Description
`Whatever may be their use in civilized societies, mirrors are essential to all violent and heroic action.”
-Virginia Woolf, A room of one’s own.
“আয়না দিয়া চাইয়া দেখি
আয়না দিয়া চাইয়া দেখি
পাকনা চুল আমার…”
-হাছন রাজা।
$ 0.71 $ 1.18
জন্মের শহর : সিলেট।
বেড়ে ওঠা : সিলেট, রাঙ্গামাটি, চট্টগ্রাম।
স্কুল জীবন থেকে লেখালেখির শুরু, কবিতা আর রবীন্দ্রনাথকে ভালোবেসে।
এক সময় মনে হয়েছিল বিপ্লব করবেন তাই নামের আগে যুক্ত করেছিলেন ‘আসাবিক’ অর্থাৎ ‘আমি সারকারখানা স্কুলে বিপ্লব করবো’।
কিছুদিন আন্ডারগ্রাউন্ড সাহিত্য পত্রিকায় লেখালেখি চলছিল।
গদ্য পদ্য দুটোতেই দৌড়-ঝাঁপ। আবৃত্তি খুব প্রিয় বলে কবিতার সুষমা, শব্দ-উপমা, চিত্রকল্পের বেসুমার লাগামহীন টানই হয়তো আলাদা করে রাখে অপরাহœ সুসমিতোকে, ভিন্নতায়।
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি ও কানাডায় প্রোগ্রামিং নিয়ে পড়াশোনা কবিতার রম্য প্রেম থেকে তাকে আলাদা করে রাখতে পারেনি।
লালমনিরহাটে বছর পাঁচেক ম্যাজিস্ট্রেসি করেছেন। ত্রাণ মন্ত্রণালয়েও কিছুদিন। এখন কানাডার মন্ট্রিয়ল শহরে কাজ করেন, খান। লেখালেখির বাইরে আবৃত্তি, অভিনয়, টেলি-জার্নাল, বড়দের-ছোটদের নিয়ে নানা রকম সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে সমান আগ্রহ। এক সময় গ্রুপ-থিয়েটার করতেন। একটা শর্ট ফিল্মে অভিনয় করেছেন।
বিদেশ ভ্রমণ: ভারত, নেদারল্যা-স, কানাডা ও আমেরিকা।
প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : তুমি পারো, ঐশ্বর্য (২০১০), রাষ্ট্রপতির মতো একা (২০১৪)
প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ : চিড়িয়াখানা বা ফেসবুক ও অন্যান্য গল্প (২০১৬)
`Whatever may be their use in civilized societies, mirrors are essential to all violent and heroic action.”
-Virginia Woolf, A room of one’s own.
“আয়না দিয়া চাইয়া দেখি
আয়না দিয়া চাইয়া দেখি
পাকনা চুল আমার…”
-হাছন রাজা।
Weight | 0.175 kg |
---|---|
Published Year |
ভূমিকা
১৯৭০ সালে সাধারণ নির্বাচনে সক্রিয় প্রচার-কর্মী, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭০ সালে সাধারণ নির্বাচন ছিল বাঙালি জাতির চূড়ান্ত মুক্তির লড়াইয়ের প্রস্তুতি পর্ব। বাংলার গণমানুষের মুক্তির অগ্রদূত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর বাসভবন ৩২ নম্বর ধানমন্ডিই হয়ে ওঠে বাঙালি জাতির মূল ঠিকানা। অধীর আগ্রহে জাতি, দিকনির্দেশনার অপেক্ষায় যেমন বঙ্গবন্ধু কর্তৃক ৭০-এ নৌকায় আমাকে ও আওয়ামী লীগকে ভোট দাও, আমি তোমাদের চূড়ান্ত বিজয় এনে দিব। তাই জাতির বিজয়ের স্বাদের অপেক্ষায় ’৭১-এর অগ্নিঝরা মার্চ-বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ রমনা রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক ভাষণে জাতির উদ্দেশে নির্দেশনা দেন। শহর-বন্দর, গ্রামগঞ্জে সর্বত্র শত্রুর বিরুদ্ধে প্রস্তুত হওয়ার জন্যÑ যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাক এবং এলাকায় এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম কমিটি গঠনের নির্দেশ দিলেন। আমি আমাদের এলাকায় শরণখোলা থানা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের কর্মী। ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণাÑ মাতৃভূমি হানাদারমুক্ত করতে প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু হয়। আমাদের দক্ষিণাঞ্চলে সুন্দরবনে মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিনের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী সংগঠিত হয়। অতঃপর সুন্দরবনে মুক্তিবাহিনীর গেরিলা ঘাঁটি গড়ে ওঠে। বিশাল মুক্তিবাহিনীর দল, মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিনের তত্ত্বাবধানে অস্ত্র চালানো যুদ্ধ প্রশিক্ষণ শুরু হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধে যা সুন্দরবন সাবসেক্টর হেডকোয়ার্টার হিসেবে পরিচিত। আমি সুন্দরবন সাবসেক্টর অঞ্চল সুন্দরবন মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেই। বগী মুক্তিবাহিনীর রিক্রুটিং সেন্টারে রিক্রুট হই নিয়মিত যোদ্ধা হিসেবে। এখানে পহেলা অক্টোবরে পাঞ্জাবীর গানবোট প্রতিরোধ সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হাবিলদার আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে অংশগ্রহণ করি। এরপরে সুন্দরবন মুক্তিবাহিনীর প্রশিক্ষণ ক্যাম্প হয়লাতলা প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। তখন ওই ক্যাম্প ইনচার্জ কমান্ডার ছিলেন এম. আফজাল হুসাইন, আমাদের প্রধান প্রশিক্ষক ছিলেন বীরপ্রতীক আলী আহমে¥দ খান। অতঃপর হানাদার শত্রুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেই। বিশেষ করে সাবসেক্টর কমান্ডার মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিনের নির্দেশে শেখ শামসুর রহমানের কমান্ডে সুন্দরবন নারকেলবাড়িয়া অ্যান্টি স্মাগলিং স্কোয়াডে যোগ দেই। মহান মুক্তিযুদ্ধে আমার অংশগ্রহণ ও ভূমিকা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ গর্ব ও সৌভাগ্যের বিষয়।
একাত্তরের সুন্দরবন
ভূমিকা
মূলত: ‘সুপ্রিয় দিনলিপি’ শিরোনামে আমার এই লেখাগুলো যে শুধুমাত্র দৈনন্দিন জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, লেখাগুলো যে আসলেই মান-সম্পন্ন, পরিশীলিত এবং এতে যে সামগ্রিকভাবে একটি স্পষ্ট বক্তব্য বা ম্যাসেজ বিদ্যমান থাকে এবং তা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাতেও প্রকাশিতও হচ্ছে- এই সামগ্রিক ব্যাপারটি আমি উপলব্ধি করতে পেরেছি বহু বছর পরে, ১৯৯৮ সালের দিকে যখন ‘দৈনিক ভোরের কাগজ’ এ আমার প্রথম লেখা প্রকাশিত হয়। তখন আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর বিবিএ (অনার্স) এর শিক্ষার্থী। এরপর জীবনের বিভিন্ন সময়ে সাহিত্য, ছোট-গল্প, বিভিন্ন ন্যাশনাল ইস্যু, উপন্যাসের সমালোচনা, বঙ্গবন্ধুর জীবনী, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন বিষয়াবলীর ওপর আমার আর্টিক্যাল ও কলামগুলো একে একে দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক ভোরের কাগজ, দৈনিক আজাদী ইত্যাদি জাতীয় দৈনিকগুলোতে প্রকাশিত হতে থাকে। দ্যাট মীনস্ সিরিয়াসলি কাউন্ট করলে আমার লেখালেখির বয়স হচ্ছে বিশ (২০) বছর। কিন্তু যেহেতু আমি প্রফেশনাল রাইটার নই, তাই আমার লেখাগুলো প্রকাশিত হয় অনিয়মিতভাবে এবং সংখ্যায় খুবই কম। ‘সুপ্রিয় দিনলিপি’ শিরোনামে এখনো আমি ক্লান্তিহীনভাবে লিখে যাচ্ছি। এই পর্যন্ত আমার সেইসব লেখা সর্বমোট ১৯টি ডায়রীতে এসে দাঁড়িয়েছে। সেখান থেকে বাছাইকৃত কিছু লেখার ‘পরিবর্ধন -পরিমার্জিত’ রূপ নিয়েই রচিত ‘সুপ্রিয় দিনলিপি (দ্বিতীয় খণ্ড)’ পাঠকদের সঙ্গে শেয়ার করার নিমিত্তে। গ্রন্থটিকে রূপক অর্থে মূলতঃ ‘একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ’ও বলা যায়। এই গ্রন্থটিতে প্রধানত যে সময়কালের ঘটনাবলী বিশ্লেষনাত্মকভাবে তুলে ধরা হয়েছে, সেই সময়কাল হচ্ছে- ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল। অদূর ভবিষ্যতে ক্রমান্বয়ে ‘সুপ্রিয় দিনলিপি’ এর- তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ এবং সপ্তম খণ্ডে পরবর্তী সময়কালের ঘটনাবলী বিশ্লেষণাত্মকভাবে তুলে ধরা হবে এবং একটা পর্যায়ে এর ইংলিশ ভার্সনও বের করা হবে- এইরকম একটি প্লান আমার রয়েছে।
আমি মনে করি,
“সময়ের সাথে সাথে নিজের মন ও মেধাকে আপডেটেড রেখে ধর্মীয় কুসংস্কার, বিজাতীয় সংস্কৃতির আধিপত্য ও দৌরাত্ম্য, রাজনৈতিক অস্থিরতা, পারস্পারিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত, মেধার অবমূল্যায়ন, শিক্ষা-ব্যবস্থার ভগ্নদশা, শিক্ষকদের অবমূল্যায়নসহ সামাজিক আরও নানা অসঙ্গতি, দুর্নীতি পরিহার করে বাংলাদেশের যে নিজস্ব একটি আদর্শ, ঐতিহ্য, ইতিহাস, কৃষ্টি-কালচার, সামাজিক মূল্যবোধ, ধর্মীয় মূল্যবোধ, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ, রাজনৈতিক মূল্যবোধ রয়েছে- সামগ্রিকভাবে তার অনুশীলন করা- বাঙ্গালী জাতি হিসেবে আমাদের সকলের দায়িত্ব ও কর্তব্য। ১৯৭১ সালে সবাই সময়ের প্রয়োজনে যুদ্ধ করেছিল, তখন যুদ্ধ করে দেশকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে ‘স্বাধীন’ করাই ছিলো তখনকার সময়ের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন। আর এখন আকাশ-সংস্কৃতির এই আগ্রাসনের যুগে অর্থাৎ এই সময়ের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন হচ্ছেÑ ‘আলোকিত এবং একই সঙ্গে মানবিক, দেশপ্রেমিক, নৈতিক মূল্যবোধ সম্পন্ন , অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, আধুনিক মানুষ ও চাই, যাতে করে একটি উন্নত ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মাণের লক্ষ্যেÑ আমরা বাংলাদেশের সকল মানুষ একসঙ্গে কাজ করতে পারি ঠিক সেই মুক্তিযুদ্ধের মতো।
অর্থাৎ বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে একটি আত্মনির্ভরশীল, সংস্কারমুক্ত, স্বশিক্ষিত, মেধাবী, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে তুলে ধরতে হলে- আমাদের সকলকে আরেকটি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে হবে এবং যেখানে আমাদের মূল অস্ত্র হবেÑ আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য, ভাষা ও অন্যান্য সকল জাতীয় অর্জন এবং একই সঙ্গে রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধের বহিঃপ্রকাশ! ‘আলোকিত মানুষ চাই এবং একই সঙ্গে মানবিক, দেশপ্রেমিক, নৈতিকমূল্যবোধসম্পন্ন, অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, আধুনিক মানুষও চাই’- মূলত এটাই হওয়া উচিত আধুনিক বাংলাদেশ এর শ্লোগান’।
রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘পৃথিবীর উপকার করতে চাইলেও করা যায় না, তার চেয়ে বরং আমরা যা করতে পারি তাই যদি করি তাহলে আপনা-আপনি পৃথিবীর উপকার হয়ে যায়’।
মূলত: পাঠকের ভালো লাগা এবং ভালোবাসাই হচ্ছে লেখকের প্রত্যাশা পূরণ। আশা করি, আপনারা কখনো আমাকে এবং আমার লেখাকে সেই ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত করবেন না। আমি মূলত প্রফেশনাল রাইটার নই। আমার মূল পেশা ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করা’ আর নেশাÑ ‘লেখালেখি করা’। ‘পেশা’য় জড়িত না থাকলে আমার এ পৃথিবীতে জীবন-ধারণ ও অস্তিত্ব রক্ষাই দুরূহ হয়ে উঠবে কিন্তু ‘নেশা’টা আমার মাঝে-মধ্যে করলেও চলবে। ‘শিক্ষকতা’ পেশায় ব্যস্ত থাকার কারণে, এই গ্রন্থটির প্রতি হয়তবা পরিপূর্ণ মনোনিবেশ ঘটাতে পারিনি। ‘সুপ্রিয় দিনলিপি (প্রথম খণ্ড) অথবা সুপ্রিয় দিনলিপি (দ্বিতীয় খণ্ড)’ এর কোথাও যদি পাঠকেরা অতৃপ্তি কিংবা অসম্পূর্ণ ফিল করেন, তাহলে তাদের কাছে অনুরোধ- ‘আপনারা রেগুলারলি ‘সুপ্রিয় দিনলিপি’-এর পরবর্তী খণ্ডগুলো সংগ্রহ করবেন’। আশা করি, তাহলে আর কোনো অতৃপ্তিবোধ থাকবে না। উল্লেখ্য, সুপ্রিয় দিনলিপি (দ্বিতীয় খণ্ড) -এর পাঠকগণ ‘অনুপ্রাণন প্রকাশন’ থেকেই ‘সুপ্রিয় দিনলিপি (প্রথম খণ্ড)’-বইটি সংগ্রহ করতে পারবেন।
‘সুপ্রিয় দিনলিপি’ গ্রন্থটি প্রকাশের ব্যাপারে আমাকে বাংলাদেশের যে দু’জন স্বনামধন্য সাংবাদিক সবসময় সহযোগীতা ও উৎসাহ যুগিয়েছেন, তারা হচ্ছেনÑ ১. সাংবাদিক ‘সালিম সামাদ’ (বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য সাংবাদিক) যিনি ‘দি ডেইলী আওয়ার টাইমস্’ সহ আরও বেশ কয়েকটি সংবাদপত্রে এ কাজ করছেন এবং তিনি ২০০৫ সালে প্রেসটিজিয়াস ঐবষষসধহ-ঐধসসবঃঃ অধিৎফ অর্জন করেন এবং একসময় ‘ইন্ডিয়া টু ডে’, ‘বাংলাদেশ অবজাভার’, ‘বিবিসি’সহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ঈড়ৎৎবংঢ়ড়হফবহঃ ধহফ জবঢ়ড়ৎঃবৎ হিসেবে কাজ করেছেন এবং ২. সাংবাদিক ‘রাশেদ রউফ’ যিনি বর্তমানে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় দৈনিক ‘দৈনিক আজাদী’র সহযোগী-সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত। তিনি একই সঙ্গে বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য শিশু-সাহিত্যিক এবং কবি। তিনি ২০১৬ সালে ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন।
এ গ্রন্থটির প্রচ্ছদ নির্বাচন করেছেনÑ সাংবাদিক, কবি ও শিশু সাহিত্যিক ‘রাশেদ রউফ’ এবং গ্রন্থটি প্রকাশনা করেছেন ‘অনুপ্রাণন প্রকাশন’। হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে কৃতজ্ঞচিত্তে সাংবাদিক ‘সালিম সামাদ’, ‘রাশেদ রউফ’ এবং ‘অনুপ্রাণন প্রকাশন’ এর কর্ণধারসহ সকল কলাকুশলীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ফারহানা আকতার
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ
১৫ জানুয়ারি ২০২০
Suprio Dinlipi, Part-2
ননসেন্স সাহিত্যের প্রতি অনুরাগ সম্ভবত শৈশব থেকে। ১৯৭০-এর দশকে সুকুমার রায়ের সাথে সম্যক পরিচয়ের পর তা বিশেষ আকর্ষণে পরিণত হয়। ৯০-এর দশকের প্রথম দিকে অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার আগে লিমেরিকের সাথে জানাশোনা অল্পই ছিল। ফিরলাম এডওয়ার্ড লিয়ারের লিমেরিক এবং আরও অন্য অনেক ‘ননসেন্স’ পদ্য হাতে করে। পরে শুরু হয় তার থেকে অনুবাদের চেষ্টা। লিয়ারের লিমেরিক ছাড়া অন্য লিমেরিকও হাতে আসে। তার থেকেও চলে বঙ্গানুবাদ।
বঙ্গানুবাদের পাশাপাশি নিজের লিমেরিক লেখাও চলতে থাকে। তার থেকে কিছু লিমেরিক এখানে ছাপা হল। সুখ ও স্বাস্থ্যের জন্য হাসি বা আনন্দ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। এই লিমেরিকগুলি যদি পাঠকের জন্য কিছু হাসি বা আনন্দের জোগান দিতে পারে তাহলে নিজেকে ধন্য মনে করব।
-হোসাইন রিদওয়ান আল খান
১ জুলাই, ২০১৮
খ্যাংড়া ঠ্যাঙা চিমশে ঢ্যাঙা
লেখকের কথা-
পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টের ঐতিহাসিক মূল্য অনেক। এর দ্বারা একটি সময়ে সংঘটিত নানান ঘটনার বিশ্লেষণ করা যায়। তাই, মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক ও বহুমুখী দিকগুলো অনুধাবন ও বিশ্লেষণ করতে সেই সময়ে প্রকাশিত পত্রিকার রিপোর্টগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম।
২০১৬’র নভেম্বরে দৈনিক ইত্তেফাকের সাংবাদিক আশফাক ভাই একদিন বললেন, মুক্তিযুদ্ধের শেষ ১৭ দিনে (ডিসেম্বর ০১ – ডিসেম্বর ১৭) আন্তর্জাতিক পত্রিকায় প্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক রিপোর্টগুলোর অনুবাদ নিয়ে একটি ধারাবাহিক সিরিজ করে দেয়ার জন্য। শুনেই আমি রাজি হয়ে যাই। দৈনিক ইত্তেফাকে ২০১৬’এর ০১ ডিসেম্বর হতে ১৫ ডিসেম্বর (১৪ ডিসেম্বর বাদে) পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে ১৪টি রিপোর্টের অনুবাদ প্রকাশ হয়েছিল।
এই বইতে সেই ১৪টি রিপোর্টের অনুবাদ সহ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মোট ২০টি রিপোর্টের অনুবাদ রয়েছে। ডিসেম্বর ০১-১৭ এর ১৮টি রিপোর্ট ও মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সময় মার্চের ০২ টি রিপোর্টের অনুবাদ সংযুক্ত হলো।
অনুবাদগুলো ভাবানুবাদ এবং পত্রিকার রিপোর্টগুলো মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ ট্রাস্টের সংগ্রহশালা হতে সংগ্রহীত।
এই অনুবাদ রিপোর্টগুলো বই আকারে প্রকাশের জন্য উৎসাহ দিয়েছেন সহযোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ ট্রাস্টের সভাপতি শান্তা আনোয়ার।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের শেষ ১৬ দিন
খোঁচা
খোঁচা খুব ঔষধী
খোঁচা খুব বেয়াড়া,
খেলে খায় খুশিতে
কারো লাল চেহারা।
খোঁচা খায় বঁধুয়া
কলতান হাসিতে,
খোঁচা চায় প্রেমিকা
চায় ভালোবাসিতে।
খোঁচা দাও বাবুকে
সারাক্ষণ জ্বালাতো,
হবে ভাব ত্বরিতে
আগে দূর পালাতো।
খোঁচা দাও সুযোগে
খোঁচা দাও বুঝিয়া
খোঁচা দাও সমাজে
খোঁচা দাও খুঁজিয়া।
খোঁচা দাও জাগাতে
যারা ঘুম জাগে না,
বসে দাও চেয়ারে
যাঁরা পদ মাগে না।
খোঁচা
প্রত্যেক মানুষের জীবনে স্মৃতি থাকে। স্মৃতি মানেই ঘটনা। অমøমধুর, বেদনাবিধুর যতো ঘটনা ঘটে মানুষের জীবনে সে-সবই স্মৃতি।
স্মৃতি- স্মৃতিকাতর করে অর্থাৎ নস্টালজিক করে তোলে মানুষকে। স্মৃতির সঙ্গে সম্পর্ক থাকে মানুষের। তারা নানা মুখাবয়বের, নানা পেশার এবং নানা চরিত্রের। আবার তাদেরকে ঘিরে আরও অনেক মানুষের সম্পর্ক জড়িত থাকে। আর এই নিয়েই মানবজীবন।
আমার জীবননৌকোও অগণন স্মৃতিসম্ভারে ভরপুর, সজ্জিত। বিশেষ করে, আমার শৈশব থেকে যৌবনের উত্থানকালের ২৪-২৫টি বছরের অসংখ্য স্মৃতি আছে, যেগুলো নিয়েই এই আত্মজৈবনিক উপন্যাস “অতলান্ত পিতৃস্মৃতি” গ্রন্থটি। আমার এই সময়টাকে আমি যাঁর চোখ দিয়ে ফিরে দেখতে চেয়েছি তিনি আমার জন্মদাতা পরম শ্রদ্ধেয় পিতা। যা কিছু ঘটেছে, যা আজকে স্মৃতি- সবকিছুরই সাক্ষী আমার বাবা। আর সেখানেই পিতা-পুত্রের সম্পর্কটা সৃষ্টি হয়েছে। কী সেই সম্পর্ক? সেই সম্পর্ক যা সহজে লেখা যায় না। না পড়লে তা জানাও যাবে না।
পড়ার পর হয়তো অনেকেই মিলিয়ে দেখবেন তাঁদের জীবনের সঙ্গে, কেউ কেউ বিষণœও হতে পারেন। কেউ কেউ পড়ে বিস্মিত হবেন! আবার কেউবা ক্ষোভ প্রকাশ করবেন, ক্ষুব্ধ হবেন। কিন্তু যা সত্য, তাই তুলে ধরতে গিয়ে আদৌ কার্পণ্য করিনি। কাউকে ছোটও করিনি, কাউকে বড়ও করিনি। মানুষ হিসেবে এখানেই আমার সীমাবদ্ধতা, পরিপূর্ণতা এবং তৃপ্তি বলে মনে করি।
অতলান্ত পিতৃস্মৃতি
সুপ্রিয় দিনলিপি
জন্ম ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট, ঢাকায়। শৈশব কৈশোর কেটেছে হাইকোর্ট কম্পাউন্ডের সবুজ গাছ, অবারিত খেলার মাঠ আর টিনের চালে রিমঝিম বৃষ্টির সাথে। প্রথাগত পড়াশোনায় ইতি ঘটে প্রবল অনাগ্রহে। প্রকৌশল বিদ্যা শেষ না করে বেরিয়ে পড়েন শব্দের সন্ধানে। লম্বা সময় বোহেমিয়ান ঘুরে বেড়িয়েছেন। এ দেশ-ও দেশ আর অলি-গলি পেরিয়ে রাজপথ। পেশায় গীতিকার।
পরিচিত গান- আজ তোমার মন খারাপ মেয়ে, বৃষ্টি পড়ে, আই সি সি বিশ্বকাপ ২০১১-এর থিম সং মার ঘুরিয়ে প্রভৃতি।
রুল টানা খাতা
নাফ নদীর জলে স্নান করে পিছিয়ে পড়ে বুনো দল। আকাশ নীল ছুঁয়ে মনের সুপ্ত ছোট্ট চারাগাছ পরিণত হয়। ছুটির ঘণ্টা হাতে দাঁড়িয়ে থাকেন স্রষ্টা। যিনি ভালোবেসে আগলে রাখেন। এইখানে নামান্তরের গল্প এতো দীর্ঘ যে, ক্ষণজন্মা পার্থিব আয়োজনে দেখা পাওয়া প্রত্যেক পথিককে কৃতজ্ঞতা। তবে এই জন্মে ম্যাজিক সেøটে হাতেখড়ি নির্ঝর দা’র কাছে।
বন্ধুপ্রিয় আর প্রজাপতির সান্নিধ্যে সুপ্তপরীর আলিঙ্গনে এক পৃথিবীর বেড়ে ওঠা পবিত্র দু’টি ফুলের ছায়ায়। সেখানে জলশাস্ত্রে শাওন আর স্বতন্ত্র ভ্রƒণে কুসুম, এককতারায় তাদেরই আত্মজাফুল!
ঘুমপত্র
জন্ম ২ জানুয়ারি ১৯৮৩ নোয়াখালীতে। ২০০০ সালের মাঝামাঝিতে লেখালেখিতে সচেতনভাবে মনোযোগী হন। সিরিয়াস লেখার পাশাপাশি রম্য রচনাও করেছেন। পেশায় পা-ুলিপি সম্পাদক এবং সাংবাদিক।
গল্পকথায় ৩৫ গল্পকার
জন্ম ১৯৫৯ সালে পাবনার বেড়া উপজেলায়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। পিএইচডি করেন ১৯৯৯-এ। রাজশাহী বিশ্ব বিদ্যালয় ফোকলোর বিভাগে কর্মরত। বিশেষ আগ্রহের বিষয় লোক সংগীত, দর্শন, ধর্ম।
প্রকাশিত গ্রন্থÑ বাংলাদেশের লোকসংগীতে প্রেম চেতনা, রবীন্দ্রকাব্যে লোক উপাদান, বাংলা লোকসংগীতে নারী।
রঙ্গনামা
শিল্প-সাহিত্যের ত্রৈমাসিক, অনুপ্রাণনের একাদশ বর্ষের ৪টি সংখ্যায় বাংলাদেশের ১০০জন নির্বাচিত কবি ও তাদের কবিতা নিয়ে আলোচনার তৃতীয় পর্বে এসে এই সংখ্যায় ২৩জন কবি ও তাদের কবিতা নিয়ে আলোচনা সমুহ সংকলিত হয়েছে। উল্লেখ্য যে, অনুপ্রাণন ত্রৈমাসিকের একাদশ বর্ষ অর্থাৎ এ-বছরের প্রথম ও দ্বিতীয় সংখ্যায় বাংলাদেশের ১০০জন নির্বাচিত কবি তালিকা থেকে প্রতিটি সংখ্যায় ২৭জন করে মোট ৫৪জন কবির জীবনী, প্রকাশনা, প্রাপ্ত সম্মাননা ও পুরষ্কার, উল্লেখযোগ্য কবিতা এবং কবিতা নিয়ে বিশেষ আলোচনা ইতোমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় এই সংখ্যায় অর্থাৎ ৩য় পর্বে ২৩ জন এবং পরবর্তী ৪র্থ পর্বে আরো ২৩ জন কবি ও কবিতা নিয়ে মোট ১০০ জন কবির জীবনী, প্রকাশনা, পুরষ্কার ও সম্মাননা, উল্লেখযোগ্য কবিতা এবং কবিতা নিয়ে আলোচনা সংকলন সম্পন্ন হবে বলে আশা রাখছি।
বাংলাদেশের কবি ও তাদের কবিতা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে আমরা দেখি যে, বাংলা সাহিত্যে বাংলাদেশের কবিদের অপরিসীম ভূমিকা ও অবদান রয়েছে। সাহিত্যমান বিবেচনায় তুলনামূলকভাবে কবিতাগুলো যে অত্যন্ত উচ্চস্থান দখল করে আছে, এটা নিঃসন্দেহেই বলা যায়। একদিকে নান্দনিক বিবেচনায় কবিতাগুলো যেমন উত্তীর্ণ, অন্যদিকে ঠিক তেমনই চলমান সমাজ, রাজনীতি, শোসিত মানুষের সংগ্রাম, জাতীয়তাবাদ, দেশপ্রেম ও মানবিক চেতনায় উদ্ভাসিত কবিতামালা গণমানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে। বাংলাদেশের কবিদের মূল বিষয় হিসেবে বাঙলার প্রকৃতি, মানবতা, মানব প্রেম, মাতৃস্নেহ, পিতৃস্নেহ, ভ্রাতৃত্ব, সামাজিক সম্প্রীতি, অসাম্প্রদায়িকতা, ধর্মীয় ও সামাজিক মৌলবাদ বিরোধিতা, নারীবাদ ইত্যাদী বিষয়গুলো যেমন এসেছে ঠিক তেমনই পাশাপাশি জায়গা করে নিয়েছে মানব-মানবীর প্রেম, বিরহ অথবা ব্যক্তি পরিচয়, আত্মানুসন্ধান, আত্মজিজ্ঞাসামূলক দার্শনিক বিষয়গুলো। ব্যক্তি, সমাজ ও দেশ কোনটাই অবহেলিত থাকেনি। জয়-পরাজয়, আশা-হতাশা, সংগ্রাম, সংক্ষুব্ধতা অথবা আপসকামিতা ছাড়িয়ে তাদের কবিতা হয়েছে মূলত জীবনধর্মী। তাই বাংলাদেশের কবিদের কবিতায় বহুলাংশে প্রকৃতি, প্রেম ও জীবনের অপার সৌন্দর্য সবসময় উঁচুতে তুলে ধরতে দেখা গেছে।
শিল্প-সাহিত্যের ত্রৈমাসিক, অনুপ্রাণন, একাদশ বর্ষ তৃতীয় সংখ্যা
কবিতায় ভালোবাসার রূপ দিতে ভালো লাগে। ল্যাণ্ডস্কেপের কবিতাগুলি নানাভাবে বিভাজিত। তাই সকল সৌন্দর্য প্রায় একত্রে সন্নিবেশিত হয়েছে। অবৈতনিক আশ্রয়ের ভিতর গ্রন্থিত হয়েছে রুলটানা কাগজে আঁকা কিছু অবাস্তব বারুদ। যদি স্ফুলিঙ্গ ছাড়া জ্বলে ওঠে, ভালো। তোমার প্রজাপতি, আমার বাগান। তা হোক, সমুদ্রলিপি এখানেই রচিত হলো এবং আরো কিছু রয়ে গেলো পরবর্তীকালের জন্য। রয়ে গেলো একটি চন্দ্রগ্রস্ত মুখ। ঘোরগ্রস্ত চোখ, বাংলা ভাষা-ভাষী তো বটেই পৃথিবীর অন্যান্য ভাষা-ভাষীদেরও যদি পছন্দ হয়। কারণ গ্রন্থের সবগুলি কবিতা স্নিগ্ধ কিংবা সুখপাঠ্য হবে এমন নয়। মানুষের জীবনেরও সবগুলো অধ্যায় সুন্দর হয় না।
রাই সরিষার কাল
এই জন্মটা দলিল করেছি তোমার নামে
আকাশের জলচিত্র
একটা বিড়াল ছানা
কিভাবে সবার মন জয় করে একটা পরিবারের সদস্য হিসাবে নিজেকে মানিয়ে নেয় তাই প্রাঞ্জলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে এই গল্পে।
ক্লাস সিক্স পড়ুয়া নীলার বাবা বাদামী রংয়ের ঠোঙায় করে কদম ফুলের মত একমুঠ পরিমান বিড়ালছানা নিয়ে এলেন। সেই সুন্দর বিড়ালছানার মজার মজার সব কান্ডকারখানা এখানে বর্ণনা করা হয়েছে। বিড়ালের নামকরণ বিশ্লেষণ, মেহমান মুদ্রাদোষ বশতঃ পা নাড়লেই পাক্কা শিকারীর মত বিড়ালছানার সেই পা জাপটে ধরা, বিড়ালের উলের বল নিয়ে খেলা, ক্যালকুলেটর টিপে ভিতরের সংখ্যাগুলোর নড়াচড়া অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখা ইত্যাদি খুটিনাটি কিছুই বাদ পড়ে নি লেখিকার চোখ থেকে। একজন শিশুর চোখেই তিনি পুরো বিষয়টা দেখেছেন।
ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে সুদীর্ঘ কাল চাকরি করার সুবাদে মজার মজার অভিজ্ঞতা তিনি প্রায়ই শেয়ার করেন। লেখিকা বাচ্চাদের চাইল্ড সাইকোলজি বেশ ভালো ভাবেই বুঝেন। গল্প লিখতে গেলে একজন শিশুর চোখেই বিষয়টা দেখার চেষ্টা করেন।
বিড়াল ছানা স্ন্যাফার
মাহবুব মিত্র বিশ্বাস করেন মানুষই শিল্প; মানবতাই ধর্ম। মানুষবিহীন পৃথিবী শস্যহীন প্রান্তরের মতো। তিনি মনে করেন সৃষ্টি জগতের শ্রেষ্ঠ শিল্প মানুষের সৌন্দর্য। তাঁর প্রিয় বিখ্যাত দু’টি উক্তিÑ “মানুষ দেখার আনন্দে তুমি কখনো ক্লান্ত হয়ো না”, “ভুল মানুষের কাছে আমি নতজানু নই।” নীতির সাথে আপোসহীন চির প্রতিবাদী সতত ডানার মানুষ এক ক্লান্তিহীন গেয়ে যান ভালোবাসার গান, সমতার গান, মানবতার গান, সুন্দরের গান।
মাহবুব মিত্র বস্তুবাদী দার্শনিক মতবাদে বিশ্বাসী। আবার ভাববাদী দর্শনও মাঝে-মধ্যে তাঁকে ভাবায়। এই দুই মতবাদের ভিতর দিয়ে পথ হাঁটছেন। তিনি বুকে ধারণ করে আছেন সৃষ্টি জগতের সকল সুন্দরের নির্যাস। সাহিত্য ও শিল্পের বাগানে শব্দ বুনে-বুনে তৈরী করছেন মানব হৃদয়ের নৈবেদ্য। এই নিবিড় সংসারে একাকি নিঃসঙ্গ পথিক এক খুঁজে পেয়েছেন জীবনের সৌন্দর্যের অবিরাম ধারাপাত। তিনি মানব হৃদয়ে খুঁজে বেড়ান সুন্দরের স্বর্গভূমি।
তিনি সর্বদা আশাবাদী একজন প্রাণবন্ত-প্রফুল্ল মানুষ। তুমুল অন্ধকারের মাঝে খুঁজে ফেরেন আলোর ফোয়ারা। মানুষ তখনই মৃত যখন তার ভিতরের আনন্দ মরে যায়। চিরন্তন সুন্দরের জন্য হাহাকার-আকাক্সক্ষা, নৈতিক মূল্যবোধের উপলব্ধি, স্বতন্ত্র বোধের-চেতনার আলোয় উদ্ভাসিত তাঁর ভাবনার আকাশ। তাঁর সুকুমার কোমল প্রবৃত্তি আপন আলোয় ভাস্বর, দীপ্ত-শোভান্বিত, সদা জাগ্রত।
শাদা কফিনে মেঘের শব্দ
কবি খাতুন জান্নাতের জন্ম 12 জুলাই 1969 সাল । সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ থানার গোয়াল টিলায়। পৈত্রিক নিবাস লক্ষীপুর জেলার সদর থানায়। মাতা গোলেয়ারজান বেগম, পিতা: শমছুল হক মিয়া। 9 ভাইবোনের মধ্যো তিনি অস্টম। কবি শশব থেতক নিয়মিত লেখা লেখি করে আসছেন। কবির লেখা ছড়া ‘বৃষ্টি’ 1998 সালে প্রকাশিত হয়। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পত্রিকায় লিখেছেন ছড়া, কবিতা, গল্প। ‘দিনান্তে দেখা হলে’, ‘জীবনের কাছে ফিরে’, ‘নিরন্তন রোদের মিছিলে’ উল্লেখযোগ্য কয়টি কবিতা গ্রন্থ। কয়েকটি উপন্যাসও লিখেছেন।
তিনি পেশায় শিক্ষক ও সমাজকর্মী। তিনি একজন সৌখিন চিত্রশিল্পীও।
মুঠো খুলে দেখি
কাজী রহমান। পরবাসী লেখক নিজের পছন্দ মতো বাঁচতে দু-যুগ আগে মার্কিন মুলুকে চলে আসেন স্ত্রী ও প্রথম শিশুকন্যা সাথে নিয়ে। বড় হয়েছেন পুরনো ঢাকার গেন্ডারিয়া’য়। জ্ঞান হবার পরপরই নিজেকে আবিষ্কার করেছেন ঘরের পাশের গ্রন্থাগারে, বিভিন্ন শিশু সংগঠন আর সমাজসেবামূলক সংগঠনের আলোছায়ায়। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার দুরন্ত কিশোর স্বাধীনতার যুদ্ধ দেখেছেন কাছ থেকে আর আতঙ্কের দিন গুনেছেন সারাক্ষণ মুক্তিযোদ্ধা দু’ভাইয়ের ঘরে ফেরার অপেক্ষায়। গ্রাজুয়েশন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কর্মজীবন কেটেছে বিদেশী এয়ার লাইন্সের কর্মকর্তা হিসেবে।
তারাধুলো জল ও নস্টালজিয়া
কবির য়াহমদ-
জন্ম ৩০ ডিসেম্বর, চন্দনপুর, আলীনগর, বিয়ানীবাজার, সিলেট।
বাবা- আজিজ উদ্দিন চৌধুরী, মা- ফখরুননেছা আজিজ। অনুপ্রাণন সম্পাদনা পরিষদের সাথে যুক্ত।
প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: রাত আর ঘুমের কৃষ্ণপাঠ, আমাদের ঈশ্বরের অ্যাপয়েন্টমেন্ট দরকার, নিরবচ্ছিন্ন পাখিসমূহ।
জাগরণের পূর্বাপর
সরদার ফারুক। জন্ম ১৯৬২ সালের ৯ নভম্বের, কপোতাক্ষ নদের তীরে খালিশপুরে। পৈত্রিক নিবাস বরিশালের কাশীপুর। পেশায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। ছাত্রজীবন থেকেই প্রগতিশীল ছাত্র-শ্রমিক-কৃষক আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন। বরিশালে ঘাট শ্রমিকদের ?আন্দোলন, ডেমরায় শ্রমিক কর্মচারি ঐক্য পরিষদের সংগ্রাম ও বাজিতপুরের জেলেদের লড়াইয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
নব্বইয়ের ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য তিনি সরকারী চাকরি ছেড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৮৯ সালে ডাকসু নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনও করেন।
ছাত্রজীবন থেকেই বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লিখছেন। ১৯৮০ সালে বরিশালের অধুনালুপ্ত ‘সাপ্তাহিক লোকবাণী’ পত্রিকায় প্রথম লেখা প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে শামসুর রাহমান সম্পাদিত সাপ্তাহিক বিচিত্রা, দৈনিক দেশ, সংবাদসহ দেশ-বিদেশের নানা পত্র-পত্রিকা, সাহিত্য সাময়িকীতে তার লেখা কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
নোনা শহর
পূর্বের কর্মস্থলে কর্মরত থাকাকালীন সময়ে আমি একটা কাহিনী শুনেছি। হৃদয়বিদারক! ওই প্রত্যন্ত গ্রামে আমি গিয়েছি। ওই বাড়িতেও গিয়েছি কিন্তু বাড়িতে ওরা কেউ থাকে না। মূল মালিকসহ তার স্ত্রী চাঁদপুর শহরেই বাস করেন। বিষয়টি আমার জানার খুব ইচ্ছে। যার জীবনে এই ঘটনা ঘটেছে তার মুখ থেকে আমার শোনার ইচ্ছা। একজন সমাজসেবক অফিসার হিসেবে এগুলো আমার জানা দরকারও। শেষ পর্যন্ত আমার ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়। আমি সদরে বদলি হই। মিসেস শেফালীকে (ছদ্ধনাম) আমি খুঁজে বের করি। বিষয়টি অনেক পূর্বের। তবুও আমার ইচ্ছে তার মুখ থেকে শুনে একটা বই করবো।
শহরে তারা যে এলাকায় থাকেন আমি সেখানে যাই। ওই এলাকার সমাজসেবার কাজের জন্য আমি কিছু নারী পুরুষকে নির্বাচিত করি। মিসেস শেফালী ও তার স্বামী এগিয়ে আসেন। আমাকে সহযোগিতা করেন। আমি ধীরে ধীরে তাদের ঘনিষ্ট হই। ক্রমান্বয়ে আমার প্রতি তাদের শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। নানা খুঁটিনাটি বিষয়ে আলোচনা হয়। পারিবারিক বিষয়েও। অতঃপর আমি মুল ঘটনা উদঘাটনের চেষ্টা করি। মিসেস শেফালীর মুখ থেকেই। প্রথমে তিনি সম্মত হননি। ক্রমাগত আমার অনুরোধে এক পর্যায়ে তিনি ঘটে যাওয়া ঘটনা বলতে সম্মত হন। অতঃপর তার স্বামীর উপস্থিতিতে তিনি মর্মান্তিক ঘটনা আমাকে অবহিত করেন। এ কাজে পরপর দুইদিন আমি তার বাসাতে গিয়েছি। আসুন, তার মুখ থেকেই শুনি।
মেঘনা পারের শেফালী
১০০ অণুগল্প
যতবার নিজেকে প্রশ্ন করি। মানুষের কোন ভবিষ্যৎ আছে?
উত্তর একটাই, মানুষ স্মৃতি ছেনে বাঁচে। ভবিষ্যৎ এক মিছে সম্ভাবনা।
আমার এই কাব্যও তাই, স্মৃতির ভেতর থেকে তুলে আনা দানা
যা খেয়ে খেয়ে একটা জীবন–পাড়ি দিচ্ছে মৃত্যুর রহস্যময় মৃত্যুর ধাঁ ধাঁ।
মৃত্যুই যেখানে শেষ নয় - Mrityui Zekhane Shesh Noy
প্রত্যেক মানুষের জীবনে স্মৃতি থাকে। স্মৃতি মানেই ঘটনা। অমøমধুর, বেদনাবিধুর যতো ঘটনা ঘটে মানুষের জীবনে সে-সবই স্মৃতি।
স্মৃতি- স্মৃতিকাতর করে অর্থাৎ নস্টালজিক করে তোলে মানুষকে। স্মৃতির সঙ্গে সম্পর্ক থাকে মানুষের। তারা নানা মুখাবয়বের, নানা পেশার এবং নানা চরিত্রের। আবার তাদেরকে ঘিরে আরও অনেক মানুষের সম্পর্ক জড়িত থাকে। আর এই নিয়েই মানবজীবন।
আমার জীবননৌকোও অগণন স্মৃতিসম্ভারে ভরপুর, সজ্জিত। বিশেষ করে, আমার শৈশব থেকে যৌবনের উত্থানকালের ২৪-২৫টি বছরের অসংখ্য স্মৃতি আছে, যেগুলো নিয়েই এই আত্মজৈবনিক উপন্যাস “অতলান্ত পিতৃস্মৃতি” গ্রন্থটি। আমার এই সময়টাকে আমি যাঁর চোখ দিয়ে ফিরে দেখতে চেয়েছি তিনি আমার জন্মদাতা পরম শ্রদ্ধেয় পিতা। যা কিছু ঘটেছে, যা আজকে স্মৃতি- সবকিছুরই সাক্ষী আমার বাবা। আর সেখানেই পিতা-পুত্রের সম্পর্কটা সৃষ্টি হয়েছে। কী সেই সম্পর্ক? সেই সম্পর্ক যা সহজে লেখা যায় না। না পড়লে তা জানাও যাবে না।
পড়ার পর হয়তো অনেকেই মিলিয়ে দেখবেন তাঁদের জীবনের সঙ্গে, কেউ কেউ বিষণœও হতে পারেন। কেউ কেউ পড়ে বিস্মিত হবেন! আবার কেউবা ক্ষোভ প্রকাশ করবেন, ক্ষুব্ধ হবেন। কিন্তু যা সত্য, তাই তুলে ধরতে গিয়ে আদৌ কার্পণ্য করিনি। কাউকে ছোটও করিনি, কাউকে বড়ও করিনি। মানুষ হিসেবে এখানেই আমার সীমাবদ্ধতা, পরিপূর্ণতা এবং তৃপ্তি বলে মনে করি।
অতলান্ত পিতৃস্মৃতি
লেখক পরিচিতি :
শারমিন রাহমান। জন্ম: ১৬ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৩। দ্ইু সন্তানের জননী। বাংলাদেশের স্বনামধন্য স্কুলগুলোতে দীর্ঘ ১৫ বছর শিক্ষকতা শেষ করে বর্তমানে চট্টগ্রাম আর্ট সেন্টার ‘ধ্যান’ এর পরিচালক। বিশেষ আগ্রহ আছে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে। এটি কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ।
অপ্রাকৃত কবচ
Get access to your Orders, Wishlist and Recommendations.
There are no reviews yet.