তার নাম ছায়ার মতন – সুলতানা শাহরিয়া পিউ
Tar Nam Chayar MotonAuthor: সুলতানা শাহরিয়া পিউ
Cover By: নাজমুল হক বাপ্পি
ISBN: ৯৭৮-৯৮৪-৯৮৬৭৬-৭-৮
Publish Date: ফেব্রুয়ারি ২০২৪
$ 1.76 $ 2.35
জীবনের অন্য নাম প্রকৃতি, প্রকৃতি জন্ম দেয় অন্তর্গত ভাবাবেগকে,এই ভাবাবেগই লেখায় কবিতা। যে কবিতা জীবন পাতার শিরায় শিরায় ঘটায় আলোক সংশ্লেষণ! জীবনকে নতুন পাতার মত সতেজ করে, সবুজ করে। কবিতা মুখে নিয়ে জন্ম আমার। ঘুম ভাঙলেই দেখতাম মা পায়চারি করছেন আর কবিতা আওড়াচ্ছেন, হে মোর চিত্ত পূণ্য তীর্থ জাগোরে ধীরে অথবা আমি হব সকাল বেলার পাখী…
নির্ঘুম দুুপুরে ছিল আমার মেঘের সাথে কথা চলাচলি! এমনি করে কবিতা আর প্রকৃতি মিলেমিশে এক হয়ে যেত। ক্রমশ তা হৃদগভীরে আরও প্রস্থিত হতে থাকল মৌন প্রকৃতির মৌনতাতে মুগ্ধ হতে হতে কি এক অসীম রহস্যের হাতছানিতে ছুটে চলল মন! টের পেলাম জীবনের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রকৃতি কেমনে নীরবে তার কাজ করে যায়। তাইতো ছায়া বললে বৃক্ষের কথা মনে আসে। আর বৃক্ষ মনে করিয়ে দেয় পিতা বা মাতাকে।
কিন্তু হঠাৎ একদিন জানলাম এই মৌনই নীরবতা ভেঙে ফুঁসে উঠতে পারে মানুষের অপকর্মের প্রতিবাদে- বজ্রপাত, সাইক্লোন, জলোচ্ছাস, আগ্নেয়গিরির অগ্নুপাত, বন্যা, তুষারঝড়ের রুপে। এই প্রকৃতি আমাদের প্রতিবাদী হতে যুদ্ধবাজ হতে শেখায়। আবার নম্রতার থেকে শেখায় ধ্যানমগ্ন হতে, অসীম সহ্যক্ষমতার অধিকারী হতে। ছোটবেলায় সেদিন প্রথম গেলাম শহীদ মিনারে প্রভাত ফেরীতে সেদিন শুনলাম একুশের প্রথম কবিতা- জানলাম রমনার ঊর্ধ্বমুখী কৃষ্ণচূড়ার কথা- জানলাম বাংলার সবুজ জমিনে লাল সূর্যের কথা! আস্তে আস্তে বুঝতে পারলাম প্রকৃতি আমাকে কবিতা লেখাচ্ছে। অনুভব করলাম ভালোবাসি প্রকৃতিকে, প্রেমে পড়েছি! আমার লেখার মূল উপজীব হয়ে উঠেছে প্রকৃতি প্রেম। প্রকৃতি নাই আসলে ঈশ্বর বন্দনটি অথচ সবকিছু ছাপিয়ে মনের ভেতর যে ক্ষরণ টের পাই- তার একটাই জিজ্ঞাসা- যীশুখৃষ্টের জন্মস্থানে পঞ্চাশ হাজার গর্ভবতী মায়েরা কি নির্বিঘ্নে প্রসব বেদনা ভুলবে? বিশ্ব শান্তির পক্ষে কি নবজাতকেরা গেয়ে উঠবে গান? কেমন পৃথিবী চিনবে ওরা? ওদের প্রাণে কি জাগবে নতুন পাতা, সবুজ গাথা? নতুন বছওে ওদের কানে কি পৌঁছুবে আমার কবিতা?
Additional information
Weight | 0.200 kg |
---|---|
Published Year |
Be the first to review “তার নাম ছায়ার মতন – সুলতানা শাহরিয়া পিউ” Cancel reply
Related Products
প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত
মেঘ অদিতি। কবি ও গল্পকার হিসেবে ‘দু’বাংলাতে পরিচিত। জন্ম: ৪মে, জামালপুর। বর্তমানে গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে কর্মরত। প্রকাশিত গ্রন্থ: ‘জলডুমুরের ঘুম (কাব্য)’ ‘অস্পষ্ট আলোর ঘোড়া (গল্প)’ ‘অদৃশ্যতা হে অনিশ্চিতি (কাব্য)’ এবং ‘সময় শূন্যতার বায়োস্কোপ (মুক্তগদ্য)।
প্রবেশিধকার সংরক্ষিত
মধ্যবিত্ত কবিতা
নাহিয়ান ফাহিম। জন্ম: ২৩শে মার্চ, ১৯৮৪। ময়মনসিংহ জেলা। ঢাকাতে বেড়ে ওঠা। মূলতঃ পাঠক, ফলতঃ লেখক। সাহিত্য পত্রিকা ‘জলমাঝি’র সম্পাদক। মার্কেংটিং বিভাগে স্নাতকোত্তর। পেশাগত জীবনে একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত। প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ভিনদুপুরের নোটবই’।
মধ্যবিত্ত কবিতা
ঘামগুলো সব শিশিরফোঁটা
রনক জামান। জন্ম:১৬ই ডেসেম্বর ১৯৯১, মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলায়। লেখালেখির হাতেখড়ি ছোটবেলাতেই কবিতার প্রতি মুগ্ধতা থেকেই তার প্রতি ভালোবাসা। এটাই কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ। এছাড়াও প্রকাশিত হয়েছে, যৌথ কবিতাগুচ্ছ ‘মায়ানগরীর বৃষ্টিকথন’, কবিতার ই-বুক ‘শরীর ছোঁয়া আঙুলগুলো’ এবং অনুবাদ উপন্যাস ‘ললিতা’।
ঘামগুলো সব শিশিরফোঁটা
কফি জেগে থাকে
আলতাফ হোসেন-এর জন্ম ২৭ অক্টোবর ১৯৪৯। পৈতৃক নিবাস কিশোরগঞ্জ। বাবার চাকরিসূত্রে শৈশব কৈশোর কেটেছে পাটনা, কলকাতা, চাটগাঁ, করাচি ও ঢাকায়। ১৯৬৪ থেকে পুরোপুরিভাবে ঢাকায় বসবাস। অনার্স ও এমএ করেছেন বাংলায়। আলিয়ঁস ফ্রঁসেস, ঢাকা থেকে দু-বছর ফরাসি ভাষা শিখে সনদ পেয়েছেন।
কফি জেগে থাকে
পাথরের গুহা
আলী রেজা। জন্ম: ১৯৫৭। মুক্তিযুদ্ধে আলোড়িত কবি, সত্তর দশকে মূলত ছোটকাগজে লেখালেখি শুরু করেন। সদ্য অবসরে যাওয়া একটি রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠানের বিপণন ব্যবস্থাপক। এটি কবির প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ।
আলী রেজা
অনুদিত রোদের রেহেল
লেখক পরিচিতি :
মোহাম্মদ হোসাইন। জন্ম: ৩১শে অক্টোবর। বিএসসি ও এমএসসি’র শিক্ষা সমাপন শেষে এখন শিক্ষকতার পেশায় নিয়োজিত আছেন। লেখকের প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ মোট ১১টি। ‘ভালোবাসা নির্বাসনে গেছে’ ‘মেঘগুলো পাখিগুলো’ ‘অরণ্যে যাবে অস্তিত্বে পাপ’ উল্লেখযোগ্য বইয়ের শিরোনাম।
অনুদিত রোদের রেহেল
গল্প সমাপ্তির গান
রাজন্য রুহানি। পরিবারের দেওয়া সনদসাক্ষ্য নাম মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। জন্ম: ২রা নভেম্ভর ১৯৮০, জামালপুর জেলা শহরের হাটচন্দ্রায়। কলেজে পা দেবার সাথে সাথেই সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন। স্থানীয় কয়েকটি দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকার বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। মফস্বল সাংবাদিকতার পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে না পেরে বারবার কবিতার কছেই ফেরা। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং। ১৯৯৮ থেকে কবিতার ভাঁজপত্র শব্দদূত সম্পাদনার সাথে যুক্ত। ঐ বছরই অন্যান্য লেখক সহযোগে আলোচনাগ্রন্থ- ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ; আতিয়ার রহমানের ৭টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। এটি লেখকের প্রকাশিত এককবই।
গল্প সমাপ্তির গান
বেদনার পাথর ও প্রান্তিক দীর্ঘশ্বাস
রঞ্জনা বিশ্বাস। জন্ম: ১০ডিসেম্বর, ১৯৮১। গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া থানার রাধাগঞ্জ ইউনিয়নের বাগবাড়ি গ্রামে খ্রিস্টিয়ান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ‘ভুলস্বপ্নে ডুবে থাক আদিবাসী মন’ ও ‘আমি তিনবেলা বৃষ্টিতে ভিজি’ কাব্যগ্রন্থ দু’টি কবির প্রকাশিত কাব্যফসল। এছাড়া কবি কবিতাচর্চার পাশাপাশি ফোকলোরচর্চাকেও ব্রত হিসাবে নিয়েছেন। নৃ-তাত্ত্বিক ও গবেষণাধর্মী কবির আরও বেশ কয়েকটি বই প্রকাশিত হয়েছে। কবি বাংলা একাডেমির ‘তরুণ লেখক প্রকল্প’ ও ‘লোকজ সংস্কৃতির বিকাশ’ প্রকল্পে কাজ করছেন। এছাড়া এখন ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বিভাগে কর্মরত আছেন।
বেদনার পাথর ও প্রান্তিক দীর্ঘশ্বাস
তারাধুলো জল ও নস্টালজিয়া
কাজী রহমান। পরবাসী লেখক নিজের পছন্দ মতো বাঁচতে দু-যুগ আগে মার্কিন মুলুকে চলে আসেন স্ত্রী ও প্রথম শিশুকন্যা সাথে নিয়ে। বড় হয়েছেন পুরনো ঢাকার গেন্ডারিয়া’য়। জ্ঞান হবার পরপরই নিজেকে আবিষ্কার করেছেন ঘরের পাশের গ্রন্থাগারে, বিভিন্ন শিশু সংগঠন আর সমাজসেবামূলক সংগঠনের আলোছায়ায়। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার দুরন্ত কিশোর স্বাধীনতার যুদ্ধ দেখেছেন কাছ থেকে আর আতঙ্কের দিন গুনেছেন সারাক্ষণ মুক্তিযোদ্ধা দু’ভাইয়ের ঘরে ফেরার অপেক্ষায়। গ্রাজুয়েশন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কর্মজীবন কেটেছে বিদেশী এয়ার লাইন্সের কর্মকর্তা হিসেবে।
তারাধুলো জল ও নস্টালজিয়া
ছায়া সমুদ্র
অয়ন্ত ইমরুল। জন্ম: ১২ই এপ্রিল ১৯৮৭ইং, মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর থানার আজিমনগর গ্রামে। পদ্মা নদীর ভয়াল গ্রাসে শৈশবেই ঠিকানার পরিবর্তন ঘটে বর্তমানে সাভার আশুলিয়ায় বসবাসরত। এটি লেখকের প্রথম প্রকাশিত বই।
ছায়াসমুদ্র
উন্মাদের কনসার্ট
সিদ্দিক প্রামানিক। জন্ম: ২১শে আগস্ট ১৯৭৯, কুস্টিয়ার কুমারখালী থানার চরভবানীপুরগ্রামে। বাংলা সাহিত্যে মাস্টার্স শেষ করে বর্তমানে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন এবং বাম প্রগতিশীল সংগঠনের সক্রিয় সংগঠক ও সংস্কৃতকর্মী। প্রথম বই ‘হাঙরের সমুদ্রে মননশীল মাছ’।
উন্মাদের কনসার্ট
এটি একটি চিৎকার
লেখক পরিচিতি :
নিখিল নওশাদ। জন্মসন: ১৯৮৯ইং। বড়িয়া, ধুনট, বগুড়া, বাংলাদেশ। ‘বিরোধ, ‘নিওর’ ও ‘নীড়’ পত্রিকার সম্পাদনা পরিষদের সাথে যুক্ত। এটি লেখকের প্রথম প্রকাশিত বই। এছাড়া ছোটগল্প বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত সথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছেন।
এটি একটি চিৎকার
Recently Viewed
খোঁচা
খোঁচা
খোঁচা খুব ঔষধী
খোঁচা খুব বেয়াড়া,
খেলে খায় খুশিতে
কারো লাল চেহারা।
খোঁচা খায় বঁধুয়া
কলতান হাসিতে,
খোঁচা চায় প্রেমিকা
চায় ভালোবাসিতে।
খোঁচা দাও বাবুকে
সারাক্ষণ জ্বালাতো,
হবে ভাব ত্বরিতে
আগে দূর পালাতো।
খোঁচা দাও সুযোগে
খোঁচা দাও বুঝিয়া
খোঁচা দাও সমাজে
খোঁচা দাও খুঁজিয়া।
খোঁচা দাও জাগাতে
যারা ঘুম জাগে না,
বসে দাও চেয়ারে
যাঁরা পদ মাগে না।
খোঁচা
আকাশের জলচিত্র
অন্যজীবন
ভূমিকা-
ঘুরে বেড়ানোর স্বভাবটা ছোটবেলা থেকেই ছিলো। এ অভ্যাসটা বাবা‘ই করিয়েছেন। মায়েরও মনে হয় প্রছন্ন প্রশ্রয় ছিলো। যখন যেখানে সুযোগ পেয়েছি ঘুরে দেখার চেষ্টা করেছি। এরপর পেশাটাও বেছে নিয়েছি ঘুরে বেড়ানোর। এ ঘুরে বেড়ানোর মাধ্যমে মানুষকে নানাভাবে জানার সুযোগ হয়েছে। ভিড়ের মধ্যে দুরে বসে মানুষ দেখতে আমার বেশ লাগে। প্রতিদিনের নতুন অভিজ্ঞতা থেকে আজো প্রকৃতি, পরিবেশ, সমাজ, সংসার থেকে জানার চেষ্টা করছি। মানুষের মনসতত্ত্ব আমাকে বেশ ভাবায়। একজন মানুষের বহুরকম ভাবনা। সে থেকে যদি কিছু অর্জন করে থাকি তা কলমের ভাষায় বলবার এক ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।
অন্যজীবন
চন্দনা উড়ে গেছে – আলী রেজা
আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রচিত সাহিত্যকর্ম খুবই অপ্রতুল। অথচ আমরা আমাদেরকে বীরের জাতি বলে শ্লাঘা বোধ করতে কার্পণ্য করি না। কিন্তু হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে বিশাল পটভূমিতে আমাদের স্বাধিকারের লড়াই আমাদের সাহিত্যকর্মে বিস্ময়কর রকমে অনুপস্থিত।
বাংলাদেশের বিজয় অর্জনের পঞ্চাশ বছর পরে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিশাল পটভূমিতে রচিত হল, ”চন্দনা উড়ে গেছে” উপন্যাস। কালের ব্যবধান থাকা সত্বেও এ কাহিনীর বিস্ময়কর ঘটনাপ্রবাহ, গেরিলা যুদ্ধের বুদ্ধিদীপ্ত সাহসিকতা, সফলতা, তাদের বীরত্ব ও বিশাল ত্যাগের বলিষ্ঠ চিত্রায়ন পাঠককে এক মুগ্ধতার আবেশে মোহাবিষ্ট করে শেষ পাতা পর্যন্ত আঠার মত জুড়ে রাখবে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বড় অংশটি ছিল গণযোদ্ধার। এরা সংখ্যার দিক থেকে নিয়মিত বাহিনীর চেয়ে অনেক বড় ছিল। এই গণযোদ্ধারা কয়েক সপ্তাহের ট্রেনিং নিয়ে বাংলার গ্রাম-গঞ্জে, হাটে-বাজারে, শহরে-বন্দরে ছড়িয়ে পড়ে গেরিলা যুদ্ধের কৌশল অবলম্বন করে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদরকে কোণঠাসা করে রাখে। মুক্তিবাহিনীর এ সব গণযোদ্ধা গেরিলাদের নিয়ে খুব একটা সাহিত্যকর্ম রচিত হয়নি। তাই আমাদের মহান গেরিলা যুদ্ধের অনেক কাহিনী এখনো অজানা। এ উপন্যাসের ঘটনা প্রবাহ এমন এক স্বকীয় বৈশিষ্ট্য ও অপার দক্ষতায় বিন্যাস করা হয়েছে, যা পাঠককে কব্জা করে রাখে।
এ উপন্যাসের বিশাল পটভূমিতে রয়েছে, শহর-বন্দর, গ্রাম-গঞ্জ থেকে প্রত্যন্ত হাট-বাজার, পাহাড়ী নৃ-গোষ্ঠীর জনপদ, তাদের জুমিয়া জীবন ও মাতৃভুমিকে হানাদারদের দখল মুক্ত করার বিস্ময়কর সম্প্রীতি নিয়ে গণযোদ্ধাদের প্রতিরোধ ও প্রতি-আক্রমণ, এক তেজোদীপ্ত বীরত্ব গাথার উপাখ্যান। এবং যুদ্ধ শেষে মানবিক উষ্ণতায় বীর বন্দনা।
এটি শুধু বলিষ্ঠ দক্ষতায় কারুকার্যময় এক কাহিনীই নয়, এটি সত্তর দশকের শুরুর দিকের এক এনালগ সমাজের বিশ্বাসযোগ্য সামাজিক দলিল, যার আজকের ডিজিটাল যুগে মহামূল্যবান গুরুত্ব রয়েছে। উপন্যাসটির পরতে পরতে আছে সত্তর দশকের আর্থসামাজিক, মানবিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার বর্ণনা, আছে বাংলাদেশের তরুণ-যুবাদের প্রতিরোধ যুদ্ধের কাহিনী, কিভাবে তারা খুবই স্বল্প প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রায় খালি হাতে গেরিলা পদ্ধতিতে পাকিস্তানি হানাদার ও তাদের দোসর জামাত, রাজাকার, আলবদর বাহিনীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাদেরকে রুখে দিয়েছিল। কীভাবে তাদের বাংলার কাদা-মাটিতে পর্যুদস্ত করেছিল, সেইসব ঘটনার রোমহর্ষক অনুপুঙ্খ বর্ণনা। আছে গেরিলাদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব , দুঃখ-কষ্ট, আপোষহীন লড়াই, আত্ম-বলিদান, বীরত্ব এবং. গৌরব গাথা।
বিজয়ের পঞ্চাশ পরেও বাঙালীর বিজয় গাঁথার এই অনন্য আখ্যান পাঠককে মুগ্ধতার আবেশে বিমোহিত করে রাখবে, তাদের পূর্বসূরির মহান বীরত্বের কাহিনী তাদেরকে ও তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে ধারাবাহিকভাবে উজ্জীবিত করবে। নিঃসন্দেহে এ উপন্যাস এক উচ্চমার্গীয় সাহিত্যমূল্য ধারণ করে।
স্বাধিকার, অধিকার, ভালবাসা, গন্ধক, রক্ত, এবং নাইট্রিক এসিডের সংমিশ্রণে এ এক মুক্তির পথ যাত্রা।
Chandana Ure Gache - Ali Reza
বিবর্ণ
চারপাশে ঘটে যাওয়া জীবনের গল্প নিয়ে এই উপস্থাপনা। পরপার্থিব গল্প মায়ায় যেমন উঠে এসেছে মাতৃত্ববঞ্চিত জীবনের একটি অধ্যায়, তেমনি বিবর্ণ গল্পে উঠে এসেছে স্ত্রী এবং সন্তানহারার বেদনা। আড়িখোলা গল্পটি যেমন একটি কিশোর মনের অভিমানকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে, তেমনি হৃদয় ও গায়েন গল্পটি জীবন সংগ্রামের সফল পরিসমাপ্তির গল্প। রম্য অংশে সীমা নামক এক মাঝবয়সী মধ্যবিত্ত গৃহিণীর সাথে স্বামীর সংসারিক খুনসুটির একটি চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। এসব কিছুই আমাদের চারপাশে ঘটে যাওয়া জীবনের গল্প।
বিবর্ণ
আটপুকুরের ফুল
ভূমিকা-
ভেতরটা খালি, গল্পের অভাব, যুতসই প্লট পাচ্ছি না- এমন অবস্থায় সচরাচর বাইরে বের হই। হাঁটতে থাকি। সামনের মোড়টা পার হলেই বিশাল হাইওয়ে। এই হাইওয়ে দিয়ে চাইলে যেকোনো জায়গায় যাওয়া যায়। আমারও ইচ্ছা, যাই।
একা একা বেশিক্ষণ হাঁটা যায় না। একটু আগাতেই, কয়েকগুচ্ছ আলো এসে ভিজিয়ে দেয় অন্ধকারের শরীর। আগ্রহ নিয়ে ঘাড়টা ঘোরাতেই দেখি দুটি যান্ত্রিক চোখ। গাড়িটা আমাকে পাশ কাটিয়ে চলে যায়।
এরই মধ্যে টের পাই আমার সাথে আরেকজন। সেও হাঁটছে। ল্যাম্পোষ্টের আলোর সাথে সাথে পাল্টে যাচ্ছে তার শরীর। বুঝতে পারি, তার কিছু বলার আছে। তবুও থামতে ইচ্ছা করে না। নিজের ছায়ার সাথে আমার কথা হয় না, বহুদিন!
সামনে থাকা অনেক কিছুই ইশারা করে! রাতের নিষিদ্ধ সেই সব ডাক, না শুনে পারি না। বৃদ্ধ পাইকর গাছ, একটা চিঠির লাল বাক্স, পাশে ড্রেন, সেখানে জোড় হারানো একপাটি স্যান্ডেল উল্টে পড়ে আছে। আমি ওদের কাছে যাই। নেড়ে চেড়ে পরখ করি, ভেতরে গল্প আছে কী না।
আটপুকুরের ফুল
তারপর অন্ধকার দুঃসময়
গল্প নিয়ে গল্প
আশরাফ উদ্দীন আহ্মদের গল্প রচনার দক্ষতা স্বীকৃত। সমাজের পিছিয়ে পড়া সামান্য মানুষদের অসামান্য করে উপস্থাপন করা তাঁর গল্পগুলো পাঠককে গভীরভাবে জাগ্রত করবে। নি¤œবিত্ত এবং নি¤œমধ্যবিত্ত বা বিত্ত ছাড়া মানুষকে নিয়েই তাঁর গল্পের আঙ্গিক গল্পের বিষয়, গল্পের অস্থি-মজ্জা। ভাষায় সরলতা এবং তাঁর গল্পের চরিত্রেরা চেনা-জানা মানুষের মুখ। তবে প্রতি গল্পই স্বতন্ত্র কাহিনী সূত্রে গাঁথা। কখনো হয়তো মনে হবে, গল্পের ভাষায় কাব্যিকতায় ঠাসা, কিন্তু পরক্ষণে মনে হবে, আমারই মনের কথাগুলো সাজিয়ে তুলেছেন এখানে। জীবনের কঠিন বাস্তবতাকে তুলে ধরেছেন গল্পের বিষয়ে। তাঁর প্রতিটি গল্পই জীবন-জগতের অর্থাৎ মানুষেরই কথা বলে এবং সে মানুষগুলো হয়ে ওঠে গল্পের একেকটা পাত্র-পাত্রী এবং সেখানেও আশরাফ নিজেকে মিলিয়ে ফেলেন গল্পের চরিত্রে। প্রকৃত কথাশিল্পী হিসেবে তাঁকে এখানে খুঁজে পাওয়া যায়, তিনি হয়ে যান জীবনশিল্পী। মৃত্তিকা সংলগ্ন যে সমস্ত মানুষ, যারা গায়ের ঘাম পায়ে ফেলে দিনগুজরান করেন, জীবনে যাদের কোনো আশা নেই, ভাষা নেই, স্বপ্ন নেই, আমাদের চারপাশে তাদের অবাধ বিচরণ, কিন্তু আমরা তাদের চিনেও চিনি না, দেখেও দেখি না, কতো সামান্য মানুষ তারা, তাদের প্রতিনিধি হিসেবে আশরাফ প্রতিনিধিত্ব করেন গল্পের মাধ্যমে তার পরিচয় পাওয়া যায়।
তারপর অন্ধকার, দুঃসময়
প্রেমালিঙ্গম
ঝুমকি
কত পথ পার হলাম ঝুমকি;
তবু মানুষ চেনা হলো না!
বারো প্যাচের নারী, চোখে জড়িচুমকির খেল্ দেখালো
অমলেশ সেই দেখে দেখে শেষে উন্মাদের খাতায় নাম লেখালো
পত্রিকার শেষ পাতায় ওকে নিয়ে কতো ফিচার হলো
তবুও অমলেশকে কেউ ভালোবাসলো না।
ঝুমকি পৃথীবির সবচে’ হিংস্র প্রাণী মানুষের
গায়ে বিপদের গন্ধ লেগে আছে;
ফাঁক পেলেই নষ্টামি করতে লেগে যায়
কেউ কেউ বলে সত্যিকারের ভালোবাসা নেই
বড় র্দূভাগা ওরা!
সত্যিকারের ভালোবাসাই দেখেনি চোখে; পাবে কোত্থেকে
প্রেমালিঙ্গম
তুমুল কোলাহলে কুড়াই নৈঃশব্দ্য
লেখক পরিচিতি :
অঞ্জন আচার্য। জন্ম: ময়মনসিংহ শহরের প্রাণকেন্দ্র গাঙ্গিনারপাড়ের অধুনালুপ্ত লালালজে (স্থানীয় ভাষায় যাকে লাইলিপট্টি নামে ডাকা হতো)। লেখক মূলতঃ কবি, এছাড়া ভাষার ওপর বিভিন্ন সময় গবেষণার প্রকল্পে কাজ করেছেন। তারমধ্যে উল্লেখ্য, কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সহকারী হিসাবে কাজ করেছেন ‘জেন্ডার ও উন্নয়ন’ বিষয়ে, পাঞ্জেরি পাবলিকেশন্স লিমিটেডে ভাষা বিভাগের দায়িত্ব পালন করেন, বাংলা একাডেমির অধীনে ‘বাংলা ভাষার বিবর্তনমূলক অভিধান’ প্রকল্পের গবেষক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। লেখকের এটি তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ। এছাড়া আরও বেশকিছু গবেষণামূলক গদ্যের বইও প্রকাশিত হয়েছে।
তুমুল কোলাহলে কুড়াই নৈঃশব্দ্য
কেউ থাকে অন্ধকারে – নুরুন্নাহার মুন্নি
‘আপাদমস্তক তোমাকে অনুধাবন করি/নবান্নের ধানের গোলা থেকে বেরিয়ে আসা/ভাপের মতন সে অনুভব/এ আমার অনুভ‚তিকাল’, এই অনুধাবনই নূরুন্নাহার মুন্নির বড় শক্তি। মুন্নি তার কবিতায় সবশুদ্ধ একটি ছবি আঁকতে আগ্রহী, যা কখনো কখনো আসল নাও হতে পারে। কিন্তু দৃশ্যমান সেই ছবিÑ তা যেই তার কবিতা পড়ুক, অনুভব করবেন। তার কবিতায় আরও নজরে আসে শব্দের ব্যবহার। কি নিখুঁতভাবে দেশি-বিদেশি, পরিচিত-অপরিচিত, ব্যবহৃত-অব্যবহৃত শব্দকে সেঁটে দেওয়া যায়, কেমন আশ্চর্যভাবে গেঁথে দেওয়া যায়-তা তিনি দেখান প্রায় প্রতিটি রচনায়।
সমসাময়িকদের সঙ্গে তার তফাৎ বোঝার জন্য অন্য আরেকটি দিকে আলো ফেলা যায়, মুন্নি খুব সাধারণ ঘটনাকেও কবিতার বিষয় করে তোলেন। তার কবিতায় আবেগ আছে, কল্পনা আছে, আছে আলোছায়ার খেলা। কিন্তু প্রকৃত ভাবটিকে প্রকাশের ক্ষেত্রে তা লক্ষ্যচুত হয় না। পাঠককে অল্পবিস্তর সূত্র ধরিয়ে দিয়ে মুন্নি বোকা বানাতে চান না বলেই তার লেখার ভেতরে বেঁচে থাকার তুমুল উত্তেজনা অনুভূত হয়। তার কবিতা ছিন্নভিন্ন, বিপর্যস্ততার ভেতর থেকে প্রাণের সন্ধান করে, সুন্দরের সন্ধান করে, দরদভর্তি কণ্ঠে মানুষের আর্তিকে তুলে ধরে। ‘কেউ থাকে অন্ধকারে’ দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থের ভেতর দিয়ে নির্মম, নিষ্ঠুর সময়ের দিকে নুরুন্নাহার মুন্নির যে যাত্রা, তা কেবল অন্তর্র্দৃষ্টিসম্পন্নের পক্ষেই সম্ভব।
মামুন রশীদ
কবি, সাংবাদিক
১৫ জানুয়ারি, ২০২৪
Kew Thake Andhokare - Nurunnahar Munni
কিসমত আলী অথবা শুন্য
অয়ন্ত ইমরুল।
জন্ম ১২ ই এপ্রিল ১৯৮৭ ইং মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর থানার অন্তর্গত আজিম নগর গ্রামে।পিতা— শাজাহান মিয়া ছিলেন একজন ব্যাবসায়ী।২০০১ সালের মার্চ মাসে তিনি হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
মা— বিউটি বেগম একজন গৃহিণী। ডিগ্রী পরিক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার ফলে পুনরায় আর পরিক্ষা দেয়া হয়নি।বর্তমানে চাকুরীজীবি।দৈনিক যুগান্তর পত্রিকা এবং সমকাল পত্রিকা লেখা ছাপালেও বর্তমানে কোন প্রিন্ট মিডিয়ায় লেখা দিচ্ছি না।তবে
অনলাইন ভিত্তিক ওয়েবজিন—অংশুমালী,কালিমাটি,অপরজন পত্রিকা,ওয়াকিং ডিস্ট্যান্স সহ আরো দু একটা পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখী করছি।প্রকাশিত বই চারটি—
“ছায়া সমুদ্র” অনুপ্রাণন প্রকাশন—২০১৬
“বুদ্ধের ভায়োলিন “তিউড়ি প্রকাশন—২০১৮
” সাদা ধূলির দূরত্বে “ইতিকথা পাবলিকেশন—কলকাতা থেকে ২০২০
এবং ” স্বৈর হাওয়ার হরিণী”পরিবার পাবলিকেশন ২০২০ ঢাকা বইমেলা।
কিসমত আলী অথবা শূন্য
Dwitiyo Shrabone Prothom Kadam
ফাঁদ- মোজাম্মেল হক নিয়োগী
সমাজের উচ্চবিত্ত শ্রেণির বিত্তশালী নারী সাবরিনা যে কিনা নিজেও এক সময় পতিতাবৃত্তি করে বিপুল ধনসম্পদের মালিক হয়েছে এবং নিজের বিলাশবহুল ফ্ল্যাটে নানা কৌশলে-প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে দালালদের মাধ্যমে সুন্দরী তরণীদের নিজের ফ্ল্যাটে রেখে প্রভাবশালীদের মনোরঞ্জন করে। তারই ফাঁদে পড়ে হতদরিদ্র পরিবারের কিশোরী পুষ্প আপন ভগ্নিপতির প্রলোভনে ঢাকায় এসে সাবরিনার বাসাবন্দি হয়ে যৌনকর্মী হতে বাধ্য হয়। পুষ্প ও সাবরিনাকে কেন্দ্র করে এই উপন্যাসে বর্ণচোরাদের চরিত্র উন্মোচিত করে উপন্যাসটি নির্মিত। এক সময় পুষ্প গ্যাং রেপড হলে প্রতিহিংসার আগুনে সে দগ্ধ হয়ে নওয়াব আলীর ওপর প্রতিশোধ নিতে চায়। পুষ্পর জীবন হয়ে ওঠে আরও দুর্বিষহ। এরপরও একটু ভরসা ও স্বপ্নের স্থান: পুষ্পর যৌনবৃত্তির কথা জেনেও সাবরিনার ফ্ল্যাটের দারোয়ান যে কিনা অত্যন্ত পড়ুয়া আবদুল কাদের তাকে ভালোবাসে। এতটুকুন মিষ্টি প্রেম কারারুদ্ধ জীবনে পুষ্পর জন্য যেন নিশ্বাস নেওয়ার সতেজ অম্লজান…
ফাঁদ
সত্যি মুখোশ মিথ্যে মুখোশ
লেখক পরিচিতি :
সাবরিনা সিরাজী তিতির। জন্ম: ২৬শে ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৫। বেড়ে ওঠা ফরিদপুরে। শিক্ষকতা করেছেন ফরিদপুরেই। বর্তমানে ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। প্রকাশিত হয়েছে দু’টি কাব্যগ্রন্থ ‘মেঘ হয়ে যাই’ ও ‘আগুনজল’। একটি গল্পগ্রন্থ ‘রঙের ওপারে’।
সত্যি মুখোশ মিথ্যে মুখোশ
তার নাম ছায়ার মতন – সুলতানা শাহরিয়া পিউ
জীবনের অন্য নাম প্রকৃতি, প্রকৃতি জন্ম দেয় অন্তর্গত ভাবাবেগকে,এই ভাবাবেগই লেখায় কবিতা। যে কবিতা জীবন পাতার শিরায় শিরায় ঘটায় আলোক সংশ্লেষণ! জীবনকে নতুন পাতার মত সতেজ করে, সবুজ করে। কবিতা মুখে নিয়ে জন্ম আমার। ঘুম ভাঙলেই দেখতাম মা পায়চারি করছেন আর কবিতা আওড়াচ্ছেন, হে মোর চিত্ত পূণ্য তীর্থ জাগোরে ধীরে অথবা আমি হব সকাল বেলার পাখী…
নির্ঘুম দুুপুরে ছিল আমার মেঘের সাথে কথা চলাচলি! এমনি করে কবিতা আর প্রকৃতি মিলেমিশে এক হয়ে যেত। ক্রমশ তা হৃদগভীরে আরও প্রস্থিত হতে থাকল মৌন প্রকৃতির মৌনতাতে মুগ্ধ হতে হতে কি এক অসীম রহস্যের হাতছানিতে ছুটে চলল মন! টের পেলাম জীবনের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রকৃতি কেমনে নীরবে তার কাজ করে যায়। তাইতো ছায়া বললে বৃক্ষের কথা মনে আসে। আর বৃক্ষ মনে করিয়ে দেয় পিতা বা মাতাকে।
কিন্তু হঠাৎ একদিন জানলাম এই মৌনই নীরবতা ভেঙে ফুঁসে উঠতে পারে মানুষের অপকর্মের প্রতিবাদে- বজ্রপাত, সাইক্লোন, জলোচ্ছাস, আগ্নেয়গিরির অগ্নুপাত, বন্যা, তুষারঝড়ের রুপে। এই প্রকৃতি আমাদের প্রতিবাদী হতে যুদ্ধবাজ হতে শেখায়। আবার নম্রতার থেকে শেখায় ধ্যানমগ্ন হতে, অসীম সহ্যক্ষমতার অধিকারী হতে। ছোটবেলায় সেদিন প্রথম গেলাম শহীদ মিনারে প্রভাত ফেরীতে সেদিন শুনলাম একুশের প্রথম কবিতা- জানলাম রমনার ঊর্ধ্বমুখী কৃষ্ণচূড়ার কথা- জানলাম বাংলার সবুজ জমিনে লাল সূর্যের কথা! আস্তে আস্তে বুঝতে পারলাম প্রকৃতি আমাকে কবিতা লেখাচ্ছে। অনুভব করলাম ভালোবাসি প্রকৃতিকে, প্রেমে পড়েছি! আমার লেখার মূল উপজীব হয়ে উঠেছে প্রকৃতি প্রেম। প্রকৃতি নাই আসলে ঈশ্বর বন্দনটি অথচ সবকিছু ছাপিয়ে মনের ভেতর যে ক্ষরণ টের পাই- তার একটাই জিজ্ঞাসা- যীশুখৃষ্টের জন্মস্থানে পঞ্চাশ হাজার গর্ভবতী মায়েরা কি নির্বিঘ্নে প্রসব বেদনা ভুলবে? বিশ্ব শান্তির পক্ষে কি নবজাতকেরা গেয়ে উঠবে গান? কেমন পৃথিবী চিনবে ওরা? ওদের প্রাণে কি জাগবে নতুন পাতা, সবুজ গাথা? নতুন বছওে ওদের কানে কি পৌঁছুবে আমার কবিতা?
Tar Nam Chayar Moton
There are no reviews yet.