Additional information
Weight | 0.245 kg |
---|---|
Published Year |
$ 1.48 $ 2.47
“আমি শুরু থেকেই জানতাম, এরা যেকোন মূল্যে টাইম মেশিনটা তৈরি করেই ছাড়বে!” ক্রিটন তার আর্মচেয়ারে গা এলিয়ে দিতে দিতে বলল, “যেদিন নিকি আমাকে খবর দিলো যে ওরা তথ্যকেন্দ্রে মন্টক প্রজেক্ট সম্পর্কিত তথ্য নিয়ে ঘাটাঘাটি করছে, সেদিন থেকেই আমি ওদেরকে আর হালকাভাবে নিই নি। এরপর আমাদের গুপ্তচর রিগা যখন ক্যাপ্টেন নিমোর সাথে ওদের কথোপকথন শুনে আমাকে জানালো যে বিজ্ঞানী ছোকড়াটার মাথায় সময় পরিভ্রমণের চিন্তা খেলেছে পুরনো আমলের একটা চলচ্চিত্রের খুবই সাধারণ একটা দৃশ্য দেখে, তখনই আমি বুঝে গিয়েছিলাম যে এই ছোকড়ার দ্বারা সবকিছুই সম্ভব। কেন জানো ক্লড?”
“কেন প্রভু ক্রিটন?”
ক্রিটন ক্লডের দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বলল, “কারণ আমি এই ছোকড়ার মাঝে আমার স্রষ্টা ডক্টর লির ছায়া দেখতে পেয়েছিলাম। ডক্টর লিও এরকমই ছিলেন, অনেক তুচ্ছ থেকে তুচ্ছ জিনিসের মাঝেও তিনি অসাধারণ কিছু খুঁজে পেতেন। তিনিও এক অসাধ্য সাধন করে দেখিয়েছিলেন আমাকে তৈরি করে। ডক্টর লির মত মানুষেরা যেমন আমাদের গড়তে পারে, ঠিক তেমনি শত প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও আমাদের গুঁড়িয়ে দেয়ারও ক্ষমতা রাখে, সে আমরা যতই আধুনিক এবং শক্তিশালী হই না কেন। এধরনের মানুষ কোটিতে বড়জোর একজন হয়। কিন্তু যতদিন পর্যন্ত পৃথিবীতে মানবজাতি টিকে থাকবে, ততদিন পর্যন্ত এধরনের মানুষ জন্মাবার সম্ভাবনা থেকেই যাবে!”
Weight | 0.245 kg |
---|---|
Published Year |
অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি তে Occult science বিভাগে বাংলাদেশ থেকে পড়তে আসা কুহোন মজুমদার । লন্ডন অক্সফোর্ড এ এসে একটি আন্তর্জাতিক মানের সিক্রেট সোসাইটির নজরে চলে আসে । বিপদে পড়ে যায় সে । Occult science নিয়ে বেশি জানাটায় তার জন্য বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে । তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে তার রুম মেট মার্থা এলিজাবেথ এবং অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিখ্যাত টিচার স্যার ম্যাক ওয়েল । কুহোন জানেনা কেনো তাকে টার্গেট করেছে সিক্রেট সোসাইটির সদস্য গণ ? তবে কুহোন এইটুকু বুঝতে পারছে Occult science এর সিক্রেট জ্ঞান গুলো সে জেনে ফেলেছে বলেই তার উপর নেমে আসছে অভিশাপ । এতকিছুর মধ্যেও সে প্রেমে পড়ে গেলো একজন সুদর্শন সুপুরুষের । একদিকে প্রথম প্রেম আর একদিকে জীবন নাশের হুমকি । এখন কোনটাকে সামলাবে কুহোন মজুমদার ?
দি সিল অফ সলোমন
একাত্তরের কথকতা
পাথুরে মাটির কৃষাণ’ আনোয়ার হোসেন বাদলের সেই উপন্যাস যেখানে আছে টিকে
থাকার লড়াই, দুর্নীতির থাবা, মুক্তিযুদ্ধের ত্যাগ ও প্রত্যাশার ফাটল, আছে কিছু
হৃদয়বান মানুষের আশ্রয় আর নদী ভাঙনের ছোবল। একটি ভালো উপন্যাসে আমরা
অবশ্যই চাইবো সমাজের ভালো-মন্দ আদলের সবটুকু রূপায়ন। ‘পাথুরে মাটির কৃষাণ’
সে ক্ষেত্রে এক অপূর্ব সংযোজন।
দক্ষিণাঞ্চল দ্রোহ আর প্রেমে বরাবরই উর্বর। একদিকে সবুজের সামিয়ানা অন্যদিকে
নদী ভাঙনের হাহাকার। একদিকে প্রতারণা, হয়রানী অন্যদিকে সর্বরিক্ত মানুষের হাত
ধরে বাঁচার সংগ্রামে কতিপয় হৃদয়বান মানুষ। আনোয়ার হোসেন বাদলের চারপাশে
থাকা এইসব মানুষই, ‘পাথুরে মাটির কৃষাণের’ চরিত্র হয়ে উঠেছে। সমাজের কালোসাদা, অন্ধকার-আলো আনোয়ার হোসেন বাদলের উপন্যাসকে এতটাই কাছের করে
তলেছে যে, মনে হচ্ছে একজন প্রক ু ৃত লেখকের কলম থেকে এই ধাক্কাটা দরকার
ছিলো। উপন্যাসের শুরুতে কলকাতা যাবার ভ্রমণযাত্রী হিসেবে যে জমিরুদ্দিনকে দেখা
যায় উপন্যাসের শেষে তাকেই দেখা যায় অনেক উত্তর মিলিয়ে দিচ্ছেন দায়িত্ব নিয়ে।
জমিরুদ্দিনই এই উপন্যাসের প্রধান চরিত্র, যে বিবেকের গান হয়ে পাহারাদার হয়ে
উঠেছেন। আত্মসমালোচনার চাবুক উপন্যাসের গতিকে দুর্বার করেছে। রয়েছে
মনস্তাত্ত্বিক গাঢ়তা।
মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের বেঁচে থাকার ঐশ্বর্য। এখানেও রয়েছে সত্য, অসত্য কুহক।
কখনো কখনো সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচয় আড়ালেই থেকে যায়। একজন
শহিদ মুক্তিযোদ্ধার মা বানেছা বুড়ি তাই ভিক্ষা করে জীবন ধারণ করে। মুক্তিযুদ্ধের
কথা এলেই সেখানে থাকবে রাজাকার অরেছ শিকদারের মতো চরিত্র যাদের দেখলে
আজও ঘৃণার সমুদ্র জেগে ওঠে বানেছা বুড়ির শরীরে। চাঁন গাজী, লালু শরিফ,
প্রতিবাদী যুবক রুস্তম মোল্লা, জেলে জীবন, নদীর তীব্র ভাঙন খেলা, খেটে খাওয়া
মানুষের প্রতিদিনের সংগ্রাম আনোয়ার হোসেন বাদলের উপন্যাসকে দিয়েছে উত্তাল
উত্তাপ। সেই ধারাবাহিকতায় গভীর অনুরাগ জ্যোৎস্না জামিলা। যা বিরহের জলে ধোয়া
এই কঠিন জীবনের শরীরে দিয়েছে মধুর টান। সমাজের নিয়মে তৈরি দেয়াল বুঝিয়ে
দেয় অসম, অসার প্রতিদিনের ক্ষত। আনোয়ার হোসেন বাদলের উপন্যাস, ‘পাথুরে
মাটির কৃষাণ’ অনেক ছোট ছোট কাহিনি, নানা মানুষ, ভ্রমণপথের বর্ণনায় সমৃদ্ধ।
প্রকৃতি, প্রেম, রাজনীতি, প্রতিবাদ, সরলতায় জীবন্ত এই উপন্যাস হৃদয়বান পাঠকের
কাছে পৌঁছে যাবে আমার বিশ্বাস।
আসমা চৌধুরী
০৮.০৮.২০২২
পাথুরে মাটির কিষাণ - Pathure Matir Kishang
রোবট শিশুর পিতা-মাতা
বিজ্ঞানের যে কোনও বিষয়ে আমি খুবই কৌতূহল বোধ করি ! আমি একজন মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ার! আমি কয়েক দশক ধরে মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে সামরিক বাহিনীতে কাজ করি। আমার ব্যাকগ্রাউন্ডের ইতিবৃত্ত বিশ্লেষণ করতে আমি যথেষ্ট পরিমানে সীমাবদ্ধতা বজায় রাখি ! এখানে আমার কাজ হলো এন্ড-টু-এন্ড বিশ্লেষণ এবং কিরকিসিয়া যুদ্ধে মূলত মিলিশিয়া এবং জয়েন্টফোর্সের মধ্যে লড়াইয়ের খুঁটিনাটি তোলে ধরা। তার আগে সাইবার হামলা নিয়ে চালু একটি জোকসটি বলে আমি যুদ্ধের বর্ণনায় যেতে চাই । মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের সাথে পারমানবিক চুক্তি থেকে সরে গিয়ে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার বিরুদ্ধে “আক্রমণাত্মক” সাইবার হামলার অনুমোদন দিলেন ।অনুমোদন দেওয়ার কয়েক ঘন্টা পরে তিনি তার জেনারেলদের ফোন করলেন ।জেনারেলের দিকে চিৎকার করে বললেন ,”আক্রমনের খবর কি?”
জেনারেল বললেন,”আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি স্যার।”
ট্রাম্প ক্ষেপে গিয়ে বললেন, “আপনি কি বলতে চাচ্ছেন আমরা সৈন্য পাঠাচ্ছি না?”
জেনারেল বললেন, “কিন্তু..কিন্তু…স্যার, এটা সাইবার স্পেসের মাধ্যমে একটি আক্রমণ..”
ট্রাম্প বললেন, “আপনি কি মনে করেন আমি স্টুপিড প্রেসিডেন্ট??” ………
সাইবার যুদ্ধের পাগলা ঘোড়া
একটি মেয়ে, জন্ম থেকে বোধ করি আলাদা ব্যতিক্রমী ভাবনায় গড়ে উঠেছে। দেশভাগের পর, নানান টানা-পোড়েনে বেড়ে ওঠা তাদের পরিবার। এক একটা ঘটনা হয়তো তুচ্ছ, অতি তুচ্ছ। সেই সময় তার কাছে বিশাল বিস্ময় হয়ে উঠেছিল। এক একটা আঘাত প্রতিনিয়ত তাকে সৃষ্টি করতে সাহায্য করেছে। জীবনের মধ্যপ্রান্তে ক্লান্ত ‘বিকেলের আলোয়’ সে সবকিছুই দেখতে পায়। সেই সব হারানো না ফিরে পাওয়া দিনগুলো। সেই সব দিনগুলো আজো খুঁজে বেড়ায়। আজো বেলিফুলের তীব্র ঘ্রাণ নাকে আসে বাতাসের সাথে। শেষ প্রহরের সিনেমা ভাঙা গান আজো বাজে। ট্রেনের হুইসেলের শব্দে আজো যেনো ঘুম ভেঙ্গে যায়।
ভালো লাগবে আশা করি প্রিয় পাঠকের।
বিকেলের আলোয়
আবু তাহের সরফরাজ। সবার মাঝে থেকেও সে আলাদা। দৃশ্যের ভেতরও অদৃশ্য। বেঁচে থাকতে চান লেখালেখির মাঝে।
যখন আঁধার যখন কুয়াশা
স্বপ্নময় একজন চিত্রশিল্পী। তার নান্দনিক এবং শৈল্পিক ইচ্ছেগুলো রঙ-তুলিতে ফুটিয়ে তোলার স্বপ্নে সে বিভোর থাকে। কিন্তু বহতা জীবন নদীর নানা বন্দরে নোঙ্গর ফেলে স্বপ্নময় দেখেছে চারপাশের মানুষজন এমন কি আপনজনও কেউ তার দেখা স্বপ্নকে লালন করে না। সবাই ক্ষুদ্র লোভ-লালসা-স্বার্থ-বিদ্বেষ নিয়ে জৈবিক জীবন যাপন করে। এই মহার্ঘ্য জীবন নিয়ে কারোরই কোন শৈল্পিক ইচ্ছে নেই, মহাজীবনের আকাক্সক্ষা নেই। ফলে তারা পদে পদে অপমৃত্যু বরণ করে। দেখে দেখে স্বপ্নময় বিষাদাক্রান্ত হয়- অনুপম সুন্দর এই অনন্ত জীবন তুচ্ছতার লোভে নিম্নগামী হতে পারে না। বরং প্রতিদিন তাকে কঠোর সাধনার মধ্য দিয়ে মোহনার দিকে নিয়ে যেতে হয়। যেতে যেতে জীবন হয়ে ওঠে অপার সুন্দর, মধুময়, গভীর। তার তপঃক্লান্তি মুছিয়ে দিতে পাশে এসে দাঁড়ায় চৈতালী। অতঃপর তাদের যুগল চলা কি মোহনায় গিয়ে পৌঁছতে পারবে!
মোহনায় যেতে যেতে
ভূমিকা
লোকমান তাজ রচিত লাশপুরীর লাশের গল্প কিশোর উপযোগী রহস্যময় উপন্যাস। সমকালীন অনেক লেখক এ জাতীয় রচনা সৃষ্টিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। সাইন্স ফিকশন, রম্য কথা, ভৌতিক থ্রিলিং ইত্যাদি ব্যবহার করে প্রচুর লেখালেখি অব্যাহত রয়েছে। কারো কারো বেলায় ব্যাপক জনপ্রিয়তাও লক্ষণীয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব লেখা অনির্দেশ্য বায়বীয় ভাব ভাবনায় সমর্পিত।
সঠিক কোনো জীবনবোধ বা আদর্শ অন্বেষার বালাই নেই। দিকভ্রান্ত কাহিনী চরিত্রের মোহমুগ্ধ ঘনঘটা একটা আবেশ ছাড়িয়ে দেয়।
এ অবস্থায় লোকমান তাজ এর লাশপুরীর লাশের গল্প নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রম বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। এখানে গাছতলা গ্রামের সবিস্তার কাহিনী সাব্বির, মাহি ও মেহেক চরিত্রের মাধ্যমে রূপায়িত হয়েছে। তাছাড়া আরো কিছু শাখা কাহিনীও এখানে প্রযুক্ত হতে দেখা যায়। যেখানে মীরাকে কেন্দ্র করে ছাত্রীনিবাসের এক মর্মান্তিক কাহিনী এখানে বর্ণিত হয়েছে। গল্পের প্রধান চরিত্র সাব্বিরই পুরো ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করেছে।
লাশপুরীর লাশের গল্পে সত্যিকার অর্থেই গল্পের একটা মুগ্ধতা ছড়িয়ে রয়েছে। এর মধ্যে অপরিসীম আবেগ, কৌতূহল, স্বপ্ন আকস্মিকতা উৎকণ্ঠা বজায় রয়েছে। যা পাঠক সাধারণের মনকে একটা সম্মোহ সীমানায় ধরে রাখতে সক্ষম। তাছাড়া এর কাহিনী চরিত্রে বরাবরই একটা আদর্শবোধ ব্যাপ্ত আছে। এ সুবাদে সেখানে সমাজ মানসের কিছু বিশ্বস্ত চিত্রগাথা পরিস্ফুট উঠার সুযোগ পায়। যা শুধু এদেশীয় সংস্কৃতির আদলে গড়ে ওঠেছে। যেমন মীরা কেন্দ্রিক সারিনা জামান এর ঘটনাটি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। মেয়েটির আত্মহত্যা ও এর আনুপূর্বিক ঘটনা যে কাউকে ছুঁয়ে যেতে সক্ষম। সংসারের অভাব-অনটন, বন্ধুবান্ধবীদের নিগ্রহ-নিপীড়ন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবজ্ঞা, অবহেলা-সবমিলিয়ে মেয়েটির জীবন বিষিয়ে তোলে। এছাড়া সাব্বিরের দাদিবাড়ি গাছতলা গ্রামের নানাবিধ ঘটনা এ গল্পের আড়ম্বরের সাথে বনিত হয়েছে। যা পাঠ করে অনাস্বাদিত জগতের উপমিত আস্বাদন করা সম্ভব। আমি লাশপুরীর লাশের গল্প ও এর লেখক লোকমান তাজ এর পর্যায়ক্রমিক সমুন্নতি কামনা করছি।
-ড. মুহাম্মদ জমির হোসেন
লাশপুরীর লাশের গল্প
লেখকের কথা:
বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী “রু” আমার প্রথম প্রকাশিত বই হলেও আমার লেখা প্রথম উপন্যাস ছিল এই “প্রজেক্ট পাই”, যেটা আমি লিখেছিলাম দুই হাজার পনেরো সালে, অর্থাৎ আজ থেকেও আরো প্রায় চার বছর আগে। কিন্তু নানা কারণে এই উপন্যাসটা আর প্রকাশ করা হয়ে ওঠেনি। তবে কোথাও প্রকাশ না করলেও উপন্যাসটার কথা আমার মাথায় সবসময়ই ছিল। এ-কারণে প্রায়ই “প্রজেক্ট পাই”-এর ফাইলটা বের করে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চোখ বুলাতাম। এ-রকম করতে করতেই একদিন হঠাৎ মাথায় চলে এলো “রু”-এর প্লট। লেখা শুরুও করে দিলাম আমার দ্বিতীয় উপন্যাস “রু”। মাঝখানে অনিবার্য কারণবশত নেয়া একটা লম্বা বিরতিসহ প্রায় দুই বছরের মতো সময় লাগলো “রু” লিখে শেষ করতে। লেখা শেষ হবার বেশ কয়েক মাস পর আমার লেখা দ্বিতীয় উপন্যাসটি অনুপ্রাণন প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হলো আমার প্রথম বই হিসেবে। বইটি অনুপ্রাণনের সে বছরের বেস্টসেলারও হলো। “রু”-এর পর এবার আমার মাথায় এলো আমার প্রথম সন্তান, অর্থাৎ আমার লেখা প্রথম উপন্যাস “প্রজেক্ট পাই”-এর কথা, যে কিনা গত চার বছর ধরে ঘরবন্দী হয়ে আছে। ভাবলাম, এবারে যে তাকেও মুক্তি দিতে হয়!
অবশেষে “প্রজেক্ট পাই”ও মুক্তি পেলো। প্রজেক্ট পাই সম্পর্কে আমি আমার পাঠকদের আগে থেকে তেমন কিছুই বলব না। শুধু এটুকুই বলব, “রু” যেমন আমার এবং আমাদের গল্প ছিল, “প্রজেক্ট পাই”ও ঠিক তেমনি আমার এবং আমাদের গল্প। এখান থেকে আমাকে এবং আমাদেরকে খুঁজে নেয়া এবং আমাদের মাঝখানে নিজেদেরকেও খুঁজে নেয়ার দায়িত্ব আমি আমার পাঠকদের ওপরই ছেড়ে দিচ্ছি।
Ñতানভীর আহমেদ সৃজন
আগস্ট ২০১৯
প্রজেক্ট পাই
শহীদ ইকবাল। প্রাবন্ধিক ও উপন্যাসিক। জন্ম ১৩ আগস্ট, ১৯৭০ রংপুর জেলার পীরগঞ্জে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর এবং এখানেই শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। প্রকাশিত অসংখ্য গ্রন্থ রয়েছেÑ কথাশিল্পী আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, মুখশ্রীর পটে, কবিতা: মনন ও মনীষা প্রভৃতি। লিটলম্যাগ ‘চিহ্ন’ এর সম্পাদক।
হয়নাকো দেখা
প্রত্যেক মানুষের জীবনে স্মৃতি থাকে। স্মৃতি মানেই ঘটনা। অমøমধুর, বেদনাবিধুর যতো ঘটনা ঘটে মানুষের জীবনে সে-সবই স্মৃতি।
স্মৃতি- স্মৃতিকাতর করে অর্থাৎ নস্টালজিক করে তোলে মানুষকে। স্মৃতির সঙ্গে সম্পর্ক থাকে মানুষের। তারা নানা মুখাবয়বের, নানা পেশার এবং নানা চরিত্রের। আবার তাদেরকে ঘিরে আরও অনেক মানুষের সম্পর্ক জড়িত থাকে। আর এই নিয়েই মানবজীবন।
আমার জীবননৌকোও অগণন স্মৃতিসম্ভারে ভরপুর, সজ্জিত। বিশেষ করে, আমার শৈশব থেকে যৌবনের উত্থানকালের ২৪-২৫টি বছরের অসংখ্য স্মৃতি আছে, যেগুলো নিয়েই এই আত্মজৈবনিক উপন্যাস “অতলান্ত পিতৃস্মৃতি” গ্রন্থটি। আমার এই সময়টাকে আমি যাঁর চোখ দিয়ে ফিরে দেখতে চেয়েছি তিনি আমার জন্মদাতা পরম শ্রদ্ধেয় পিতা। যা কিছু ঘটেছে, যা আজকে স্মৃতি- সবকিছুরই সাক্ষী আমার বাবা। আর সেখানেই পিতা-পুত্রের সম্পর্কটা সৃষ্টি হয়েছে। কী সেই সম্পর্ক? সেই সম্পর্ক যা সহজে লেখা যায় না। না পড়লে তা জানাও যাবে না।
পড়ার পর হয়তো অনেকেই মিলিয়ে দেখবেন তাঁদের জীবনের সঙ্গে, কেউ কেউ বিষণœও হতে পারেন। কেউ কেউ পড়ে বিস্মিত হবেন! আবার কেউবা ক্ষোভ প্রকাশ করবেন, ক্ষুব্ধ হবেন। কিন্তু যা সত্য, তাই তুলে ধরতে গিয়ে আদৌ কার্পণ্য করিনি। কাউকে ছোটও করিনি, কাউকে বড়ও করিনি। মানুষ হিসেবে এখানেই আমার সীমাবদ্ধতা, পরিপূর্ণতা এবং তৃপ্তি বলে মনে করি।
অতলান্ত পিতৃস্মৃতি
মাতৃভাষা, সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয়
বিভিন্ন দেশ, জাতি ও সমাজের অস্তিত্ব ও আত্মপরিচয় মুছে দিয়ে চিরকালের জন্য নিজ শাসন ও শোষণের আওতায় নিয়ে আসার জন্য এক একটি জাতি ও উপজাতির নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতিকে আক্রমণ করে দুর্বল করে দিয়ে সুকৌশলে একক একটি ভাষা ও সংস্কৃতি জাতিতে জাতিতে চাপিয়ে দেয়া- সাম্রাজ্যবাদী শোষণ বিস্তারের প্রাথমিক পরিকল্পনারই একটি অপকৌশল। আধুনিক বিশ্বে বাঙ্গালীর জাতীয়তাবাদী চেতনা জাগ্রত করা ও বাংলাকে রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য ’৫২ এর ভাষা আন্দোলন আমাদের জাতীয় ইতিহাস ও ঐতিহ্যের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, যে অধ্যায়ের মধ্যে আমাদের ভাষা, সাহিত্য শুধু নয়, আমাদের সাংস্কৃতিক অস্তিত্ব এবং আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠা ও প্রসারের মহান সংগ্রামেরই ঐতিহাসিক সূত্রপাত। ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের স্মরণে প্রতিবছর ফেব্রুয়ারিতে অমর একুশে বইমেলা- বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে তথা বাঙালী চেতনাকে সম্প্রসারিত ও সুদৃঢ় করে তোলার কাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। আমাদের জাতীয় জীবনে অমর একুশে বইমেলার অপরিসীম ভূমিকাকে গুরুত্বের সাথে আমাদের অনুধাবন করতে হবে এবং এই বইমেলার গুণগত মান এমনভাবে পরিকল্পিত ও সুসংগঠিত করতে হবে যেন এর সুফল সারা বছর জুড়ে আমাদের জাতীয় জীবনে সফলভাবে কার্যকরী থাকে।
ভাষা, শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তির উৎকর্ষ সাধনের যে কোন প্রচেষ্টায় দেশের গণমানসের অন্তর্নিহিত শক্তিকে মানসম্পন্ন কাজে রূপান্তরিত করাটাই জরুরী। তাছাড়া, প্রতিনিয়ত নতুন চিন্তার উন্মেষ ঘটানো এবং সেসব নতুন নতুন চিন্তার বাস্তবায়ন একটি জাতির সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে সুদৃঢ়ভাবে সচল রাখতে এবং সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন মোকাবেলা করতে সবল ও সক্ষম করে তুলতে পারে। একুশে বইমেলাকে ঘিরে সেসব কাঙ্ক্ষিত রূপান্তর ঘটাতে আমরা কতটুকু সক্ষম হচ্ছি- এটাই আমাদের সামনে মূল প্রশ্ন। গণমানসের অনুবাদই প্রতিভার একমাত্র ধর্ম নয়। গনমানসের সংগঠনে সাংস্কৃতিক উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে উপযোগী রূপান্তর ঘটানোর প্রচেষ্টাই একুশে বইমেলার মতো এই বিরাট কর্মকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। কিন্তু, আমরা এই বিরাট কর্মযজ্ঞের মাঝে গনমানসের সংগঠনে রূপান্তর ঘটার মত সৃজনশীল কর্মসূচি গ্রহণ করতে দেখি না। আত্মকেন্দ্রিক পুনরাবৃত্তির মধ্যে একুশে বইমেলাকে বন্দী রাখার মত অপচয় কীভাবে বন্ধ করার যায়- এ নিয়ে আমাদের গভীরভাবে ভেবে দেখা দরকার। সত্যের এই পরিণতি মনে রাখাটা খুবই জরুরী- যে সাধনার অগতি বন্ধ্যত্ব আনে, সেই বন্ধ্যত্বের মাঝেই স্বকীয়তা, স্বাতন্ত্র্য, আত্মমর্যাদা ও আত্মপরিচয়ের বিনাশ ঘটে। আমাদের সচেতন থাকতে হবে যে, একটি জাতির নিজস্ব প্রতিভা ও সৃজনশীলতার চর্চাকে বিপথে পরিচালিত করার অপচেষ্টা নিয়ে সাম্রাজ্যবাদ সবসময় চটকদার কর্মসূচি আমাদের মাঝে হাজির করবে।
গত শতাব্দীর শেষভাগে, নিয়ন্ত্রিত শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চা বনাম মুক্ত ও স্বাধীনভাবে শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চার সুফলতা ও কুফলতা নিয়ে বিতর্কের এক রকম অবসান ঘটায় এখন দেশে দেশে মুক্ত ও স্বাধীন শিল্প ও সাহিত্যের চর্চার পক্ষেই জনমত গড়ে উঠেছে। কিন্তু, মুক্তচিন্তার প্রকাশের কারনে শাসক শ্রেণি বিব্রত হয় বলে শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চার ক্ষেত্রে কোথাও কোথাও নিয়ন্ত্রণ একেবারে উঠে যায় নি। সেন্সরশিপ আরোপ এবং গত কয়েক দশকে মুক্তচিন্তা চর্চাকারীদের উপর কট্টরপন্থীদের সশস্ত্র আক্রমণ ছাড়াও রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নানা বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ ও নিবর্তনমূলক আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ হতে দেখা যাচ্ছে। এসব প্রচেষ্টা শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিকাশের পথে বাধা। শত শত বছরের ইতিহাস এই সাক্ষ্য দেয় যে নতুন ও মুক্ত চিন্তার চর্চা ও সম্পৃক্ততা ছাড়া শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে গনমানুষের নান্দনিক অভিব্যক্তি বাধাহীন বিকাশ লাভ করে না। নিয়ন্ত্রিত বিকাশ যে বাস্তবে ঘটে না এবং অবশেষে বন্ধ্যত্ব ও স্থবিরতার কবলে পরে ধ্বংস হয়ে যায় এর ঐতিহাসিক প্রমাণ যেমন দুঃখজনক তেমনই বাস্তব।
কিন্তু, এটাও মনে রাখতে হবে যে মুক্ত, স্বাধীন ও প্রতিযোগিতামূলক শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চার নামে নৈরাজ্য একেবারেই কাম্য নয়। বলতে গেলে, দেখা যাচ্ছে যে সাহিত্য চর্চা ও প্রকাশনার ক্ষেত্রে দুধরনের প্রবণতা এই ক্ষেত্রটিকে দারুণ ক্ষতির সামনে দাড় করিয়েছে। কর্পোরেট পৃষ্ঠপোষকতা যতই মান বিচারে নিরপেক্ষতার কথা বলুক না কেন, বাস্তব কিন্তু তা বলে না। ফলে এমন একটি সুবিধাভোগী শিল্পী ও সাহিত্যিক চক্র তৈরি হচ্ছে যাদের তৈরি শিল্প-সাহিত্যের মান সম্পর্কে ক্রমাগতভাবে ভুল বার্তা দিয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে একটি গড় মানের মধ্যে আটকিয়ে রাখা হচ্ছে। ফলে প্রতিভাবান শিল্পী ও সাহিত্যিকদের মাঝে এমন একটা হতাশা তৈরি হচ্ছে যে তাদের হাত দিয়ে বাংলা শিল্প ও সংস্কৃতিতে যে উচ্চ স্তরের বিকাশ ঘটানো সম্ভব ছিল সেই পথ দুঃখজনকভাবে রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে যে ঘটনাটি ঘটছে, সেটাও খুব দুঃখজনক। একুশে বইমেলাকে কেন্দ্র করে এর উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্মে একদল শিক্ষানবিস লেখক নিজ খরচে বই প্রকাশ করে এবং তাঁর পক্ষে দল পাকিয়ে নিজেকে কবি-শিল্পী-সাহিত্যিক হিসেবে আত্মপ্রচারনায় লিপ্ত হচ্ছেন। এসব সাহিত্যকর্ম একেবারেই মানসম্পন্ন নয় ফলে প্রজন্ম বাংলা সাহিত্যের মান সম্পর্কে ভুল ধারণা প্রাপ্ত হচ্ছেন। অনুপ্রাণন আশা করে যে, শিল্পী, সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের মধ্যে মননশীল, সৃজনশীল ও মানসম্পন্ন শিল্প ও সাহিত্যের চর্চা ও সাধনার পক্ষে গভীর সচেতনতা নিয়ে একটি মুক্ত ও স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠবে।
সপ্তম বর্ষ প্রথম সংখ্যা
শাহিনুর, যাত্রাদলের এক সুন্দরী নর্তকী। বিধবা এ মেয়েটি ভিন্ন জাতের এক গানওয়ালার প্রেমে পড়লে ধর্ম ও সমাজ থেকে ছিটকে পড়ে। তার নাচ দেখতে এসে প্রেমে পড়ে যায় কিশোর বদি। শাহিনুরও এই কিশোরের প্রেমে হারিয়ে ফেলে জীবনের খেই। একসময় ভেঙে যায় ‘দি মাঝি অপেরা’। হারিয়ে যায় শাহিনুর। পর্দার আড়ালে থেকে এই নর্তকী তার প্রেমিকার প্রতিষ্ঠা পেতে অবদান রাখে। দীর্ঘ তেরো বছর পর জীবনের মঞ্চে আবার শাহিনুরের আবির্ভাব।
‘কৃষ্ণপক্ষের আলো’ নদী তীরবর্তী প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর এক অসাধারণ আলেখ্য। ঔপন্যাসিক আশ্চর্য কুশলতায় উঠিয়ে এনেছেন আবহমান বাঙলার অন্ত্যজ শ্রেণির শিল্প, সাহিত্য, ধর্ম, রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা। সুনিপুণভাবে চিত্রিত হয়েছে বাঙালি জাতির মহান অর্জন মুক্তিযুদ্ধের প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির সূক্ষ্ম দিকসমূহ। ধর্মান্ধতা, সাম্প্রদায়িকতা, পুরুষতান্ত্রিকতার নগ্ন থাবা লেখকের ক্ষুরধার তীর্যক আঁচড়ে অতি চমৎকাররূপে বাঙময় হয়ে উঠেছে।
বিয়োগাত্মক এ গল্পে কেন্দ্রীয় চরিত্র শাহিনুর পতিত শ্রেণির এক বঞ্চিতা নারী। গল্পকার তার মুনসিয়ানা দিয়ে বাস্তবসম্মতভাবে পতিত এ নারীকে পাঠকের কাছে উপস্থাপন করেন মহীয়সী রূপে।
শিল্পের সব ধারায় কাজ করলেও আনোয়ার হোসেন বাদল মূলত এক শক্তিমান কবি ও কথাশিল্পী। তার প্রকাশিত প্রত্যেকটি উপন্যাস নিঃসন্দেহে শিল্পগুণসমৃদ্ধ এবং সুখপাঠ্য। কৃষ্ণপক্ষের আলো বাংলাসাহিত্যে এক অমূল্য সম্পদ হয়ে থাকবে প্রত্যাশা রইলো।
সৈয়দ মাজহারুল পারভেজ
বহুমাত্রিক লেখক ও সাহিত্যজন
কৃষ্ণপক্ষের আলো
আমি কী আর জন্মেছিলাম মানুষ হিশেবে?
জন্মেছিল আবু তাহের, এই লোকটা কে?
মুখ চিনি না তবু মুখের আদল ধরে হাঁটি
শরীর খুলে বাইরে এসে ছায়ায় পরিপাটি।
আমি হয়তো ছায়ার মানুষ, শরীর আরেকজন
তার শরীরেই আড়াল হয়ে বাঁচার আয়োজন।
কার সে জীবন আমার কাঁধে, আমি-ই যে হায় কার
একই সাথে খাচ্ছি-দাচ্ছি ঘুমোচ্ছি আবার।
আমার যে, সে কোথায় থাকে? কোথায় বাড়িঘর?
তার সাথে কী বদলেছে এই আমার টিনের ঘর?
গোধূলির জাদুকর
“সৃজনশীলতা, কল্পনাশক্তি, বিজ্ঞানী আইনস্টাইন, পিংক ফ্লয়েড, এনাদার ব্রিক ইন দ্যা ওয়াল, এনাদার ফাকিং ব্রিক ইন দ্যা ওয়াল! দরোজা ভাঙো, শেকল ছেঁড়ো, দেয়াল ভাঙো, এই এডুকেশন সিস্টেম তোমাকে বিকলাঙ্গ করে দিয়েছে। তোমরা এর নেপথ্য কারিগর হে চতুষ্পদ এবং আলখাল্লা। তোমাদের কারণে আজ তাতিন কলা অনুষদে পড়ে শর্টকার্টে রকেট সায়েন্স শেখার মওকা খোঁজে। আজ একটা হেস্তনেস্ত হবে’
চমৎকার শোনা গেলো এখন দেখা যাক প্রতিপক্ষ কী উত্তর দেয়,
“দুধ দিয়ে আনারস খাওয়ার কারণে শত শত শিশু মারা যাচ্ছে।
সাবধান!
ব্রিজে শত শত শিশুর কাটা মাথা আর রক্তপি- পড়ে আছে
সাবধান!
এইখানে পাপ, ঐখানে পাপ, এইটা করলে গুনা, বুঝলা আমার সুনা?
সাবধান!
অবশ্য এর প্রতিবিধান আছে। তাবিজ কবজ এবং দুয়া-দুরূদ। আপনারা আলোর পথে আসুন। আপনাদের চোখে শক্তিশালী টর্চলাইট মারা হবে। এ দে দিনি ঐডে হেনে”।
আমরা দেখতে পাচ্ছি আলখাল্লা পরিহিত প্রাণীটির হাতে একটি শক্তিশালী টর্চলাইট। তিনি আলো ফেলছেন দুই এলিয়েনের চোখে। চমৎকার একটি আক্রমণ। প্রতিপক্ষকে বেশ মুষড়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে। এদিকে চতুষ্পদ প্রাণীটি সন্তুষ্ট হয়ে ডাকছে তার নিজের মোটা সুরে। খেলার এ পর্যায়ে পানি পানের বিরতি।
ছহি রকেট সায়েন্স শিক্ষা
Ekti Khuner Prostuti Boithok
কবি ফিরোজ আহমেদ এর জন্ম ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দের ১ ডিসেম্বর গোপালগঞ্জ জেলার টুংগীপাড়া থানার অন্তর্গত গিমাডাংগা গ্রামে। পিতা শেখ আব্দুর সাত্তার ও মা সুফিয়া বেগমের পাঁচ সন্তানের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহনের পর তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত এবং একটি পুত্র সন্তানের জনক। ছোটবেলা থেকেই তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। প্রাথমিক পথ চলার পর ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ” গহীনে শূন্যতা” প্রকাশিত হয় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান শোভা প্রকাশ থেকে। তারপর নিয়মিত তার কবিতা প্রকাশ হতে থাকে নানা প্রকাশ মাধ্যমে। সাহিত্যের ছোট কাগজগুলোতে তার কবিতা নিয়মিত প্রকাশ পাচ্ছে। “ঘাসফুল” নামক সাহিত্য সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘদিন। বর্তমানে তিনি বহুল প্রচারিত সাপ্তাহিক পত্রিকা “স্বদেশ খবর” এর সাহিত্য সম্পাদচকের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি দুই বাংলার মুখপত্র ” পূর্বপশ্চিম” পত্রিকার উপসম্পাদক হিসেবেও কাজ করে যাচ্ছেন।
কবির প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থসমূহঃ
১। গহীনে শূন্যতাÑ একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৩ Ñশোভা প্রকাশ।
২। দ্বীপের সবুজÑ একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৫ Ñঘাসফুল প্রকাশনী।
৩। জলবাড়িÑ একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৫ Ñঘাসফুল প্রকাশনী।
৪। নির্বাসনের আগেÑ একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৬ Ñশোভা প্রকাশ।
৫। নিষিদ্ধ সুন্দরÑ একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৬ Ñকালজয়ী প্রকাশ।
প্রকাশিতব্য গ্রন্থসমূহঃ
১। জীবনের পদাবলি
২। মধুমতির তীরে
৩। উত্তরাধুনিক ছায়াবাড়ি
জল ও মাটির গল্প
স্বকৃত নোমান। কথাসাহিত্যিক। জন্ম ১৯৮০ সালের ৮ই নভেম্বর, ফেনির পরশুরাম উপজেলার বেলোনিয়ায়। শৈশবে ঊর্দু, আরবি ও পারসি সাহিত্যে পারদর্শী হয়ে ওঠেন। পরবর্তীতে সেলিম আল দীনের কাছ থেকে পাশ্চাত্য ও বাংলা সাহিত্যের গভীর পাঠ গ্রহণ করেন। বর্তমানে ঢাকায় সাপ্তাহিক সংবাদ ম্যাগাজিন এই সময় এর সহযোগী সম্পাদক হিসাবে কর্মরত। ২০১২ সালে এইচএসবিসি কালি কলম সাহিত্য পুরস্কার পান। ‘বেগানা’ ‘হীরকডানা’ ও ‘নিশিররঙ্গিলা’ উপন্যাসসহ মোট প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা
কথাসাহিত্যের অলিগলি
রোজনামচা বা দিনলিপি কেন পড়ে মানুষ? কী দরকারে আসে এই দিনপঞ্জীপাঠ? স্যামুয়েল পেপিস (১৬৩৩-১৭০৩) কেন বিখ্যাত হয়ে গেলেন কেবলমাত্র ডায়েরি লিখে? কেননা তাঁর ডায়েরি তৎকালীন লন্ডনে (১৬৬৫) ছড়িয়ে পড়া মহামারী প্লেগ ও চারদিন (২রা-৬ই সেপ্টেম্বর, ১৬৬৬) ধরে চলা লন্ডন শহরকে পুড়িয়ে খাক করে দেওয়া বিধ্বংসী অগ্নিকা-ের অনুপুঙ্খ বিবরণ তাঁর ডায়েরিতে ধরেছেন পেপিস। যা আজ ইতিহাসের মর্যাদা পেয়েছে। কিংবা ধরুন, লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি’-র ‘নোটবুক’ বা পাবলো নেরুদার ‘মেমোয়্যার্স’ আমাদের কাছে আকর্ষণীয় কেন? না, যে যুগ আমরা পেরিয়ে এসেছি আর কোনোদিন যাওয়া যাবে না সেখানে, দিনপঞ্জী আমাদের নিয়ে যায় সে মুহূর্তক্ষণে! চিলেকোঠায় অথবা বহুদিন বন্ধ থাকা তোরঙ্গের গর্ভান্ধকার থেকে খুঁজে পাওয়া কোনো ডায়েরি এক অপরিসীম আনন্দে মন ভরায়, দেয় আবিষ্কারের আনন্দ-মূর্ছনা!
রবীন্দ্রনাথের ‘জীবনস্মৃতি’-র যে অংশে কবি নানান মানুষের স্নান করার দৃশ্যের বর্ণনা দিচ্ছেন, সে ছবি রচনার মধ্যে সেই পুরোনো কলকাতার যে স্কেচ উঠে আসে, তা আর কোনোদিন ফিরে আসবে না, অথচ কী আশ্চর্য চিত্রময় লিপ্যাঙ্কন। মনের ভেতর ছবি হয়ে বেঁচে আছে শতাব্দী পেরিয়ে। এও তো সেই রোজনামচাই! কবিগুরুর অজস্র চিঠিতে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য তাৎক্ষণিকতা, ‘হে ক্ষণিকের অতিথি’ হিসেবে নানান দৃশ্যকল্প, ছবি সে-ও সেই দিনপঞ্জীর কথাই মনে করায়। পুরোনো দিন, পুরোনো সম্পর্ক সবই ধরা থাকে প্রকৃত শিল্পীর কলমে। সে কারণেই একজন শক্তিমান লেখকের লেখা রোজনামচা বা দিনলিপি আমাদের সাগ্রহবস্তু। যে দিন চলে গেছে, যাকে ধরে রাখতে পারিনি, সে সন্ধানে ডুব দিতে পারি ইচ্ছে করলেই। মনে করতে পারি, ‘বন্ধু কী খবর বল, কতদিন দেখা হয়নি!’
এ-কারণেই ‘রোজনামচা’-র বহুল প্রচার আশা করি।
সিদ্ধার্থ দত্ত
৮.১০.১৮
রোজনামচা
কলকাতার স্মৃতিকথা
মাহবুব মিত্র বিশ্বাস করেন মানুষই শিল্প; মানবতাই ধর্ম। মানুষবিহীন পৃথিবী শস্যহীন প্রান্তরের মতো। তিনি মনে করেন সৃষ্টি জগতের শ্রেষ্ঠ শিল্প মানুষের সৌন্দর্য। তাঁর প্রিয় বিখ্যাত দু’টি উক্তিÑ “মানুষ দেখার আনন্দে তুমি কখনো ক্লান্ত হয়ো না”, “ভুল মানুষের কাছে আমি নতজানু নই।” নীতির সাথে আপোসহীন চির প্রতিবাদী সতত ডানার মানুষ এক ক্লান্তিহীন গেয়ে যান ভালোবাসার গান, সমতার গান, মানবতার গান, সুন্দরের গান।
মাহবুব মিত্র বস্তুবাদী দার্শনিক মতবাদে বিশ্বাসী। আবার ভাববাদী দর্শনও মাঝে-মধ্যে তাঁকে ভাবায়। এই দুই মতবাদের ভিতর দিয়ে পথ হাঁটছেন। তিনি বুকে ধারণ করে আছেন সৃষ্টি জগতের সকল সুন্দরের নির্যাস। সাহিত্য ও শিল্পের বাগানে শব্দ বুনে-বুনে তৈরী করছেন মানব হৃদয়ের নৈবেদ্য। এই নিবিড় সংসারে একাকি নিঃসঙ্গ পথিক এক খুঁজে পেয়েছেন জীবনের সৌন্দর্যের অবিরাম ধারাপাত। তিনি মানব হৃদয়ে খুঁজে বেড়ান সুন্দরের স্বর্গভূমি।
তিনি সর্বদা আশাবাদী একজন প্রাণবন্ত-প্রফুল্ল মানুষ। তুমুল অন্ধকারের মাঝে খুঁজে ফেরেন আলোর ফোয়ারা। মানুষ তখনই মৃত যখন তার ভিতরের আনন্দ মরে যায়। চিরন্তন সুন্দরের জন্য হাহাকার-আকাক্সক্ষা, নৈতিক মূল্যবোধের উপলব্ধি, স্বতন্ত্র বোধের-চেতনার আলোয় উদ্ভাসিত তাঁর ভাবনার আকাশ। তাঁর সুকুমার কোমল প্রবৃত্তি আপন আলোয় ভাস্বর, দীপ্ত-শোভান্বিত, সদা জাগ্রত।
শাদা কফিনে মেঘের শব্দ
পরগাছাদের জীবন কৌশল
কবিমন হাঁটে দরিয়ানগর
রঞ্জনা বিশ্বাস। জন্ম: ১০ডিসেম্বর, ১৯৮১। গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া থানার রাধাগঞ্জ ইউনিয়নের বাগবাড়ি গ্রামে খ্রিস্টিয়ান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ‘ভুলস্বপ্নে ডুবে থাক আদিবাসী মন’ ও ‘আমি তিনবেলা বৃষ্টিতে ভিজি’ কাব্যগ্রন্থ দু’টি কবির প্রকাশিত কাব্যফসল। এছাড়া কবি কবিতাচর্চার পাশাপাশি ফোকলোরচর্চাকেও ব্রত হিসাবে নিয়েছেন। নৃ-তাত্ত্বিক ও গবেষণাধর্মী কবির আরও বেশ কয়েকটি বই প্রকাশিত হয়েছে। কবি বাংলা একাডেমির ‘তরুণ লেখক প্রকল্প’ ও ‘লোকজ সংস্কৃতির বিকাশ’ প্রকল্পে কাজ করছেন। এছাড়া এখন ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বিভাগে কর্মরত আছেন।
বেদনার পাথর ও প্রান্তিক দীর্ঘশ্বাস
লেখক পরিচিতি :
সরসিজ আলীম। জন্ম: ৩রা ভাদ্র ১৩৭৪, ১৭ই আগস্ট ১৯৬৭। ঢাকায় বসবাস। পেশা হিসেবে লেখালেখি প্রথম আগ্রহ। সম্পাদনা করছেন ‘ভনে’Ñ একটি গ্রন্থচিন্তার কাগজ। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থগুলো- ‘পাতাটি যতই মেজাজ দেখাক’ ‘একঝাঁক পাখি ডাকাডাকি’ ‘বাঙালি আর বাউল পরান থৈথৈ জল’ ‘ঝমঝমানো’ ও ‘ঘোড়দৌড়’।
কুমীরের ডিমবসতি
Get access to your Orders, Wishlist and Recommendations.
Ali Noor Khan –
এক কথায় অসাধারণ একটি বই! এরকম বইয়ের জন্যে পাঁচ তারকাও কম হয়ে যায়।
লেখকের কল্পনাশক্তি এবং লিখনশৈলী থ্রিলার সাহিত্যের অনেক বড় বড় রথী মহারথীদেরও হার মানায়।
অপেক্ষায় রইলাম লেখকের পরবর্তী বইয়ের জন্য।
Abu M Yousuf –
কোন বইয়ের কথা বলছেন?