Additional information
Weight | 0.210 kg |
---|---|
Published Year |
$ 0.99 $ 1.65
লেখকের কথা-
পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টের ঐতিহাসিক মূল্য অনেক। এর দ্বারা একটি সময়ে সংঘটিত নানান ঘটনার বিশ্লেষণ করা যায়। তাই, মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক ও বহুমুখী দিকগুলো অনুধাবন ও বিশ্লেষণ করতে সেই সময়ে প্রকাশিত পত্রিকার রিপোর্টগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম।
২০১৬’র নভেম্বরে দৈনিক ইত্তেফাকের সাংবাদিক আশফাক ভাই একদিন বললেন, মুক্তিযুদ্ধের শেষ ১৭ দিনে (ডিসেম্বর ০১ – ডিসেম্বর ১৭) আন্তর্জাতিক পত্রিকায় প্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক রিপোর্টগুলোর অনুবাদ নিয়ে একটি ধারাবাহিক সিরিজ করে দেয়ার জন্য। শুনেই আমি রাজি হয়ে যাই। দৈনিক ইত্তেফাকে ২০১৬’এর ০১ ডিসেম্বর হতে ১৫ ডিসেম্বর (১৪ ডিসেম্বর বাদে) পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে ১৪টি রিপোর্টের অনুবাদ প্রকাশ হয়েছিল।
এই বইতে সেই ১৪টি রিপোর্টের অনুবাদ সহ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মোট ২০টি রিপোর্টের অনুবাদ রয়েছে। ডিসেম্বর ০১-১৭ এর ১৮টি রিপোর্ট ও মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সময় মার্চের ০২ টি রিপোর্টের অনুবাদ সংযুক্ত হলো।
অনুবাদগুলো ভাবানুবাদ এবং পত্রিকার রিপোর্টগুলো মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ ট্রাস্টের সংগ্রহশালা হতে সংগ্রহীত।
এই অনুবাদ রিপোর্টগুলো বই আকারে প্রকাশের জন্য উৎসাহ দিয়েছেন সহযোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ ট্রাস্টের সভাপতি শান্তা আনোয়ার।
Weight | 0.210 kg |
---|---|
Published Year |
জন্ম ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট, ঢাকায়। শৈশব কৈশোর কেটেছে হাইকোর্ট কম্পাউন্ডের সবুজ গাছ, অবারিত খেলার মাঠ আর টিনের চালে রিমঝিম বৃষ্টির সাথে। প্রথাগত পড়াশোনায় ইতি ঘটে প্রবল অনাগ্রহে। প্রকৌশল বিদ্যা শেষ না করে বেরিয়ে পড়েন শব্দের সন্ধানে। লম্বা সময় বোহেমিয়ান ঘুরে বেড়িয়েছেন। এ দেশ-ও দেশ আর অলি-গলি পেরিয়ে রাজপথ। পেশায় গীতিকার।
পরিচিত গান- আজ তোমার মন খারাপ মেয়ে, বৃষ্টি পড়ে, আই সি সি বিশ্বকাপ ২০১১-এর থিম সং মার ঘুরিয়ে প্রভৃতি।
রুল টানা খাতা
নাহার আলমের গদ্যভাস্কর্যের ভেতর মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, শওকত আলী, আল মাহমুদ, হাসান আজিজুল হক, রিজিয়া রহমান, হুমায়ূন আহমেদ, হেলাল হাফিজ, আব্দুল মান্নান সৈয়দ এবং সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের জীবন ও কর্মের যৌক্তিক বিশ্লেষণসহ কবিতার সেকাল-একাল, মৈমনসিংহ গীতিকা-বিধৃত লোকায়ত জীবন, মুক্তিযুদ্ধে নারীর অবদান ও ছোটোকাগজের সম্ভাবনা সম্পর্কিত বীক্ষা দ্যুতিময় হয়ে উঠেছে। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ‘পুতুল নাচের ইতিকথা-য় গাওদিয়া তথা পূর্বতন বিক্রমপুরের গ্রামীণ জীবনপ্রবাহ ও নিসর্গের অন্তর্লীন রূপকে বর্ণময় করে তুলেছেন। নাহার আলম এ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র শশীর প্রেম, মনস্তাত্ত্বিক টানাপোড়েন এবং বৃষ্টি-ডোবা মশক অধিকৃত পল্লি জীবনের জটিলতা ও গভীরতা উন্মোচনে প্রয়াসী হয়েছেন। শওকত আলীর রচনা বিশেষত তাঁর উপন্যাস ও গল্পে স্ফুরিত প্রাকৃতজনের দর্শন, ব্রাত্য জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব-সংকট, নরনারীর হিংস্রতা, মধ্যবিত্তশ্রেণির যাপনপ্রক্রিয়া, নৈঃসঙ্গ্যচেতনা ইত্যাদি বিষয়ে প্রাবন্ধিক আলোকপাত করেছেন। আল মাহমুদের বহুমুখী প্রতিভা সত্ত্বেও তাঁর কবিখ্যাতিকে প্রাবন্ধিক সমধিক গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করেছেন। তাঁর বিশ্লেষণে প্রতিভাত হয়েছে, হাসান আজিজুল হক চেতোমান সত্তা দিয়ে প্রান্তিক মানুষের জীবনচিত্র নিপুণভাবে অঙ্কন করেছেন। রিজিয়া রহমানের ছোটোগল্পের সামগ্রিক পর্যালোচনায় প্রাবন্ধিকের তন্নিবিষ্টতা উল্লেখ্য। দ্রোহ-প্রেম-বিরহের কবি হেলাল হাফিজের প্রতি প্রাবন্ধিক জ্ঞাপন করেছেন সহমর্মিতা। তিনি কবি ও লেখক হিসেবে আব্দুল মান্নান সৈয়দের বহুমাত্রিক প্রতিভার সমুজ্জ্বল পরিচয় তুলে ধরেছেন। সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের ‘আজগুবি রাত’ উপন্যাসে নারীর অন্তরায়ণ, কাহিনি বিন্যাসের ক্ষেত্রে প্রতীক-রূপকল্পের ব্যবহার, বস্তুসত্যের সাথে পরাবাস্তবতার মিশ্রণ-কৌশলের ভেতর প্রাবন্ধিক আবিষ্কার করেছেন শিল্পকিরণ। পাঠকের চেতনায় নাহার আলমের অনুধ্যান প্রভাব ফেলবে বলে বিশ্বাস করি।
গৌরাঙ্গ মোহান্ত
কবি ও গবেষক
Anodyane Nibir Path O Anyanyo
সুপ্রিয় দিনলিপি
ভূমিকা
১৯৭০ সালে সাধারণ নির্বাচনে সক্রিয় প্রচার-কর্মী, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭০ সালে সাধারণ নির্বাচন ছিল বাঙালি জাতির চূড়ান্ত মুক্তির লড়াইয়ের প্রস্তুতি পর্ব। বাংলার গণমানুষের মুক্তির অগ্রদূত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর বাসভবন ৩২ নম্বর ধানমন্ডিই হয়ে ওঠে বাঙালি জাতির মূল ঠিকানা। অধীর আগ্রহে জাতি, দিকনির্দেশনার অপেক্ষায় যেমন বঙ্গবন্ধু কর্তৃক ৭০-এ নৌকায় আমাকে ও আওয়ামী লীগকে ভোট দাও, আমি তোমাদের চূড়ান্ত বিজয় এনে দিব। তাই জাতির বিজয়ের স্বাদের অপেক্ষায় ’৭১-এর অগ্নিঝরা মার্চ-বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ রমনা রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক ভাষণে জাতির উদ্দেশে নির্দেশনা দেন। শহর-বন্দর, গ্রামগঞ্জে সর্বত্র শত্রুর বিরুদ্ধে প্রস্তুত হওয়ার জন্যÑ যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাক এবং এলাকায় এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম কমিটি গঠনের নির্দেশ দিলেন। আমি আমাদের এলাকায় শরণখোলা থানা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের কর্মী। ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণাÑ মাতৃভূমি হানাদারমুক্ত করতে প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু হয়। আমাদের দক্ষিণাঞ্চলে সুন্দরবনে মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিনের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী সংগঠিত হয়। অতঃপর সুন্দরবনে মুক্তিবাহিনীর গেরিলা ঘাঁটি গড়ে ওঠে। বিশাল মুক্তিবাহিনীর দল, মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিনের তত্ত্বাবধানে অস্ত্র চালানো যুদ্ধ প্রশিক্ষণ শুরু হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধে যা সুন্দরবন সাবসেক্টর হেডকোয়ার্টার হিসেবে পরিচিত। আমি সুন্দরবন সাবসেক্টর অঞ্চল সুন্দরবন মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেই। বগী মুক্তিবাহিনীর রিক্রুটিং সেন্টারে রিক্রুট হই নিয়মিত যোদ্ধা হিসেবে। এখানে পহেলা অক্টোবরে পাঞ্জাবীর গানবোট প্রতিরোধ সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হাবিলদার আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে অংশগ্রহণ করি। এরপরে সুন্দরবন মুক্তিবাহিনীর প্রশিক্ষণ ক্যাম্প হয়লাতলা প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। তখন ওই ক্যাম্প ইনচার্জ কমান্ডার ছিলেন এম. আফজাল হুসাইন, আমাদের প্রধান প্রশিক্ষক ছিলেন বীরপ্রতীক আলী আহমে¥দ খান। অতঃপর হানাদার শত্রুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেই। বিশেষ করে সাবসেক্টর কমান্ডার মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিনের নির্দেশে শেখ শামসুর রহমানের কমান্ডে সুন্দরবন নারকেলবাড়িয়া অ্যান্টি স্মাগলিং স্কোয়াডে যোগ দেই। মহান মুক্তিযুদ্ধে আমার অংশগ্রহণ ও ভূমিকা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ গর্ব ও সৌভাগ্যের বিষয়।
একাত্তরের সুন্দরবন
জন্ম ১৯৫৯ সালে পাবনার বেড়া উপজেলায়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। পিএইচডি করেন ১৯৯৯-এ। রাজশাহী বিশ্ব বিদ্যালয় ফোকলোর বিভাগে কর্মরত। বিশেষ আগ্রহের বিষয় লোক সংগীত, দর্শন, ধর্ম।
প্রকাশিত গ্রন্থÑ বাংলাদেশের লোকসংগীতে প্রেম চেতনা, রবীন্দ্রকাব্যে লোক উপাদান, বাংলা লোকসংগীতে নারী।
রঙ্গনামা
জন্ম ২ জানুয়ারি ১৯৮৩ নোয়াখালীতে। ২০০০ সালের মাঝামাঝিতে লেখালেখিতে সচেতনভাবে মনোযোগী হন। সিরিয়াস লেখার পাশাপাশি রম্য রচনাও করেছেন। পেশায় পা-ুলিপি সম্পাদক এবং সাংবাদিক।
গল্পকথায় ৩৫ গল্পকার
মওলানা জালাল উদ্দিন রুমির খোঁজে তুরস্কে
নাফ নদীর জলে স্নান করে পিছিয়ে পড়ে বুনো দল। আকাশ নীল ছুঁয়ে মনের সুপ্ত ছোট্ট চারাগাছ পরিণত হয়। ছুটির ঘণ্টা হাতে দাঁড়িয়ে থাকেন স্রষ্টা। যিনি ভালোবেসে আগলে রাখেন। এইখানে নামান্তরের গল্প এতো দীর্ঘ যে, ক্ষণজন্মা পার্থিব আয়োজনে দেখা পাওয়া প্রত্যেক পথিককে কৃতজ্ঞতা। তবে এই জন্মে ম্যাজিক সেøটে হাতেখড়ি নির্ঝর দা’র কাছে।
বন্ধুপ্রিয় আর প্রজাপতির সান্নিধ্যে সুপ্তপরীর আলিঙ্গনে এক পৃথিবীর বেড়ে ওঠা পবিত্র দু’টি ফুলের ছায়ায়। সেখানে জলশাস্ত্রে শাওন আর স্বতন্ত্র ভ্রƒণে কুসুম, এককতারায় তাদেরই আত্মজাফুল!
ঘুমপত্র
বাঙালির ইতিহাসে, বাঙালির জীবনে গর্ব করার মত যত অধ্যায় আছে, তার মধ্যে সবচে বড় অধ্যায় ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধ বাঙালির অহঙ্কার, মাথা উঁচু করে চলার দৃপ্ত অঙ্গীকার। সৌভাগ্যক্রমে আমার জন্ম হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের ছয় বছর পূর্বে, তাই ছয় বছর বয়সে আমিও হতে পেরেছিলাম মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন অংশীদার।
আমার অনেকদিনের ইচ্ছে, আমাদের শৈশব কৈশোরের দিনলিপি নিয়ে ‘চোখ যায় যদ্দুর’ নামে তিন পর্বে বই লিখবো। তিন পর্বে থাকবে মুক্তিযুদ্ধ পূর্বকাল, মুক্তিযুদ্ধকাল ও মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীকাল।
মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল ১৯৭১ সালে, ঊনপঞ্চাশ বছর পেরিয়ে গেছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, বাঙালির অহঙ্কারের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্ম খুব বেশি কিছু জানে না। আজও তারা বিভ্রান্ত হয় মুক্তিযোদ্ধা আর রাজাকার শব্দ দুটো নিয়ে। কারণ কে মুক্তিযোদ্ধা কে রাজাকার, সেই তালিকা আজও নির্ণিত হয়নি।
বর্তমান প্রজন্ম জানে, মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা ছিল, পাকবাহিনী ছিল, রাজাকার ছিল, মিত্রবাহিনী ছিল।
বর্তমান প্রজন্ম জানে না, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে মুক্তিযোদ্ধা আর রাজাকার ছাড়াও রিফিউজি নামে আরেকটি শ্রেণির সৃষ্টি হয়েছিল। রিফিউজিদের কথা কেউ আলাদা করে বলেনি, রিফিউজিদের কথা কেউ আলাদা করে লিখে না। তাই বর্তমান প্রজন্ম রিফিউজি শ্রেণির সাথে পরিচিত নয়।
রিফিউজি কারা ছিল, কেন তারা রিফিউজি হয়েছিল! কেমন ছিল রিফিউজিদের জীবন! রিফিউজি হওয়া কি স্বস্তির নাকি বেদনার! ভয়াবহ যুদ্ধ চলাকালে রাজাকারের চোখ এড়িয়ে, পাকসেনাদের গুলি বাঁচিয়ে বন বাদাড়, মাঠঘাট, নদী নালা পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে পৌঁছে নিজেকে রিফিউজি ঘোষণা করা যে কী নিদারুণ কষ্টের আত্মসমর্পণ, অন্যের দয়ায় দিনাতিপাত করা কতখানি গ্লানিকর তা অতীত বর্তমান কোনো প্রজন্মই অনুধাবন করতে পারবে না।
অতীত এবং বর্তমান প্রজন্ম রিফিউজি সম্পর্কে জানে না, কিন্তু ভবিষ্যত প্রজন্ম জানুক রিফিউজিদের কথা।
মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিল সাড়ে ছয় বছর, বড়দা ছিল কিশোর, মেজদা বালক, ছোট ভাই চার বছর বয়সের শিশু।
না, আমরা কেউ বন্দুক হাতে মুক্তিযুদ্ধ করিনি। চারটে ছেলেমেয়ে যুবতী স্ত্রী বৃদ্ধা মাকে পাকবাহিনীর গোলার মুখে ফেলে বন্দুক হাতে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার মত দুঃসাহস আমাদের বাবার ছিল না। বাবা তাই সবাইকে নিয়ে প্রাণ বাঁচাতে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পৌঁছে রিফিউজি হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কেউ সাধ করে আশ্রিতের জীবন বেছে নেয় না।
এক দিনে আমরা ভারতে পৌঁছাইনি, দীর্ঘ পনের দিন লেগেছে নারায়ণগঞ্জ থেকে আগরতলা হয়ে কলিকাতা পৌঁছাতে। সেই যাত্রাপথ কেমন ছিল, কি কি ঘটেছিল, অথবা কি কি ঘটতে পারতো, কলিকাতা পৌঁছে আমরা কেমন ছিলাম, কলিকাতাবাসী আমাদের প্রতি কতখানি আন্তরিক ছিল, এসব সত্য যদি লিপিবদ্ধ না থাকে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পূর্ণ হবে না।
ইতিহাস সৃষ্টি হয় সত্যের ওপর ভর দিয়ে, ইতিহাস দাঁড়ায় সত্যের ভিত্তির ওপর। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ মিছে নয়, মুক্তিযুদ্ধ বানানো কাহিনি নয়, মুক্তিযোদ্ধা আর রাজাকার নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ নয়, সেখানে রিফিউজি নামে মুক্তিযুদ্ধের যে নীরব সাক্ষী আছে, সেই রিফিউজিরাও মুক্তিযুদ্ধের অংশ, তারাও মুক্তিযোদ্ধা।
শিশুরা মিথ্যা বলে না, শিশুরা মিথ্যা দেখে না। শিশুরা ছল চাতুরী জানে না, আদালতে শিশুরা মিথ্যে সাক্ষ্য দেয় না। মাঝে মাঝে শিশুরাই হতে পারে ন্যায় বিচারক।
একাত্তরে আমরা ছিলাম শিশু বালক বালিকা, আমরাই হয়েছিলাম রিফিউজি, আমরাই ছিলাম মুক্তিযুদ্ধের সত্যদর্শী সাক্ষী। রিফিউজিদের কথা যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানতে পারে, সেই দায় মাথায় নিয়ে আমাদের বাল্যকালের সত্যনিষ্ঠ স্মৃতিভান্ডার থেকে কুড়িয়ে যতটুকু সত্য আহরণ করতে পেরেছি, সেটুকুই ‘চোখ যায় যদ্দুর’র মুক্তিযুদ্ধকাল পর্ব ‘একাত্তরের বালক বালিকা’ খণ্ডে লিপিবদ্ধ করে রাখতে চেয়েছি। একাত্তরের বালক বালিকা পর্বটি সত্যদর্শী বালক বালিকার সত্য বয়ানের লিপিবদ্ধ রূপ।
Chokh Zay Joddur - চোখ যায় যদ্দুর (একাত্তরের বালক বালিকা) - দ্বিতীয় মুদ্রণ
আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রচিত সাহিত্যকর্ম খুবই অপ্রতুল। অথচ আমরা আমাদেরকে বীরের জাতি বলে শ্লাঘা বোধ করতে কার্পণ্য করি না। কিন্তু হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে বিশাল পটভূমিতে আমাদের স্বাধিকারের লড়াই আমাদের সাহিত্যকর্মে বিস্ময়কর রকমে অনুপস্থিত।
বাংলাদেশের বিজয় অর্জনের পঞ্চাশ বছর পরে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিশাল পটভূমিতে রচিত হল, ”চন্দনা উড়ে গেছে” উপন্যাস। কালের ব্যবধান থাকা সত্বেও এ কাহিনীর বিস্ময়কর ঘটনাপ্রবাহ, গেরিলা যুদ্ধের বুদ্ধিদীপ্ত সাহসিকতা, সফলতা, তাদের বীরত্ব ও বিশাল ত্যাগের বলিষ্ঠ চিত্রায়ন পাঠককে এক মুগ্ধতার আবেশে মোহাবিষ্ট করে শেষ পাতা পর্যন্ত আঠার মত জুড়ে রাখবে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বড় অংশটি ছিল গণযোদ্ধার। এরা সংখ্যার দিক থেকে নিয়মিত বাহিনীর চেয়ে অনেক বড় ছিল। এই গণযোদ্ধারা কয়েক সপ্তাহের ট্রেনিং নিয়ে বাংলার গ্রাম-গঞ্জে, হাটে-বাজারে, শহরে-বন্দরে ছড়িয়ে পড়ে গেরিলা যুদ্ধের কৌশল অবলম্বন করে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদরকে কোণঠাসা করে রাখে। মুক্তিবাহিনীর এ সব গণযোদ্ধা গেরিলাদের নিয়ে খুব একটা সাহিত্যকর্ম রচিত হয়নি। তাই আমাদের মহান গেরিলা যুদ্ধের অনেক কাহিনী এখনো অজানা। এ উপন্যাসের ঘটনা প্রবাহ এমন এক স্বকীয় বৈশিষ্ট্য ও অপার দক্ষতায় বিন্যাস করা হয়েছে, যা পাঠককে কব্জা করে রাখে।
এ উপন্যাসের বিশাল পটভূমিতে রয়েছে, শহর-বন্দর, গ্রাম-গঞ্জ থেকে প্রত্যন্ত হাট-বাজার, পাহাড়ী নৃ-গোষ্ঠীর জনপদ, তাদের জুমিয়া জীবন ও মাতৃভুমিকে হানাদারদের দখল মুক্ত করার বিস্ময়কর সম্প্রীতি নিয়ে গণযোদ্ধাদের প্রতিরোধ ও প্রতি-আক্রমণ, এক তেজোদীপ্ত বীরত্ব গাথার উপাখ্যান। এবং যুদ্ধ শেষে মানবিক উষ্ণতায় বীর বন্দনা।
এটি শুধু বলিষ্ঠ দক্ষতায় কারুকার্যময় এক কাহিনীই নয়, এটি সত্তর দশকের শুরুর দিকের এক এনালগ সমাজের বিশ্বাসযোগ্য সামাজিক দলিল, যার আজকের ডিজিটাল যুগে মহামূল্যবান গুরুত্ব রয়েছে। উপন্যাসটির পরতে পরতে আছে সত্তর দশকের আর্থসামাজিক, মানবিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার বর্ণনা, আছে বাংলাদেশের তরুণ-যুবাদের প্রতিরোধ যুদ্ধের কাহিনী, কিভাবে তারা খুবই স্বল্প প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রায় খালি হাতে গেরিলা পদ্ধতিতে পাকিস্তানি হানাদার ও তাদের দোসর জামাত, রাজাকার, আলবদর বাহিনীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাদেরকে রুখে দিয়েছিল। কীভাবে তাদের বাংলার কাদা-মাটিতে পর্যুদস্ত করেছিল, সেইসব ঘটনার রোমহর্ষক অনুপুঙ্খ বর্ণনা। আছে গেরিলাদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব , দুঃখ-কষ্ট, আপোষহীন লড়াই, আত্ম-বলিদান, বীরত্ব এবং. গৌরব গাথা।
বিজয়ের পঞ্চাশ পরেও বাঙালীর বিজয় গাঁথার এই অনন্য আখ্যান পাঠককে মুগ্ধতার আবেশে বিমোহিত করে রাখবে, তাদের পূর্বসূরির মহান বীরত্বের কাহিনী তাদেরকে ও তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে ধারাবাহিকভাবে উজ্জীবিত করবে। নিঃসন্দেহে এ উপন্যাস এক উচ্চমার্গীয় সাহিত্যমূল্য ধারণ করে।
স্বাধিকার, অধিকার, ভালবাসা, গন্ধক, রক্ত, এবং নাইট্রিক এসিডের সংমিশ্রণে এ এক মুক্তির পথ যাত্রা।
Chandana Ure Gache - Ali Reza
ভূমিকা
মূলত: ‘সুপ্রিয় দিনলিপি’ শিরোনামে আমার এই লেখাগুলো যে শুধুমাত্র দৈনন্দিন জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, লেখাগুলো যে আসলেই মান-সম্পন্ন, পরিশীলিত এবং এতে যে সামগ্রিকভাবে একটি স্পষ্ট বক্তব্য বা ম্যাসেজ বিদ্যমান থাকে এবং তা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাতেও প্রকাশিতও হচ্ছে- এই সামগ্রিক ব্যাপারটি আমি উপলব্ধি করতে পেরেছি বহু বছর পরে, ১৯৯৮ সালের দিকে যখন ‘দৈনিক ভোরের কাগজ’ এ আমার প্রথম লেখা প্রকাশিত হয়। তখন আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর বিবিএ (অনার্স) এর শিক্ষার্থী। এরপর জীবনের বিভিন্ন সময়ে সাহিত্য, ছোট-গল্প, বিভিন্ন ন্যাশনাল ইস্যু, উপন্যাসের সমালোচনা, বঙ্গবন্ধুর জীবনী, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন বিষয়াবলীর ওপর আমার আর্টিক্যাল ও কলামগুলো একে একে দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক ভোরের কাগজ, দৈনিক আজাদী ইত্যাদি জাতীয় দৈনিকগুলোতে প্রকাশিত হতে থাকে। দ্যাট মীনস্ সিরিয়াসলি কাউন্ট করলে আমার লেখালেখির বয়স হচ্ছে বিশ (২০) বছর। কিন্তু যেহেতু আমি প্রফেশনাল রাইটার নই, তাই আমার লেখাগুলো প্রকাশিত হয় অনিয়মিতভাবে এবং সংখ্যায় খুবই কম। ‘সুপ্রিয় দিনলিপি’ শিরোনামে এখনো আমি ক্লান্তিহীনভাবে লিখে যাচ্ছি। এই পর্যন্ত আমার সেইসব লেখা সর্বমোট ১৯টি ডায়রীতে এসে দাঁড়িয়েছে। সেখান থেকে বাছাইকৃত কিছু লেখার ‘পরিবর্ধন -পরিমার্জিত’ রূপ নিয়েই রচিত ‘সুপ্রিয় দিনলিপি (দ্বিতীয় খণ্ড)’ পাঠকদের সঙ্গে শেয়ার করার নিমিত্তে। গ্রন্থটিকে রূপক অর্থে মূলতঃ ‘একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ’ও বলা যায়। এই গ্রন্থটিতে প্রধানত যে সময়কালের ঘটনাবলী বিশ্লেষনাত্মকভাবে তুলে ধরা হয়েছে, সেই সময়কাল হচ্ছে- ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল। অদূর ভবিষ্যতে ক্রমান্বয়ে ‘সুপ্রিয় দিনলিপি’ এর- তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ এবং সপ্তম খণ্ডে পরবর্তী সময়কালের ঘটনাবলী বিশ্লেষণাত্মকভাবে তুলে ধরা হবে এবং একটা পর্যায়ে এর ইংলিশ ভার্সনও বের করা হবে- এইরকম একটি প্লান আমার রয়েছে।
আমি মনে করি,
“সময়ের সাথে সাথে নিজের মন ও মেধাকে আপডেটেড রেখে ধর্মীয় কুসংস্কার, বিজাতীয় সংস্কৃতির আধিপত্য ও দৌরাত্ম্য, রাজনৈতিক অস্থিরতা, পারস্পারিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত, মেধার অবমূল্যায়ন, শিক্ষা-ব্যবস্থার ভগ্নদশা, শিক্ষকদের অবমূল্যায়নসহ সামাজিক আরও নানা অসঙ্গতি, দুর্নীতি পরিহার করে বাংলাদেশের যে নিজস্ব একটি আদর্শ, ঐতিহ্য, ইতিহাস, কৃষ্টি-কালচার, সামাজিক মূল্যবোধ, ধর্মীয় মূল্যবোধ, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ, রাজনৈতিক মূল্যবোধ রয়েছে- সামগ্রিকভাবে তার অনুশীলন করা- বাঙ্গালী জাতি হিসেবে আমাদের সকলের দায়িত্ব ও কর্তব্য। ১৯৭১ সালে সবাই সময়ের প্রয়োজনে যুদ্ধ করেছিল, তখন যুদ্ধ করে দেশকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে ‘স্বাধীন’ করাই ছিলো তখনকার সময়ের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন। আর এখন আকাশ-সংস্কৃতির এই আগ্রাসনের যুগে অর্থাৎ এই সময়ের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন হচ্ছেÑ ‘আলোকিত এবং একই সঙ্গে মানবিক, দেশপ্রেমিক, নৈতিক মূল্যবোধ সম্পন্ন , অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, আধুনিক মানুষ ও চাই, যাতে করে একটি উন্নত ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মাণের লক্ষ্যেÑ আমরা বাংলাদেশের সকল মানুষ একসঙ্গে কাজ করতে পারি ঠিক সেই মুক্তিযুদ্ধের মতো।
অর্থাৎ বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে একটি আত্মনির্ভরশীল, সংস্কারমুক্ত, স্বশিক্ষিত, মেধাবী, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে তুলে ধরতে হলে- আমাদের সকলকে আরেকটি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে হবে এবং যেখানে আমাদের মূল অস্ত্র হবেÑ আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য, ভাষা ও অন্যান্য সকল জাতীয় অর্জন এবং একই সঙ্গে রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধের বহিঃপ্রকাশ! ‘আলোকিত মানুষ চাই এবং একই সঙ্গে মানবিক, দেশপ্রেমিক, নৈতিকমূল্যবোধসম্পন্ন, অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, আধুনিক মানুষও চাই’- মূলত এটাই হওয়া উচিত আধুনিক বাংলাদেশ এর শ্লোগান’।
রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘পৃথিবীর উপকার করতে চাইলেও করা যায় না, তার চেয়ে বরং আমরা যা করতে পারি তাই যদি করি তাহলে আপনা-আপনি পৃথিবীর উপকার হয়ে যায়’।
মূলত: পাঠকের ভালো লাগা এবং ভালোবাসাই হচ্ছে লেখকের প্রত্যাশা পূরণ। আশা করি, আপনারা কখনো আমাকে এবং আমার লেখাকে সেই ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত করবেন না। আমি মূলত প্রফেশনাল রাইটার নই। আমার মূল পেশা ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করা’ আর নেশাÑ ‘লেখালেখি করা’। ‘পেশা’য় জড়িত না থাকলে আমার এ পৃথিবীতে জীবন-ধারণ ও অস্তিত্ব রক্ষাই দুরূহ হয়ে উঠবে কিন্তু ‘নেশা’টা আমার মাঝে-মধ্যে করলেও চলবে। ‘শিক্ষকতা’ পেশায় ব্যস্ত থাকার কারণে, এই গ্রন্থটির প্রতি হয়তবা পরিপূর্ণ মনোনিবেশ ঘটাতে পারিনি। ‘সুপ্রিয় দিনলিপি (প্রথম খণ্ড) অথবা সুপ্রিয় দিনলিপি (দ্বিতীয় খণ্ড)’ এর কোথাও যদি পাঠকেরা অতৃপ্তি কিংবা অসম্পূর্ণ ফিল করেন, তাহলে তাদের কাছে অনুরোধ- ‘আপনারা রেগুলারলি ‘সুপ্রিয় দিনলিপি’-এর পরবর্তী খণ্ডগুলো সংগ্রহ করবেন’। আশা করি, তাহলে আর কোনো অতৃপ্তিবোধ থাকবে না। উল্লেখ্য, সুপ্রিয় দিনলিপি (দ্বিতীয় খণ্ড) -এর পাঠকগণ ‘অনুপ্রাণন প্রকাশন’ থেকেই ‘সুপ্রিয় দিনলিপি (প্রথম খণ্ড)’-বইটি সংগ্রহ করতে পারবেন।
‘সুপ্রিয় দিনলিপি’ গ্রন্থটি প্রকাশের ব্যাপারে আমাকে বাংলাদেশের যে দু’জন স্বনামধন্য সাংবাদিক সবসময় সহযোগীতা ও উৎসাহ যুগিয়েছেন, তারা হচ্ছেনÑ ১. সাংবাদিক ‘সালিম সামাদ’ (বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য সাংবাদিক) যিনি ‘দি ডেইলী আওয়ার টাইমস্’ সহ আরও বেশ কয়েকটি সংবাদপত্রে এ কাজ করছেন এবং তিনি ২০০৫ সালে প্রেসটিজিয়াস ঐবষষসধহ-ঐধসসবঃঃ অধিৎফ অর্জন করেন এবং একসময় ‘ইন্ডিয়া টু ডে’, ‘বাংলাদেশ অবজাভার’, ‘বিবিসি’সহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ঈড়ৎৎবংঢ়ড়হফবহঃ ধহফ জবঢ়ড়ৎঃবৎ হিসেবে কাজ করেছেন এবং ২. সাংবাদিক ‘রাশেদ রউফ’ যিনি বর্তমানে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় দৈনিক ‘দৈনিক আজাদী’র সহযোগী-সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত। তিনি একই সঙ্গে বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য শিশু-সাহিত্যিক এবং কবি। তিনি ২০১৬ সালে ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন।
এ গ্রন্থটির প্রচ্ছদ নির্বাচন করেছেনÑ সাংবাদিক, কবি ও শিশু সাহিত্যিক ‘রাশেদ রউফ’ এবং গ্রন্থটি প্রকাশনা করেছেন ‘অনুপ্রাণন প্রকাশন’। হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে কৃতজ্ঞচিত্তে সাংবাদিক ‘সালিম সামাদ’, ‘রাশেদ রউফ’ এবং ‘অনুপ্রাণন প্রকাশন’ এর কর্ণধারসহ সকল কলাকুশলীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ফারহানা আকতার
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ
১৫ জানুয়ারি ২০২০
Suprio Dinlipi, Part-2
জন্মের শহর : সিলেট।
বেড়ে ওঠা : সিলেট, রাঙ্গামাটি, চট্টগ্রাম।
স্কুল জীবন থেকে লেখালেখির শুরু, কবিতা আর রবীন্দ্রনাথকে ভালোবেসে।
এক সময় মনে হয়েছিল বিপ্লব করবেন তাই নামের আগে যুক্ত করেছিলেন ‘আসাবিক’ অর্থাৎ ‘আমি সারকারখানা স্কুলে বিপ্লব করবো’।
কিছুদিন আন্ডারগ্রাউন্ড সাহিত্য পত্রিকায় লেখালেখি চলছিল।
গদ্য পদ্য দুটোতেই দৌড়-ঝাঁপ। আবৃত্তি খুব প্রিয় বলে কবিতার সুষমা, শব্দ-উপমা, চিত্রকল্পের বেসুমার লাগামহীন টানই হয়তো আলাদা করে রাখে অপরাহœ সুসমিতোকে, ভিন্নতায়।
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি ও কানাডায় প্রোগ্রামিং নিয়ে পড়াশোনা কবিতার রম্য প্রেম থেকে তাকে আলাদা করে রাখতে পারেনি।
লালমনিরহাটে বছর পাঁচেক ম্যাজিস্ট্রেসি করেছেন। ত্রাণ মন্ত্রণালয়েও কিছুদিন। এখন কানাডার মন্ট্রিয়ল শহরে কাজ করেন, খান। লেখালেখির বাইরে আবৃত্তি, অভিনয়, টেলি-জার্নাল, বড়দের-ছোটদের নিয়ে নানা রকম সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে সমান আগ্রহ। এক সময় গ্রুপ-থিয়েটার করতেন। একটা শর্ট ফিল্মে অভিনয় করেছেন।
বিদেশ ভ্রমণ: ভারত, নেদারল্যা-স, কানাডা ও আমেরিকা।
প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : তুমি পারো, ঐশ্বর্য (২০১০), রাষ্ট্রপতির মতো একা (২০১৪)
প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ : চিড়িয়াখানা বা ফেসবুক ও অন্যান্য গল্প (২০১৬)
মিরর
প্রায় তিন দশক ধরে কাব্যচর্চায় আত্মনিবেদিত কবি হানিফ মোহাম্মদ এই প্রথম তাঁর কাব্য “পদাশ্রিত পাঞ্চজন্য” নিয়ে গ্রন্থ-প্রকাশনার জগতে পা রাখলেন। এ কাব্যটি দীর্ঘ সাধনায় অর্জিত তাঁর সাহিত্যিক ও কাব্যাদর্শিক চেতনার ফসল। জীবন ও সমাজের নানা ক্ষেত্রের ক্লেদ, দুর্গতি ও বঞ্চনা নিয়ে দুর্বিষহ সময় কবির দৃষ্টিতে যেভাবে ধরা পড়েছে, তার-ই কিছু ছবি ফুটে উঠেছে এ কাব্যের বিভিন্ন কবিতায়। কবি শুধু বৌদ্ধিক ও অন্তরঙ্গ ভাষিক-রেখায় সমাজের নানা স্কেচ এঁকেই ক্ষান্ত হননি, পরোক্ষ উচ্চারণে নিজের আদর্শভিত্তিক একটি আগামির স্বপ্ন ছড়িয়েছেন কবিতার পর কবিতায়। সর্বদাই তাঁর আবেগ থেকেছে নান্দনিক রসধারায় সিঞ্চিত এবং কাব্যবোধ প্রগতিশীল চেতনায় ঋদ্ধ। তিনিও, প্রত্যেক পূর্ণতাপ্রাপ্ত কবি যেমন, স্বতন্ত্র বিশ্বাস ও আদর্শ নিয়ে একটি আলাদা কাব্যভুবনের নির্মাতা। তাঁর মাঝে কোন ঘোরপ্যাঁচ নেই; সাবলীল ও সহজবোধ্য ভাষায় অনেকটা প্রত্যক্ষ শৈল্পিক উপস্থাপন তাঁর। বঞ্চনা-পীড়িত জীবন ও সমাজের নানা চালচিত্র তুলে ধরার ক্ষেত্রে তাঁর কাব্যবোধ ও শৈলী তিলমাত্র অপচিত হয়নি।
তাঁর কবিতার দৃশ্যমান, পরাবাস্তব ও বিমূর্ত চিত্রকল্পগুলো একাধারে পেলব, দৃষ্টিনন্দন, বোধ-উদ্দীপক ও হৃদয়স্পর্শী। তাঁর পংক্তিগুলো গণমানুষের চেতনার সাথে সমানুভূতিতে, প্রেমের পরাকাষ্ঠায় এবং নিসর্গ-সুষমার প্রদীপ্তছটায় অনাস্বাদিতপূর্ব প্রতিমাপুঞ্জ। শব্দচয়ন ও বাণীবন্ধ গঠনে তিনি যথেষ্ট মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। পুরো কাব্যটিতেই তাঁর পরিমিত বাকভঙ্গি ও পরিশীলিত মননের প্রকাশ লক্ষ্য করা যায়। সেইসাথে শব্দাবলীর যথাযথ বিন্যাস ও ছন্দময় প্রবহমানতা তাঁর কবিতার বাণীবন্ধকে আরো সমৃদ্ধ করেছে।
পরিশেষে, কবি হানিফ মোহাম্মদের বিশ্বাস এবং ব্যতিক্রমী চিন্তা-চেতনার সাথে ভিন্নমত থাকা সত্ত্বেও আমি নির্দ্বিধায় বলবো যে, কাব্যটি শৈল্পিক মানদ-ে উন্নত এবং যথেষ্ট রস সমৃদ্ধ।
আবুল কাইয়ুম
প্রাবন্ধিক, সাহিত্য সমালোচক ও অনুবাদক
পদাশ্রিত পাঞ্চজন্য
Get access to your Orders, Wishlist and Recommendations.
Shopping cart is empty!
There are no reviews yet.