Additional information
Weight | 0.115 kg |
---|---|
Published Year |
$ 1.41 $ 2.35
পিনু মামা জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে বৃষ্টি দেখছিলেন। দেখছিলেন বললে মনে হয় ভুল হবে- বৃষ্টির গান শুনছিলেন। কারণ সাঁঝের ঘোলা আলোয় বাহিরটা তেমন দেখা যাচ্ছিল না। আর কী যেন ভাবছিলেন। হয়ত তাঁর অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে কোন গল্পটা আমাদের শোনাবেন তাই ভাবছিলেন। আমরা অধীর হয়ে বসে আছি। পিনু মামা কখন গলা ঝেড়ে কথা বলা শুরু করবেন তার জন্য। আমরা মানে- আমি আর আমার বন্ধুরা। পিনু মামা কানাডায় থাকেন এখন। এর আগে তিনি ছিলেন আমেরিকার নিউইয়র্ক সিটিতে। তারও আগে ছিলেন আমাজানের গহীন বনে…। গোটা বিশ্ব মামার আবাস ভূমি। কী বিচিত্র অভিজ্ঞতাই না আছে তাঁর ঝুলিতে! মামার গল্প আমি আমার বন্ধুদের কাছে প্রায়ই করতাম। তাই সবার মাঝে মামা ভীষণ জনপ্রিয়। মামা দেশে এসেছেন এবং এখন আমাদের বাসায়- এই কথা শুনে আজ বন্ধুরা আমাদের বাসায় ভিড় করেছে, মামার অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে গল্প শুনবে বলে। স্কুলে চলছে গ্রীষ্মের ছুটি তাই পড়াশোনার চাপটাও এখন কম।
Weight | 0.115 kg |
---|---|
Published Year |
প্রেম শ্বাশত। একটি পবিত্র প্রেম একজন মানুষের জীবনে মহীরূহ স্বরূপ। যা তাকে সারাকাল সুখের আচ্ছাদনে সমৃদ্ধ করে। বুকের ভেতর লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন তার অধিকার। আমাদের চলমান সমাজ ব্যবস্থায়, তৃতীয় ব্যক্তি নামে একটি পক্ষ আছে। এই তৃতীয় পক্ষ যখন, একটি মধুর সম্পর্কের মধ্যে ঢুকতে চেষ্টা করে? তখন কতো যে ব্যত্যয় ঘটে, তা কম বেশী সকলের জানা। সুখী সমৃদ্ধশালী জীবনটা তখন, নিমিষেই তাসের ঘরের মতোন হয়ে যায়। নিকষ আঁধারে ঢেকে যায় প্রেমের সূর্যতোরণ।
এ উপন্যাসে মুন আর মনন দম্পতির মধুর সম্পর্কের মধ্যে, এই তৃতীয় পক্ষের সক্রিয় আগমন ঘটার চেষ্টা বিদ্যমান। ওদের স্বাভাবিক জীবন বোধ টালমাটাল অবস্থায় পড়ার উপক্রম। মুন ও মননের সংসারে যেনো অথই সাগরে সুখের অবগাহন। তৃতীয় পক্ষের গাত্র দাহ! তো এখানেই? তাদের সন্তান মম কে পেয়ে ওরা বুঝি সত্যিকারভাবে “সুখ পাখি” টা কে হাতে পায়? আর এতেই হয়তো বা ওরা, সেই ব্যক্তির দুষ্টু নয়নের শ্যেন দৃষ্টির শিকার হতে চলেছে? ওদের সুখের সংসারে অশুভ ইঙ্গিতের হাতছানি, দেখা দেয়ার চেষ্টা চলছে ক্রমাগত। শেষ পর্যন্ত সফল কে হবে? ওরা দু’জন? না কি তৃতীয় কোন পক্ষ? সকলকে ধন্যবাদ।
-লেখিকা
তোমায় চেয়েছি বলে
জন্ম ২৩ নভেম্বর, গোপালগঞ্জ জেলায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতকোত্তর শেষে বর্তমানে একটি বেসরকারি কলেজের অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত। শৈশব থেকেই লেখলেখিতে আগ্রহী। প্রথম প্রকাশিত বই ‘চাঁদ চোয়ানো জোৎস্নায় ফিরে এসো নদীবতী মেয়ে’।
তোমার জন্য মেয়ে
শীতের সকালে হুট করেই সবচেয়ে নিকটের বন্ধু ও ছোট ভাই হাসানের নিকট কিম্ভূতকিমাকার পোষাকে উপস্থিত সুমন ভাই। তার ফোনালাপে সদ্য গড়ে উঠা প্রেমিকা মুমুর বিয়ে ভাঙতে যেতে হবে নোয়াখালী। যেই মেয়েকে কখনোও তিনি দেখেননি। কিন্তু নোয়াখালীতে পা রাখতে না রাখতেই শুরু হয় একের পর এক বিপত্তি ও হাস্য-রসাত্মক সব ঘটনা। কখনোও বিপত্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায় তার প্রেমিকার বড় ভাই ও বড় ভাইর চ্যালা-প্যালারা, কখনোবা তিন বিটকেল কালাম, মাসুম ও জহির। এছাড়াও ঝামেলা পাঁকাতে সদা প্রস্তুত সুমন ভাইরই আপন মামাতো ভাই।
এই সকল নাটকীয়তার মাঝেই উপন্যাসের বাঁকে বাঁকে চলতে থাকে পাঁচ বন্ধুর বিচিত্র উদ্ভট সব কাণ্ডকারখানা। চলতে থাকে নির্মল ভালোবাসা-বাসি সুমন ভাই ও মুমুর মাঝে। শেষ পর্যন্ত কি ভালোবাসার বিজয় হয়? সুমন ভাই কি শেষ পর্যন্ত সফল হতে পেরেছিলেন? জানতে হলে পড়তে হবে “অপারেশন নোয়াখালী”।
অপারেশন নোয়াখালী
একাত্তরের কথকতা
মানুষের জীবন তো গল্পময়। গল্প ছাড়া জীবন হয় না। কেউ সে গল্প অপরকে শুনিয়ে তৃপ্তি পায়। কেউ নিজের মধ্যে গল্প পুষে রেখে জীবনকে ভোগ করে। কোনো একজনকে গল্প শুনাতে ইচ্ছে ছিল। সে গল্পের মধ্যে ডুব দেওয়া আর হয়নি। সে গল্পটা সামনাসামনি শুনাতেও পারিনি ।
তবে শুরুটা করেছিলাম গল্প শোনানোর জন্য, সেই শুরুটা নেশাতে পরিণত হয়ে গেছে। সেই কোনো একজন তো চোখের আড়ালে থাকে, মনের আড়াল হয়নি। তাই গল্প শুনাই আড়ালে-আবডালে- অন্তরালে।
গল্পের কথা বলার কারণ, আমি আসলে গল্পই লিখি। লিখতে লিখতে গল্পটি উপন্যাসে রূপ নেবে কিনা, সেটাও আমার জানা নেই। উপন্যাস তো বৃহৎ পরিসরের বিষয়। তাই এক্ষেত্রে আমি শিশুই। একটি কথা জোর দিয়েই বলতে পারি, অভিজ্ঞতার বাইরে আমি লিখতে পারি না। যেভাবেই হোক অভিজ্ঞতাটা তার জায়গা দখল করে নেয়। অর্থাৎ বলতে চাচ্ছি, বাস্তবতার বাইরে আমার লেখাতে কাল্পনিক বলে কিছু নেই। যদি আগেই বুঝতাম গল্প দিয়ে জীবন চলে তাহলে হয়তো লিখতাম ঘণ্টার পর ঘণ্টা, আষাঢ়ে বৃষ্টি পড়ার মত।
আমার গল্প প্রকাশ হবে, ছড়িয়ে যাবে, এমন ভাবনা মাথায় ছিল না। শিল্প-সাহিত্যের ত্রৈমাসিক ‘অনুপ্রাণন’ গল্প প্রকাশের মধ্য দিয়ে আমার চেতনাকে জাগ্রত করে দিয়েছে। গল্প লিখতে লিখতে তিনটি উপন্যাসও লিখে ফেলেছি।
“স্বপ্ন জলে জ্যোৎস্না” তৃতীয় উপন্যাস। পাণ্ডুলিপি পাঠিয়ে বিমুখ হইনি। বরং বুকভরা আনন্দ পেয়েছি। কৃতজ্ঞতা জানাই অনুপ্রাণন প্রকাশকের স্বত্বাধিকারী শ্রদ্ধেয় আবু এম ইউসুফ ভাইকে।
মফস্বলে থেকে লেখক হয়ে, বই প্রকাশ করা বড়ই কঠিন কাজ। অথচ সেই কঠিন কাজটা অনেক অনেক সহজ করে দিয়েছে অনুপ্রাণন প্রকাশন। আবারও অসংখ্য ধন্যবাদসহ ও কৃতজ্ঞতা জানাই অনুপ্রাণন প্রকাশনের সাথে জড়িতে সকলকে।
স্বপ্ন জলে জ্যোৎস্না
শাহিনুর, যাত্রাদলের এক সুন্দরী নর্তকী। বিধবা এ মেয়েটি ভিন্ন জাতের এক গানওয়ালার প্রেমে পড়লে ধর্ম ও সমাজ থেকে ছিটকে পড়ে। তার নাচ দেখতে এসে প্রেমে পড়ে যায় কিশোর বদি। শাহিনুরও এই কিশোরের প্রেমে হারিয়ে ফেলে জীবনের খেই। একসময় ভেঙে যায় ‘দি মাঝি অপেরা’। হারিয়ে যায় শাহিনুর। পর্দার আড়ালে থেকে এই নর্তকী তার প্রেমিকার প্রতিষ্ঠা পেতে অবদান রাখে। দীর্ঘ তেরো বছর পর জীবনের মঞ্চে আবার শাহিনুরের আবির্ভাব।
‘কৃষ্ণপক্ষের আলো’ নদী তীরবর্তী প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর এক অসাধারণ আলেখ্য। ঔপন্যাসিক আশ্চর্য কুশলতায় উঠিয়ে এনেছেন আবহমান বাঙলার অন্ত্যজ শ্রেণির শিল্প, সাহিত্য, ধর্ম, রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা। সুনিপুণভাবে চিত্রিত হয়েছে বাঙালি জাতির মহান অর্জন মুক্তিযুদ্ধের প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির সূক্ষ্ম দিকসমূহ। ধর্মান্ধতা, সাম্প্রদায়িকতা, পুরুষতান্ত্রিকতার নগ্ন থাবা লেখকের ক্ষুরধার তীর্যক আঁচড়ে অতি চমৎকাররূপে বাঙময় হয়ে উঠেছে।
বিয়োগাত্মক এ গল্পে কেন্দ্রীয় চরিত্র শাহিনুর পতিত শ্রেণির এক বঞ্চিতা নারী। গল্পকার তার মুনসিয়ানা দিয়ে বাস্তবসম্মতভাবে পতিত এ নারীকে পাঠকের কাছে উপস্থাপন করেন মহীয়সী রূপে।
শিল্পের সব ধারায় কাজ করলেও আনোয়ার হোসেন বাদল মূলত এক শক্তিমান কবি ও কথাশিল্পী। তার প্রকাশিত প্রত্যেকটি উপন্যাস নিঃসন্দেহে শিল্পগুণসমৃদ্ধ এবং সুখপাঠ্য। কৃষ্ণপক্ষের আলো বাংলাসাহিত্যে এক অমূল্য সম্পদ হয়ে থাকবে প্রত্যাশা রইলো।
সৈয়দ মাজহারুল পারভেজ
বহুমাত্রিক লেখক ও সাহিত্যজন
কৃষ্ণপক্ষের আলো
হুমায়ুন কবির।
জন্ম ১৯৫৯ সালে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার দেউটি গ্রামে। বাবা জালাল আহমেদ ও মা জফুরা বেগম। লেখালেখির শুরু ছাত্রাবস্থায়। মাঝে দীর্ঘ বিরতি। আবারও ফিরে এসেছেন লেখালেখিতে। কবিতা, উপন্যাস, গল্পগ্রন্হসহ তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা আটটি। ইতোপূর্বে প্রকাশিত তার উপন্যাস ‘ কানফুল, আনছার আলীর গৃহত্যাগ এবং কবিতা অন্তহীন দীর্ঘশ্বাস পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে। সাহিত্যকর্মে অবদানের জন্য জিগীষা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ তাকে জিগীষা সাহিত্য সম্মাননা -২০১৯ প্রদান করেছে।
সাবেক সরকারি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বর্তমানে দৈনিক বাংলার সাহিত্য সম্পাদক। তিনি সালমা ফৌজিয়া সুমি, ডা. শারমিন ফৌজিয়া ও সাইফুল কবির সোয়েবের বাবা। স্ত্রী নাজমুন নাহার লক্ষ্মী গৃহিণী।
প্রকাশিত বই সমুহঃ-
কবিতা-
আমি তাকে ফিরছি খুঁজে
অন্তহীন দীর্ঘশ্বাস
উপন্যাস-
দায়
কানফুল
মেঘনাপারের শেফালী
আনছার আলীর গৃহত্যাগ
গল্পগ্রন্থ-
শাহজাদী উপাখ্যান
আমিও ডিকশনারি দেখেছি কিন্তু পাইনি।
জ্বিনকন্যা নার্গিসের প্রেম
বুদ্ধদেব বলেছেন- জীবন দুঃখময়। কথাটা সর্বাংশে সত্য কিনা সংশয় রয়েছে মনে। তবে এটা সত্যি যে, বারে বারে দুঃখ আসে জীবনে। আসে বলতে মানুষ জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতে তার কামনা-বাসনার দ্বারা দুঃখকে ডেকে আনে। যদিও দুঃখকে কেউ চায় না। কিন্তু না চাইতেই মহাসমারোহে হানা দেয় জীবনে। কারণ, আলো-আঁধারের মত সুখ-দুঃখও হাত ধরাধরি করে চলে। তাই কোনমতেই দুঃখকে বাদ দিয়ে শুধু সুখ লাভ সম্ভব হয় না। কিন্তু মানুষ চায় সুখের বন্দরে নোঙ্গর গেড়ে জীবনটা কাটাতে। সেখানে পৌঁছতে গেলে দুঃখের পথ অতিক্রম করেই যেতে হয়। জীবনে দুঃখকে জয় করার মধ্যেই আছে পৌরুষ, আছে বীর্যবত্তা। তাই তাকে শক্তিধারণ করতে হয় দুঃখ জয় করার। “দুঃখ জয়ের গান” পাঠকের অন্তরে সেই প্রেরণা জোগাবে যাতে সে কর্ম-সাধনার মধ্য দিয়ে জীবনটাকে সঙ্গীতমুখর করে তুলতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।
পরিশেষে, বইটির পান্ডুলিপি পাঠ করে মূল্যবান মতামত দিয়েছেন বাংলা সাহিত্যের প্রভাষক নির্জন মজুমদার, কবি দেবী চিত্রলেখা মন্ডল, সাহিত্যিক অমল হালদার, কবি ড. অশোক মিস্ত্রী। তাদের সকলকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। সুস্মিতা ও শ্রেষ্ঠা আমার দুই মেয়ে নিরন্তর স্বপ্ন দেখে চলে কবে বাবার লেখা নতুন বই প্রকাশিত হবে। ওদের প্রেরণা আমার সব সময়ের পাথেয়। প্রথম উপন্যাস প্রকাশ-লগ্নে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। মুদ্রণজনিত ভুল-ত্রুটি পরিহারের যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। তারপরও অজ্ঞাতসারে কিছু প্রমাদ থেকেই যেতে পারে। সেজন্যে পাঠকের কাছে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি প্রত্যাশা করছি।
সন্তোষ কুমার শীল
শ্রীরামকাঠী, পিরোজপুর।
দুঃখ জয়ের গান
লেখকের কথা:
বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী “রু” আমার প্রথম প্রকাশিত বই হলেও আমার লেখা প্রথম উপন্যাস ছিল এই “প্রজেক্ট পাই”, যেটা আমি লিখেছিলাম দুই হাজার পনেরো সালে, অর্থাৎ আজ থেকেও আরো প্রায় চার বছর আগে। কিন্তু নানা কারণে এই উপন্যাসটা আর প্রকাশ করা হয়ে ওঠেনি। তবে কোথাও প্রকাশ না করলেও উপন্যাসটার কথা আমার মাথায় সবসময়ই ছিল। এ-কারণে প্রায়ই “প্রজেক্ট পাই”-এর ফাইলটা বের করে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চোখ বুলাতাম। এ-রকম করতে করতেই একদিন হঠাৎ মাথায় চলে এলো “রু”-এর প্লট। লেখা শুরুও করে দিলাম আমার দ্বিতীয় উপন্যাস “রু”। মাঝখানে অনিবার্য কারণবশত নেয়া একটা লম্বা বিরতিসহ প্রায় দুই বছরের মতো সময় লাগলো “রু” লিখে শেষ করতে। লেখা শেষ হবার বেশ কয়েক মাস পর আমার লেখা দ্বিতীয় উপন্যাসটি অনুপ্রাণন প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হলো আমার প্রথম বই হিসেবে। বইটি অনুপ্রাণনের সে বছরের বেস্টসেলারও হলো। “রু”-এর পর এবার আমার মাথায় এলো আমার প্রথম সন্তান, অর্থাৎ আমার লেখা প্রথম উপন্যাস “প্রজেক্ট পাই”-এর কথা, যে কিনা গত চার বছর ধরে ঘরবন্দী হয়ে আছে। ভাবলাম, এবারে যে তাকেও মুক্তি দিতে হয়!
অবশেষে “প্রজেক্ট পাই”ও মুক্তি পেলো। প্রজেক্ট পাই সম্পর্কে আমি আমার পাঠকদের আগে থেকে তেমন কিছুই বলব না। শুধু এটুকুই বলব, “রু” যেমন আমার এবং আমাদের গল্প ছিল, “প্রজেক্ট পাই”ও ঠিক তেমনি আমার এবং আমাদের গল্প। এখান থেকে আমাকে এবং আমাদেরকে খুঁজে নেয়া এবং আমাদের মাঝখানে নিজেদেরকেও খুঁজে নেয়ার দায়িত্ব আমি আমার পাঠকদের ওপরই ছেড়ে দিচ্ছি।
Ñতানভীর আহমেদ সৃজন
আগস্ট ২০১৯
প্রজেক্ট পাই
প্রকাশকের কথা-
বাংলা উপন্যাসে এক নতুন সংযোজন : বাংলা উপন্যাস এমনকি বিদেশি কোনো উপন্যাস এরকম কোনো উপ-কাহিনি দিয়ে শুরু এবং পৌরাণিক কাহিনি দিয়ে শেষ হয় বলে জানা নেই আমার। শরীফ শামিল এর উপন্যাস ‘দীর্ঘ রাত্রির বিরুদ্ধে জেগে থাকা’ পড়ে সেরকমই মনে হলো আমার। গত তিন চার বছরে আমার সাহিত্য পত্রিকা ‘অনুপ্রাণন’-এ তাঁর বেশ কয়েকটি গল্প ছেপেছিলাম, ওই গল্পগুলো পড়েই শরীফ শামিলকে মনে হয়েছিল একজন স্বতন্ত্র ধারার লেখক।
তাঁর উপন্যাসে স্বপ্ন আশা-আকাঙ্খা, হতাশা প্রেম কাম, নীরব বিরহ গ্রাম্য আচার-সংস্কার-কুসংস্কার, শোষক শোষিতের দ্বন্দ্ব সংঘর্ষ, লোভ হিংসা, সর্বোপরি মানুষের মনুষ্যত্ব মনস্তত্ত্বকে তিনি অল্প কথায় যেভাবে প্রকাশ করেছেন, তা অসাধারণ বলা যায়। একটি দু’টি বাক্যের মাধ্যমে তিনি একেকটা পরিচ্ছদকে তুলে ধরেছেন এই উপন্যাসে; তাঁর এই উপস্থাপন কৌশলটি এবং কৌতুক ও ব্যঙ্গাত্মক শব্দ প্রয়োগগুলো আমাকে মুগ্ধ করেছে। তাঁর চরিত্রদের কিছু সযাং ভাষা ও আঞ্চলিক ভাষা, মেয়েলি গীত, কাহিনি ও জাউলি গীত উপন্যাসটিকে বিশ্বাসযোগ্য ও প্রাণবন্ত করে তুলেছে। উক্ত উপন্যাসে ঐক্যের বিজয় দেখানো হয়েছে সেটা খ-কালিন বিজয়; চিরকালিন নয়- এটাই উপন্যাসের আরেক সার্থকতা বলে মনে হয়েছে আমার। তাছাড়া উপন্যাসের ভাষা-পরিভাষা অলংকার উৎপ্রেক্ষা উপমা অনুপাস-এর ব্যবহারও মুগ্ধ করার মতো। অতিবাস্তবতা ও যাদুবাস্তবতাকেও সার্থকভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি এই উপন্যাসে।
শরীফ শামিল-এর ‘দীর্ঘ রাত্রির বিরুদ্ধে জেগে থাকা’ উপন্যাসটি পাঠান্তে সকল শ্রেণির পাঠক মুগ্ধ হবেন বলেই আমার বিশ্বাস। তবে পাঠকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।
দীর্ঘ রাত্রির বিরুদ্ধে জেগে থাকা
ভূমিকা
বাংলাদেশের বিশিষ্ট কবি ও কথাসাহিত্যিক আনোয়ার হোসেন বাদল চিকিৎসার জন্যে কিছুদিন আগে দক্ষিণ ভারতের ভেলোর শহরে গিয়েছিলেন। সাথে ছিলেন তার আজীবন সহযাত্রী, সহযোদ্ধা আমাদের প্রিয় সুলতানা ভাবী। বাদল ভাই ভাবীর সাথে নানান জায়গার ছবি তুলছেন আর তাৎক্ষণিক অভিজ্ঞতা লিখে পোস্ট দিচ্ছেন। আমিও মজা করে কমেন্ট করে যাচ্ছি সেইসব পোস্টে। প্রথমদিকে সাদামাটা পোস্ট ভেবেই গভীরে তেমন ঢোকার চেষ্টা করিনি। কিন্তু সময় যতোই যেতে থাকে পোস্টগুলো আমাকে চুম্বকের মতো টানতে থাকে। একসময়ে অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে বাদল ভাইয়ের ভ্রমণবৃত্তান্তের অপেক্ষায় থাকি, কখন তিনি পোস্ট দিবেন, কখন সেই আখ্যানগুলো পড়বো। অবস্থা যখন এমন পর্যায়ে একদিন বলেই ফেললাম যে লেখাগুলোকে মলাটবদ্ধ করলে একটি ভালো বই হতে পারে। উপযাচক হয়ে এটাও বললাম যে যদি কখনো লেখাগুলো মলাটবদ্ধ হয় আমিই লিখবো এর মুখবন্ধ।
বলেতো দিয়েছি কিন্তু তখন কি আর জানতাম যে এই গুরুদায়িত্ব আমার ঘাড়েই চাপবে! সেদিন হঠাৎই বাদল ভাইয়ের ফোন, ‘কমরেড, ভারতে কয়েকদিন নামের বইটি আসছে আগামী বইমেলায়। ভূমিকা কিন্তু আপনাকেই লিখতে হবে।’ আমিতো সপ্তম আসমান থেকে পড়লাম একেবারে জমিতে।
যাইহোক, সচরাচর ভ্রমণকাহিনী বলতে আমরা যা বুঝি আনোয়ার হোসেন বাদল এর ‘ভারতে কয়েকদিন’ সে অর্থে কিন্তু কোনো ভ্রমণকাহিনী নয়। বরং এটি হচ্ছে সাদা চোখে দেখা সাদামাটা অভিজ্ঞতার এক নির্মোহ বিবরণ, কিছু জানা কথা, কিছু অজানা তথ্যের প্রকাশ।
বইটি এমন সহজ-সরল ভাষায় লিখিত যে—পড়ার সময় মনে হতে পারে পাঠক বই পড়ছেন না বরং লেখকের সাথে সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ভারতের নানান শহর। নিজের চোখেই পাঠক দেখছেন ভারতের ইতিহাস-ঐতিহ্য, স্থাপনা আর বিচিত্র প্রকৃতি।
আলোচ্য বইটিতে পাঠকের পরিচয় ঘটবে ভারতের ঐতিহাসিক শহর কোলকাতা, তৃতীয় বৃহত্তম শহর দক্ষিণ ভারতের চেন্নাই আর ভেলোরের ইতিহাস-ঐতিহ্য, শিল্পসংস্কৃতি ও স্থাপত্যকর্মের সাথে।
বইটি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক অমরকীর্তি হিসেবে স্বীকৃত হবে বলে আমার বিশ্বাস।
কবি হানিফ মোহাম্মদ
তালেপুর, কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা।
ভারতে কয়েকদিন
দুনিয়ার সবচেয়ে সুন্দরী রমণীদের বসবাস এখানে। ওই সুন্দরীদের রূপের সাথে পাল্লা দেয় যৌবন আর যৌবনের সাথে পাল্লা দেয় রূপ কিন্তু সেটা এক রক্ত নহর বহা একনগরী… স্ত্রীর জন্য ৭ পুরের (গ্রামের) জল ও মাটি সংগ্রহ করে পুব্যা এক যুবক। তবে শর্ত ছিল পথিমধ্যে কারো সাথে কথা-টথা বলতে পারবে না সে। যুবকটি কেন বলছে, হায় নারী! হায় স্ত্রী আমার! তুমি আমার অর্ধেক নও, তুমি আমার পুরো পৃথিবী… এরকম অসংখ্য মজাদার কথামালায় রচিত এই দুই প্রহরের প্রেম ও বিপরীত যাত্রা উপন্যাসটি। শরীফ শামিলের লেখনী শক্তি ও কল্পনা শক্তি প্রশংসার দাবি রাখে। তাঁর প্রথম উপন্যাস দীর্ঘ রাত্রির বিরুদ্ধে জেগে থাকা এর ব্যাপারে লিখেছিলাম, ওটি বাংলা উপন্যাসে এক নতুন সংযোজন। আর এ ‘দুই প্রহরের প্রেম ও বিপরীত যাত্রা’ উপন্যাসটি বাংলা উপন্যাসে আরেক (সম্পূর্ণ) নতুন সংযোজন।
আবু এম ইউসুফ
প্রকাশক
দুই প্রহরের প্রেম ও বিপরীত যাত্রা
বিশিষ্ট ছড়াকার, উপন্যাসিক, গবেষক, সম্পাদক প্রবীর বিকাশ সরকার এর জন্ম ১৯৫৯ সালে, বাংলাদেশের সিলেট জেলার সুনামগঞ্জে। ১৯৭৬ সালে চাঁদের হাট সংগঠনের সাহিত্য সম্পাদক থাকাকালীন সাহিত্যচর্চার সূচনা। ১৯৮৪ সালে জাপান গমন। তার আরো ১১টি প্রকাশিত গ্রন্থ রয়েছে।
জানা অজানা জাপান (তৃতীয় খণ্ড)
মুখর জীবনগদ্য
মুখবন্ধ
সাহিত্যের প্রাচীনতম রূপ হলো শ্লোক-ছড়া-পদ্য-কবিতা। আমাদের দেশে গদ্যের চেয়ে পদ্য চর্চা বেশি হয় বলে অনুমিত হয়। গদ্য হলো সাহিত্যের আধুনিক রূপ, যার মধ্যে উপন্যাস অন্যতম।
কবিতা ও অণুগল্প লেখার মাধ্যমে লেখালেখির জগতে আমার হাতেখড়ি। উপন্যাসে হাত দিয়েছি এই প্রথম। অনেক ভেবে-চিন্তে এবং দীর্ঘ সময় নিয়ে লিখেছি এই উপন্যাসটি। বাংলা গদ্য এখন অনেকটা হালকা চালে চলমান। প্রচলিত এই ধারার বাইরে এসে একটু গভীরে উঁকি দেওয়া, গহীন-রসে সিক্ত হওয়া- একটু ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা করেছি এই বইটিতে। অনেক যত্ন নিয়ে লিখেছি বইটি। জীবনঘনিষ্ট এক গল্পের পথে পথে শব্দের দ্যোতনা, ভাষার ব্যঞ্জনা এবং ভাবের গভীরতা একসাথে ছড়িয়ে দেবার চেষ্টা করেছি। সফল হয়েছি, নাকি ব্যর্থ- সেটা পাঠক বলবেন। তবে আশা করি, রস-আস্বাদনে বোদ্ধাপাঠক বঞ্চিত হবেন না।
বইটির নামকরণে যে ‘সারঙ্গ’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে, তা নিয়েছি মিথিলার উপভাষা ব্রজবুলি থেকে। কবি বিদ্যাপতি তাঁর কবিতায় এই একটি শব্দকে আটটি অর্থে প্রয়োগ করেছেন। সেগুলো হলো- ময়ূর, মেঘ, কোকিল, হরিণ, পদ্মফুল, ভ্রমর, কামদেব ও সাপ। রূপক অর্থে উক্ত শব্দগুলোকে ব্যবহার করেছি এই উপন্যাসে। বিদ্যাপতির কাছে আমি ঋণী।
অসংখ্য হিতাকাক্সক্ষীর কাছে ঋণী আমি। কেননা, তাঁদের উৎসাহেই আমার এই প্রয়াস। এইক্ষেত্রে অন্তত দুইজন ব্যক্তির নাম বলতেই হয়- ডাঃ শামীমা সোবহান সেতু ও শামীমা সুলতানা। তাঁদের প্রতি রইল আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা।
‘সারঙ্গ পুরাণ’ কোনো পৌরাণিক আখ্যান নয়। নয় কোনো ধর্মীয় কিতাব। এটা আধুনিক দৃষ্টিতে লেখা চলমান সময়ের গল্প, এক ভিন্নধর্মী উপন্যাস। আমার দীর্ঘ পরিশ্রমের ফসল এটি। পাঠক তৃপ্ত হলেই আমি ধন্য।
মো. বাকীদুল ইসলাম।
সারঙ্গ পুরাণ
ফজিলা ইসলাম ফৌজি নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরে ১৯৭২ সালের ৮ই মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতৃনিবাস মেহেরপুর জেলার কোলা গ্রামের বাবু পাড়ায়। পিতার নাম মোঃ হাফিজ উদ্দিন মাতার নাম মোছাঃ রাকিবা বেগম।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হিসাববিজ্ঞান বিভাগ (অনার্স মাস্টার্স) শেষ করে ১৯৯৯ সালে রাজশাহীর ইসলামিয়া কলেজে শিক্ষক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে কলেজ পরিবর্তন করে বর্তমানে তিনি মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার গাংনী মহিলা ডিগ্রী কলেজে হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক হিসাবে নিয়োজিত আছেন।
একান্ত নিভৃতে লেখালেখি দিয়ে কাব্য চর্চা শুরু। কবিতা, ছোট গল্প লেখার পাশাপাশি তিনি উপন্যাস লেখার চেষ্টা করছেন। লেখকের লেখা কবিতার বই “ মা‘কে মনে পড়ে” (২০১৪ অমর একুশে বইমেলা) থেকে প্রকাশিত, গল্পগ্রন্থ “মানচিত্রে রক্তক্ষরণ” (২০১৬) অনুপ্রাণন প্রকাশনা। স্বামী মোঃ আমিরুল ইসলাম। দুই সন্তানের জননী ফজিলা ইসলাম ফৌজির প্রিয় শখ বই পড়া, গান শোনা ও ক্রিকেট খেলা দেখা।
একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে
স্বপ্নহীন চোখ বসন্ত খোজে না
Hundred Faces Of Women
প্রেম বিনে ভাব নাই ভাব বিনে রস
ত্রিভুবনে যাহা দেখি প্রেম হূনতে বশ
যার হুদে জন্মিলেক প্রেমের অঙ্কুর
মুক্তি পাইল সে প্রেমের ঠাকুর ।
‘ পদ্মাবতী ’
আলাওল ( ১৫৯৭ – ১৬৭৩ )
বসন্তের শেষ বিকেল
সমাজ, দেশ এবং বৈশ্বিক সমসাময়িক ঘটনা প্রবাহকে কবি মনিরুল হক এমরান কবিতার শৈল্পিক ভাষায় নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। এই কাব্য গ্রন্থে কবি প্রেম-দ্রোহ, কষ্ট-ক্ষোভ ও মনের মাধুরী মিশিয়ে জীবনের চিত্র এঁকেছেন। তাঁর কবিতায় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট উপজীব্য। হিংসা-প্রতিহিংসা, বকধার্মিকদের ধর্মাধর্মের বাড়াবাড়ি, মানুষের প্রতি মানুষের নিষ্ঠুরতাকে প্রতিবাদ করেছেন কবিতার মাধ্যমে শব্দের দক্ষ কারিগরের হাতে। পাঠকের জন্য সুখপাঠ্য করে তুলেছেন প্রতিটি কবিতা। এই গ্রন্থে পাঠকের মনকে আনন্দে আন্দোলিত করার মত রয়েছে তাঁর তের্জারিমা ছন্দে লেখা পনেরটি তের্জারিমা কবিতা। দুই খ-ের তের্জারিমা বই প্রথম প্রকাশিত হয় অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৩ এবং ২০১৫ সালে। যা পরবর্তীতে পাঠক ও কবিদের মাঝে সমাদৃত হয় এবং অনেক নবীন কবি চর্চা করতে শুরু করেন। এবারের কবিতার বইটি খানিকটা ভিন্নভাবে, কবির নিজস্ব ছন্দের কয়েকটি কবিতা রয়েছে। আশা করি পাঠক বইটি পড়ে নির্মল আনন্দ পাবেন। -প্রকাশক
ঠোঁটের কারফিউ ভাঙ্গে নিষিদ্ধ আঙুল
হুমায়ুন কবির।
জন্ম ১৯৫৯ সালে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার দেউটি গ্রামে। বাবা জালাল আহমেদ ও মা জফুরা বেগম। লেখালেখির শুরু ছাত্রাবস্থায়। মাঝে দীর্ঘ বিরতি। আবারও ফিরে এসেছেন লেখালেখিতে। কবিতা, উপন্যাস, গল্পগ্রন্হসহ তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা আটটি। ইতোপূর্বে প্রকাশিত তার উপন্যাস ‘ কানফুল, আনছার আলীর গৃহত্যাগ এবং কবিতা অন্তহীন দীর্ঘশ্বাস পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে। সাহিত্যকর্মে অবদানের জন্য জিগীষা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ তাকে জিগীষা সাহিত্য সম্মাননা -২০১৯ প্রদান করেছে।
সাবেক সরকারি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বর্তমানে দৈনিক বাংলার সাহিত্য সম্পাদক। তিনি সালমা ফৌজিয়া সুমি, ডা. শারমিন ফৌজিয়া ও সাইফুল কবির সোয়েবের বাবা। স্ত্রী নাজমুন নাহার লক্ষ্মী গৃহিণী।
প্রকাশিত বই সমুহঃ-
কবিতা-
আমি তাকে ফিরছি খুঁজে
অন্তহীন দীর্ঘশ্বাস
উপন্যাস-
দায়
কানফুল
মেঘনাপারের শেফালী
আনছার আলীর গৃহত্যাগ
গল্পগ্রন্থ-
শাহজাদী উপাখ্যান
আমিও ডিকশনারি দেখেছি কিন্তু পাইনি।
জ্বিনকন্যা নার্গিসের প্রেম
দুনিয়ার সবচেয়ে সুন্দরী রমণীদের বসবাস এখানে। ওই সুন্দরীদের রূপের সাথে পাল্লা দেয় যৌবন আর যৌবনের সাথে পাল্লা দেয় রূপ কিন্তু সেটা এক রক্ত নহর বহা একনগরী… স্ত্রীর জন্য ৭ পুরের (গ্রামের) জল ও মাটি সংগ্রহ করে পুব্যা এক যুবক। তবে শর্ত ছিল পথিমধ্যে কারো সাথে কথা-টথা বলতে পারবে না সে। যুবকটি কেন বলছে, হায় নারী! হায় স্ত্রী আমার! তুমি আমার অর্ধেক নও, তুমি আমার পুরো পৃথিবী… এরকম অসংখ্য মজাদার কথামালায় রচিত এই দুই প্রহরের প্রেম ও বিপরীত যাত্রা উপন্যাসটি। শরীফ শামিলের লেখনী শক্তি ও কল্পনা শক্তি প্রশংসার দাবি রাখে। তাঁর প্রথম উপন্যাস দীর্ঘ রাত্রির বিরুদ্ধে জেগে থাকা এর ব্যাপারে লিখেছিলাম, ওটি বাংলা উপন্যাসে এক নতুন সংযোজন। আর এ ‘দুই প্রহরের প্রেম ও বিপরীত যাত্রা’ উপন্যাসটি বাংলা উপন্যাসে আরেক (সম্পূর্ণ) নতুন সংযোজন।
আবু এম ইউসুফ
প্রকাশক
দুই প্রহরের প্রেম ও বিপরীত যাত্রা
সোলায়মান সুমনÑ জন্ম ১মে ১৯৭৯, চাঁপাই নবাবগঞ্জ। তরুণ বয়সে লেখালেখি শুরু। বর্তমানে ঢাকায় বসবাস। পেশায় শিক্ষক। ত্রৈমাসিক অনুপ্রাণন প্রকাশনের সাথে যুক্ত।
ছায়াগুলো জেগে থাকে
নাহিয়ান ফাহিম। জন্ম: ২৩শে মার্চ, ১৯৮৪। ময়মনসিংহ জেলা। ঢাকাতে বেড়ে ওঠা। মূলতঃ পাঠক, ফলতঃ লেখক। সাহিত্য পত্রিকা ‘জলমাঝি’র সম্পাদক। মার্কেংটিং বিভাগে স্নাতকোত্তর। পেশাগত জীবনে একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত। প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ভিনদুপুরের নোটবই’।
মধ্যবিত্ত কবিতা
সম্পাদকীয়, অনুপ্রাণন—নবম বর্ষ প্রথম সংখ্যা
ফেব্রুয়ারি যখন আসে তখনই আমরা আমাদের ভাষা তথা, বাঙলা ভাষা ব্যবহারের পরিধি, মান, চর্চা এবং গবেষণার ক্ষেত্র ঘিরে অপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা সমালোচনায় ব্যস্ত হয়ে পড়ি; কিন্তু ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সূচনার পর এবং বিশেষ করে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ৪৮ বছর পর আজও আমরা সারা বছর বাঙলা ভাষার সমৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য কোনো পদ্ধতিগত ও সদা চলমান কোনো কর্মসূচি প্রণয়ন করতে সক্ষম হইনি। এই অক্ষমতার কারণ আমার জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যের মাঝেই বিদ্যমান।
দেশের শিক্ষাব্যবস্থা তিনটি ভাগে বিভক্ত–বাংলা মাধ্যম, আরবি/ফারসি মাধ্যম এবং ইংরেজি মাধ্যম। ইংরেজি অথবা আরবি/ফারসি মাধ্যমে যারা পড়াশোনা করে একটি বাধ্যতামূলক বিষয় হিসেবে সীমিত কয়েক শ্রেণি পর্যন্ত বাঙলা ভাষা ও বাঙলা ব্যাকরণের সাথে তাদের যৎসামান্য পরিচয় ঘটে। কিন্তু সেটা দৈনন্দিন জীবনে কথ্যভাষা ছাড়া লিখিত কোনো নথি, রচনা, প্রবন্ধ অথবা প্রতিবেদন লেখার জন্য যথেষ্ট হয়ে ওঠে না। যার ফলে, সরকারি কার্যক্রম চালানোর জন্য নথিতে অথবা আইন ও বিচারব্যবস্থার কাজে ব্যবহৃত যাবতীয় আইন, আদেশ ও রায়ের সকল প্রতিবেদনে অথবা চিকিৎসা ও বিজ্ঞানচর্চার উচ্চতর স্তরে বাঙলা ভাষার ব্যবহার সঙ্কুচিত হওয়া অনেকটা অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে। আর সেটাই হতে আমরা দেখে থাকি।
আইন ও বিচারের নথি প্রস্তুতিতে অথবা বিজ্ঞানের বিভিন্ন শ্রেণি অথবা মেডিকেল শিক্ষা ও চর্চার কাজে সহজে ব্যবহৃত হতে পারে সেজন্য সহজ ও বোধগম্য শব্দ সংবলিত উপযোগী এবং পূর্ণাঙ্গ পরিভাষা কোষ তৈরি করতে আমরা এখনও সফল হইনি। এই কাজটা কঠিন কিন্তু তাই বলে কাজটা শুরুই কি হলো? আর কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোনো কোনো কাজ যদি হয়ে থাকে, সেটাও অত্যন্ত নগণ্য এবং অস¤পূর্ণ। একটা ক্ষুদ্র এবং অসম্পূর্ণ পরিভাষা কোষ দিয়ে কি কোনো একটি গ্রন্থ সম্পূর্ণ অনুবাদ হতে পারে? তাই আমরা আইন, বিচারব্যবস্থা, বিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণার সকল ক্ষেত্রে এখনো বাঙলা ভাষার প্রচলন করতে পারিনি।
আইন, বিচারব্যবস্থা, চিকিৎসা-বিজ্ঞানসহ সকল বিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে শুধু নয়, সাহিত্য ক্ষেত্রেও বিদেশি ভাষা থেকে বাঙলায় অনুবাদ এবং বাঙলা ভাষা থেকে বিদেশি ভাষায় অনুবাদের ক্ষেত্রটিও অবহেলিত রয়ে গেছে। ব্যক্তি উদ্যোগে যৎসামান্য যেটুকু হচ্ছে সেটা বাঙলা সাহিত্যকে বিদেশে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য বিন্দুসম প্রচেষ্টাই বলা যেতে পারে। বাঙলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে তোলার জন্যই উভয়বিধ অনুবাদের কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি ও প্রসার ঘটানো অত্যন্ত প্রয়োজনীয় অথচ এটা আমাদের দেশের নীতিনির্ধারকরা কতটুকু বোঝেন এটা জানা খুব কষ্ট। অথচ বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে তারা আপসহীন সংগ্রামী। কিন্তু জাতিকে সমৃদ্ধ করে তোলার ক্ষেত্রে ভাষার বহুমাত্রিক বিকাশ যে কতটুকু প্রয়োজনীয় সেটা তারা কী আদৌ বোঝেন?
পৃথিবীতে প্রায় ৩০ কোটি মানুষ রয়েছে যাদের মাতৃভাষা বাঙলা। শুধু এই সংখ্যাটার জোরেই আমরা জাতিসংঘে অন্যান্য প্রচলিত ভাষাসমূহের পাশাপাশি বাঙলা ভাষাকেও ব্যবহারের জন্য অন্তর্ভুক্ত করার দাবি করতে চাই। কিন্তু শুধু সংখ্যার জোরেই কি জাতিসংঘের কাছে এই দাবি গ্রহণযোগ্য করে তোলা সম্ভব? বস্তুতপক্ষে আমরা যদি বাঙলা ভাষাকে বিশ্বের একটি অন্যতম ভাষা হিসেবে আন্তর্জাতিক মহলে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই, তাহলে বাঙলা ভাষাকে উচ্চতর জ্ঞান-বিজ্ঞান, আইন ও বিচারব্যবস্থা পরিচালনার জন্য উপযোগী করে তুলতে হবে। যদি আন্তর্জাতিকভাবে বাঙলা ভাষা ব্যবহার করতে গিয়ে কোনো কোনো প্রতিশব্দের অভাবে বিকল্প হিসেবে বিদেশি ভাষাই ব্যবহার করতে হয় তাহলে কি করে আমরা বাঙলা ভাষাকে আন্তর্জাতিক অথবা বহুদেশীয় কোনো ফোরামে ব্যবহারে জন্য অন্তর্ভুক্ত করতে সক্ষম হতে পারি? এই বক্তব্যের সাথে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার বিষয় মিলিয়ে ফেলা যাবে না। কেননা, ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ, বাঙালির ভাষার জন্য সংগ্রাম ও আত্মদানের প্রতি সম্মান দেখানোর কারণেই সম্ভব হয়েছে। এর সাথে বহুজাতিক কোনো প্রতিষ্ঠানে ব্যবহারের জন্য প্রচলিত অন্যান্য ভাষাসমূহের পাশাপাশি বাঙলা ভাষাকে ব্যবহারের জন্য গ্রহণ করার সম্পর্ক নেই। এটা সফল করে তুলতে চাইলে বাঙলা ভাষার বিকাশ ও সমৃদ্ধি এবং পাশাপাশি বাংলাদেশের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক বিকাশ ও সমৃদ্ধির সম্পর্ক রয়েছে।
বক্তব্যটিকে বাঙলা ভাষার পূর্ণাঙ্গ বিকাশ এবং সমৃদ্ধির প্রশ্নে সীমাবদ্ধ রেখে বলতে চাই যে, প্রয়োজন ছিল পরিভাষা এবং অনুবাদ সাহিত্যের বিকাশ এবং সমৃদ্ধির জন্য একটি স্বতন্ত্র এবং দক্ষ ও মেধাবী সাহিত্যিক ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখায় পারদর্শী ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। কিন্তু বেসরকারিভাবে এই কাজটা করা সম্ভব না। এটা করতে হলে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে এবং যার জন্য চাই সরকারের সিদ্ধান্ত। কেন যে সরকার আজ অবধি এডহক-ভিত্তিতে দেশ ও জাতির জন্য এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি বাঙলা একাডেমিকেই দিয়ে রাখলো সেটা আমার বোধগম্য না।
এদিকে মাদরাসা ও ইংরেজি শিক্ষা থেকে পাস করে বেরিয়ে আসা ছাত্রদের উচ্চতর শিক্ষা এবং সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করার সুযোগ অবারিত করা হয়েছে। এ-কথা জানা সত্ত্বেও যে উচ্চতর শিক্ষায় অথবা চাকরি-জীবনে আগত এসব ছাত্ররা বাঙলা ভাষা ব্যবহার না করে অন্য বিদেশি ভাষা ব্যবহার করার প্রবণতা নিয়ে উচ্চশিক্ষা এবং চাকরিতে ঢোকে। যার ফলে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের ক্ষেত্রে অথবা সরকারি প্রশাসন এবং আইন ও বিচারব্যবস্থার উচ্চতর মহলে সার্বিকভাবে বাঙলা ভাষা ব্যবহার প্রচেষ্টায় তাদের আগ্রহী হয়ে উঠতে দেখা যায় না। বরঞ্চ উল্টোটাই ঘটে। অর্থাৎ এসব ক্ষেত্রে বিদেশি ভাষা ব্যবহার পরিহার করার প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে অনীহার ফলে একপ্রকার বাধা সৃষ্টি করতেও তাদের দেখা যায়।
ভাষার বহুমাত্রিক বিকাশ যদি না ঘটে, তাহলে বদ্ধজলের মতোই ভাষা ও একপ্রকার বন্ধ্যা অবস্থায় পতিত হয়। বিকাশ না ঘটলে যে কোনো অস্তিত্ব সঙ্কুচিত হতে থাকে এবং সঙ্কুচিত হতে হতে একসময় সেই বস্তুর অস্তিত্বই হুমকির মধ্যে পড়ে। কথ্য অথবা লিখিত ভাষার ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রথম ধাপে অস্তিত্বের এই বিনাশ শুরু হয় নানা বাঙলা শব্দ বা প্রতিশব্দের বদলে বিদেশি শব্দের ব্যবহারের মধ্য দিয়ে যেটা এখন হরহামেশা ঘটছে। নাগরিক কথাবার্তায় অথবা লেখালেখিতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাংলার বদলে আরবি অথবা ইংরেজি শব্দের ব্যবহার এখন আমরা প্রায়শই হতে দেখছি, কিন্তু তবুও আমাদের সাহিত্যিক অথবা বুদ্ধিজীবী মহলে কিংবা নীতিনির্ধারক মহলের টনক নড়তে দেখা যায় না। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই যে এটা প্রকৃত বাঙলা শব্দের অভাবে হচ্ছে, সেটা যে তা নয়। এক্ষেত্রে বলা যেতে পারে যে, এদের মন-মানসিকতায় বাঙালি জাতীয়তাবাদী সচেতনতা ততোটুকু দৃঢ় নয়। এটা কেন হচ্ছে? কেন বহুসংখ্যক নাগরিক বাঙলার বদলে আরবি অথবা ইংরেজি ব্যবহারে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন?
জ্ঞান-বিজ্ঞান অথবা প্রযুক্তির উচ্চতর ক্ষেত্রে যখন বাঙলা প্রতিশব্দের অভাব হয়, তখন সম্পূর্ণভাবেই বাঙলা ভাষার বদলে ইংরেজি ব্যবহার যেন অপরিহার্য হয়ে যায়। সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে এই বাঙলায় একসময় আরবি, ফারসি অথবা উর্দু শব্দ সুকৌশলে ব্যবহার করার একটা প্রবণতা কোনো কোনো কবি-সাহিত্যিকের ক্ষেত্রে ঘটেছে, কিন্তু সেটা ছিল পাকিস্তান আমল এবং পাকিস্তানি শাসক মহলকে তোষণ করার জন্যই এটা সচেতনভাবেই করা হতো। কিন্তু এখন কেন আরবি, ফারসি, উর্দু অথবা ইংরেজি শব্দের ব্যবহার বেড়ে চলেছে। বাঙলা ভাষার বিকাশের ক্ষেত্রে যেহেতু চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে কাজ হচ্ছে না তাই বাঙলা ভাষার অস্তিত্বই বিপন্ন হয়ে পড়ছে এবং এর জন্য ত্রিমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা শতভাগ দায়ী। তাহলে আমরা কি করতে পারি? এটা কি বলতে পারি যে, ভাষার জন্য আমাদের সংগ্রামের পরিসমাপ্তি ঘটেছে?
আমাদের একথা বুঝে নিতে হবে যে, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাঙলা ভাষার অস্তিত্ব সুরক্ষা করা, এর বিকাশ ঘটানো এবং চলমান রাখা এবং সকল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাঙলা ভাষার সমৃদ্ধি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করা চলার আন্দোলন ও সংগ্রাম, ’৫২-এর ভাষা আন্দোলনের চাইতেও জটিল ও কঠিন। যার জন্য প্রয়োজন সুষ্ঠু পরিকল্পনা এবং সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য চাই নিয়মানুবর্তিতা ও অধ্যবসায়।
খুব নীরবে হলেও বিশ্বজুড়ে ভাষার ব্যবহার এবং প্রসার নিয়ে চলছে এক তীব্র প্রতিযোগিতা। আর এই প্রতিযোগিতার পেছনে রয়েছে উন্নত রাজনীতি এবং অর্থনীতির অধিকারী দেশ ও জাতিসমূহের উৎপাদিত পণ্যসমূহের বাজার সম্প্রসারণ করার সম্প্রসারণবাদী এবং সাম্রাজ্যবাদী পরিকল্পনা। যেসব পরিকল্পনাকে তারা কোনো কোনো সময় তাদের নিজ জাতি ও দেশের সুরক্ষা নীতির অংশ হিসেবে গ্রহণ করেছে বলে প্রচার করে থাকে। এসব পরিকল্পনার বিষয় আমাদের বুঝতে হবে। ভাষা, যা কিনা শিল্প, সাহিত্য, সংগীত, চিত্র ও চলচ্চিত্রের বাহক সেগুলো তারা ছড়িয়ে দিচ্ছে বিশ্বব্যাপী এবং স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে তাদের তৈরি সাহিত্য, সংগীত ও চলচ্চিত্রের বাজার ক্রমেই সম্প্রসারিত করে চলেছে। আমাদের দেশেই বিদেশিদের বিদেশি ভাষার বই এবং চলচ্চিত্রের যে বাজার রয়েছে, সে তুলনায় আমাদের বাঙলা সাহিত্য অথবা চলচ্চিত্রের বিদেশি বাজার নিতান্তই ক্ষুদ্র। এই প্রতিযোগিতামূলক বাজারে আমরা যদি আমাদের শিল্প, সাহিত্য, সংগীত ও চলচ্চিত্রের বিদেশি বাজার সৃষ্টি না করতে পারি এবং সেসব বাজার সম্প্রসারিত না করতে পারি, এই প্রতিযোগিতার কোনো ভবিষ্যৎকালে একদিন আমাদের প্রাণপ্রিয় বাঙলা ভাষাই বিপন্ন হয়ে পড়তে পারে।
সারা বিশ্বে নানা দেশে ছড়িয়ে প্রায় সোয়া কোটি বাঙালি রয়েছে। যাদের দ্বিতীয় প্রজন্ম ক্রমেই বাঙলা ভাষা ব্যবহারের সীমিত সুযোগ পাওয়াতে বাঙলা ভাষা, সংগীত অথবা চলচ্চিত্রের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। এইভাবে চলতে থাকলে প্রবাসী বাঙালি সমাজে বাঙলা ভাষা ও সংস্কৃতির বিলোপ ঘটবে এবং তারা মানসিকভাবে স¤পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। প্রবাসী বাঙালিদের ব্যক্তি উদ্যোগে গুটিকয়েক বাঙলা ভাষা শিক্ষা স্কুল এবং সংগীত বিদ্যালয় আছে, যা কি-না প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। আমাদের বিদেশি দূতাবাসগুলো এই ব্যাপারটাই নজর দেয়ার একটা বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসতে পারে এবং বিদেশে বিশেষ করে যে সকল শহরে অধিক সংখ্যায় প্রবাসী পরিবার রয়েছে সেখানে বাঙলা ভাষা ও সংস্কৃতি কেন্দ্র এবং পাশাপাশি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করতে পারে। যেসব লাইব্রেরিতে বাঙলা ভাষায় রচিত অথবা বাঙলা ভাষায় অনূদিত সাহিত্য, ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিল্প ও কলাবিভাগের গ্রন্থসমূহ এবং বাঙলা চলচ্চিত্রের একটি সমৃদ্ধ ভাণ্ডার থাকতে পারে। পাশাপাশি বাঙলা ভাষা ও সংগীত শিক্ষার জন্য স্কুল থাকতে পারে।
আমাদের দেশে যদি ব্রিটিশ কাউন্সিল, ইউএস, রুশ অথবা ফ্রেঞ্চ কালচারাল সেন্টার থাকতে পারে, তবে প্রবাসে গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে আমরা কেন ‘বাঙলা শিল্প-সাহিত্য কেন্দ্র’ নাম দিয়ে বাঙলা ভাষা ও সংস্কৃতির সাথে প্রজন্ম-প্রজন্মান্তরে বাঙলা ভাষা ও সংস্কৃতির সাথে তাদের পরিচিতি অক্ষুণ্ন রাখার জন্য পদক্ষেপ নিতে পারি না? এবং এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আমাদের জাতীয় বাজেটে এই কর্মসূচি গ্রহণ করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ রাখার কথা ভাবি না?
নবম বর্ষ প্রথম সংখ্যা
Get access to your Orders, Wishlist and Recommendations.
There are no reviews yet.