মনের পদাবলী – প্রজ্ঞা লাবণী

মনের পদাবলী - Monar Podaboli

Author: প্রজ্ঞা লাবণী
Cover By: প্রচ্ছদ ও অলংকরণ- আইয়ুব আল আমিন
ISBN: ৯৭৮-৯৮৪-৯৭৪১৭-২-৫
Publish Date: ফেব্রুয়ারি ২০২৩

$ 1.76

25% Off
In Stock
Highlights:

মনের পদাবলী : ভুমিকা

বোধকরি, সেই বোধ না হওয়ার বয়স থেকে অন্ত মিলে ছন্দ মিলিয়ে, কবিতার ঢঙে কথা বলা আমাদের বাড়ির সবার অবসরের আনন্দের নিত্য আখ্যান ছিলো। বাড়ির সবাই শুধু নয়, মাঝে মধ্যে বন্ধু-স্বজন , অতিথি -প্রতিবেশীও সেই দলভুক্ত ছিলেন। তখনকার আনন্দের উৎস ছিল সহজ আর নির্মল। সেই সহজিয়া সুরের অনুরণন বরাবরই আমার অন্তরের বেলাভূমিতে প্রোথিত ছিল। পরবর্তীতে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে, কারণে -অকারণে অনিয়মিত ভাবে। কখনো তা লিপিবদ্ধ করতে পেরেছি, কখনো বা
মনের মধ্যেই তার অপমৃত্যু ঘটেছে।
আমাদের ভাবনার আকাশে আসলে ইচ্ছে ঘুড়ির মতন , টুকরো টুকরো মেঘের কথন সর্বদাই উড়া-উড়ি করে। কখনো তা প্রগাঢ়, কখনো কম্পিত, কখনো বা অস্পষ্ট – ম্রিয়মাণ। আধো আলো , আধো ছায়ায় সেই বিমূর্ত চিত্রকে মনের খাতায় পাখির পালক দিয়ে যতবারই লিখে রাখার চেষ্টা করেছি ,ব্যর্থ হয়েছি । রাতভর স্বপ্নের সাথে লুকোচুরি খেলা, সকালবেলায় বেমালুম কর্পূরের মতো মন থেকে সব উধাও। জোর পাঞ্জায় চেপে ধরেও কোনও শব্দ উদ্ধার করতে পারিনি। ‘মন শুধু বলে অসম্ভব’ – কিছুই মাথায় আসছে না।
আমার মা তাই বলতেন, বিছানায় বালিশের তলায় খাতা- কলম রেখে দিতে। অন্ধকারে কাকের ঠ্যাং বকের ঠ্যাং যা লিখবে, সকালে তা দেখেই মনে পড়বে রাতের হারিয়ে যাওয়া গুপ্তধনের হদিশ। নিয়ম করে লিখতে হবে আর মনকে সেই নিয়মের বশবর্তী করতে হবে, তাতেই কেল্লা ফতে !’
আমাদের মনতো শুধুই বিচিত্র নয়, অ্যামিবার মতন পরিবর্তনশীল। তাকে তাৎক্ষনিক ভাবে পরওয়ানা জারী করে, গ্রেফতার করতে না পারলে দাগী আসামী হয়েও পালিয়ে যাবে, ঐ দিগন্ত রেখা ধরে পৃথিবীর অন্য গোলার্ধে; হয়তো বুনো হাঁস , তিমি মাছ কিম্বা কাঠ পিঁপড়ের রূপ ধরে , কে বলতে পারে ।
আমার জীবনের নদীতে তরণী বাইতে গিয়ে , নানা ঘটনা – দুর্ঘটনায় ঢেউয়ের উথাল পাথাল আমাকে আহত করেছে বারবার। কঠিন কঠোর জলপ্রপাতের ধাক্কায় ছিটকে পড়লেও , দিক ভ্রষ্ট হইনি কখনো। আমার মা ডঃ হালিমা খাতুন, সুদক্ষ কম্পাসের মতন নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। সবসময় আমাকে আড়াল করে রেখেছেন তাঁর মাতৃস্নেহের আঁচলের অন্তরালে। আজকের এই ‘আমি’ তো তাঁর অকৃপণ হাতের তৌরী, এক পূর্ণ মানব -সন্তান। আমার সফলতা পুরোটাই তাঁর, আর ব্যর্থতা যা কিছু তা একান্ত আমার অপারগতার মাশুল ।
২০১০ সাল থেকে আমি কানাডা প্রবাসী হবার পর, আমার ভাবনার আকাশ প্রায়ই মেঘাচ্ছন্ন থাকতো , কিন্তু সেই মেঘমালার ছবি আঁকা সম্ভব হয়নি। কখনো কদাচিৎ , কিছু শব্দ বা বাক্য এদিক ওদিক থেকে চিৎ -পটাং হয়ে পড়েছিলো খাতার পাতায়। এখন সে সব খুঁজে পেতে জড়ো করার চেষ্টা করছি। হারিয়ে গেছে কিছু খাতার পাতা থেকে , কিছু মনের পাতা থেকে। মনের সিন্দুকে আজ নাড়া পড়েছে । মর্চে পড়া চাবি দিয়ে ক্লান্ত- ভারী দরজাটা খুলতে পারলাম, তাই রক্ষে। এখন হাতড়ে ফিরছি অপ্রকাশিত অনুভবের লিপিকা , যা নানা সময়ে উত্তাল আগ্নেয়গিরির মত হৃদয়ের তটরেখায় গভীর লাভার উদ্গীরন ঘটিয়েছে ; এখন তা অবস্য যাদুমন্ত্র বলে ঘুমন্তপুরীর নিদ্রিত রাজকন্যা।
২০১৮ সালের তেসরা জুলাই আমার মায়ের অন্তরলোকে অনন্তযাত্রার পর, যেন তাঁর অনুপস্থিতি কোন এক মায়ামন্ত্র বলে, তীব্রভাবে তাঁর উপস্থিতি পুনঃনিশ্চিত করতে লাগলো। সারা জীবন ধরে তাঁর সকল উপদেশ বানী যা কখনোই আমার মনঃপুত ছিলনা ,তা যেন এখন স্বর্গীয় অমিয় বাণীর মত আমায় আপ্লূত করলো। আমি বশীভুত হলাম। রচিত হোল আমার মনের পদাবলী।

“মিল নেই মানে নেই, নেই তাল -ছন্দ,
হিজিবিজি কথা যেন, মুড়ো ছাড়া স্কন্ধ !”

মনের এই সব অর্থহীন হিজিবিজি প্রকাশের মধ্যে, কোথাও তো স্বযতনে লুকিয়ে থাকে আমাদের একান্ত দুর্বলতম পক্ষপাতিত্যে ভরা আত্ম-প্রেম, যা হয়ত সবসময় বলা যায় না । বেসুরো সেই সুর- মূর্ছনা টের পেয়ে, অনুপ্রেরনা দাত্রী রূপে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত, যে এই বই প্রকাসের জন্য আমায় আক্ষরিক অর্থে ছড়ি ঘুরিয়ে, প্রতি দিন প্রতি ক্ষন, সব কাজ করিয়ে নিয়ে কৃতিত্ত্যের অধিকারী, সে আমার মনের খুব কাছের, সুন্দর হৃদয় সম্পন্ন গুনবতী এক মানুষ, শাহরিয়া পিউ! কৃতজ্ঞতার সাথে উচ্চারণ করতে চাই, অনুপ্রাণন প্রকাশন এর কর্ণধার আবু এম ইউসুফ্‌ এর নাম, যার সম্মতি আর সহযোগিতা ছাড়া, আমার মনের পদাবলী অপ্রকাশিত থেকে যেতো।
এ সঙ্কলনের কথামালা সত্যিকার অর্থে কতখানি সাহিত্য রসে সিক্ত কিম্বা প্রথাগত নিয়মে, আদৌ এগুলো পদ্য বা পদাবলী কিনা, জানিনা। তবে মন্দলাগাটুকু আমার জন্য সঞ্চিত রেখে, যদি কোন পাঠকের মন ভালোলাগায় এতোটুকু আন্দলিতো হয়, আমি ধন্য হবো।
আপনাদের গঠনমূলক সমালোচনা আমার শিরোধার্য। সেইসাথে প্রার্থনা করি আপনাদের আশীর্বাদ ।
সবার মঙ্গল কামনায়, এক কল্যানময় আগামীর প্রত্যাশায় !

অফুরান ধন্যবাদ ,
প্রজ্ঞা লাবণী

Description

Description

প্রজ্ঞা লাবণী

আমাদের দেশে শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কতিক পরিমণ্ডলে প্রজ্ঞা লাবণীর আসন বিস্তার সেই ষাটের দশকের মাঝামাঝিতে। সাংস্কতিক- মনা পরিবারে জন্ম হয়ায়, নিজস্বতা প্রকাশে কোনো বাঁধা পোহাতে হয়নি , বরং সাবলীল গতিতে সে চর্চা অব্যাহত রয়েছে আজ অবধি। এদেশে টেলিভিশনের প্রবর্তনের পরের মাস থেকেই ছোটদের অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশ নিয়েছেন। কবিতা আবৃত্তি , উপস্থাপনা সহ বিতর্ক আর অভিনয়ের বলয়ে তাঁর অবাধ পদচারনা থাকলেও, তাঁর ভালো লাগার ক্ষেত্রটি কেন্দ্রিভুত হয়েছে কবিতার প্রকাশে। এদেশে আবৃত্তির প্রচার , প্রসার এবং জনপ্রিয়তা প্রতিষ্ঠায় যারা অগ্রগণ্য , তিনি তাঁদেরই অন্যতম একজন । পরবর্তীতে নাটক রচনা ও নির্মাণে আগ্রহী হন এবং ইম্প্রেস টেলিফিল্ম এর প্রযোজনায় ১২ টি নাটকের কাজ সম্পন্ন করেন। লেখা- লেখির বীজ ছোটোবেলা থেকেই মশ্তিস্কে প্রোথিত হলেও, তা কিছুটা নিরবে- নিভৃতে – নির্জনে গ্রথিত হয়েছে। এ অনীহার তেমন কোন ব্যখা নাই।
ইংরেজী সাহিত্যে অনার্স – মাস্টার্স করে, পরে আবার অর্থনীতি ও বিজনেসে মাস্টার্স করেন। কর্ম জীবন শুরু করেন হলিক্রশ কলেজের শিক্ষকতার মাঝ দিয়ে ১৯৮৮ সালে। পরে নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ইংরেজি বিভাগের খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে বেশ কিছু কাল কর্মরত ছিলেন। দেশের অন্যান্য অনেক বেসরকারী বিস্বাবিদ্যালয়েও ইংরেজি পড়িয়েছেন পার্ট- টাইমার হিসেবে। ২০১০ থেকে কানাডা প্রবাসী হলেও শিকড়ের টানে বার বার ঘর-মুখো হয়েছেন তিনি।
মা ডঃ হালিমা খাতুন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত শিশু সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ ও ভাষা সনিক । তিন কন্যা প্রপা, বৃন্ত , অনুসুয়া আর পুত্র তেপান্তর সহ তিন নাতি-নাত্নি নিয়ে প্রজ্ঞার আপন ভাললাগার পৃথিবী ।

Additional information

Additional information

Weight0.155 kg
Published Year

Reviews (0)
0 ★
0 Ratings
5 ★
0
4 ★
0
3 ★
0
2 ★
0
1 ★
0

There are no reviews yet.

Be the first to review “মনের পদাবলী – প্রজ্ঞা লাবণী”

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll To Top
Close
Close
Shop
Sale
0 Cart
Close

My Cart

Shopping cart is empty!

Continue Shopping