Additional information
Weight | 0.120 kg |
---|
$ 1.65
সিদ্দিক প্রামাণিকের কবিতায় টুকরো আখ্যান আর নাট্যমুহূর্তের ব্যবহার অভিনব। রহস্য আর রূপকের দক্ষ আড়ালে তিনি বলে যান নিজের সময়, জনপদ আর মানুষের বিচিত্র গল্প। পাঠক বিস্ময়ের অভিঘাতে থমকে যান, কখনো শোকে আর্দ্র, কখনো ক্রোধান্ধ হয়ে পড়েন। সবশেষে কবিতা-ই তার সারসত্য নিয়ে জেগে থাকে।
বাংলা কবিতায় সিদ্দিক পরিব্রাজকের মতো আসেননি, এখানে থাকতে এবং রাজত্ব করতেই এসেছেন। আতশবাজির খেলা নয়, বারুদের বিস্ফোরক ক্ষমতা-ই তাঁর পছন্দ। সহজেই বোঝা যায় এই কবির জামার আস্তিনে আরো অনেক জাদু উন্মোচনের অপেক্ষায়।
কবি ও কবিতার জয় হোক।
সরদার ফারুক
Weight | 0.120 kg |
---|
অরণ্যক তপু। জন্ম: ১৯৯৪ সালের ৮ই সেপ্টেম্বর, ঢাকার ঝিগাতলা। পৈত্রিক নিবাস বরিশালের পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি উপজেলায়। বর্তমানে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত। এটি লেখকের প্রথম প্রকাশিত বই।
ব্যথিত ভায়োলিন
লেখক পরিচিতি :
সুলতানা শাহরিয়া পিউ। জন্ম: ২রা অক্টোবর। লেখালেখি, আবৃত্তি ও সঙ্গীতচর্চা তার শখ। অনুপ্রাণন সম্পাদনা পর্ষদ এর সদস্য, বর্তমানে দীপ্ত টেলিভিশনের স্ক্রিপ্ট রাইটার হিসেবে কর্মরত আছেন। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: ‘মেঘের সাথে কথা’। অনুবাদ কাব্যগ্রন্থ: ‘নিমগ্ন জলধারা’। স্ক্রিপ্ট সঙ্কলন: ‘আমরা করব জয়’। গীতিকবিতার অনুবাদ: ‘অচিন’। গল্প সংকলন: ‘মেঘের দেশে ফিরে যাবার গল্প’।
আমার দিনগুলো রইলো অসম্পূর্ণ
রনক জামান। জন্ম:১৬ই ডেসেম্বর ১৯৯১, মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলায়। লেখালেখির হাতেখড়ি ছোটবেলাতেই কবিতার প্রতি মুগ্ধতা থেকেই তার প্রতি ভালোবাসা। এটাই কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ। এছাড়াও প্রকাশিত হয়েছে, যৌথ কবিতাগুচ্ছ ‘মায়ানগরীর বৃষ্টিকথন’, কবিতার ই-বুক ‘শরীর ছোঁয়া আঙুলগুলো’ এবং অনুবাদ উপন্যাস ‘ললিতা’।
ঘামগুলো সব শিশিরফোঁটা
সঞ্চয় সুমন। ঢাকাবাসী এক কবি। যে শুধু কল্পনার রঙে আঁকে শব্দ খেলার মাঠ। এই গ্রন্থটি কবির প্রথম কাব্যফসল।
গুপ্ত সমরে মুক্তির ঠিকানা
আলী রেজা। জন্ম: ১৯৫৭। মুক্তিযুদ্ধে আলোড়িত কবি, সত্তর দশকে মূলত ছোটকাগজে লেখালেখি শুরু করেন। সদ্য অবসরে যাওয়া একটি রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠানের বিপণন ব্যবস্থাপক। এটি কবির প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ।
আলী রেজা
তুহিন দাস, কবি ও লিটলম্যাগ কর্মী। জন্ম: ১১ জানুয়ারি ১৯৮৫, জল ও কবিতার শহর বরিশালে। ছোটবেলা থেকেই লেখালেখি শুরু করেন। প্রথম কবিতার শিরোনাম ‘সমাধিপৃষ্ঠা’। ২০০০ সালে ‘আরণ্যক’ সাহিত্যপত্র সম্পাদনা শুরু করেন। সম্পাদনার জন্যে ২০১১ সালে ‘চিহ্ন সন্মাননা’ পেয়েছেন। বর্তমানে ‘আরক’ পত্রিকা ও প্রকাশনায় কর্মরত আছেন। তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ছয়, ‘বনসাই প্রকল্পের মানুষ’ ‘অসুখময় দিনরাত্রি’ ‘বিষাদনীলঘোড়া’ ‘কাজল বিক্রেতার স্বপ্ন’ ‘বাগান সিরিজ’ ও ‘দূরের পাড়া কাছের বাড়ি’।
কাঠের মুখ
রাজন্য রুহানি। পরিবারের দেওয়া সনদসাক্ষ্য নাম মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। জন্ম: ২রা নভেম্ভর ১৯৮০, জামালপুর জেলা শহরের হাটচন্দ্রায়। কলেজে পা দেবার সাথে সাথেই সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন। স্থানীয় কয়েকটি দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকার বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। মফস্বল সাংবাদিকতার পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে না পেরে বারবার কবিতার কছেই ফেরা। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং। ১৯৯৮ থেকে কবিতার ভাঁজপত্র শব্দদূত সম্পাদনার সাথে যুক্ত। ঐ বছরই অন্যান্য লেখক সহযোগে আলোচনাগ্রন্থ- ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ; আতিয়ার রহমানের ৭টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। এটি লেখকের প্রকাশিত এককবই।
গল্প সমাপ্তির গান
লেখক পরিচিতি :
শঙ্করী দাস। জন্ম: ৮ই মে, ১৯৫৮ সনে নিজ জেলা জামালপুরে। কবি প্রকাশিত অন্যান্য গ্রন্থগুলোÑ গল্প: ‘প্রতিবিম্ব ও অন্যান্য গল্প’ ‘জলমাটির গল্প’ ও ‘রাহুর চন্দ্রগ্রাস’। কবিতাÑ ‘ঘাসবোনা গ্রাম তাঁতবোনা গ্রাম’। স্মৃতিচারণমূলকÑ ‘গণমানুষের স্মৃতিতে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ’। গল্পের জন্যে পেয়েছেন পাক্ষিক ঐকতান (বর্ধমান) পত্রিকা পদক। শিশু কবি রকি সাহিত্য পুরস্কার ও নক্ষত্র সাহিত্য পুরস্কার।
বিহান বেলার ঈশ্বর
সৈয়দ সাইফুর রহমান সাকিব। জন্ম: ১৯৭৮ সালে বরিশাল জেলা সদরে করিমকুটির নামক স্থানে। তার লেখার বিষয় মূলতঃ কবিতা। সময় নাট্যদলের সাথে একযুগ পার করেছেন। গানও লিখতেন কিন্তু বন্ধুবরের প্রয়ানে, অভিমানে আর সেপথ মারাননি। বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয়ে কর্মরত থাকলেও নিজেকে একজন কবিতার শতরঞ্জি মোড়ানো শ্রমিক বলেই মনে করেন। এটি কবির প্রথম বই।
রূপোর দ্যুতি
মুর্শিদা জামান। জন্ম: ১৯৮৩ সনে বর্তমান বরিশাল বিভাগের ঝালকাঠি জেলায়। শৈশব ও বেড়ে ওঠা দক্ষিণের খুলনা শহরে। বাংলায় অনার্স সহ এমএ করেন ইডেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখির সূত্রপাত। কবিতা লেখার পাশাপাশি বিভিন্ন ছোট কাগজ ও সাহিত্য বিষয়ক মাসিক পত্রিকাতে ছোটগল্প প্রকাশিত হয়েছে। প্রকৃতি ও পশু-পাখির প্রতি অগাধ ভালোবাসা ও সখ্যতা রয়েছে। বর্তমানে তিনি লেখালেখি নিয়েই ব্যস্ত।
অদৃশ্য ছায়ার প্রজাপতি
লেখক পরিচিতি :
হান্নান হামিদ, লেখক নাম কালের লিখন। জন্ম: আগস্ট, ১৯৮৪। জামালপুর। ‘বিশ্বাস শুধুই নিঃশ্বাস’ লেখকের প্রথম বই।
বিশ্বাস শুধুই নিঃশ্বাস
সাঈদা মিমি। জন্ম: ২৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৮। বরিশালে। শৈশবের পুরোটাই এবং অর্ধেক কৈশোর কেটেছে পদ্মাপাড়ে, মানিকগঞ্জের ঘোনাপাড়া গ্রামে। লেখালেখির শুরু ছাত্রজীবনে। প্রথম প্রকাশিত হয় ইত্তেফাকে। ফ্রীল্যান্স সাংবাদিকতা, স্কুল মাস্টারিং, বায়িং হাউজের এডমিন, হাউজিং কোম্পানির এক্সিকিউটিভ ইত্যাদি বিচিত্র কর্মজীবন মেষে অতঃপর গৃহিণী। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘সব নিয়ে গেছে এক সময়ের লুটেরা বাতাস’ ‘ফারাও কুমারী’ ও ই-বুক ‘কীর্তনখোলা’।
একজন মৃতের ডাইরি
লেখক পরিচিতি :
আহমেদ মেহেদী হাসান নীল। জন্ম: ১১ই নভেম্বর, ১৯৯১ইং। দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলায়। বেড়ে ওঠা বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্থলবন্দর হিলিতে। বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে অধ্যায়নরত। এটি লেখকের প্রথম বই।
কষ্টের আধুনিক হিমাগার
ভূমিকা
অনেকগুলি গল্প কবিতা ও দু’একটি উপন্যাস লিখে ফেলার পর হঠাৎ মনে হলোÑ ছোটদের জন্য তো কিছু লেখা হয়নি! তখন মনে পড়লো আমার ছোটবেলায় গ্রামীণ আবহে শোনা গল্পগুলির কথা। যার ফলশ্রুতিতে এ বইটির সৃষ্টি। ‘সোনার নাও পবনের বৈঠা’ বইখানি যদি ছোটদের একটু আনন্দ দিতে পারে তবে নিজেও আনন্দিত হবো। এ গ্রন্থ সৃষ্টি হওয়ার মূলে যে গল্পগুলি তার জন্য যাঁদের কাছে আমি ঋণী তাঁদের নাম করতে গেলে প্রথমেই আমার মেজো’পা (মিলা’পা), কাজিন সেতন আপা ও বিন্দুবাসিনী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের বাংলার শিক্ষক বীথি আপার নাম করতে হয়। তাদের কাছে শোনা গল্পগুলি আমার মনন গঠনে সাহায্য করেছে।
এ বইয়ের পা-ুলিপি তৈরীতে যিনি সর্বোতভাবে সাহায্য করেছেন তিনি আমার প্রেরণাগুরু প্রয়াত সাংবাদিক জনাব ফরহাদ খাঁ। তাঁর ইচ্ছা ছিল পা-ুলিপিখানির সর্বশেষ ত্রুটি-বিচ্যুতি সংশোধন, পরিমার্জন ও সম্পাদনা করবেন। কিন্তু ঘাতকের নিষ্ঠুরতায় তাঁকে অসময়ে চলে যেতে হলো বলে সে আশা পূর্ণ হলো না। তাই শেষ কাজটুকু আমার ছোট ছেলে অর্ণব হাসনাতকে দিয়ে করাতে হলো। আমার এ বইটি সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমার বড় ছেলে সুবর্ণ আহসান আমাকে সর্বপ্রকারে উদ্দীপনা জুগিয়েছে এবং সাহায্য সহযোগিতা করেছে। সাংবাদিক ফরহাদ খাঁর পর যে দুই ব্যক্তিত্বের নাম উল্লেখ করতে হয় তার একজন হলেন চাকরিক্ষেত্রে আমার একসময়ের বস জনাব শামসূয জাহান নূর ও অন্যজন সাংবাদিক ভাই ও বন্ধু কাজী সালাহ উদ্দীন আহমেদ। এ ছাড়া আমার লেখকবন্ধু মহিউদ্দীন আকবর এ বইয়ের গল্পগুলি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ছেপে ও বিভিন্নভাবে আমাকে উৎসাহ উদ্দীপনা জুগিয়েছেন।
উপরোল্লিখিত ব্যক্তিবর্গের প্রতি আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। গল্পগ্রন্থটির ভুলত্রুটি ও ভালমন্দ পাঠক সুধীজন ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখে মন্তব্য জানালে বাধিত হবো।
লেখক।
সোনার নাও পবনের বৈঠা
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়েছে লেখকের নাম হাসান মাহবুব। তিনি নাড়–গোপাল দত্ত অথবা ইসমাইল আহমেদ নন। তিনি রবীন্দ্রনাথ বা আগাথা ক্রিস্টি নন। তিনি দূর আকাশের নীল নক্ষত্র, ধোঁয়া ওঠা কফির মগ, বাজারে মেয়েটির অপরিচ্ছন্ন অন্তর্বাস, ট্রাফিক পুলিশের সিগন্যাল বাঁশি অথবা লোম কাটার মওসুমের ভেড়ার দীর্ঘশ্বাসও নন। তিনি লেখেন। তবে ‘তিনি’ই লেখেন কি-না এই নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ লেখার মতো পরিশ্রমের কাজে বছরের পর বছর এত শ্রম দিয়েছেন, দুটো বইও বের করেছেন (প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত এবং আনন্দভ্রম) তার সাথে এসব ঠিক যায় না। এত সব প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও তিনি হাসান মাহবুব হবার চেষ্টা করছেন এবং তারই ফলশ্রুতিতে আরো একটি বই প্রকাশ করে ফেললেন। তিনি সকলের দোয়া প্রার্থী!
নরকের রাজপুত্র
আত্মবিস্মৃত এবং আত্মবিস্মৃতিপ্রবণ এক জনসম্প্রদায়ের নাম ‘বাঙালি’। বাঙালি বারবারই তার আত্মপরিচয় ভুলে গিয়েছে, ভুলে থেকেছে, ভুলতে চেয়েছে এবং ভুলে যেতে চায়। আত্মপরিচয়ের ক্ষেত্রে বাঙালি কখনো উচ্চাভিলাষী, কখনো হীনমন আবার কখনো-বা বিভ্রান্ত। এই জনসম্প্রদায় আত্ম ভুলে বারবারই অপরের রঙে নিজেকে রাঙিয়ে নিয়েছে, অপরের পরিচয় গায়ে মেখে গৌরব বোধ করেছে ও করছে। এমনকি, তাকে কোথাও বাঙালি বলে চিহ্নিত করা হলে কিংবা বাঙালি বলে চিহ্নিত হয়ে পড়লে সে হীনমন বোধ করেছে এবং করে থাকে। তথাপি ‘বাঙালি’ শব্দটির প্রতি এই জনসম্প্রদায়ের রয়েছে এক অদ্ভুত মোহ। যদিও-বা সে ধার করা পরিচয়টিকেই তার আত্মপরিচয় হিসেবে প্রাধান্য দেয়, কিন্তু সবকিছুর সাথেই আবার ‘বাঙালি’ শব্দটিকেও জুড়ে রাখতে চায়। হয়তো-বা এটা করেও সে আড়ালে, নিভৃতে একান্তে ভীষণ লজ্জা বোধ করে থাকে আর নিজের কাছে থেকেই নিজের মুখ লুকাতে চায়। এমনই হীনমন এই জনসম্প্রদায়। ইতিহাসের কোনো কালে যদি এমন দেখা যায় যে, এই জনসম্প্রদায় বাঙালিত্বের জয়গান করছে ও নিজেকে সেই নামরূপে জাহির করছে, তবে, তার বহুসহস্রাব্দের ঐতিহাসিক অবস্থান বিচারে মনে হতে পারেজ্জতা নিতান্তই কালের ভ্রান্তি কিংবা দীর্ঘ স্বপ্নের মাঝে সামান্যকালের অঘটনজনিত ছেদ। কিন্তু, এটি তো অকাট্য সত্যি যে, তার বাঙালিত্ব প্রকৃতই তার অস্তিত্বের ভিত্তি, সত্তার আধার। ফলে একে মুছে ফেলাও যায় না। কখনো-বা মুছে ফেলতে চায় কিন্তু, পারে না, এর কারণও এই যে, বাঙালিত্ব তার শিকড় যা তার রক্তে বিস্তৃত এবং ভূমিতে প্রোথিত। এ-ই তার দ্বিধা আর দ্বন্দ্বের যুপকাষ্ঠ। বাঙালি তার অস্তিত্বের সূত্রপাতে, উত্থানে, বিকাশে ও বিস্তারে সভ্যতার বিশেষ বৈশিষ্ট্যে এবং ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে সমাজ বিকাশের কার্যকারণগত জটিলতায় প্রায় জীবন্মৃত। সভ্যতা বিকাশের কালপরিক্রমা ও সংঘটনাসমূহের দ্বিধান্বিত পরিনামমুখ বাঙালিকে এমন এক দ্বিধায় আটকে রেখেছে যে, তার এই অবস্থার একটাই শিরোনাম হতে পারে ‘ত্রিশঙ্কু’। এ-ই তার সংকট।
বাঙালির আত্মপরিচয়ের সংকটই প্রধান প্রতিপাদ্য এই আলোচনায়। কেমন তাদের আত্মপরিচয়ের স্বরূপ? বাঙালি, একটি জনসম্প্রদায় যাদের আত্মপরিচয় চিহ্নিত হয় ‘বাঙালি’ পারিভাষিক শব্দটি দিয়ে। এই জনসম্প্রদায় কবে বাঙালি বলে চিহ্নিত হলো আর কীরূপে ও কীসের ভিত্তিতেই-বা এই বাঙালিত্ব চিহ্নিত হলো তা যথেষ্ট অনুসন্ধানের বিষয়। তথ্য পাই যে আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতকের দিকে ঐতরেয় আরণ্যকে ‘বঙ্গা’ শব্দটির উল্লেখ পাওয়া যায়। পাণিনির অষ্ট্যাধ্যায়ীর ভাষ্যে খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে ‘সুহ্মাঃ, পুণ্ড্রাঃ, বঙ্গাঃ’র উল্লেখ দৃশ্যমান রয়েছে। এবং সহস্রাব্দের পুরোনো চর্যাগীতিতেও বাঙ্গালী, বঙ্গাল (দঙ্গাল?) নামের দেশের উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু, সেইকালে বা সেইকাল থেকেই ‘বাঙালি’ নামের কোনো জাতিত্ববোধের জনসম্প্রদায় পাওয়া যায় না, যদিও সেকালে জনসম্প্রদায়ের অস্তিত্ব বিরল ছিলো না। ফলে অনুমান সহজ যে আদিতেই ‘বাঙালি’ শব্দটি জাতীয়তা কিংবা জাতিসত্তার পরিচয়জ্ঞাপক কোনো পরিভাষা ছিলো না। বরং এই শব্দটি একটি জনসম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক পরিচয়-পরম্পরার সাক্ষ্য বহন করে। জাতিসত্তা চিহ্নিত করণের ও জাতীয়তা নির্ধারণের নিমিত্তে মানুষের যে চেতনা, জ্ঞানপ্রবণতা ও মনোভঙ্গি তা একেবারেই নতুন; অদূর অতীতের উনিশ, বিশশতকের মানুষের আধুনিক উন্মাদনার ফল হলো জাতীয়তাবোধ। আরো স্পষ্ট করে বলা যায় যে, তা আসলে পাশ্চাত্যের কিছু দেশ থেকে আসা একটি ধারণা। এ-ও স্বীকার্য যে মানুষের সাংস্কৃতিক, ভাষাতাত্ত্বিক কিংবা নৃতাত্ত্বিক আত্মপরিচয়ের ঠিকুজি অনুসন্ধান তাদের হাতেই শুরু। আর আমরা তাদের উপনিবেশের থাবায় পড়ে তাদেরই উদ্যোগে প্রায়, তাদের জ্ঞান-বিজ্ঞান, সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক তৎপরতার কল্যাণ বা অপকল্যাণে আমাদের আত্ম-অহংকারের ভিত্তি খুঁজতে গিয়ে এই ‘বাঙালি’ পরিভাষাটি পেয়েছি আমাদের জাতি-পরিচয়ের স্মারক রূপে। জ্ঞান সাধক আহমদ শরীফ উল্লেখ করছেন এভাবে যে, ‘সুতরাং আজকের সংহত বাঙালী জাতি গড়ে উঠেছে বিদেশী বিজাতি-বিভাষীর শাস্ত্র-সংস্কৃতি, জীবন-জীবিকার সম্পৃক্ত জীবনচর্যা গ্রহণ করেই।’১ এ-ই আসলে ভারতবর্ষের মানুষের এবং বাঙালির উপনিবেশ যাপনের ফল। উপনিবেশের কারণে বাহিরের জ্ঞানের সংস্পর্শে বাঙালিরা নিজের জ্ঞানচেতনাও পেয়েছে এবং নিজস্বতায় চিন্তা করতে গিয়ে তার কিছু দ্বিধাও এসেছে অনিবার্যতায়। বাঙালির এখনো দ্বিধাঙ্কিত প্রশ্ন এই যে, এই বাাঙালি জাতিত্বের ভিত্তি কি? ভিত্তি কি তার শিকড়ভূমি, সংস্কৃতি নাকি ভাষা? কেন না, পাশ্চাত্যের জ্ঞান এই বিষয়ক নির্দিষ্টতা দেয় না। বিশ^জুড়েই, জাতিসত্তা কিংবা জাতীয়তার ভিত্তি কী হবে তার কোনো বিষয়গত ও তাত্ত্বিক নির্দিষ্টতা নেই। যদিও বিষয়টি স্থির নয়, তবু, সাংস্কৃতিক ভিত্তিকেই অধিক গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারে নানা কারণেই। বাঙালির জন্য বিবেচনা এই যেজ্জবঙ্গ বা বঙ্গাল প্রাচীন, তার মানুষের পরম্পরা প্রচীন ফলে তার সংস্কৃতিও প্রাচীন। বঙ্গালের মানুষের ভাষাটির নাম যে বাঙলা ছিলো এই সাক্ষ্য পাওয়া দূরহ। ভাষাতাত্ত্বিক বিচারে ‘বাংলা’ নামে যে ভাষাটির পরিচয় মেলে সেটি অন্তত বাঙালির প্রকরণ পরম্পরার চেয়ে পুরোনো নয়। প্রায় দেড় হাজার বছর পূর্বে বাংলা নামের ভাষাটির প্রতিষ্ঠিত লিখিত ও কথ্যরূপ পাওয়া যায়। কিন্তু, বাঙালির সাংস্কৃতিক প্রবাহ ঠিক কতো পুরোনো তা নির্দিষ্ট করে নির্ণয় করা যায় না। সেটি সুনির্দিষ্ট করে নির্ধারণ করা না গেলেও ঐতিহাসিক নিদর্শনগত ভিত্তির গণনা যে তা প্রায় পাঁচ সহস্রাব্দেরও পুরোনো। খ্রিস্টপূর্ব পনের’শ অব্দের কাছাকাছি সময়ে ভারতবর্ষে আর্যগণের আগমনেরও অনেক আগের নানান সাংস্কৃতিক উপাদান, বিশ^াস ও লোকচর্চা বাঙালির বর্তমান সংস্কৃতিতে এখনো বিরাজমান। ফলে, সংস্কৃতিই কি নয় বাঙালির যথার্থ আত্মপরিচয়ের স্মারক? সুতরাং, বলা যায় বাঙালির যথার্থ পরিচয় তার সংস্কৃতিতেই মেলে। তবু ভাষাভিত্তিক পরিচয়টিও অগ্রাহ্য করা যায় না। আর আধুনিককালে এসে জাতিপরিচয়ের ভিত্তিকারণ হিসেবে ধর্মকে গ্রহণ করার প্রবণতাও এই বিষয়ক গ্রাহ্যতা-অগ্রাহ্যতার সীমানা ভেঙেছে। এরই ফলে বাঙালির আত্মপরিচয়ের বিবেচনাটিই আজ বিভ্রান্তির করালে, হুমকির মুখে। বলা যায় তার আত্মপরিচয়ের ঠিকুজি যেন লুট হয়েছে।
বাঙালির আত্মপচরিয়ের সংকটটি অন্য আর কিছুই নয়, তার সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত বিভ্রান্তির পরিনাম যা বিভিন্ন কালে ঔপনিবেশিক শক্তির প্রভাব বলয়ে থেকে বাঙালির সমাজচৈতন্যে প্রবেশ করেছে। বাহিরের শক্তি যেমন বাঙালির সাংস্কৃতিক, ভাষাভিত্তিক আত্মপরিচয়টিকে ভুলিয়ে দিতে চেয়েছে এবং চাইছে, তেমনই বাঙালি নিজেও অনেকাংশেই তার বাঙালিত্বকে আর মনে রাখতে চায় না বা অন্যভাবে চিনতে চায় নিজেকে। তারা অন্য কোনো পরিচয়ের গৌরব…
বাঙালির দ্বিধার চলক
নিজস্ব অন্ধকার থেকে ছড়িয়ে যাচ্ছে ঢেউ—চারিদিকে অনাহুত স্বপ্নের প্রলাপ। তুমুল তীব্রতায় প্রবাহিত স্বপ্নের মতন হাজির হয় আর্য-অনার্যের প্রতিবিম্ব। মুখোমুখি দাঁড়িয়ে থাকে অসমাপ্ত সিঁড়ি। সেখান থেকেই শুরু হয় ‘অনার্যের সাইকেল’। চলতে থাকে। চলতেই থাকে। সহস্র অশ্বখুর আর মায়ার বাঁধন কেটে নিজস্ব আয়নার দিকে। এমন বিসর্জন কিংবা আত্মআবিষ্কারের প্রলোভন নিয়ে হাজির হয়েছে বাংলা অঞ্চলের পুরাতীর্তি ও সাগরীয় সনেটের কাক্সিক্ষত একগুচ্ছ সিঁড়ি। নির্দ্বিধায় উড়াল দেয়া যায় সে পথে—ফেলে আসা ঠিকানার দিকে কিংবা সমসাময়িক তৈলচিত্রের অভ্যন্তরে। প্রস্তুুতি পর্ব পেরিয়ে আসা অগ্রসর ক্ষুধার পথিককে এই সচেতন নির্মাণের তীব্র দহন ও সাইকেলের রূপ-রস আরো উজ্জ্বল করে তুলবে।
অনার্যের সাইকেল
মানুষের কখন যে কী হয়―তা হিসাব করে কেউ কখনো বলতে পারে না! হঠাৎ করেই মানুষ অন্যরকম হয়ে ওঠে। এই যে শফিকের সঙ্গে একই অফিসে কতদিন একসঙ্গে সকাল-সন্ধ্যা কাজ করেছে নমিতা―কোনোদিন তাকে এত মনোযোগ দিয়ে দেখেনি শফিক। কিন্তু আজ যে তার কী হলো!
নমিতা আজ খুব সুন্দরভাবে একটা শাড়ি পরে অফিসে এলো। আর আজই শফিকের খুব ভালো লেগে গেল নমিতাকে। তাই, অফিস-ছুটির পর সে তাকে রেস্টুরেন্টে চা-কফির আমন্ত্রণ জানায়। কিন্তু নমিতা তাকে জানালো, আজ তার হাতে একদম সময় নেই। আজ তাকে পাত্রপক্ষ দেখতে আসবে বাসায়। আর তাকে, তাদের পছন্দ হলে আজই বিয়ে হয়ে যেতে পারে!
নমিতা একরকম বাধ্য হয়ে চলে যায় শফিককে পাশ কাটিয়ে। কিন্তু শফিকের খুব মনখারাপ হয়। আর বাসায় ফিরতে ইচ্ছে করে না তার। মনটা তার ভীষণ উতলা হয়ে ওঠে নমিতার জন্য। সে একমুহূর্তে কেমন যেন হয়ে যায়! নমিতাকে কিছুতেই সে ভুলতে পারে না।
সে নমিতাকে খুব ভালোবেসে ফেলেছে। আর ভাবে―নমিতাকে ছাড়া তার চলবে না। আজ নমিতাকে খুব ভালো লেগেছে তার। ভাবতে-ভাবতে নমিতার জন্য শফিক যেন একেবারে পাগল হয়ে যায়! কিন্তু নমিতার যে আজই বিয়ে হয়ে যেতে পারে!
শফিক রাস্তায় হাঁটতে থাকে উদভ্রান্তের মতো। সে কি আজ বাসায় ফিরতে পারবে? শেষ পর্যন্ত কী হয়েছিল―তা জানতে হলে পড়তে হবে এই অনবদ্য একটি বালিকার গল্প।
এটি ১০০% রোম্যান্টিক প্রণয়োপাখ্যান।
একটি বালিকার জন্য
সমুদ্র ও অচল কয়েনগুলি
সূর্যের ঘরের নামতাতে
জন্ম ১৯৪৭ সালের ১৪ই এপ্রিল। টাঙ্গাইলের মীরের বেতুকা গ্রামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করেন। করটিয়ার সা’দত কলেজ ও স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করেছেন। সহকারী সম্পাদক ছিলেন সাপ্তাহিক বিচিত্রা ও দৈনিক সংবাদ Ñএ। ১৯৭৮-৮০ সালে ছিলেন গণচীনের রেডিও পেইচিং এর ভাষা বিশেষজ্ঞ। ১৯৯৪-২০০৪ সালে ছিলেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ, গবেষণা, শিশুতোষসহ গ্রন্থের সংখ্যা ৭০ এর বেশি।
গল্প সংগ্রহ
বিশ্বাস কথাটা উঠায় সেদিন বন্ধু আমাকে বিশ্বাস নিয়ে মস্ত বড় একটা ক্লাস নিয়ে নিল। আমাকে একজন নিষ্পাপ মানুষের মতো প্রশ্ন করল, বিশ্বাস! বিশ্বাস কী জিনিস তা কি জানো? সে নিজেই তার উত্তর দিল, বিশ্বাস হলো মানুষের মনের রং। আবার এটাকে একটা রংধনু বলতে পারো। দেখ না রংধনুর রং যেমন সাতটা তেমনি বিশ্বাসের রং অনেকটা। কেউ বিশ্বাস করে কেউ অবিশ্বাস করে। আবার কেউ কেউ জীবন মৃত্যুর মাঝখানে বসবাস করার মতো অবস্থায় পড়ে। না পারে বিশ্বাস করতে আবার না পারে অবিশ্বাস করতে। জগতে এই একটা মুহূর্ত খুবই বিভীষিকার। বুঝলে?
শেষ রজনীর চাঁদ
প্রকাশকের কথা-
বাংলা উপন্যাসে এক নতুন সংযোজন : বাংলা উপন্যাস এমনকি বিদেশি কোনো উপন্যাস এরকম কোনো উপ-কাহিনি দিয়ে শুরু এবং পৌরাণিক কাহিনি দিয়ে শেষ হয় বলে জানা নেই আমার। শরীফ শামিল এর উপন্যাস ‘দীর্ঘ রাত্রির বিরুদ্ধে জেগে থাকা’ পড়ে সেরকমই মনে হলো আমার। গত তিন চার বছরে আমার সাহিত্য পত্রিকা ‘অনুপ্রাণন’-এ তাঁর বেশ কয়েকটি গল্প ছেপেছিলাম, ওই গল্পগুলো পড়েই শরীফ শামিলকে মনে হয়েছিল একজন স্বতন্ত্র ধারার লেখক।
তাঁর উপন্যাসে স্বপ্ন আশা-আকাঙ্খা, হতাশা প্রেম কাম, নীরব বিরহ গ্রাম্য আচার-সংস্কার-কুসংস্কার, শোষক শোষিতের দ্বন্দ্ব সংঘর্ষ, লোভ হিংসা, সর্বোপরি মানুষের মনুষ্যত্ব মনস্তত্ত্বকে তিনি অল্প কথায় যেভাবে প্রকাশ করেছেন, তা অসাধারণ বলা যায়। একটি দু’টি বাক্যের মাধ্যমে তিনি একেকটা পরিচ্ছদকে তুলে ধরেছেন এই উপন্যাসে; তাঁর এই উপস্থাপন কৌশলটি এবং কৌতুক ও ব্যঙ্গাত্মক শব্দ প্রয়োগগুলো আমাকে মুগ্ধ করেছে। তাঁর চরিত্রদের কিছু সযাং ভাষা ও আঞ্চলিক ভাষা, মেয়েলি গীত, কাহিনি ও জাউলি গীত উপন্যাসটিকে বিশ্বাসযোগ্য ও প্রাণবন্ত করে তুলেছে। উক্ত উপন্যাসে ঐক্যের বিজয় দেখানো হয়েছে সেটা খ-কালিন বিজয়; চিরকালিন নয়- এটাই উপন্যাসের আরেক সার্থকতা বলে মনে হয়েছে আমার। তাছাড়া উপন্যাসের ভাষা-পরিভাষা অলংকার উৎপ্রেক্ষা উপমা অনুপাস-এর ব্যবহারও মুগ্ধ করার মতো। অতিবাস্তবতা ও যাদুবাস্তবতাকেও সার্থকভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি এই উপন্যাসে।
শরীফ শামিল-এর ‘দীর্ঘ রাত্রির বিরুদ্ধে জেগে থাকা’ উপন্যাসটি পাঠান্তে সকল শ্রেণির পাঠক মুগ্ধ হবেন বলেই আমার বিশ্বাস। তবে পাঠকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।
দীর্ঘ রাত্রির বিরুদ্ধে জেগে থাকা
ফারহানা খানম। জন্ম: ১৯শে এপ্রিল ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী এলাকায়। গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের সন্দীপে। ‘ভুগোল ও পরিবেশ’ বিষয়ে স্নাততোত্তর ডিগ্রী অর্জন করে ব্যাংকে চাকুরি শুরু করলেও বর্তমানে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত। নয় ভাই-বোনের মাঝে সবার ছোট বলেই আদরও পেয়েছেন বেশি। প্রথম প্রকাশিত বই, ‘ইছামতি’ (কলকাতা থেকে প্রকাশিত)।
তৃষ্ণার্ত বালুতট
“ও ঘুমায়
আমার ত্বকের নিচে সারাদিন
রাতে
ওকে ডেকে তুলি
আমি বাঁচি
আমার কুকুরগুলোর জন্য
ওরা
অশান্ত হয়ে উঠেছে
ওরা
আমার ত্বক
চেটে
ফুটো করে ফেলবে”
Girls of Hongkong, A collection of Bangla Poems By Shishir Azam
মাহবুব মিত্র বিশ্বাস করেন মানুষই শিল্প; মানবতাই ধর্ম। মানুষবিহীন পৃথিবী শস্যহীন প্রান্তরের মতো। তিনি মনে করেন সৃষ্টি জগতের শ্রেষ্ঠ শিল্প মানুষের সৌন্দর্য। তাঁর প্রিয় বিখ্যাত দু’টি উক্তিÑ “মানুষ দেখার আনন্দে তুমি কখনো ক্লান্ত হয়ো না”, “ভুল মানুষের কাছে আমি নতজানু নই।” নীতির সাথে আপোসহীন চির প্রতিবাদী সতত ডানার মানুষ এক ক্লান্তিহীন গেয়ে যান ভালোবাসার গান, সমতার গান, মানবতার গান, সুন্দরের গান।
মাহবুব মিত্র বস্তুবাদী দার্শনিক মতবাদে বিশ্বাসী। আবার ভাববাদী দর্শনও মাঝে-মধ্যে তাঁকে ভাবায়। এই দুই মতবাদের ভিতর দিয়ে পথ হাঁটছেন। তিনি বুকে ধারণ করে আছেন সৃষ্টি জগতের সকল সুন্দরের নির্যাস। সাহিত্য ও শিল্পের বাগানে শব্দ বুনে-বুনে তৈরী করছেন মানব হৃদয়ের নৈবেদ্য। এই নিবিড় সংসারে একাকি নিঃসঙ্গ পথিক এক খুঁজে পেয়েছেন জীবনের সৌন্দর্যের অবিরাম ধারাপাত। তিনি মানব হৃদয়ে খুঁজে বেড়ান সুন্দরের স্বর্গভূমি।
তিনি সর্বদা আশাবাদী একজন প্রাণবন্ত-প্রফুল্ল মানুষ। তুমুল অন্ধকারের মাঝে খুঁজে ফেরেন আলোর ফোয়ারা। মানুষ তখনই মৃত যখন তার ভিতরের আনন্দ মরে যায়। চিরন্তন সুন্দরের জন্য হাহাকার-আকাক্সক্ষা, নৈতিক মূল্যবোধের উপলব্ধি, স্বতন্ত্র বোধের-চেতনার আলোয় উদ্ভাসিত তাঁর ভাবনার আকাশ। তাঁর সুকুমার কোমল প্রবৃত্তি আপন আলোয় ভাস্বর, দীপ্ত-শোভান্বিত, সদা জাগ্রত।
শাদা কফিনে মেঘের শব্দ
ঝুমকি
কত পথ পার হলাম ঝুমকি;
তবু মানুষ চেনা হলো না!
বারো প্যাচের নারী, চোখে জড়িচুমকির খেল্ দেখালো
অমলেশ সেই দেখে দেখে শেষে উন্মাদের খাতায় নাম লেখালো
পত্রিকার শেষ পাতায় ওকে নিয়ে কতো ফিচার হলো
তবুও অমলেশকে কেউ ভালোবাসলো না।
ঝুমকি পৃথীবির সবচে’ হিংস্র প্রাণী মানুষের
গায়ে বিপদের গন্ধ লেগে আছে;
ফাঁক পেলেই নষ্টামি করতে লেগে যায়
কেউ কেউ বলে সত্যিকারের ভালোবাসা নেই
বড় র্দূভাগা ওরা!
সত্যিকারের ভালোবাসাই দেখেনি চোখে; পাবে কোত্থেকে
প্রেমালিঙ্গম
Get access to your Orders, Wishlist and Recommendations.
There are no reviews yet.