম কাব্যগ্রন্থ।
ফসিলের কারুকাজ
লেখক পরিচিতি :
মোহাম্মদ হোসাইন। জন্ম: ৩১শে অক্টোবর। বিএসসি ও এমএসসি’র শিক্ষা সমাপন শেষে এখন শিক্ষকতার পেশায় নিয়োজিত আছেন। লেখকের প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ মোট ১১টি। ‘ভালোবাসা নির্বাসনে গেছে’ ‘মেঘগুলো পাখিগুলো’ ‘অরণ্যে যাবে অস্তিত্বে পাপ’ উল্লেখযোগ্য বইয়ের শিরোনাম।
অনুদিত রোদের রেহেল
লেখক পরিচিতি :
সুলতানা শাহরিয়া পিউ। জন্ম: ২রা অক্টোবর। লেখালেখি, আবৃত্তি ও সঙ্গীতচর্চা তার শখ। অনুপ্রাণন সম্পাদনা পর্ষদ এর সদস্য, বর্তমানে দীপ্ত টেলিভিশনের স্ক্রিপ্ট রাইটার হিসেবে কর্মরত আছেন। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: ‘মেঘের সাথে কথা’। অনুবাদ কাব্যগ্রন্থ: ‘নিমগ্ন জলধারা’। স্ক্রিপ্ট সঙ্কলন: ‘আমরা করব জয়’। গীতিকবিতার অনুবাদ: ‘অচিন’। গল্প সংকলন: ‘মেঘের দেশে ফিরে যাবার গল্প’।
আমার দিনগুলো রইলো অসম্পূর্ণ
হাসানআল আব্দুল্লাহ। জন্ম: ১৪ই এপ্রিল, ১৯৬৭। গোপালগঞ্জ জেলার গোপিনাথপুর গ্রামে। তিনি প্রবর্তন করেছেন নুতনধারার সনেট। তার মৌলিক কাব্যগ্রন্থর সংখ্যা দশ। বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার কবিতার অনুবাদে প্রকাশ করেছেন বিশ্ব কবিতার কয়েকছত্র। অন্যান্য প্রকাশিত গ্রন্থ- সনেটগুচ্ছ ও অন্যান্য কবিতা, আঁধারের সমান বয়স, এক পশলা সময় প্রভৃতি। ২০০৭ ও ২০১৫ সালে নিউইয়র্কের কুইন্স শহরের পোয়েট লরিয়েট ফাইনালিস্টের সন্মান পেয়েছেন।
বৃত্তের কেন্দ্রেও কবিতার মুখ
রাজন্য রুহানি। পরিবারের দেওয়া সনদসাক্ষ্য নাম মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। জন্ম: ২রা নভেম্ভর ১৯৮০, জামালপুর জেলা শহরের হাটচন্দ্রায়। কলেজে পা দেবার সাথে সাথেই সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন। স্থানীয় কয়েকটি দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকার বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। মফস্বল সাংবাদিকতার পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে না পেরে বারবার কবিতার কছেই ফেরা। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং। ১৯৯৮ থেকে কবিতার ভাঁজপত্র শব্দদূত সম্পাদনার সাথে যুক্ত। ঐ বছরই অন্যান্য লেখক সহযোগে আলোচনাগ্রন্থ- ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ; আতিয়ার রহমানের ৭টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। এটি লেখকের প্রকাশিত এককবই।
গল্প সমাপ্তির গান
ফারহানা খানম। জন্ম: ১৯শে এপ্রিল ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী এলাকায়। গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের সন্দীপে। ‘ভুগোল ও পরিবেশ’ বিষয়ে স্নাততোত্তর ডিগ্রী অর্জন করে ব্যাংকে চাকুরি শুরু করলেও বর্তমানে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত। নয় ভাই-বোনের মাঝে সবার ছোট বলেই আদরও পেয়েছেন বেশি। প্রথম প্রকাশিত বই, ‘ইছামতি’ (কলকাতা থেকে প্রকাশিত)।
তৃষ্ণার্ত বালুতট
লেখক পরিচিতি :
শারমিন রাহমান। জন্ম: ১৬ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৩। দ্ইু সন্তানের জননী। বাংলাদেশের স্বনামধন্য স্কুলগুলোতে দীর্ঘ ১৫ বছর শিক্ষকতা শেষ করে বর্তমানে চট্টগ্রাম আর্ট সেন্টার ‘ধ্যান’ এর পরিচালক। বিশেষ আগ্রহ আছে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে। এটি কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ।
অপ্রাকৃত কবচ
রঞ্জনা বিশ্বাস। জন্ম: ১০ডিসেম্বর, ১৯৮১। গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া থানার রাধাগঞ্জ ইউনিয়নের বাগবাড়ি গ্রামে খ্রিস্টিয়ান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ‘ভুলস্বপ্নে ডুবে থাক আদিবাসী মন’ ও ‘আমি তিনবেলা বৃষ্টিতে ভিজি’ কাব্যগ্রন্থ দু’টি কবির প্রকাশিত কাব্যফসল। এছাড়া কবি কবিতাচর্চার পাশাপাশি ফোকলোরচর্চাকেও ব্রত হিসাবে নিয়েছেন। নৃ-তাত্ত্বিক ও গবেষণাধর্মী কবির আরও বেশ কয়েকটি বই প্রকাশিত হয়েছে। কবি বাংলা একাডেমির ‘তরুণ লেখক প্রকল্প’ ও ‘লোকজ সংস্কৃতির বিকাশ’ প্রকল্পে কাজ করছেন। এছাড়া এখন ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বিভাগে কর্মরত আছেন।
বেদনার পাথর ও প্রান্তিক দীর্ঘশ্বাস
সৈয়দ সাইফুর রহমান সাকিব। জন্ম: ১৯৭৮ সালে বরিশাল জেলা সদরে করিমকুটির নামক স্থানে। তার লেখার বিষয় মূলতঃ কবিতা। সময় নাট্যদলের সাথে একযুগ পার করেছেন। গানও লিখতেন কিন্তু বন্ধুবরের প্রয়ানে, অভিমানে আর সেপথ মারাননি। বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয়ে কর্মরত থাকলেও নিজেকে একজন কবিতার শতরঞ্জি মোড়ানো শ্রমিক বলেই মনে করেন। এটি কবির প্রথম বই।
রূপোর দ্যুতি
মুর্শিদা জামান। জন্ম: ১৯৮৩ সনে বর্তমান বরিশাল বিভাগের ঝালকাঠি জেলায়। শৈশব ও বেড়ে ওঠা দক্ষিণের খুলনা শহরে। বাংলায় অনার্স সহ এমএ করেন ইডেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখির সূত্রপাত। কবিতা লেখার পাশাপাশি বিভিন্ন ছোট কাগজ ও সাহিত্য বিষয়ক মাসিক পত্রিকাতে ছোটগল্প প্রকাশিত হয়েছে। প্রকৃতি ও পশু-পাখির প্রতি অগাধ ভালোবাসা ও সখ্যতা রয়েছে। বর্তমানে তিনি লেখালেখি নিয়েই ব্যস্ত।
অদৃশ্য ছায়ার প্রজাপতি
কাজী রহমান। পরবাসী লেখক নিজের পছন্দ মতো বাঁচতে দু-যুগ আগে মার্কিন মুলুকে চলে আসেন স্ত্রী ও প্রথম শিশুকন্যা সাথে নিয়ে। বড় হয়েছেন পুরনো ঢাকার গেন্ডারিয়া’য়। জ্ঞান হবার পরপরই নিজেকে আবিষ্কার করেছেন ঘরের পাশের গ্রন্থাগারে, বিভিন্ন শিশু সংগঠন আর সমাজসেবামূলক সংগঠনের আলোছায়ায়। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার দুরন্ত কিশোর স্বাধীনতার যুদ্ধ দেখেছেন কাছ থেকে আর আতঙ্কের দিন গুনেছেন সারাক্ষণ মুক্তিযোদ্ধা দু’ভাইয়ের ঘরে ফেরার অপেক্ষায়। গ্রাজুয়েশন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কর্মজীবন কেটেছে বিদেশী এয়ার লাইন্সের কর্মকর্তা হিসেবে।
তারাধুলো জল ও নস্টালজিয়া
আবু জাঈদ। জন্ম: ২২শে জুলাই ১৯৮৩, ঢাকা। পড়াশুনা অসমাপ্ত রেখে একসময় কবি বাউণ্ডুলে জীবনের এলোমেলো আলপথে নেমে যান বেঁচে থাকার প্রয়োজনে, তাই বলে কাব্যচর্চা থেমে থাকেনি। এক সন্তানের জনক। এটি লেখকের প্রথম প্রকাশিত বই।
মানচিত্রের ফাঁসি চাই
হাসান অরিন্দম। বাংলাদেশের একজন প্রাবন্ধিক ও গল্পকাররূপে পরিচিত। কথাসাহিত্যই তার সৃষ্টি ও আগ্রহের প্রধান ক্ষেত্র। জন্ম ২৭ এপ্রিল ১৯৭২। শিক্ষাজীবনÑ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বাংলার লোকজীবন ও আবু ইসহাকের কথাসাহিত্য বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
পেশায় অধ্যাপক। ‘একজন মানুষের সম্ভাবনা’, ‘বিদ্যাছায়াবিদ্যা ও অন্যান্য গল্প’, ‘দুরবিনে দেখা কতিপয় দৃশ্য’সহ আরো অনেক বই প্রকাশিত হয়েছে।
আমাদের দৃষ্টিসীমায় কোন বাতিঘর ছিলো না
শীতের সকালে হুট করেই সবচেয়ে নিকটের বন্ধু ও ছোট ভাই হাসানের নিকট কিম্ভূতকিমাকার পোষাকে উপস্থিত সুমন ভাই। তার ফোনালাপে সদ্য গড়ে উঠা প্রেমিকা মুমুর বিয়ে ভাঙতে যেতে হবে নোয়াখালী। যেই মেয়েকে কখনোও তিনি দেখেননি। কিন্তু নোয়াখালীতে পা রাখতে না রাখতেই শুরু হয় একের পর এক বিপত্তি ও হাস্য-রসাত্মক সব ঘটনা। কখনোও বিপত্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায় তার প্রেমিকার বড় ভাই ও বড় ভাইর চ্যালা-প্যালারা, কখনোবা তিন বিটকেল কালাম, মাসুম ও জহির। এছাড়াও ঝামেলা পাঁকাতে সদা প্রস্তুত সুমন ভাইরই আপন মামাতো ভাই।
এই সকল নাটকীয়তার মাঝেই উপন্যাসের বাঁকে বাঁকে চলতে থাকে পাঁচ বন্ধুর বিচিত্র উদ্ভট সব কাণ্ডকারখানা। চলতে থাকে নির্মল ভালোবাসা-বাসি সুমন ভাই ও মুমুর মাঝে। শেষ পর্যন্ত কি ভালোবাসার বিজয় হয়? সুমন ভাই কি শেষ পর্যন্ত সফল হতে পেরেছিলেন? জানতে হলে পড়তে হবে “অপারেশন নোয়াখালী”।
অপারেশন নোয়াখালী
দুনিয়ার সবচেয়ে সুন্দরী রমণীদের বসবাস এখানে। ওই সুন্দরীদের রূপের সাথে পাল্লা দেয় যৌবন আর যৌবনের সাথে পাল্লা দেয় রূপ কিন্তু সেটা এক রক্ত নহর বহা একনগরী… স্ত্রীর জন্য ৭ পুরের (গ্রামের) জল ও মাটি সংগ্রহ করে পুব্যা এক যুবক। তবে শর্ত ছিল পথিমধ্যে কারো সাথে কথা-টথা বলতে পারবে না সে। যুবকটি কেন বলছে, হায় নারী! হায় স্ত্রী আমার! তুমি আমার অর্ধেক নও, তুমি আমার পুরো পৃথিবী… এরকম অসংখ্য মজাদার কথামালায় রচিত এই দুই প্রহরের প্রেম ও বিপরীত যাত্রা উপন্যাসটি। শরীফ শামিলের লেখনী শক্তি ও কল্পনা শক্তি প্রশংসার দাবি রাখে। তাঁর প্রথম উপন্যাস দীর্ঘ রাত্রির বিরুদ্ধে জেগে থাকা এর ব্যাপারে লিখেছিলাম, ওটি বাংলা উপন্যাসে এক নতুন সংযোজন। আর এ ‘দুই প্রহরের প্রেম ও বিপরীত যাত্রা’ উপন্যাসটি বাংলা উপন্যাসে আরেক (সম্পূর্ণ) নতুন সংযোজন।
আবু এম ইউসুফ
প্রকাশক
দুই প্রহরের প্রেম ও বিপরীত যাত্রা
মিরা ফুল্লরা ও অন্যান্য গল্প
কবির য়াহমদ-
জন্ম ৩০ ডিসেম্বর, চন্দনপুর, আলীনগর, বিয়ানীবাজার, সিলেট।
বাবা- আজিজ উদ্দিন চৌধুরী, মা- ফখরুননেছা আজিজ। অনুপ্রাণন সম্পাদনা পরিষদের সাথে যুক্ত।
প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: রাত আর ঘুমের কৃষ্ণপাঠ, আমাদের ঈশ্বরের অ্যাপয়েন্টমেন্ট দরকার, নিরবচ্ছিন্ন পাখিসমূহ।
জাগরণের পূর্বাপর
ফেরদৌস নাহার, কবিতা ও গদ্য শ্রমিক। জন্ম, বেড়ে ওঠা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর। বর্তমানে কানাডায় বসবাস। কবিতার পাশাপাশি আঁকছেন ছবি, লিখছেন গদ্য ও গান। জনপ্রিয় ব্যান্ডদল ‘মাইলস’-এর সংগীত রচয়িতা। প্রিয় বিষয়Ñ মানুষ এবং প্রকৃতি। আকাশের ঠিকানা:
ferdousnahar@gmail.com
প্রকাশিত হয়েছে ১৩টি কবিতা ও ৩টি প্রবন্ধের বইÑ
কবিতা: ছিঁড়ে যাই বিংশতি বন্ধন (চর্যাপদ ১৯৮৬) সময় ভেঙ্গেছে সংশয় (নিখিল ১৯৮৭)
উলঙ্গ সেনাপতি অক্টোপাস প্রেম (নসাস ১৯৮৮) দেহঘর রক্তপাখি (চর্যাপদ ১৯৯৩)
রূপান্তরের ঘোড়া
সম্পাদকীয়, অনুপ্রাণন—নবম বর্ষ প্রথম সংখ্যা
ফেব্রুয়ারি যখন আসে তখনই আমরা আমাদের ভাষা তথা, বাঙলা ভাষা ব্যবহারের পরিধি, মান, চর্চা এবং গবেষণার ক্ষেত্র ঘিরে অপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা সমালোচনায় ব্যস্ত হয়ে পড়ি; কিন্তু ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সূচনার পর এবং বিশেষ করে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ৪৮ বছর পর আজও আমরা সারা বছর বাঙলা ভাষার সমৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য কোনো পদ্ধতিগত ও সদা চলমান কোনো কর্মসূচি প্রণয়ন করতে সক্ষম হইনি। এই অক্ষমতার কারণ আমার জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যের মাঝেই বিদ্যমান।
দেশের শিক্ষাব্যবস্থা তিনটি ভাগে বিভক্ত–বাংলা মাধ্যম, আরবি/ফারসি মাধ্যম এবং ইংরেজি মাধ্যম। ইংরেজি অথবা আরবি/ফারসি মাধ্যমে যারা পড়াশোনা করে একটি বাধ্যতামূলক বিষয় হিসেবে সীমিত কয়েক শ্রেণি পর্যন্ত বাঙলা ভাষা ও বাঙলা ব্যাকরণের সাথে তাদের যৎসামান্য পরিচয় ঘটে। কিন্তু সেটা দৈনন্দিন জীবনে কথ্যভাষা ছাড়া লিখিত কোনো নথি, রচনা, প্রবন্ধ অথবা প্রতিবেদন লেখার জন্য যথেষ্ট হয়ে ওঠে না। যার ফলে, সরকারি কার্যক্রম চালানোর জন্য নথিতে অথবা আইন ও বিচারব্যবস্থার কাজে ব্যবহৃত যাবতীয় আইন, আদেশ ও রায়ের সকল প্রতিবেদনে অথবা চিকিৎসা ও বিজ্ঞানচর্চার উচ্চতর স্তরে বাঙলা ভাষার ব্যবহার সঙ্কুচিত হওয়া অনেকটা অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে। আর সেটাই হতে আমরা দেখে থাকি।
আইন ও বিচারের নথি প্রস্তুতিতে অথবা বিজ্ঞানের বিভিন্ন শ্রেণি অথবা মেডিকেল শিক্ষা ও চর্চার কাজে সহজে ব্যবহৃত হতে পারে সেজন্য সহজ ও বোধগম্য শব্দ সংবলিত উপযোগী এবং পূর্ণাঙ্গ পরিভাষা কোষ তৈরি করতে আমরা এখনও সফল হইনি। এই কাজটা কঠিন কিন্তু তাই বলে কাজটা শুরুই কি হলো? আর কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোনো কোনো কাজ যদি হয়ে থাকে, সেটাও অত্যন্ত নগণ্য এবং অস¤পূর্ণ। একটা ক্ষুদ্র এবং অসম্পূর্ণ পরিভাষা কোষ দিয়ে কি কোনো একটি গ্রন্থ সম্পূর্ণ অনুবাদ হতে পারে? তাই আমরা আইন, বিচারব্যবস্থা, বিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণার সকল ক্ষেত্রে এখনো বাঙলা ভাষার প্রচলন করতে পারিনি।
আইন, বিচারব্যবস্থা, চিকিৎসা-বিজ্ঞানসহ সকল বিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে শুধু নয়, সাহিত্য ক্ষেত্রেও বিদেশি ভাষা থেকে বাঙলায় অনুবাদ এবং বাঙলা ভাষা থেকে বিদেশি ভাষায় অনুবাদের ক্ষেত্রটিও অবহেলিত রয়ে গেছে। ব্যক্তি উদ্যোগে যৎসামান্য যেটুকু হচ্ছে সেটা বাঙলা সাহিত্যকে বিদেশে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য বিন্দুসম প্রচেষ্টাই বলা যেতে পারে। বাঙলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে তোলার জন্যই উভয়বিধ অনুবাদের কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি ও প্রসার ঘটানো অত্যন্ত প্রয়োজনীয় অথচ এটা আমাদের দেশের নীতিনির্ধারকরা কতটুকু বোঝেন এটা জানা খুব কষ্ট। অথচ বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে তারা আপসহীন সংগ্রামী। কিন্তু জাতিকে সমৃদ্ধ করে তোলার ক্ষেত্রে ভাষার বহুমাত্রিক বিকাশ যে কতটুকু প্রয়োজনীয় সেটা তারা কী আদৌ বোঝেন?
পৃথিবীতে প্রায় ৩০ কোটি মানুষ রয়েছে যাদের মাতৃভাষা বাঙলা। শুধু এই সংখ্যাটার জোরেই আমরা জাতিসংঘে অন্যান্য প্রচলিত ভাষাসমূহের পাশাপাশি বাঙলা ভাষাকেও ব্যবহারের জন্য অন্তর্ভুক্ত করার দাবি করতে চাই। কিন্তু শুধু সংখ্যার জোরেই কি জাতিসংঘের কাছে এই দাবি গ্রহণযোগ্য করে তোলা সম্ভব? বস্তুতপক্ষে আমরা যদি বাঙলা ভাষাকে বিশ্বের একটি অন্যতম ভাষা হিসেবে আন্তর্জাতিক মহলে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই, তাহলে বাঙলা ভাষাকে উচ্চতর জ্ঞান-বিজ্ঞান, আইন ও বিচারব্যবস্থা পরিচালনার জন্য উপযোগী করে তুলতে হবে। যদি আন্তর্জাতিকভাবে বাঙলা ভাষা ব্যবহার করতে গিয়ে কোনো কোনো প্রতিশব্দের অভাবে বিকল্প হিসেবে বিদেশি ভাষাই ব্যবহার করতে হয় তাহলে কি করে আমরা বাঙলা ভাষাকে আন্তর্জাতিক অথবা বহুদেশীয় কোনো ফোরামে ব্যবহারে জন্য অন্তর্ভুক্ত করতে সক্ষম হতে পারি? এই বক্তব্যের সাথে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার বিষয় মিলিয়ে ফেলা যাবে না। কেননা, ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ, বাঙালির ভাষার জন্য সংগ্রাম ও আত্মদানের প্রতি সম্মান দেখানোর কারণেই সম্ভব হয়েছে। এর সাথে বহুজাতিক কোনো প্রতিষ্ঠানে ব্যবহারের জন্য প্রচলিত অন্যান্য ভাষাসমূহের পাশাপাশি বাঙলা ভাষাকে ব্যবহারের জন্য গ্রহণ করার সম্পর্ক নেই। এটা সফল করে তুলতে চাইলে বাঙলা ভাষার বিকাশ ও সমৃদ্ধি এবং পাশাপাশি বাংলাদেশের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক বিকাশ ও সমৃদ্ধির সম্পর্ক রয়েছে।
বক্তব্যটিকে বাঙলা ভাষার পূর্ণাঙ্গ বিকাশ এবং সমৃদ্ধির প্রশ্নে সীমাবদ্ধ রেখে বলতে চাই যে, প্রয়োজন ছিল পরিভাষা এবং অনুবাদ সাহিত্যের বিকাশ এবং সমৃদ্ধির জন্য একটি স্বতন্ত্র এবং দক্ষ ও মেধাবী সাহিত্যিক ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখায় পারদর্শী ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। কিন্তু বেসরকারিভাবে এই কাজটা করা সম্ভব না। এটা করতে হলে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে এবং যার জন্য চাই সরকারের সিদ্ধান্ত। কেন যে সরকার আজ অবধি এডহক-ভিত্তিতে দেশ ও জাতির জন্য এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি বাঙলা একাডেমিকেই দিয়ে রাখলো সেটা আমার বোধগম্য না।
এদিকে মাদরাসা ও ইংরেজি শিক্ষা থেকে পাস করে বেরিয়ে আসা ছাত্রদের উচ্চতর শিক্ষা এবং সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করার সুযোগ অবারিত করা হয়েছে। এ-কথা জানা সত্ত্বেও যে উচ্চতর শিক্ষায় অথবা চাকরি-জীবনে আগত এসব ছাত্ররা বাঙলা ভাষা ব্যবহার না করে অন্য বিদেশি ভাষা ব্যবহার করার প্রবণতা নিয়ে উচ্চশিক্ষা এবং চাকরিতে ঢোকে। যার ফলে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের ক্ষেত্রে অথবা সরকারি প্রশাসন এবং আইন ও বিচারব্যবস্থার উচ্চতর মহলে সার্বিকভাবে বাঙলা ভাষা ব্যবহার প্রচেষ্টায় তাদের আগ্রহী হয়ে উঠতে দেখা যায় না। বরঞ্চ উল্টোটাই ঘটে। অর্থাৎ এসব ক্ষেত্রে বিদেশি ভাষা ব্যবহার পরিহার করার প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে অনীহার ফলে একপ্রকার বাধা সৃষ্টি করতেও তাদের দেখা যায়।
ভাষার বহুমাত্রিক বিকাশ যদি না ঘটে, তাহলে বদ্ধজলের মতোই ভাষা ও একপ্রকার বন্ধ্যা অবস্থায় পতিত হয়। বিকাশ না ঘটলে যে কোনো অস্তিত্ব সঙ্কুচিত হতে থাকে এবং সঙ্কুচিত হতে হতে একসময় সেই বস্তুর অস্তিত্বই হুমকির মধ্যে পড়ে। কথ্য অথবা লিখিত ভাষার ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রথম ধাপে অস্তিত্বের এই বিনাশ শুরু হয় নানা বাঙলা শব্দ বা প্রতিশব্দের বদলে বিদেশি শব্দের ব্যবহারের মধ্য দিয়ে যেটা এখন হরহামেশা ঘটছে। নাগরিক কথাবার্তায় অথবা লেখালেখিতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাংলার বদলে আরবি অথবা ইংরেজি শব্দের ব্যবহার এখন আমরা প্রায়শই হতে দেখছি, কিন্তু তবুও আমাদের সাহিত্যিক অথবা বুদ্ধিজীবী মহলে কিংবা নীতিনির্ধারক মহলের টনক নড়তে দেখা যায় না। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই যে এটা প্রকৃত বাঙলা শব্দের অভাবে হচ্ছে, সেটা যে তা নয়। এক্ষেত্রে বলা যেতে পারে যে, এদের মন-মানসিকতায় বাঙালি জাতীয়তাবাদী সচেতনতা ততোটুকু দৃঢ় নয়। এটা কেন হচ্ছে? কেন বহুসংখ্যক নাগরিক বাঙলার বদলে আরবি অথবা ইংরেজি ব্যবহারে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন?
জ্ঞান-বিজ্ঞান অথবা প্রযুক্তির উচ্চতর ক্ষেত্রে যখন বাঙলা প্রতিশব্দের অভাব হয়, তখন সম্পূর্ণভাবেই বাঙলা ভাষার বদলে ইংরেজি ব্যবহার যেন অপরিহার্য হয়ে যায়। সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে এই বাঙলায় একসময় আরবি, ফারসি অথবা উর্দু শব্দ সুকৌশলে ব্যবহার করার একটা প্রবণতা কোনো কোনো কবি-সাহিত্যিকের ক্ষেত্রে ঘটেছে, কিন্তু সেটা ছিল পাকিস্তান আমল এবং পাকিস্তানি শাসক মহলকে তোষণ করার জন্যই এটা সচেতনভাবেই করা হতো। কিন্তু এখন কেন আরবি, ফারসি, উর্দু অথবা ইংরেজি শব্দের ব্যবহার বেড়ে চলেছে। বাঙলা ভাষার বিকাশের ক্ষেত্রে যেহেতু চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে কাজ হচ্ছে না তাই বাঙলা ভাষার অস্তিত্বই বিপন্ন হয়ে পড়ছে এবং এর জন্য ত্রিমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা শতভাগ দায়ী। তাহলে আমরা কি করতে পারি? এটা কি বলতে পারি যে, ভাষার জন্য আমাদের সংগ্রামের পরিসমাপ্তি ঘটেছে?
আমাদের একথা বুঝে নিতে হবে যে, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাঙলা ভাষার অস্তিত্ব সুরক্ষা করা, এর বিকাশ ঘটানো এবং চলমান রাখা এবং সকল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাঙলা ভাষার সমৃদ্ধি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করা চলার আন্দোলন ও সংগ্রাম, ’৫২-এর ভাষা আন্দোলনের চাইতেও জটিল ও কঠিন। যার জন্য প্রয়োজন সুষ্ঠু পরিকল্পনা এবং সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য চাই নিয়মানুবর্তিতা ও অধ্যবসায়।
খুব নীরবে হলেও বিশ্বজুড়ে ভাষার ব্যবহার এবং প্রসার নিয়ে চলছে এক তীব্র প্রতিযোগিতা। আর এই প্রতিযোগিতার পেছনে রয়েছে উন্নত রাজনীতি এবং অর্থনীতির অধিকারী দেশ ও জাতিসমূহের উৎপাদিত পণ্যসমূহের বাজার সম্প্রসারণ করার সম্প্রসারণবাদী এবং সাম্রাজ্যবাদী পরিকল্পনা। যেসব পরিকল্পনাকে তারা কোনো কোনো সময় তাদের নিজ জাতি ও দেশের সুরক্ষা নীতির অংশ হিসেবে গ্রহণ করেছে বলে প্রচার করে থাকে। এসব পরিকল্পনার বিষয় আমাদের বুঝতে হবে। ভাষা, যা কিনা শিল্প, সাহিত্য, সংগীত, চিত্র ও চলচ্চিত্রের বাহক সেগুলো তারা ছড়িয়ে দিচ্ছে বিশ্বব্যাপী এবং স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে তাদের তৈরি সাহিত্য, সংগীত ও চলচ্চিত্রের বাজার ক্রমেই সম্প্রসারিত করে চলেছে। আমাদের দেশেই বিদেশিদের বিদেশি ভাষার বই এবং চলচ্চিত্রের যে বাজার রয়েছে, সে তুলনায় আমাদের বাঙলা সাহিত্য অথবা চলচ্চিত্রের বিদেশি বাজার নিতান্তই ক্ষুদ্র। এই প্রতিযোগিতামূলক বাজারে আমরা যদি আমাদের শিল্প, সাহিত্য, সংগীত ও চলচ্চিত্রের বিদেশি বাজার সৃষ্টি না করতে পারি এবং সেসব বাজার সম্প্রসারিত না করতে পারি, এই প্রতিযোগিতার কোনো ভবিষ্যৎকালে একদিন আমাদের প্রাণপ্রিয় বাঙলা ভাষাই বিপন্ন হয়ে পড়তে পারে।
সারা বিশ্বে নানা দেশে ছড়িয়ে প্রায় সোয়া কোটি বাঙালি রয়েছে। যাদের দ্বিতীয় প্রজন্ম ক্রমেই বাঙলা ভাষা ব্যবহারের সীমিত সুযোগ পাওয়াতে বাঙলা ভাষা, সংগীত অথবা চলচ্চিত্রের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। এইভাবে চলতে থাকলে প্রবাসী বাঙালি সমাজে বাঙলা ভাষা ও সংস্কৃতির বিলোপ ঘটবে এবং তারা মানসিকভাবে স¤পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। প্রবাসী বাঙালিদের ব্যক্তি উদ্যোগে গুটিকয়েক বাঙলা ভাষা শিক্ষা স্কুল এবং সংগীত বিদ্যালয় আছে, যা কি-না প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। আমাদের বিদেশি দূতাবাসগুলো এই ব্যাপারটাই নজর দেয়ার একটা বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসতে পারে এবং বিদেশে বিশেষ করে যে সকল শহরে অধিক সংখ্যায় প্রবাসী পরিবার রয়েছে সেখানে বাঙলা ভাষা ও সংস্কৃতি কেন্দ্র এবং পাশাপাশি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করতে পারে। যেসব লাইব্রেরিতে বাঙলা ভাষায় রচিত অথবা বাঙলা ভাষায় অনূদিত সাহিত্য, ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিল্প ও কলাবিভাগের গ্রন্থসমূহ এবং বাঙলা চলচ্চিত্রের একটি সমৃদ্ধ ভাণ্ডার থাকতে পারে। পাশাপাশি বাঙলা ভাষা ও সংগীত শিক্ষার জন্য স্কুল থাকতে পারে।
আমাদের দেশে যদি ব্রিটিশ কাউন্সিল, ইউএস, রুশ অথবা ফ্রেঞ্চ কালচারাল সেন্টার থাকতে পারে, তবে প্রবাসে গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে আমরা কেন ‘বাঙলা শিল্প-সাহিত্য কেন্দ্র’ নাম দিয়ে বাঙলা ভাষা ও সংস্কৃতির সাথে প্রজন্ম-প্রজন্মান্তরে বাঙলা ভাষা ও সংস্কৃতির সাথে তাদের পরিচিতি অক্ষুণ্ন রাখার জন্য পদক্ষেপ নিতে পারি না? এবং এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আমাদের জাতীয় বাজেটে এই কর্মসূচি গ্রহণ করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ রাখার কথা ভাবি না?
নবম বর্ষ প্রথম সংখ্যা
ভূমিকা
লেখালেখি আমার কোনো পেশা নয়, এমন কি নেশাও নয়। তাহলে লিখি কেন? আসলে এখনও পর্যন্ত আমি একজন জীবিত মানুষ। এই সমাজ-সংসারের আরও দশ জন মানুষের একজন। তাদের মতো আমারও ক্ষুধা-তৃষ্ণা আছে। সুখ-দুঃখ আছে। হাসি-কান্না আছে। তাদের মতো আমারও কিছু বলার আছে। তাই কিছু বলতে চাই আমি। যেহেতু আমার অদৃষ্ট আমাকে নির্ধারণ করে দিয়েছে যে, আমি একজন গল্প লিখিয়েই হবো, তাই আমার বলতে চাওয়া কথাগুলো হবে কিছুটা গল্পের মতো। কিন্তু এই গল্প কাকে বলবো? নিশ্চয়ই আমার চার পাশের আর দশ জনকেই বলতে হবে কথাগুলো। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমি কোনো নেতা নই, কোনো বক্তা নই। শব্দ যন্ত্রের সামনে দাঁড়িয়ে বলতে গেলে আমার কথা কেউ শুনবে না। কারণ, আমি নিতান্তই নিরীহদের একজন। তাই কাগজ-কলমই আমার সম্বল। সুতরাং কোনো শব্দযন্ত্র ছাড়াই বলতে হবে নীরবে। কিন্তু তবু আমাকে বলতে হবে, যা আমি বলতে চাই। বলতে না পরলে হয়তো দম বন্ধ হয়ে আমি মারা যাবো। হয়তো কান দিয়ে শুনতে পাবেন না কথাগুলো, তবে চোখের আলোয় পড়তে পারবেন কাগজে মুদ্রিত কালো অক্ষরে।
জিয়াউল হক
গাইবান্ধা।
ধু-ধু বালুচর
অনুভবের রক্তাপ্লুত প্রতিটি নির্ণীত ফোটাই কবিতা। কবিতা রহস্যের অনুসন্ধানে নিয়োজিত থেকে অন্ধকারে আলোর কণায় সোনার প্রতিমা গড়ে। অথৈ জলের তোড়ে জ্বলে যে কৌণিক বিন্দু, কবিতা সেই বিন্দুর জ্যা।
কবিতার এইসব নিগুঢ় নিপুণ রহস্যে মহাবিশ্বের পথিক মিলি রায়। মিলি রায় কবিতার মগ্ন শরীরে আঁকেন জলডুবুরীর কুহক, বাজান প্রেমের খোল করতাল। জমে জমে কবিতার অশ্বত্থ ছায়া শরীর হয়ে ওঠে হাজার বছরের দুগ্ধ সংস্কৃতির ক্ষীর।
মিলি রায় কবিতার শরীরে অযথা বা অকারণ কাঠিন্য আরোপ করেন না। প্রতিদিনের পান সুপারী বাটার মতো সরল নিক্তিতে কবিতা বয়ন করেন কবিতার উষ্ণ চাদরে।
মিলি রায়ের কবিতার প্রেম আসে অনিবার্য তিথি ও করতলের পরম কামনার একান্ত ঐশ্বর্যে।
প্রত্নতাত্ত্বিক প্রেম কবিতার শেষ দুটি লাইন, প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাসের পথ ধরে জানা গেছে
আলোকবর্ষ আগে প্রাণ ছিলো ভালোবাসার।
প্রেম যেমন সংহারী উল্টোপথে প্রেম কামনায় মাখা মধুর অমাবস্যাও। মিলি রায়ের কবিতা পাঠে প্রেম যমুনার জলে ঘুঙুরের ছলে ডুব সাঁতার খেলে।
তোমার প্রেমিকারা আমার একান্ত শহরে কাব্যনামের কবিতায় তিনি শব্দ আর হৃদ চেতনার অনুবাদে অনন্য এক সুন্দর সাজিয়েছেন, শূন্য উঠোনে।
মিলি রায় তোমার প্রেমিকারা আমার একান্ত শহরে কাব্যে প্রেমের পাশে প্রকৃতি, সমাজ ও ব্যক্তিমানুষের আশা ও হতাশার মানচিত্র এঁকেছেন নিজস্ব চৈতন্যর রসায়নে।
মিলি রায়ের কবিতার ঘর গেরস্থালীর সৌরভ ছড়িয়ে পড়ুক বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের মধ্যে।
মনি হায়দার
কথাসাহিত্যিক
বাংলা একাডেমি, ঢাকা।
তোমার প্রেমিকারা একান্ত শহরে
রাজনৈতিক রণনীতি ও রণকৌশলে হয়তো ভুল ছিলো, কিন্তু সমতার স্বপ্ন দেখায় তাদের ভুল ছিলো কি? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া কঠিন বটে! একদা সারা বাংলায় বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সমতটে সমতার স্বপ্ন দেখার বেপথু স্বপ্নবাজ তরুণেরা পথে নেমেছিলো পথ হারিয়ে, তাদের নিষিদ্ধ সুবাসের মতো জীবনের চালচিত্রকে উপজীব্য করে সাহিত্য রচনা হয়েছে কমই। লেখকদের নাম উল্লেখ না করেও বলা যায়, এমন লেখার গুরুত্ব আছে বৈ-কি! বিশেষ করে রাজনৈতিক মতাদর্শের সংকট যখন বিশ্বজুড়ে, তখন সংকটাবর্তে জর্জরিত মানবিক অলিগলিতে এসব অমানবিক অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন আর তার অভিঘাতে লালসন্ত্রাস, অস্ত্রবাজি, এনকাউন্টার, ক্রসফায়াস শব্দসমূহ আমাদের কাছে অন্যরূপে ধরা দেয় কখনো কখনো। লেখক গল্পচ্ছলে কথোপকথনের ভঙ্গিতে তার রচনায় এসব খুঁটিনাটি বিষয়কে তুলে ধরেছেন নির্মোহভাবে। এ কাজটিও সহজ নয় এ কারণে যে, তাতে সাহসের প্রয়োজন; সর্বোপরি তা অনাকাক্সিক্ষত বিতর্কের জন্ম দিতে পারে। তবুও তর্কাতীতভাবে লেখক সাহসের সাথে সে কাজটিই করে চলেছেন দীর্ঘদিন ধরে ইতিহাসের নানা ঘটনাবলিতে আশ্রয় করে তার বিভিন্ন লেখায়। সেসব লেখাকে মলাটবন্দি করেছেন, যেন-বা পুনর্জন্মের আদলে সেসব নিষিদ্ধ (!) দিনযাপনে, আমাদের মানস-ভ্রমণের কালযাপনে। অনুভূতির সততায় সত্যের দোরগোড়ায় এসব লেখায় পাঠক খুঁজে পাবেন অন্যরকম গল্পের রসাস্বাদ Ñ এমন প্রত্যাশা থাকবেই।
কাজল মাহমুদ
সাধারণ সম্পাদক
বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ
চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখা।
জাতিস্মর
শহর মাত্রই একটি নদী। আর শহরে বসবাসকারী মানুষগুলো হচ্ছে নদীর জলে ভাসমান কচুরিপানা। কারো পানায় পাতা গজিয়েছে তো কারো পানায় বায়ুকুঠুরি। নদীতে যেমন জোয়ার-ভাটা হয়, শহরেও তেমনি জোয়ার-ভাটা হয়। জোয়ার কালে কচুরিপানারা সব ভেসে ভেসে চলতে থাকে স্রোতের সাথে। মানুষও সেরকম ভাবেই চলে, যখন বাতাস যেদিকে ধায়। সন্ধ্যায় আবার ভাটার টানে একইভাবে ফিরে আসে আপন ঠিকানায়। এই জোয়ার-ভাটার মাঝেও কখনো কখনো নদী বিশ্রাম নেয়, বুকে ধারণ করা বিশাল জলরাশিকে স্থবির করে রাখে ক্ষণিকের জন্য। আর ঠিক তখনই কচুরিপানারা স্ব স্ব দম্ভে তাদের নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে মরিয়া হয়ে পড়ে। যদিও কচুরিপানারা এটা জানে, তার কান্ড থেকে বের হওয়া দীর্ঘ, তন্তুময়, বহুধা বিভক্ত মূলগুলো যত দীর্ঘই হোক না কেন, নদীর ছোট্ট একটা ঢেউ উপেক্ষা করার ক্ষমতা তাদের নেই। তাই হয়তো জলজ এই উদ্ভিদগুলো মাটির সাথে তাদের শিকড়ের সম্পর্ক স্থাপন করে না কখনো।
এই শহরের মানুষগুলোও জানে, নগর নদীর ছোট্ট একটা ঢেউ সবকিছু তছনছ করে দিতে পারে যে কোনো মুহূর্তে। তবুও মানুষ প্রতিনিয়ত হাজারো স্বপ্ন নিয়ে ঢেউয়ের মতো ছুটে এসে আছড়ে পড়ছে এই শহর নামক নদীর বুকে। এই নিশ্চিত অনিশ্চয়তার মধ্যেই কি দিব্যি আগামীকালের স্বপ্ন দেখে। নানা শ্রেণির মানুষ, নানা রকম স্বপ্ন।
“নগর নদীর ঢেউ” একটি জীবনমুখী সামাজিক উপন্যাস; যেখানে লেখক তার যাপিত জীবনের সূক্ষ্ম বোধগুলিকে থরে থরে বিন্যস্ত করেছেন সুনিপুণ হাতে। একজন মধ্যবিত্ত অতি সাধারণ মানুষ থেকে পরিশ্রম আর মেধার সঠিক সন্নিবেশ ঘটিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠা লাভ করা একজন সফল মানুষের জীবনগল্প এটি। এই উপন্যাসে শহরকেন্দ্রিক জীবন-যাপনের নানা দিকগুলি উঠে এসেছে বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে। উপন্যাসটির পটভূমি একটি দীর্ঘ কাহিনি। যেখানে শফিক নামের কেন্দ্রীয় চরিত্রটিকে ঘিরে গল্পের ডালপালা ছড়িয়েছে বিস্তর। পাশাপাশি ব্যক্তি জীবনের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, ঘাত-প্রতিঘাত, আশা-আকাক্সক্ষা, খুনসুটি, স্বপ্ন ও স্বপ্নভঙ্গ, ভালোবাসা-ঘৃণা, প্রতিশোধ পরায়ণতা ইত্যাদি বিষয়গুলো ফুটে উঠেছে নানা ঘটনার ধারাবাহিকতায়। উপন্যাসটির প্লট বা আখ্যান খুবই সুপরিকল্পিত ও সুবিন্যস্ত। প্লটের মধ্যে ঘটনা ও চরিত্রের ক্রিয়াকা-কে এমনভাবে বিন্যস্ত করা হয়েছে যাতে তা বাস্তব জীবনকে প্রতিফলিত করে এবং কাহিনিকে আকর্ষণীয়, আনন্দদায়ক ও বাস্তবোচিত করে তোলে।
চলার পথে অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র যে বিষয়গুলি আমরা সাধারণত এড়িয়ে যাই, এই উপন্যাসে লেখক সেই বিষয়গুলিকে খুব গভীর অথচ সহজভাবে মেলে ধরেছেন। এবং প্রত্যেকটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ঘটনার পেছনে নিজস্ব একটা ‘দর্শন’ রেখে গেছেন পাঠকের উদ্দেশ্যে, যা আসলে একজন গুণি লেখকের পক্ষেই সম্ভব।
একজন ভাড়াটে মাস্তান কাজের কন্ট্রাকসহ এডভ্যান্স টাকা হাতে নিয়ে যখন তার ক্লায়েন্টের বাসা থেকে বেরিয়ে রাস্তায় হাঁটে, তখন সে মনে মনে কী ভাবে বা ভাবতে পারে? সে হয়তো ভাবতে পারে, এই টাকাগুলি সে কোথায় কোথায় ফুর্তি করে কিভাবে উড়াবে। অথবা বিশেষ কোনো খায়েশ মেটানোর কথাও ভাবতে পারে। আর যাই’ই ভাবুক মাস্তান নিশ্চয় তার টাকাগুলি রাস্তায় ছিনতাই হয়ে যেতে পারে এই ভেবে দুশ্চিন্তা করবে না! সাধারণ মানুষ হয়তো এমনটাই ভাববেন। কিন্তু না, ঔপন্যাসিকের চিন্তা জগত তো সাধারণ মানুষের মতো নয়। একজন মাস্তানও তার টাকা লুট হয়ে যাওয়ার আতঙ্ক নিয়ে গন্তব্যের দিকে দুরুদুরু বুকে চলতে পারে। লেখকের ভাষায়, “টাকার দুশ্চিন্তায় থাকা পথিকের কখনোই মাথার উপর খোলা আকাশে পূর্ণ চাঁদ দেখা হয়ে উঠবে না, এটাই স্বাভাবিক।”
এই শহরে মূলত দুই শ্রেণির পেশাজীবী মানুষের বসবাস। চাকরিজীবী আর ব্যবসায়ী। এখানে যে বা যারা একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক, সে বা তারা ব্যবসায়ী; হোক সেটা চায়ের একটি টং দোকান বা বহুমুখী কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান। আর এই প্রতিষ্ঠানগুলিতে যে বা যারা কাজ করতে আসে তারা চাকরিজীবী, হোক সে কাস্টমারের হাতে চায়ের কাপটি তুলে দেয়া কোনো ছোটু কিংবা গলায় টাই ঝুলিয়ে নয়টা-পাঁচটা ডিউটি করা কোনো কর্মকর্তা। দিনশেষে একদল মানুষ এই শহরে মালিক এবং একদল মানুষ চাকর। আর এই চাকর শ্রেণির মানুষের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য লেখকের ভাষায় বর্ণিত হয়েছে এইভাবে, “যে প্রতিষ্ঠানের মালিকবৃন্দ মাস শেষ হতেই ঠিক সময়ে মাইনে দিতে পারে, তাদের শত অপরাধেও সামনে দাঁড়িয়ে কিছু বলার মুরুদ থাকে না চাকুরে নামক মেরুদন্ডহীন প্রাণীগুলোর।”
পুরো উপন্যাস জুড়েই নানা ঘটনার পাশাপাশি প্যারালালভাবে এমন সব দর্শনের বিস্তার ঘটিয়ে গেছেন লেখক, যা পাঠকের ভাবনা জগতে একটু হলেও নাড়া দিয়ে যাবে। ব্যাপারটি আবার এমনও নয় যে, লেখক বিনা কারণে শুধু তার নিজস্ব দর্শন কপচিয়ে গেছেন, বরং এই দর্শনগুলোই প্রতিটি ঘটনাকে একটি সঠিক উপলব্ধিতে এনে দাঁড় করিয়েছে।
পরিশেষে বলতে চাই, মানবজীবন সংক্রান্ত যে সত্যের উদঘাটন উপন্যাসের মধ্য দিয়ে পরিষ্ফূট হয় সেটাই লেখকের জীবনদর্শন। আমরা একটি উপন্যাসের মধ্যে একই সঙ্গে জীবনের চিত্র ও জীবনের দর্শন এই দুইকেই খুঁজি। এর ফলে সার্থক উপন্যাস পাঠ করলে পাঠক মানবজীবন সংক্রান্ত কোনো সত্যকে গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারেন। এই উপন্যাসটি পাঠ শেষেও পাঠকের তেমনই এক উপলব্ধি হবে।
তুষার অপু
মহাখালী, ঢাকা
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
নগর নদীর ঢেউ
ননসেন্স সাহিত্যের প্রতি অনুরাগ সম্ভবত শৈশব থেকে। ১৯৭০-এর দশকে সুকুমার রায়ের সাথে সম্যক পরিচয়ের পর তা বিশেষ আকর্ষণে পরিণত হয়। ৯০-এর দশকের প্রথম দিকে অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার আগে লিমেরিকের সাথে জানাশোনা অল্পই ছিল। ফিরলাম এডওয়ার্ড লিয়ারের লিমেরিক এবং আরও অন্য অনেক ‘ননসেন্স’ পদ্য হাতে করে। পরে শুরু হয় তার থেকে অনুবাদের চেষ্টা। লিয়ারের লিমেরিক ছাড়া অন্য লিমেরিকও হাতে আসে। তার থেকেও চলে বঙ্গানুবাদ।
বঙ্গানুবাদের পাশাপাশি নিজের লিমেরিক লেখাও চলতে থাকে। তার থেকে কিছু লিমেরিক এখানে ছাপা হল। সুখ ও স্বাস্থ্যের জন্য হাসি বা আনন্দ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। এই লিমেরিকগুলি যদি পাঠকের জন্য কিছু হাসি বা আনন্দের জোগান দিতে পারে তাহলে নিজেকে ধন্য মনে করব।
-হোসাইন রিদওয়ান আল খান
১ জুলাই, ২০১৮
খ্যাংড়া ঠ্যাঙা চিমশে ঢ্যাঙা
লেখক পরিচিতি :
দেবাশীষ মজুমদার। জন্ম চাঁদপুরে, তার বয়স যখন সাত, সরকারি চাকরিজীবী বাবা’র বদলি হয় চট্টগ্রামে, এ শহরেই বেড়ে ওঠা। ভারতে কিছুদিন পড়াশোনা ছাড়া পুরো জীবনটাই এখনো পর্যন্ত কাটিযেছেন এই বন্দর নগরীতে। কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘অন্যদিন’।
অস্তিরতার নাম দেশলাই কাঠি
জন্ম ১৯৮৭, পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে। পড়াশোনার পাশাপাশি ফটোগ্রাফির সাথে যুক্ত। প্রকৃতি আর মানুষ এই দুই নিয়েই তার পথচলা। নিজের উপর আত্মবিশ্বাস রয়েছে
প্রেম হলো প্রেমের মতো
Get access to your Orders, Wishlist and Recommendations.
There are no reviews yet.