Additional information
Weight | 0.67 kg |
---|---|
Published Year |
$ 0.53 $ 0.71
ভূমিকা
‘সীমান্তিনী’ আমার লেখা দীর্ঘ কবিতার মধ্যে অন্যতম। বারোটি কবিতা নিয়ে এই বইটি। কবিতায় প্রকাশ পেয়েছে প্রেমের পাশাপাশি পাহাড়ি সৌন্দর্য, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী গারো, হাজং প্রভৃতি আদিবাসীদের সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও তাদের জীবনধারা। পাহাড়ি নারীর সৌন্দর্য, বালুকণা, সমুদ্র, আঁকাবাঁকা-উঁচুনিচু পথের দৃশ্যও এই বইতে চিত্রিত হয়েছে। প্রতিটি কবিতার পাতা রাঙানো হয়েছে ভালোবাসার রঙে।
কিসিঞ্জার ভূঁইয়া
০১ সেপ্টেম্বর, ২০২০
Weight | 0.67 kg |
---|---|
Published Year |
আবু সাঈদ আহমেদের জন্ম ১০ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৫। অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যায়নের সময়েই জনপ্রিয় সাপ্তাহিক সন্দ্বীপে প্রতিবেদন লেখার মাধ্যমে লেখক জীবনে প্রবেশ। কলেজ জীবন হতে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে কবিতা ও প্রবন্ধ লিখেছেন। কিন্তু লেখাকে কখনোই গুরুত্বের সাথে নেন নাই। তিনিই বাংলা ব্লগের অন্যতম জনপ্রিয় ব্লগার ‘হরবোলা’। অনলাইনে নির্মোহ রাজনৈতিক প্রবন্ধ, তীক্ষ্ম স্যাটায়ার, কবিতা আর অণুগল্প তাকে এনে দিয়েছে ব্যাপক পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা। আমমানুষের পক্ষের একজন লেখক ও এক্টিভিস্ট হিসেবে একাধিকবার শারীরিক হামলার স্বীকার হয়েছেন, কিন্তু নীরব হন নাই।
লংকা কিন্তু জ্বলছে না
সাঈদা মিমি। জন্ম: ২৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৮। বরিশালে। শৈশবের পুরোটাই এবং অর্ধেক কৈশোর কেটেছে পদ্মাপাড়ে, মানিকগঞ্জের ঘোনাপাড়া গ্রামে। লেখালেখির শুরু ছাত্রজীবনে। প্রথম প্রকাশিত হয় ইত্তেফাকে। ফ্রীল্যান্স সাংবাদিকতা, স্কুল মাস্টারিং, বায়িং হাউজের এডমিন, হাউজিং কোম্পানির এক্সিকিউটিভ ইত্যাদি বিচিত্র কর্মজীবন মেষে অতঃপর গৃহিণী। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘সব নিয়ে গেছে এক সময়ের লুটেরা বাতাস’ ‘ফারাও কুমারী’ ও ই-বুক ‘কীর্তনখোলা’।
একজন মৃতের ডাইরি
আবু জাঈদ। জন্ম: ২২শে জুলাই ১৯৮৩, ঢাকা। পড়াশুনা অসমাপ্ত রেখে একসময় কবি বাউণ্ডুলে জীবনের এলোমেলো আলপথে নেমে যান বেঁচে থাকার প্রয়োজনে, তাই বলে কাব্যচর্চা থেমে থাকেনি। এক সন্তানের জনক। এটি লেখকের প্রথম প্রকাশিত বই।
মানচিত্রের ফাঁসি চাই
বিলাল হোসেন
জন্ম: ১ জানুয়ারি, ১৯৭৪।
জন্মস্থান- মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার রাজারচর কাজিকান্দি গ্রামে।
প্রকাশিত বই-
১. কাব্যগ্রন্থ- বিরুপা’র শূঁড়িবাড়ি(২০১৪)
২. অণুগল্প সংকলন- পঞ্চাশ(২০১৫)
৩. মহাপ্রভু ও অন্যান্য অণুগল্প(২০১৬)
৪. কাব্যগ্রন্থ- একজ্বলাপঙক্তি(২০১৬)
স¤পাদিত বইসমূহ-
সেরা ১০০ অণুগল্প(২০১৫) (প্রিন্ট ভার্সন)
ই-বুক স¤পাদনা-
অণুগল্প সংগ্রহ-১,২,৩,৪; গোয়েন্দা অণুগল্প সমগ্র, ভূত অণুগল্প সমগ্র, রূপকথা অণুগল্প সমগ্র, নীতি অণুগল্প সমগ্র, চিয়ার্স চিয়ার্স চিয়ার্স, দুনিয়ার মাতাল এক হও, মাতালে মাতালে চেনে, মধুগন্ধেভরা, যুগলবন্দী (সুবর্না রায়), অণুগল্পের বিষয় বৈচিত্র্যের সন্ধানে, তাহাদের গল্প, অণুগল্পের অস্তিত্ব আছে, অণুগল্পের শিরদাঁড়া, অণুগল্পের রোজনামচা।
বাংলা ভাষার সেরা অণুগল্প
ঝুমকি
কত পথ পার হলাম ঝুমকি;
তবু মানুষ চেনা হলো না!
বারো প্যাচের নারী, চোখে জড়িচুমকির খেল্ দেখালো
অমলেশ সেই দেখে দেখে শেষে উন্মাদের খাতায় নাম লেখালো
পত্রিকার শেষ পাতায় ওকে নিয়ে কতো ফিচার হলো
তবুও অমলেশকে কেউ ভালোবাসলো না।
ঝুমকি পৃথীবির সবচে’ হিংস্র প্রাণী মানুষের
গায়ে বিপদের গন্ধ লেগে আছে;
ফাঁক পেলেই নষ্টামি করতে লেগে যায়
কেউ কেউ বলে সত্যিকারের ভালোবাসা নেই
বড় র্দূভাগা ওরা!
সত্যিকারের ভালোবাসাই দেখেনি চোখে; পাবে কোত্থেকে
প্রেমালিঙ্গম
সেদিন এক গরুচোরের সাথে সাক্ষাত হয়ে গেল সবার, চোরটি নিজে থেকেই বলল—আমার নাম মজিদ। আমি একটা গরুচোর।
দলে নিয়োগ চলছিল। ইন্টার ডিস্ট্রিক বাস ডাকাতদলের সভাপতি জুম্মন খাঁ, অজ্ঞানপার্টি অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি, নিখিলবাংলা পকেটমার মহাসঙ্ঘের সেক্রেটারি বসা। এরাই দলের নিয়োগদাতা।
কিন্তু মজিদকে দেখে মোটেও গরুচোরের মতো লাগছিল না। গরুচোর হবে গরুচোরের মতো কিন্তু এরে সে রকম লাগছে না। এরে মকবুলের মতো লাগে।
মকবুল কে? মকবুল হলো মুরগি চোর। একসময় এই দলের হয়ে কাজ করত। এখন দল ভেঙে আলাদা দল করেছে। টেক্কা দিতে চায়।
অজ্ঞান স্পেশালিস্ট একাব্বর আলি সরু চোখে মজিদের দিকে তাকাল। তার ইচ্ছে করছে চোখেমুখে মলম ঘষে দিতে। একরাশ সন্দেহ নিয়ে বলল—তা মজিদ মিয়া, কয়টা গরু তুমি চুরি করছ?
মজিদ মাথা চুলকায়। ঘাড় চুলকায়। একটু লজ্জাও পায়। বলল—খুব বেশি না ওস্তাদ, আমি তো রেনডম গরু চুরি করি না। যখন কোরবানি আসে, গরুর হাটে ঘোরাঘুরি করে চান্সে চুরি করি। বছরে ওই একটাই সিজন আমার।
—তাই বল! একাব্বর হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। সন্দেহ আমার ঠিকই ছিল—ভাবতে ভাবতে সবার দিকে তাকিয়ে একটু ফুলে ওঠে, গর্বে। আসলে এই ব্যাটাকে মুরগি চোরের মতো লাগছিল। বিশ্বাসঘাতক মকবুলের চেহারার লগে মিল আছে। মকবুলও ছিল বিরাট মুরগি চোর।
—তা এইখানে কি মনে করে?
মজিদ বলল—ওস্তাদ, আমারে দলে নেন। চুরিধারী দল থেকে না করলে পোষায় না। একলা একলা ভালো লাগে না। মামারা ধরলে ছাড়ানোর কেউ থাকে না কোর্টে চালান খাইয়া যাই।
মজিদের কথায় সিদ্ধান্তের জন্যে সেক্রেটারি তাকায় সহ-সভাপতির দিকে, সহ-সভাপতি তাকায় সভাপতির দিকে। সভাপতি কারো দিকে না তাকিয়ে নিজের ডানহাতের চার আঙুলে পরা আংটির দিকে তাকিয়ে রইল। দুর্লভ পাথর বসানো সব আংটি। কোনোটি হীরা। ইয়াকুত আর লাল জমরুদ পাথরের আংটি দুটি নাকি খুবই বিখ্যাত। সাদা চুনি নাকি পৃথিবীর কোথাও নেই। একটিই। তাও জুম্মনের হাতে, ভাবা যায়! এই আংটিগুলির বৈশিষ্ট্য হলো ডান হাতে পরতে হয়। কিন্তু জুম্মনের হাতে মোট আঙুল চারটি। একবার ডাকাতি করতে গিয়ে গৃহস্থের দায়ের কোপে একটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছিল। ফলে চার আঙুলেই আংটি পরতে হয়।
কাটা আঙুলের দিকে তাকিয়ে জুম্মন ডাকাত হতাশায় মাথা নাড়ে—মজিদ, গরুচোর মুরগি চোরের বিষয় না, আমরা এমন এক হাত সাফাইয়ের খোঁজ করছি, যে মুরগি নয়—মুরগির পিত্তথলি হাত চালিয়ে বাইরে আনতে পারবে, কিন্তু মুরগি টের পাবে না। পারবে?
ওস্তাদের কথায় খুব হতাশ হয়ে গেল গরুচোর মজিদ। চোখেমুখে পানি চলে এলো প্রায়। এত সুক্ষ্ম কাজ পারবে না সে। কাঁদো কাঁদো হয়ে বলল—খুব ইচ্ছা ছিল আপনাদের সাথে কাজ করার। হলো না। বিদায় দেন ওস্তাদ।
বলে সবার সাথে হাত মিলিয়ে মজিদ চলে গেলে জুম্মন খাঁ নিজের আঙুলের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে উঠল—আমার আংটি, আমার আংটি!
…………
মকবুলের ডেরায় যখন মজিদ চারটি আংটি ছড়িয়ে দিল তখন খুব হাসাহাসি হলো, জুম্মন ওস্তাদের থোঁতা মুখ ভোঁতা হয়ে গেছে কল্পনা করে। হাত সাফাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে গেল মজিদ।
মকবুল কথা দিলে কথা রাখে।
গরুচোর
আলী রেজা। জন্ম: ১৯৫৭। মুক্তিযুদ্ধে আলোড়িত কবি, সত্তর দশকে মূলত ছোটকাগজে লেখালেখি শুরু করেন। সদ্য অবসরে যাওয়া একটি রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠানের বিপণন ব্যবস্থাপক। এটি কবির প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ।
আলী রেজা
সরদার ফারুক। জন্ম ১৯৬২ সালের ৯ নভম্বের, কপোতাক্ষ নদের তীরে খালিশপুরে। পৈত্রিক নিবাস বরিশালের কাশীপুর। পেশায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। ছাত্রজীবন থেকেই প্রগতিশীল ছাত্র-শ্রমিক-কৃষক আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন। বরিশালে ঘাট শ্রমিকদের ?আন্দোলন, ডেমরায় শ্রমিক কর্মচারি ঐক্য পরিষদের সংগ্রাম ও বাজিতপুরের জেলেদের লড়াইয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
নব্বইয়ের ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য তিনি সরকারী চাকরি ছেড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৮৯ সালে ডাকসু নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনও করেন।
ছাত্রজীবন থেকেই বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লিখছেন। ১৯৮০ সালে বরিশালের অধুনালুপ্ত ‘সাপ্তাহিক লোকবাণী’ পত্রিকায় প্রথম লেখা প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে শামসুর রাহমান সম্পাদিত সাপ্তাহিক বিচিত্রা, দৈনিক দেশ, সংবাদসহ দেশ-বিদেশের নানা পত্র-পত্রিকা, সাহিত্য সাময়িকীতে তার লেখা কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
নোনা শহর
প্রাক-কথন
একটি সফল নাটক উচ্চারণ করে সময়ের সত্য, মানুষের অন্তর্গতে শায়িত থাকা সম্পর্কের সুস্পষ্ট স্বর।
নিজের শরীরে ধারণ করে জীবনের বহুমাত্রিক রং, যাপনের বর্ণমালা।
নাটক ‘ঈশান রাজকুমার’ এমনতর বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল।
ইতিহাস-নির্ভর রচনার ক্ষেত্রে লেখকের কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে। ঐতিহাসিক ঘটনা গুলির জন্য তাঁকে প্রাচীন পুঁথি, নথি এবং মানুষের মুখে মুখে ফেরা কথা ও কাহিনি থেকে নিজের লেখার উপাদান সংগ্রহ করতে হয়।
এবং এক্ষেত্রে লেখক হয়ে ওঠেন ভ্রামণিক। সময়ের সম্মুখে নয়, তিনি যাত্রা করেন অতীত সময়েরদিকে। পৌঁছাতে হয় পার-হয়ে-আসা-সময়ের হলুদ বৃত্তান্তগুলির কাছে। যে-লেখক তাঁর পুরোনো জন্মকালের মুহূর্তগুলিকে যত নিবিড় করে ছুঁতে পারেন, তিনিই তত সফলভাবে ঐতিহাসিক সত্যকে অধিগত করতে পারেন। সত্যের সেই বৃত্তান্তকে হাজির করতে পারেন তাঁর পাঠকের কাছে।
ইকবাল রাশেদীন শক্তিশালী কবি। কবির মননজাতবোধ এবং সুদূরপ্রসারী দৃষ্টি দিয়ে তিনি ছুঁয়েছেন দু’শো পঞ্চাশ বছর আগের পৃথিবীকে। নিজের পরিশ্রমী গবেষণা দিয়ে তুলে এনেছেন ইতিহাসের বুকে ধুসর হয়ে যাওয়া ঘটনাক্রমকে। কবি থেকে নাট্যকার হয়ে ওঠা খুব সহজ কাজ নয়, সেই অসহজ কাজটিই ইকবাল করে দেখিয়েছেন তাঁর ‘ঈশান রাজপুত্র’নাটকে।
আমার মনে হয়েছে, নাটকের জাহাজটি একটি দেশ এবং ঈশান রাজকুমার সেই দেশের যোগ্য নেতৃত্ব। এবং সেইসাথে নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র ঈশান আসলে ডানামেলা এক পাখি। যার দেশ নেই, সীমান্তনেই। আছে কেবল পৃথিবীময় একজগত বাড়ি। সেই বাড়ির বাসিন্দা হয়ে অন্তরমহল আর অন্দরমহলের কথাই সে উচ্চারণ করেছে আত্ম মগ্নস্বরে।
ইকবাল রাশেদীন কবি বলেই হয়তো এই আত্মমগ্নস্বরের নির্মাণে তিনি অনায়াস। এবং নাট্যকার হিসাবে তাঁর কৃতিত্ব এখানেই যে, এই আত্মমগ্ন স্বর শুধু তাঁর ‘আত্মমগ্নস্বর’ হয়েই থাকেনি, পাঠক/দর্শক ও খুঁজে পাবেন তার নিজের মতো করে নিজের ‘আত্মমগ্নস্বর’।
রেহান কৌশিক
পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
১৬ ডিসেম্বর ২০১৭
ঈশান রাজকুমার
ফারহানা খানম। জন্ম: ১৯শে এপ্রিল ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী এলাকায়। গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের সন্দীপে। ‘ভুগোল ও পরিবেশ’ বিষয়ে স্নাততোত্তর ডিগ্রী অর্জন করে ব্যাংকে চাকুরি শুরু করলেও বর্তমানে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত। নয় ভাই-বোনের মাঝে সবার ছোট বলেই আদরও পেয়েছেন বেশি। প্রথম প্রকাশিত বই, ‘ইছামতি’ (কলকাতা থেকে প্রকাশিত)।
তৃষ্ণার্ত বালুতট
রঞ্জনা বিশ্বাস। জন্ম: ১০ডিসেম্বর, ১৯৮১। গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া থানার রাধাগঞ্জ ইউনিয়নের বাগবাড়ি গ্রামে খ্রিস্টিয়ান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ‘ভুলস্বপ্নে ডুবে থাক আদিবাসী মন’ ও ‘আমি তিনবেলা বৃষ্টিতে ভিজি’ কাব্যগ্রন্থ দু’টি কবির প্রকাশিত কাব্যফসল। এছাড়া কবি কবিতাচর্চার পাশাপাশি ফোকলোরচর্চাকেও ব্রত হিসাবে নিয়েছেন। নৃ-তাত্ত্বিক ও গবেষণাধর্মী কবির আরও বেশ কয়েকটি বই প্রকাশিত হয়েছে। কবি বাংলা একাডেমির ‘তরুণ লেখক প্রকল্প’ ও ‘লোকজ সংস্কৃতির বিকাশ’ প্রকল্পে কাজ করছেন। এছাড়া এখন ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বিভাগে কর্মরত আছেন।
বেদনার পাথর ও প্রান্তিক দীর্ঘশ্বাস
সৈয়দ সাইফুর রহমান সাকিব। জন্ম: ১৯৭৮ সালে বরিশাল জেলা সদরে করিমকুটির নামক স্থানে। তার লেখার বিষয় মূলতঃ কবিতা। সময় নাট্যদলের সাথে একযুগ পার করেছেন। গানও লিখতেন কিন্তু বন্ধুবরের প্রয়ানে, অভিমানে আর সেপথ মারাননি। বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয়ে কর্মরত থাকলেও নিজেকে একজন কবিতার শতরঞ্জি মোড়ানো শ্রমিক বলেই মনে করেন। এটি কবির প্রথম বই।
রূপোর দ্যুতি
যতবার নিজেকে প্রশ্ন করি। মানুষের কোন ভবিষ্যৎ আছে?
উত্তর একটাই, মানুষ স্মৃতি ছেনে বাঁচে। ভবিষ্যৎ এক মিছে সম্ভাবনা।
আমার এই কাব্যও তাই, স্মৃতির ভেতর থেকে তুলে আনা দানা
যা খেয়ে খেয়ে একটা জীবন–পাড়ি দিচ্ছে মৃত্যুর রহস্যময় মৃত্যুর ধাঁ ধাঁ।
মৃত্যুই যেখানে শেষ নয় - Mrityui Zekhane Shesh Noy
পরিচিত
লতিফ জোয়ার্দার (কবি ও কথাসাহিত্যিক)
জন্ম: ১মার্চ ১৯৭০ খ্রিঃ
পিতা: মৃত ইয়াকুব আলী জোয়ার্দার
মাতা: মফেজান বেওয়া
জন্মস্থান: মুলাডুলি, ঈশ্বরদী,পাবনা।
লেখাপড়া: এডওয়ার্ড কলেজ, পাবনা।
প্রকাশিত গ্রন্থ:
কাব্যগ্রন্থ: এক সুন্দরের অপমৃত্যু,ছুঁয়ে দিবো জলের শরীর,আহত আঁধার, যে শহরে তুমি নেই সে শহর অন্ধ বধির, মন এক বেদনার কারখানা, এক রাজসিক কীর্তির কথা মনে পড়ে, নির্বাচিত ১০০ কবিতা, পোয়াতি ধানের ব্যাকরণ
ছোটগল্প: তীব্র আলোর শহর, কিছু কিছু সুখ অথবা অসুখ,ভাত ও ভাতারের গল্প, প্যারিস রোড,সুবর্ণ কঙ্কন পরা ফর্সা রমণীরা, ইঞ্জিন চালিত মানুষ
উপন্যাস: নো মিসকল, আজ বৃষ্টির মন ভালো নেই, যে কথা হয়নি বলা, কান পেতে রই, প্রথম প্রেম দ্বিতীয় বিরহ, ফতোয়ানামা, সোনাপাখি, নন্দিত অসুখ, যাও পাখি বলো তারে, বাউণ্ডুলে মন, সুগন্ধি রুমাল
শিশুতোষ: ভূত বড় অদ্ভুত, ড্রাগন এলো দেশে
সম্পাদনা: শূন্যের গল্প
সম্পাদিত ছোটকাগজ: সবুজস্বগর্, চৌকাঠ,গল্প২১
সুখগুলো সাদা শার্টের বুকপকেটে রাখি
লেখক পরিচিতি :
কবির য়াহমদ। জন্ম: ৩০শে ডিসেম্বর। চন্দরপুর, আলীনগর, বিয়ানীবাজার, সিলেট। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: ‘রাত আর ঘুমের কৃষ্ণপাঠ’ ‘আমাদের ঈশ্বরের এ্যাপয়েনমেন্ট দরকার’ ও ‘নিরবচ্ছিন্ন পাখিসমূহ’। গদ্য: ‘জাগরণের পূর্বাপর’। এটি লেখকের চতুর্থ কাব্যগ্রন্থ।
আগুনজলে ভূকম্প
কবিতায় ভালোবাসার রূপ দিতে ভালো লাগে। ল্যাণ্ডস্কেপের কবিতাগুলি নানাভাবে বিভাজিত। তাই সকল সৌন্দর্য প্রায় একত্রে সন্নিবেশিত হয়েছে। অবৈতনিক আশ্রয়ের ভিতর গ্রন্থিত হয়েছে রুলটানা কাগজে আঁকা কিছু অবাস্তব বারুদ। যদি স্ফুলিঙ্গ ছাড়া জ্বলে ওঠে, ভালো। তোমার প্রজাপতি, আমার বাগান। তা হোক, সমুদ্রলিপি এখানেই রচিত হলো এবং আরো কিছু রয়ে গেলো পরবর্তীকালের জন্য। রয়ে গেলো একটি চন্দ্রগ্রস্ত মুখ। ঘোরগ্রস্ত চোখ, বাংলা ভাষা-ভাষী তো বটেই পৃথিবীর অন্যান্য ভাষা-ভাষীদেরও যদি পছন্দ হয়। কারণ গ্রন্থের সবগুলি কবিতা স্নিগ্ধ কিংবা সুখপাঠ্য হবে এমন নয়। মানুষের জীবনেরও সবগুলো অধ্যায় সুন্দর হয় না।
রাই সরিষার কাল
হাসান মাহবুব। জন্ম ১৯৮১ সালের ৭ নভেম্বর, ঢাকায়। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার সময় তিনি বুঝেছিলেন এ জায়গা তার জন্য নয়। চলে আসেন
আনন্দভ্রম
পূর্বের কর্মস্থলে কর্মরত থাকাকালীন সময়ে আমি একটা কাহিনী শুনেছি। হৃদয়বিদারক! ওই প্রত্যন্ত গ্রামে আমি গিয়েছি। ওই বাড়িতেও গিয়েছি কিন্তু বাড়িতে ওরা কেউ থাকে না। মূল মালিকসহ তার স্ত্রী চাঁদপুর শহরেই বাস করেন। বিষয়টি আমার জানার খুব ইচ্ছে। যার জীবনে এই ঘটনা ঘটেছে তার মুখ থেকে আমার শোনার ইচ্ছা। একজন সমাজসেবক অফিসার হিসেবে এগুলো আমার জানা দরকারও। শেষ পর্যন্ত আমার ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়। আমি সদরে বদলি হই। মিসেস শেফালীকে (ছদ্ধনাম) আমি খুঁজে বের করি। বিষয়টি অনেক পূর্বের। তবুও আমার ইচ্ছে তার মুখ থেকে শুনে একটা বই করবো।
শহরে তারা যে এলাকায় থাকেন আমি সেখানে যাই। ওই এলাকার সমাজসেবার কাজের জন্য আমি কিছু নারী পুরুষকে নির্বাচিত করি। মিসেস শেফালী ও তার স্বামী এগিয়ে আসেন। আমাকে সহযোগিতা করেন। আমি ধীরে ধীরে তাদের ঘনিষ্ট হই। ক্রমান্বয়ে আমার প্রতি তাদের শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। নানা খুঁটিনাটি বিষয়ে আলোচনা হয়। পারিবারিক বিষয়েও। অতঃপর আমি মুল ঘটনা উদঘাটনের চেষ্টা করি। মিসেস শেফালীর মুখ থেকেই। প্রথমে তিনি সম্মত হননি। ক্রমাগত আমার অনুরোধে এক পর্যায়ে তিনি ঘটে যাওয়া ঘটনা বলতে সম্মত হন। অতঃপর তার স্বামীর উপস্থিতিতে তিনি মর্মান্তিক ঘটনা আমাকে অবহিত করেন। এ কাজে পরপর দুইদিন আমি তার বাসাতে গিয়েছি। আসুন, তার মুখ থেকেই শুনি।
মেঘনা পারের শেফালী
১৯০৬ সাল থেকে রচিত মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণাদায়ী ক্ষুরধার গানগুলো নিয়ে কাজ করার তীব্র অনুভবে তাড়িত হই। গান নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখা না-করার অভাব থেকে এ গবেষণার জন্ম। সুযোগ আসে ২০০৯ সালে। তা অবশ্য কিছু দূর এগোনোর পর শেষও হয়ে যায়। ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে আবার কাজটি শুরু হয় সরকারি অর্থায়নে। তখন নতুন করে সাজাই ফেলোশিপ গবেষণার সূচিপত্র।
আগে চেয়েছিলাম সময়ক্রমে গবেষণা কাজটা করতে; পরে ‘মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রেরণা-সৃষ্টিতে দেশাত্মবোধক গানের ভূমিকা (১৯৪৭-৭১)’ গবেষণার অধ্যায় বিভাজন করি—
ভূমিকা, দেশাত্মবোধক গানের পটভূমি, ১৯৪৭-৫২ সনের ভাষা আন্দোলন পর্বের গান, ১৯৬৯-৭০ সনের গণ-অভ্যুত্থান পর্বের গান এবং ১৯৭১ সনে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ পর্বের গান।
তবে শেষের পর্বটিতে তিনটি সেমি-পর্ব যুক্ত হয়—প্রেরণামূলক বঙ্গবন্ধুর গান, সংগ্রামে-সংগীতে নারীর অবদান এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান।
গ্রন্থটিতে ভাষা সৈনিক আবদুল মতিন এবং নজরুল স্বরলিপিকার সুধীন দাস এবং বিশিষ্ট গণ সংগীতশিল্পী শুভেন্দু মাইতি (যিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অর্থ সংগ্রাহক ছিলেন)—তিন বিশিষ্ট জনের সাক্ষাৎকার সংযোজিত হয়েছে। প্রায় ৯০০টি দেশপ্রেরণামূলক গানের তালিকা দেয়া হয়েছে।
গবেষণার দীর্ঘ পথে অনেক বাঁধার সম্মুখীন হই। তবে ধৈর্য ধারণ করে সবটা সহ্য করেছি; গবেষণা কর্মের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে। পরম করুণাময়ের অপার কৃপায় কাজটি শেষ করতে পেরেছি। তিনি সর্বোতভাবে সাহায্য করেছেন; সে প্রমাণ প্রতি মুহূর্তেই পেয়েছি। বাকিটা বিবেচনার ভার সম্মানিত পাঠকদের।
ফেলোশিপ গবেষণাটির প্রকল্প পরিচালক হিসেবে সার্বিক দায়িত্বে ছিলাম আমি।
যাদের আন্তরিকতা, সহযোগিতা পেয়েছি, তারা হলেন—
শ্রী গোবিন্দলাল দাস, শ্রী করুণাময় অধিকারী, জনাব ড. মূহ: আব্দুর রহীম খান, লিপিকা ভদ্র, সঞ্জয় কুমার বণিক, মল্লিকা দাস, ড. সাইম রানা, ড. সেলুবাসিত, ড. মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন (গিয়াস শামীম), ড. রঘুনাথ ভট্টাচার্য, আবদুল মতিন, সুধীন দাস, শুভেন্দু মাইতি, মোবারক হোসেন খান, সেলিম রেজা প্রমুখ সুহৃদগণ। সবাইকে কৃতজ্ঞ-চিত্তে স¥রণ করছি।
সময়ে-অসময়ে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় যাদের, তারা হলেন আমার পূজনীয় শিক্ষক—ড. সাঈদ-উর রহমান এবং অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক।
গবেষণা কাজটির মূল্যায়ন করেছেন আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক। তার আশীর্বাদকে ভক্তি জানাই।
‘মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রাম’-এ প্রেরণাদায়ী গানগুলোর যাদুমন্ত্রে যুদ্ধ জয়ের নেশায় বীর বাঙালি দুর্বার গতিতে ছিনিয়ে এনেছে স্বাধীনতা।
সেই গানগুলোর পটভূমি এবং গানগুলো সম্পর্কে সকলে জানতে পারবেন যার সহযোগিতা, সহমর্মিতায় তিনি—অনুপ্রাণন প্রকাশনের সত্ত্বাধিকারী আবু এম ইউসুফ ভাই। এই ফেলোশিপ গবেষণা ও সমীক্ষা ধর্মীগ্রন্থটি অনুমোদন ও প্রকাশের উদ্যোগ নেবার জন্য তার প্রতি অপরিসীম আন্তরিকতা প্রকাশ করছি। ২০২০ সালের বইমেলার বই-প্রকাশনার সীমাহীন ব্যস্ত সময়ের মধ্যেও গ্রন্থটির নামকরণ করে তিনি কৃতজ্ঞাপাশেবদ্ধ করেছেন।
ড. শিল্পী ভদ্র
ঢাকা।
মুক্তি-সংগ্রামের গান
পিনু মামা জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে বৃষ্টি দেখছিলেন। দেখছিলেন বললে মনে হয় ভুল হবে- বৃষ্টির গান শুনছিলেন। কারণ সাঁঝের ঘোলা আলোয় বাহিরটা তেমন দেখা যাচ্ছিল না। আর কী যেন ভাবছিলেন। হয়ত তাঁর অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে কোন গল্পটা আমাদের শোনাবেন তাই ভাবছিলেন। আমরা অধীর হয়ে বসে আছি। পিনু মামা কখন গলা ঝেড়ে কথা বলা শুরু করবেন তার জন্য। আমরা মানে- আমি আর আমার বন্ধুরা। পিনু মামা কানাডায় থাকেন এখন। এর আগে তিনি ছিলেন আমেরিকার নিউইয়র্ক সিটিতে। তারও আগে ছিলেন আমাজানের গহীন বনে…। গোটা বিশ্ব মামার আবাস ভূমি। কী বিচিত্র অভিজ্ঞতাই না আছে তাঁর ঝুলিতে! মামার গল্প আমি আমার বন্ধুদের কাছে প্রায়ই করতাম। তাই সবার মাঝে মামা ভীষণ জনপ্রিয়। মামা দেশে এসেছেন এবং এখন আমাদের বাসায়- এই কথা শুনে আজ বন্ধুরা আমাদের বাসায় ভিড় করেছে, মামার অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে গল্প শুনবে বলে। স্কুলে চলছে গ্রীষ্মের ছুটি তাই পড়াশোনার চাপটাও এখন কম।
পিনু মামার অ্যাডভেঞ্চার
সম্পাদকীয়
অনুপ্রাণন: ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়
গত নভেম্বর ২০১২ থেকে অনুপ্রাণন ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকাটি প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর সাহিত্য ও শিল্প বিভাগের বিবিধ সৃজনশীল ও মননশীল লেখায় সমৃদ্ধ হয়ে নিয়মিত ভাবেই প্রকাশিত হয়ে আসছিল। কিন্তু, পঞ্চম বর্ষ দ্বিতীয় সংখ্যাটি বৃহৎ কলেবরে অর্থাৎ নিয়মিত ১৬ ফর্মার বদলে ১৯ ফর্মা আকারে প্রকাশিত হওয়ার পর পরবর্তী ৫ টি সংখ্যা প্রকাশ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। সম্পাদকের অসুস্থতা ছাড়াও অলিখিতভাবে সম্পাদনা পরিষদের যে সদস্যবন্ধুটি পত্রিকার কাজে অফিস সমন্বয়কের গুরুদায়িত্ব পালন করছিলেন নিরবচ্ছিন্ন ধারায় প্রয়োজনীয় দাপ্তরিক কাজ চালিয়ে যেতে তিনি নানা অসুবিধার সম্মুখীন হতে থাকলে পত্রিকার কাজে ছেদ পড়তে থাকে। তাছাড়া সম্পাদনা পরিষদের আর একজন বন্ধু অন্য একটি অনলাইন পত্রিকার কাজে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ করার ফলে তাঁর পক্ষে অনুপ্রাণন পত্রিকায় প্রয়োজনীয় সময় দেয়া আর সম্ভব হয়ে উঠছিল না। সম্পাদনা পরিষদের অন্য আর একজন সংগঠক পর্যায়ের সদস্য পত্রিকার চাইতে গ্রন্থ প্রকাশনায় বেশী ব্যস্ত হয়ে পড়ায় প্রকৃতপক্ষে অনুপ্রাণন পত্রিকাটি প্রকাশের কাজে লোকবলের এক বিরাট সংকট দেখা যায়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে যে- ২০১২’এর নভেম্বরে অনুপ্রাণন ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকাটি প্রকাশ করার উদ্যোগ যারা নিয়েছিলেন তারা প্রত্যেকেই শিল্প ও সাহিত্যের ক্ষেত্রে যার যার নিজ অবদান ও স্বাক্ষর রাখার উদ্দেশ্যে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাশ্রম ও ব্যক্তিগত অনুদানের ভিত্তিতে পত্রিকাটির প্রকাশনার কাজের যাবতীয় কাজ ও ব্যয় নির্বাহ করার অভিপ্রায় গ্রহণ করেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল, সমাজ সংস্কৃতিতে এবং বিশেষ করে তরুণদের মনের মাঝে মানবতা, সহমর্মীতা, সৃজনশীলতা, মননশীলতা, শিল্পরুচি, নান্দনিকতা এবং মুক্তচিন্তার চর্চার জানালাটাকে উন্মূক্ততর করার কাজে নিয়োজিত অনুপ্রাণনের এই প্রচেষ্টা যেন বাধাহীন হয় এবং কোনভাবেই যেন প্রতিষ্ঠা ও কর্পোরেট ভোগবাদীতার কূট সাংস্কৃতিক আবর্তে পড়ে দিক হারিয়ে না যায়।
যশ ও প্রতিষ্ঠার মোহ যখন শিল্পীকে পেয়ে বসে তখন শিল্পচর্চা তপস্যা অথবা সাধনা থাকে না। কিন্তু, এটাই বাস্তব যে তপস্যা ও সাধনা ছাড়া শিল্পের উৎকর্ষতার শীর্ষ স্পর্শ সম্ভব হয়ে ওঠে না। প্রতিষ্ঠা ও কর্পোরেট ভোগবাদের বলয়ে যেসব শিল্প-সাহিত্য চর্চা ও উদ্যোগ ফেনার মত আমাদের চারদিক ভরিয়ে তুলছে সেসবের স্থায়িত্ব সম্পর্কে কী কোন সন্দেহ থাকা উচিত?
বছরখানেক বন্ধ থাকার পরও যখন আমরা অনুপ্রাণনের এই সংখ্যাটি প্রকাশের উদ্যোগ নেই তখন আমরা আমাদের পত্রিকার পাঠক, লেখক ও শুভান্যুধ্যায়ীদের কাছ থেকে অভূতপূর্ব সারা পেয়েছি। এই সারা থেকে এই বিশ্বাস আমাদের জন্মেছে যে, আমরা যে পথ অবলম্বন করে এগিয়ে চলতে চাই সেই পথে বাস্তবেই সঙ্গ-সাথীর আমাদের কোন অভাব নেই। এখনও আমাদের দেশের তরুণ সমাজের একটি বিরাট অংশ মিথ্যা যশ, প্রতিষ্ঠা ও কর্পোরেট ভোগবাদের বিপরীতে দাঁড়িয়ে শিল্প-সাহিত্যের মানবিক ও নান্দনিক চর্চা অব্যহত রাখতেই অধিক আগ্রহী। তাই, লেখা আহ্বানে যে সংখ্যক মানসম্পন্ন লেখা আমরা পেয়েছি সেগুলো দিয়ে অনায়াসেই দুটো সংখ্যা প্রকাশ করা সম্ভব ছিল। চলতি সংখ্যার জন্য লেখা বাছাই করতে গিয়ে আমাদের অনেক সময় দিতে হয়েছে এবং স্থান সংকুলানের অভাবে প্রায় অর্ধেক লেখাই পরবর্তী সংখ্যার জন্য রেখে দিতে হয়েছে।
লেখা বাছাই করতে গিয়ে আবারো আমাদের অভিজ্ঞতা হয়েছে যে, সাহিত্য আলোচনা ও সমালোচনা বিভাগে আমরা যথেষ্ট সমৃদ্ধ লেখা পাচ্ছি না যেখানে পেশাদার সমালোচকের কলমের স্পর্শ আরো তীক্ষè অথচ আরো গঠনমূলক হতে পারে। বিশেষ করে কবি ও কবিতা নিয়ে আমাদের আরো তীক্ষè, তীব্র ও গঠনমূলক আলোচনা হওয়া প্রয়োজন। কেননা সাহিত্য জগতে কবি ও কবিতার সংখ্যা যতই বাড়ছে কিন্তু আগ্রহী কবিতার পাঠকের সংখ্যা যেন সেই তূলনায় বৃদ্ধি হচ্ছে না। মনে হয়, কবি ও পাঠকের মাঝে বোধ, অনুভব ও ভাষার কোন একটা অন্তর থেকে যাচ্ছে যে অন্তরটি ঘুচে যাওয়া অত্যন্ত জরুরী কেননা বোধ করি, মূলত কবিতার মধ্যেই রয়েছে তরুণ সমাজের জন্য ভবিষ্যতের বিশেষ বার্ত্তা। অর্থাৎ সাহিত্যের সত্যপাঠ।
দেশে এখন হেমন্ত ঋতু। হাওরের অকাল বন্যা ও দেশব্যাপী অতিবৃষ্টির ফলে ফসলহানী ঘটায় এবছর দেশের সামগ্রিক সমাজ জীবনে খাদ্যের ঊর্ধ্বমূল্য সকল মানুষকেই কষ্ট দিয়েছে। হেমন্তের নতুন ফসল যেমন কৃষকের ঘড়ে ঘড়ে জীবনে ঘুরে দাড়ানোর বার্ত্তা দিয়ে যাচ্ছে- দীর্ঘ বিরতির পর অনুপ্রাণন ত্রৈমাসিকের এই সংখ্যাটি এ-বছর অনুপ্রাণনের ঘুরে দাঁড়ানোরই প্রতীক ও স্বাক্ষর হোক- এটাই আশাবাদ।
ষষ্ঠ বর্ষ চতুর্থ সংখ্যা
কবির কবিতা চৈতী হাওয়ায় ভেসে যাওয়া কোনো সামান্য ফুল নয়; সে ফোটে বিরল আষাঢ়ে, উপোষী ফাল্গুনে আর ঝলসে ওঠে অমলধবল দারুণ আগুনে।
কন্যারা জলজ নয়
Get access to your Orders, Wishlist and Recommendations.
There are no reviews yet.