Additional information
Weight | 0.215 kg |
---|---|
Published Year |
$ 1.76 $ 2.35
বুদ্ধদেব বলেছেন- জীবন দুঃখময়। কথাটা সর্বাংশে সত্য কিনা সংশয় রয়েছে মনে। তবে এটা সত্যি যে, বারে বারে দুঃখ আসে জীবনে। আসে বলতে মানুষ জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতে তার কামনা-বাসনার দ্বারা দুঃখকে ডেকে আনে। যদিও দুঃখকে কেউ চায় না। কিন্তু না চাইতেই মহাসমারোহে হানা দেয় জীবনে। কারণ, আলো-আঁধারের মত সুখ-দুঃখও হাত ধরাধরি করে চলে। তাই কোনমতেই দুঃখকে বাদ দিয়ে শুধু সুখ লাভ সম্ভব হয় না। কিন্তু মানুষ চায় সুখের বন্দরে নোঙ্গর গেড়ে জীবনটা কাটাতে। সেখানে পৌঁছতে গেলে দুঃখের পথ অতিক্রম করেই যেতে হয়। জীবনে দুঃখকে জয় করার মধ্যেই আছে পৌরুষ, আছে বীর্যবত্তা। তাই তাকে শক্তিধারণ করতে হয় দুঃখ জয় করার। “দুঃখ জয়ের গান” পাঠকের অন্তরে সেই প্রেরণা জোগাবে যাতে সে কর্ম-সাধনার মধ্য দিয়ে জীবনটাকে সঙ্গীতমুখর করে তুলতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।
পরিশেষে, বইটির পান্ডুলিপি পাঠ করে মূল্যবান মতামত দিয়েছেন বাংলা সাহিত্যের প্রভাষক নির্জন মজুমদার, কবি দেবী চিত্রলেখা মন্ডল, সাহিত্যিক অমল হালদার, কবি ড. অশোক মিস্ত্রী। তাদের সকলকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। সুস্মিতা ও শ্রেষ্ঠা আমার দুই মেয়ে নিরন্তর স্বপ্ন দেখে চলে কবে বাবার লেখা নতুন বই প্রকাশিত হবে। ওদের প্রেরণা আমার সব সময়ের পাথেয়। প্রথম উপন্যাস প্রকাশ-লগ্নে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। মুদ্রণজনিত ভুল-ত্রুটি পরিহারের যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। তারপরও অজ্ঞাতসারে কিছু প্রমাদ থেকেই যেতে পারে। সেজন্যে পাঠকের কাছে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি প্রত্যাশা করছি।
সন্তোষ কুমার শীল
শ্রীরামকাঠী, পিরোজপুর।
Weight | 0.215 kg |
---|---|
Published Year |
আবু তাহের সরফরাজ। সবার মাঝে থেকেও সে আলাদা। দৃশ্যের ভেতরও অদৃশ্য। বেঁচে থাকতে চান লেখালেখির মাঝে।
যখন আঁধার যখন কুয়াশা
ভূমিকা
লেখালেখি আমার কোনো পেশা নয়, এমন কি নেশাও নয়। তাহলে লিখি কেন? আসলে এখনও পর্যন্ত আমি একজন জীবিত মানুষ। এই সমাজ-সংসারের আরও দশ জন মানুষের একজন। তাদের মতো আমারও ক্ষুধা-তৃষ্ণা আছে। সুখ-দুঃখ আছে। হাসি-কান্না আছে। তাদের মতো আমারও কিছু বলার আছে। তাই কিছু বলতে চাই আমি। যেহেতু আমার অদৃষ্ট আমাকে নির্ধারণ করে দিয়েছে যে, আমি একজন গল্প লিখিয়েই হবো, তাই আমার বলতে চাওয়া কথাগুলো হবে কিছুটা গল্পের মতো। কিন্তু এই গল্প কাকে বলবো? নিশ্চয়ই আমার চার পাশের আর দশ জনকেই বলতে হবে কথাগুলো। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমি কোনো নেতা নই, কোনো বক্তা নই। শব্দ যন্ত্রের সামনে দাঁড়িয়ে বলতে গেলে আমার কথা কেউ শুনবে না। কারণ, আমি নিতান্তই নিরীহদের একজন। তাই কাগজ-কলমই আমার সম্বল। সুতরাং কোনো শব্দযন্ত্র ছাড়াই বলতে হবে নীরবে। কিন্তু তবু আমাকে বলতে হবে, যা আমি বলতে চাই। বলতে না পরলে হয়তো দম বন্ধ হয়ে আমি মারা যাবো। হয়তো কান দিয়ে শুনতে পাবেন না কথাগুলো, তবে চোখের আলোয় পড়তে পারবেন কাগজে মুদ্রিত কালো অক্ষরে।
জিয়াউল হক
গাইবান্ধা।
ধু-ধু বালুচর
দুনিয়ার সবচেয়ে সুন্দরী রমণীদের বসবাস এখানে। ওই সুন্দরীদের রূপের সাথে পাল্লা দেয় যৌবন আর যৌবনের সাথে পাল্লা দেয় রূপ কিন্তু সেটা এক রক্ত নহর বহা একনগরী… স্ত্রীর জন্য ৭ পুরের (গ্রামের) জল ও মাটি সংগ্রহ করে পুব্যা এক যুবক। তবে শর্ত ছিল পথিমধ্যে কারো সাথে কথা-টথা বলতে পারবে না সে। যুবকটি কেন বলছে, হায় নারী! হায় স্ত্রী আমার! তুমি আমার অর্ধেক নও, তুমি আমার পুরো পৃথিবী… এরকম অসংখ্য মজাদার কথামালায় রচিত এই দুই প্রহরের প্রেম ও বিপরীত যাত্রা উপন্যাসটি। শরীফ শামিলের লেখনী শক্তি ও কল্পনা শক্তি প্রশংসার দাবি রাখে। তাঁর প্রথম উপন্যাস দীর্ঘ রাত্রির বিরুদ্ধে জেগে থাকা এর ব্যাপারে লিখেছিলাম, ওটি বাংলা উপন্যাসে এক নতুন সংযোজন। আর এ ‘দুই প্রহরের প্রেম ও বিপরীত যাত্রা’ উপন্যাসটি বাংলা উপন্যাসে আরেক (সম্পূর্ণ) নতুন সংযোজন।
আবু এম ইউসুফ
প্রকাশক
দুই প্রহরের প্রেম ও বিপরীত যাত্রা
মফস্বলের একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে বীথিকা রায় তথা বীথির জন্ম। যে শৈশবেই একাধিক উন্নত রাষ্ট্র ভ্রমণ এবং ধ্র”পদী গ্রন্থাদি পাঠ করে বাঙালি হিসেবে নিজের অবস্থান বুঝতে পারে। একইসঙ্গে স্বনামধন্য বাঙালিদের গৌরবময় কর্মকাণ্ডের ইতিহাসও পাঠ করে—কিন্তু তাঁদের প্রতি বর্তমান বাঙালি জাতির বিস্মরণ আর চারিত্রিক অধঃপতন দেখে বিচলিতবোধ করে। উন্নত বিশ্বে বাঙালির বৈষম্যের শিকার হওয়াও তাকে আঘাত করে। ফলে তার ভেতরে দেশোদ্ধারের জাতীয়তাবাদী চেতনার স্ফুরণ ঘটতে থাকে।
বীথিকা জাতিগঠনের পেছনে যে সংস্কারমুক্ত আধুনিক শিক্ষাই প্রধান নিয়ামক সেটা ভালো করেই বুঝতে পারে। আরও অনুধাবন করে, বহির্বিশ্বের জ্ঞানে ঋদ্ধ, অভিজ্ঞ, দেশাত্ববোধসম্পন্ন মেধাবী শিক্ষকরাই কেবল জাতি গঠনে প্রধান ভূমিকা রাখে—রাজনীতিবিদ, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সেনাপ্রধান নয়।
ভবিষ্যতের সেই রকম একজন আদর্শ শিক্ষকের প্রতিকৃতি ও সম্ভাবনা বীথি দেখতে পেয়েছিল কিশোর শংকরের মধ্যে। কিন্তু সামাজিক, মানসিক ও শারীরিকভাবে ছেলেটি ছিল খুবই বিভ্রান্ত এবং দুর্বল তথাপি, একরোখা—ঋজু বীথি হাল না ছেড়ে শংকরকে তার স্বপ্নের আরাধ্য আদর্শ শিক্ষকে রূপান্তরিত করতে সক্ষম হয়। এর জন্য তাকে বিনিয়োগ করতে হয় যৌবনের মূল্যবান দীর্ঘ সতেরটি বসন্ত। কিন্তু হারানোর বেদনায় বীথি ব্যথিত নয়, বরং সে সফল, তৃপ্ত এই কারণে যে, দেশ ও জাতি একজন মহান শিক্ষককে পেয়েছে, যে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ ও স্বদেশপ্রত্যাগত। তারই ইতিবৃত্ত এই উপন্যাস।
প্রবীর বিকাশ সরকার
অপরাহ্ণে বৃষ্টি
কলকাতার স্মৃতিকথা
ভূমিকা
বাংলাদেশের বিশিষ্ট কবি ও কথাসাহিত্যিক আনোয়ার হোসেন বাদল চিকিৎসার জন্যে কিছুদিন আগে দক্ষিণ ভারতের ভেলোর শহরে গিয়েছিলেন। সাথে ছিলেন তার আজীবন সহযাত্রী, সহযোদ্ধা আমাদের প্রিয় সুলতানা ভাবী। বাদল ভাই ভাবীর সাথে নানান জায়গার ছবি তুলছেন আর তাৎক্ষণিক অভিজ্ঞতা লিখে পোস্ট দিচ্ছেন। আমিও মজা করে কমেন্ট করে যাচ্ছি সেইসব পোস্টে। প্রথমদিকে সাদামাটা পোস্ট ভেবেই গভীরে তেমন ঢোকার চেষ্টা করিনি। কিন্তু সময় যতোই যেতে থাকে পোস্টগুলো আমাকে চুম্বকের মতো টানতে থাকে। একসময়ে অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে বাদল ভাইয়ের ভ্রমণবৃত্তান্তের অপেক্ষায় থাকি, কখন তিনি পোস্ট দিবেন, কখন সেই আখ্যানগুলো পড়বো। অবস্থা যখন এমন পর্যায়ে একদিন বলেই ফেললাম যে লেখাগুলোকে মলাটবদ্ধ করলে একটি ভালো বই হতে পারে। উপযাচক হয়ে এটাও বললাম যে যদি কখনো লেখাগুলো মলাটবদ্ধ হয় আমিই লিখবো এর মুখবন্ধ।
বলেতো দিয়েছি কিন্তু তখন কি আর জানতাম যে এই গুরুদায়িত্ব আমার ঘাড়েই চাপবে! সেদিন হঠাৎই বাদল ভাইয়ের ফোন, ‘কমরেড, ভারতে কয়েকদিন নামের বইটি আসছে আগামী বইমেলায়। ভূমিকা কিন্তু আপনাকেই লিখতে হবে।’ আমিতো সপ্তম আসমান থেকে পড়লাম একেবারে জমিতে।
যাইহোক, সচরাচর ভ্রমণকাহিনী বলতে আমরা যা বুঝি আনোয়ার হোসেন বাদল এর ‘ভারতে কয়েকদিন’ সে অর্থে কিন্তু কোনো ভ্রমণকাহিনী নয়। বরং এটি হচ্ছে সাদা চোখে দেখা সাদামাটা অভিজ্ঞতার এক নির্মোহ বিবরণ, কিছু জানা কথা, কিছু অজানা তথ্যের প্রকাশ।
বইটি এমন সহজ-সরল ভাষায় লিখিত যে—পড়ার সময় মনে হতে পারে পাঠক বই পড়ছেন না বরং লেখকের সাথে সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ভারতের নানান শহর। নিজের চোখেই পাঠক দেখছেন ভারতের ইতিহাস-ঐতিহ্য, স্থাপনা আর বিচিত্র প্রকৃতি।
আলোচ্য বইটিতে পাঠকের পরিচয় ঘটবে ভারতের ঐতিহাসিক শহর কোলকাতা, তৃতীয় বৃহত্তম শহর দক্ষিণ ভারতের চেন্নাই আর ভেলোরের ইতিহাস-ঐতিহ্য, শিল্পসংস্কৃতি ও স্থাপত্যকর্মের সাথে।
বইটি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক অমরকীর্তি হিসেবে স্বীকৃত হবে বলে আমার বিশ্বাস।
কবি হানিফ মোহাম্মদ
তালেপুর, কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা।
ভারতে কয়েকদিন
প্রেম শ্বাশত। একটি পবিত্র প্রেম একজন মানুষের জীবনে মহীরূহ স্বরূপ। যা তাকে সারাকাল সুখের আচ্ছাদনে সমৃদ্ধ করে। বুকের ভেতর লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন তার অধিকার। আমাদের চলমান সমাজ ব্যবস্থায়, তৃতীয় ব্যক্তি নামে একটি পক্ষ আছে। এই তৃতীয় পক্ষ যখন, একটি মধুর সম্পর্কের মধ্যে ঢুকতে চেষ্টা করে? তখন কতো যে ব্যত্যয় ঘটে, তা কম বেশী সকলের জানা। সুখী সমৃদ্ধশালী জীবনটা তখন, নিমিষেই তাসের ঘরের মতোন হয়ে যায়। নিকষ আঁধারে ঢেকে যায় প্রেমের সূর্যতোরণ।
এ উপন্যাসে মুন আর মনন দম্পতির মধুর সম্পর্কের মধ্যে, এই তৃতীয় পক্ষের সক্রিয় আগমন ঘটার চেষ্টা বিদ্যমান। ওদের স্বাভাবিক জীবন বোধ টালমাটাল অবস্থায় পড়ার উপক্রম। মুন ও মননের সংসারে যেনো অথই সাগরে সুখের অবগাহন। তৃতীয় পক্ষের গাত্র দাহ! তো এখানেই? তাদের সন্তান মম কে পেয়ে ওরা বুঝি সত্যিকারভাবে “সুখ পাখি” টা কে হাতে পায়? আর এতেই হয়তো বা ওরা, সেই ব্যক্তির দুষ্টু নয়নের শ্যেন দৃষ্টির শিকার হতে চলেছে? ওদের সুখের সংসারে অশুভ ইঙ্গিতের হাতছানি, দেখা দেয়ার চেষ্টা চলছে ক্রমাগত। শেষ পর্যন্ত সফল কে হবে? ওরা দু’জন? না কি তৃতীয় কোন পক্ষ? সকলকে ধন্যবাদ।
-লেখিকা
তোমায় চেয়েছি বলে
উপন্যাস ত্রয়ীর চরিত্র, এলাকা, প্রেক্ষাপট, নিসর্গ—সবই কাল্পনিক। লেখকের তীক্ষ্ণ অন্তর্দৃষ্টির শস্ত্রে ব্যবচ্ছেদ করা সমাজের নিগূঢ় সত্য বাস্তবতার ক্যানভাসে পরিস্ফুটিত হয়েছে। তিনটি উপন্যাস দখল করেছে তিন ধরনের উপচার। ফাঁদ উপন্যাসটির ব্যাপক সংস্করণ হয়েছে। পরিবর্তন, পরিমার্জন ছাড়াও কলেবরও বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। প্রথম মুদ্রণের পর এই মলাটের উপন্যাসটি একই পাঠক পাঠ করলে হোঁচট খাবেন। ত্রয়ীর মলাটের বাকি দুটি উপন্যাসের সামান্য সংশোধন হয়েছে।
ফাঁদ
পুরুষের মনোরঞ্জনের জন্য নারীর শরীরই প্রধান মাধ্যম। যুগ যুগ ধরে পুরুষের মর্ষকামিতা, ভোগ-বিলাস ও নিষ্পেষণের শিকার নারীদেরকে খাঁচায় বন্দি করতে শুধু পুরুষই নয়, বরং স্খলিত ও হীন চরিত্রের নারীরাও সেই ক্ষেত্র তৈরি করায় ভূমিকা রাখে। এমনই এক নারী সাবরিনা তার বাসায় কিশোর বয়সী মেয়েদের ফাঁদে ফেলে পতিতাবৃত্তিতে লাগিয়ে বিত্তবৈভবের মালিক হয় সে। সাবরিনার মতো অনেক মাধুকরীর প্ররোচনায় ও পৃষ্ঠপোষকতায় শহরের অনেক বাসায় পতিতাবৃত্তির বিস্তার লাভ করে। শিকার হয় পুষ্পর মতো নিষ্পাপ কিশোরীরা। সাবরিনার যোগসাজশে আপন ভগ্নিপতি নওয়াব আলী পুষ্পকে দেহ-ব্যবসায় বাধ্য করায়। এক রাতের ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙেপড়া পুষ্প প্রতিশোধ স্পৃহায় নওয়াব আলীর ছোট বোন টুনিকে এই ফাঁদে ফেলে ঢাকায় নিয়ে আসে। টুনিকে কেন্দ্র করেই উপন্যাসটি চূড়ান্ত পরিণতির দিকে গড়ায়। এই উপন্যাসের মূল কাহিনি থেকে একটি পূর্ণদৈর্ঘ চলচিত্র (প্রিয়াংকা) নির্মাণের শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
শেষ কথাটি যাও বলে
একটি অভিজাত, নিপাট ও নিষ্কাম প্রেমের আখ্যান। শুরুর দিকে ত্রিভুজ প্রেমের ইঙ্গিত থাকলেও ঘটনাক্রমে প্রথম প্রেমিকার নিরাসক্তির কারণে দুজনের প্রেমই পরিণতির দিকে গড়ায়। বাংলাদেশের ছয়জন পেশাজীবীর কিছুদিনের প্রণোদনা প্রশিক্ষণের সময় দক্ষিণ ভারতে ভ্রমণের মধ্য দিয়ে উপন্যাসটি নির্মিত হয়। প্রেমের গভীর স্পন্দন অনুভূত হয় বাংলাদেশের নির্ঝর এবং দক্ষিণ ভারতের ট্যুরিস্ট গাইড অধরার বুকের গহিনে।
জলের লিখন
যুদ্ধকন্যা মারিয়াকে ঘিরে নির্মিত হয় জলের লিখন। কোনো এক অশুভ মুহূর্তে কলহপ্রিয় মাকে আতিকের বাবা তালাক দেওয়ার পর যখন হিল্লা বিয়ের ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা হচ্ছিল তখন, এরূপ হিল্লা বিয়ের মতো ন্যক্কারজনক ও অপমানজনক ঘটনা প্রত্যক্ষ করার কষ্ট থেকে নিষ্কৃতি পেতে মেধাবী কিশোর গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে ঢাকায় এসে বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতির সঙ্গে সংগ্রাম করে সার্টিফিকেটবিহীন ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করে একটি এনজিওতে চাকরি পায় এবং যুদ্ধকন্যা মারিয়ার দোভাষীর কাজ করার সময় উভয়ের মধ্যে সরল প্রেম-রসায়নের সৃষ্টি হয়। অবৈধ সন্তানের মা পারভিনের সঙ্গে প্রেমের কলি ফুটলেও পাপড়ি মেলেনি। উপন্যাসটির বিস্তর ক্যানভাস জুড়ে খোদিত হয়েছে এনজিওর কুহনিকা।
জনপ্রিয় লেখক না হলে তিনটি উপন্যাসকে একটি মলাটে মুদ্রণ নিঃসন্দেহে ঝুঁকিপূর্ণ। ব্যবসায়িক দিক থেকে অসাফল্যের দরজায় কড়া নাড়ার আওয়াজ শুনেও এত বড় ঝুঁকিপূর্ণ বোঝার কঠিন দায় নিয়ে অনুপ্রাণন প্রকাশনের পক্ষ থেকে আবু ইউসুফ ভাই বড় ঋণী করলেন। সীমাহীন আন্তরিকতা, অত্যন্ত যত্ন ও দায়িত্ব নিয়ে তিনি ‘উপন্যাস ত্রয়ী’ প্রকাশ করেছেন। তাঁর প্রতি রইল অশেষ কৃতজ্ঞতা।
উপন্যাস ত্রয়ী
শৌখিন ফটোগ্রাফার শুভ্র। তার পৃথিবী মমতাহীন শূন্যতায় ভরা। একে একে কাছের মানুষদের প্রস্থান তার জীবনকে ক্যামেরার ক্লিকের সাথে বন্দি করে ফেলে। এক সময় তার নিঃসঙ্গ জীবনে আসে দুঃখ ভাগ করে নেওয়ায় আগ্রহী মানুষেরা। হয়তো তারা একই মানুষ। ভিন্ন তাদের নাম। তারা সেতু-ঋতু-রূপা অথবা স্বাতী। যারা শুভ্রর মনস্তাত্ত্বিক ভাবনা-যৌন বিশ্বাস-উড়ন্ত নেশা ও বিপন্ন ক্ষতের সাথে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় জড়িয়ে যায়। অথবা তারা কেউ না। শুধু শুভ্র। শুধু নিঃসঙ্গ একজন মানুষ। নিজস্বতায় নিমগ্ন। যে ক্রমশ ঢুকে যায় অচেনা এক জগতে! নিষিদ্ধ ভাষা ও চিঠির ভাঁজে…
গুহা
জন্ম বিক্রমপুরের দিঘলী গ্রামে। ছোটবেলা থেকে নানা সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে জড়িত। বর্তমানে বিক্রমপুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদের কার্যকরী সদস্য। দৈনিক আমাদের সময়ের প্রাক্তন সাব-এডিটর।
গন্তব্যহীন দুঃখবিলাস
ভূমিকা
‘ভাঙনের ডাক’ উপন্যাসটি ভাঙন কবলিত গ্রাম বাংলার প্রতিচ্ছবি। উপন্যাসটিতে গ্রামের কৃষক জীবন, সবুজে ঢাকা গ্রাম নদী ভাঙনের ফলে কিভাবে তার সক্রিয়তা হারায়, সেই সাথে উঠে এসেছে ঐতিহাসিক একটি বাজারের বর্ণনা ও ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের আর্তনাদ।
‘ভাঙনের ডাক’ উপন্যাস নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রম বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। এখানে গ্রাম্য বধূর সবিস্তার কাহিনী সরলার চরিত্রের মাধ্যমে রূপায়িত হয়েছে। তাছাড়া করিম শেখ ও অন্তুর কাহিনীও এখানে প্রযুক্ত হতে দেখা যায়। বেজগাঁও গ্রামে রাজা রাজবল্লভের বাড়ি, দিঘলী বাজার, কদম পাগলের মাজার ঘিরে মেলা এখানে বর্ণিত হয়েছে।
‘ভাঙনের ডাক’ উপন্যাসে সত্যিকার অর্থেই ভাঙনের একটা সচিত্র ছড়িয়ে রয়েছে। এর মধ্যে আবেগ, কৌতূহল, স্বপ্ন আকস্মিকতা উৎকণ্ঠা বজায় রয়েছে। যা পাঠক সাধারণের মনকে একটা সন্মোহ সীমানায় ধরে রাখতে সক্ষম। তাছাড়া এই উপন্যাসে সমাজ মানসের কিছু বিশ্বস্ত চিত্রগাথা পরিস্ফুট উঠার সুযোগ পায়। যা শুধু এদেশীয় সংস্কৃতির আদলে গড়ে ওঠেছে। যেমন ভেলা ভাসানি, বৈশাখী মেলা, কদম পাগলের বার্ষিক মেলা, বৃষ্টি প্রার্থনার জন্য মেঘরানী উৎসব। সেই সাথে ফুটে উঠেছে একটি কৃষক পরিবারের অভাব-অনটন ও প্রকৃতির বৈরিতা। পদ্মার ভাঙন আর ঝড়ে নিঃস্ব হওয়া মানুষের আর্তনাদ, যা পাঠ করে অনাস্বাদিত জগতের উপমিত আস্বাদন করা সম্ভব।
ভাঙনের ডাক
কবিতা মৃদুর তীব্রতা। মৃদুভাষের তুলি দিয়ে ভাবনার আঁকিবুকি। তীব্র আঁকিবুকিগুলো রায়হান শরীফের কবিতায় এসে ভাষণ,বক্তৃতা, শ্লোগান হতে পারিনি, বরং নিজেরাই পথ করে নিয়েছে। চলেছে অনবধানে কবির ষড়যন্ত্রের বাইরে গিয়ে, নিজস্ব ব্লুপ্রিন্ট মাফিক পথ চলে!
সকল পথের গন্তব্য কিন্তু সাবলিমিটিকে ধরার (অপ)চেষ্টা।এর শেষ নেই।তাই কবিতাও লেখা হচ্ছে, হবে, হতেই থাকবে। একজন পাঠক না থাকলেও পৃথিবীতে একজন কবি ঠিক ততদিন থাকবেন যতদিন ভাষা থাকবে কারণ ভাষার সম্পূরক কোণই কবিতা। রায়হান শরীফ তাঁর দেখার ভঙ্গিমায়, তাঁর উপস্থাপিত সম্পূরক কোণে পাঠককে আহবান করেন এক বিচিত্র আনন্দ-ভ্রমণে।
মির্জা মুজাহিদ। পেশাগতভাবে বিজ্ঞাপন শিল্পের সাথে জড়িত। জন্মেছেন নড়াইল শহরে। এখন ঢাকায় থাকেন। চেষ্টা করে যাচ্ছেন নিয়মিত ‘কথা’র শিল্পী হতে।
বিপ্রতীপ
সমাজ, দেশ এবং বৈশ্বিক সমসাময়িক ঘটনা প্রবাহকে কবি মনিরুল হক এমরান কবিতার শৈল্পিক ভাষায় নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। এই কাব্য গ্রন্থে কবি প্রেম-দ্রোহ, কষ্ট-ক্ষোভ ও মনের মাধুরী মিশিয়ে জীবনের চিত্র এঁকেছেন। তাঁর কবিতায় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট উপজীব্য। হিংসা-প্রতিহিংসা, বকধার্মিকদের ধর্মাধর্মের বাড়াবাড়ি, মানুষের প্রতি মানুষের নিষ্ঠুরতাকে প্রতিবাদ করেছেন কবিতার মাধ্যমে শব্দের দক্ষ কারিগরের হাতে। পাঠকের জন্য সুখপাঠ্য করে তুলেছেন প্রতিটি কবিতা। এই গ্রন্থে পাঠকের মনকে আনন্দে আন্দোলিত করার মত রয়েছে তাঁর তের্জারিমা ছন্দে লেখা পনেরটি তের্জারিমা কবিতা। দুই খ-ের তের্জারিমা বই প্রথম প্রকাশিত হয় অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৩ এবং ২০১৫ সালে। যা পরবর্তীতে পাঠক ও কবিদের মাঝে সমাদৃত হয় এবং অনেক নবীন কবি চর্চা করতে শুরু করেন। এবারের কবিতার বইটি খানিকটা ভিন্নভাবে, কবির নিজস্ব ছন্দের কয়েকটি কবিতা রয়েছে। আশা করি পাঠক বইটি পড়ে নির্মল আনন্দ পাবেন। -প্রকাশক
ঠোঁটের কারফিউ ভাঙ্গে নিষিদ্ধ আঙুল
রাহমান ওয়াহিদ
জন্ম, বেড়ে ওঠা ও সর্বশেষ অবস্থান: জন্ম বগুড়ার কাহালু থানার পাইকড় গ্রামে, ১৯৫৬ সালের ১৭ জানুয়ারি। শহরের কাটনার পাড়ার করনেশন হাইস্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর ১৯৬৩ সালে বাবার চাকরির সুবাদে পাবনার রেল জংশনের শহর ঈশ্বরদীতে যাওয়া। সেখানে বেড়ে ওঠা এবং স্কুল কলেজ পেরোনো। এরপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্সসহ স্নাতকোত্তর। ১৯৮১ সালে সরকারী চাকরিতে যোগদান। ২০১৫ সালে সরকারী কর্মকর্তা হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত। চাকরির প্রয়োজনে ঢাকাতেই কেটেছে দীর্ঘ ২৭টি বছর। বগুড়ায় মাঝেমধ্যে আসা যাওয়া হতো। ২০১৭ সালের জুলাই থেকে বগুড়ার দক্ষিণ মালগ্রামে নিজ বাড়িতে আমৃত্যু অবস্থান চলছে। দুই কন্যার জনক। তারা সপরিবারে ঢাকায়।
লেখালেখি: ছোটবেলা থেকেই লেখালেখির অভ্যেস। এখনও চলছে। মূলত কবি। কবিতার পাশাপাশি গল্প, উপন্যাস, মুক্তগদ্য ও শিশুতোষ গল্পও লিখছেন। দেশ-বিদেশের সাহিত্য পত্রিকাসহ স্থানীয় প্রধান প্রধান সব ক’টি জাতীয় দৈনিকে নিয়মিত লিখে চলেছেন।
Raahman Wahid
রবীন্দ্র-গল্পগুচ্ছে নারী বিষয়ক গ্রন্থটি একটি এম.ফিল গবেষণা-অভিসন্দর্ভ। ১৯৮৮ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে যার ডিগ্রি অর্জিত হয়। অর্থাৎ প্রায় একত্রিশ বছর আগে এর রচনাকাল। এটা অবিসংবাদিত যে, রবীন্দ্রনাথই বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ছোটগল্পকার। তাঁর পঁচানব্বইটি গল্প-সংকলনের নাম গল্পগুচ্ছ। সমগ্র গল্পগুচ্ছ এক বিশাল চরিত্রশালার অন্তঃরাজ্য। গল্পগুলো তাঁর অন্যান্য রচনাবলি থেকে ব্যতিক্রম এজন্যে যে, এখানে আছে ‘মাটির কাছাকাছি’ মানুষের জীবন-যাপন। নিম্নবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত Ñ এসব সাধারণ মানুষের জীবনের সমস্যা, সামাজিক সমস্যা, রাষ্ট্রীয় সংঘাত, মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব, রক্ষণশীলতার সঙ্গে প্রগতিশীলতার সংঘর্ষ, এমনকি সমাজের পতিত নারীর জীবন-চিত্রণও এখানে বাদ যায় নি। ‘শাস্তি’-র দুখি-ছিদাম-রাধা-চন্দরা বা ‘সমাপ্তি’-র মৃন্ময়ী, ‘দিদি’ গল্পের দিদি অথবা ‘বিচারক’-এর রক্ষিতা ক্ষিরোদাকে রবীন্দ্র-সাহিত্যের আর কোথাও পাওয়া যাবে না। তবে এটা ঠিক যে, গল্পগুচ্ছে আছে নারী-চরিত্রের প্রাধান্য। পুরুষ-চরিত্রের চেয়ে নারীচরিত্রগুলো অনেক বেশি উজ্জ্বল, অনেক বেশি শক্তিশালী ও জীবনঘনিষ্ঠ। ক্ষেত্র-বিশেষে নারীচরিত্রগুলো উপন্যাসের নারীচরিত্রের চেয়েও অধিক তাৎপর্যপূর্ণ ও ব্যঞ্জনাময়। ‘হৈমন্তী’ গল্পের হৈমন্তী, ‘স্ত্রীর পত্র’-এর মৃণাল, ‘নষ্টনীড়’-এর চারুলতা, ‘পয়লা নম্বর’-এর অনিলা, ‘রবিবার’-এর বিভা এবং ‘ল্যাবরেটরি’-র সোহিনী একেকটি যুগের একেকটি স্মারক। অভিসন্দর্ভটিতে সমকালীন জীবন ও সমাজকে যেমন বিশ্লেষণ করা হয়েছে, তেমনি চরিত্রগুলোকেও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আলোকপাত করা হয়েছে। আশা করা যায়, পাঠক এবং গবেষক উভয়েই এর দ্বারা উপকৃত হবেন।
রবীন্দ্র-গল্পগুচ্ছে নারী
ফরিদ আহমেদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর। শিক্ষকতা করেছেন ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমানে টরেন্টোতে ।
ফরিদ আহমেদ
উৎকলিত গদ্যগুলোর চারটি পর্বে এদেশের মনন-সৃজন ও বৃহত্তর কর্মক্ষেত্রের ১২০ জন মানুষের মুখ ও মুখশ্রী আঁকা হয়েছে প্রধানত বিগত করোনাকালের ঘরবন্দি সময়ে। এখানে তাঁদের মূল অভিনিবেশ বা কৃতীকর্মের ধাতটি সংক্ষেপে ধারণের চেষ্টা করা হয়েছে। তাঁরা সকলেই যে লেখকের চাক্ষুষভাবে পরিচিত ছিলেন, এমন নয়। তবে তাঁদের মধ্যে অতুলন সম্মাননীয় ব্যক্তিত্ব, যেমন : আস্হাব উদ্দীন আহমদ, বারীন মজুমদার, বাবু রহমান, মোহাম্মদ খালেদ, নুরুল আনোয়ার খান, আবদুল করিম, অনুপম সেন, শামসুর রাহমান, ওয়াহিদুল হক, সৈয়দ শামসুল হক, আল মাহমুদ, অরুণ দাশগুপ্ত, আবুল হাসনাত (মাহমুদ আল জামান), মুহম্মদ নূরুল হুদা, সেলিম আল দীন, মনসুর উল করিম, শ্যামসুন্দর বৈষ্ণব, শান্তনু কায়সার, জয়দুল হোসেন, ময়ুখ চৌধুরী, মোস্তফা ইকবাল, অভীক ওসমান, সৈয়দ মহিউদ্দিন, সুভাষ দে, শুক্লা ইফতেখার, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, সিদ্দিক আহমেদ, আমিরুল কবির চৌধুরী, মোহাম্মদ হোসেন খান, হারুন-অর-রশীদ খান, মোহাম্মদ ইদ্রিছ (অদ্রীশ)- এই বয়োজ্যেষ্ঠগণের সবিশেষ স্নিগ্ধ স্নেহাশিস পাওয়ার অযাচিত সুযোগ হয়েছিল লেখকের তরুণকালে, যাঁদের অধিকাংশই আজ প্রয়াত।
সেই সঙ্গে এই গদ্যরচয়িতার লেখালেখির সমসাময়িক মহীবুল আজিজ, মামুন হুসাইন, সোহেল রাববি, শাহিদ আনোয়ার, সরকার আশরাফ, এজাজ ইউসুফী, রাশেদ মাহমুদ, মোহাম্মদ সেলিম উল্লাহ, খালিদ আহসান, বিশ্বজিৎ চৌধুরী, সেলিনা শেলী, ওমর কায়সার, খালেদ হামিদী, আকতার হোসাইন, কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর, আমিনুর রহমান সুলতানসহ পরবর্তী প্রজন্মের কবিতা তথা সাহিত্যকলা ও লিটলম্যাগ তৎপরতার পদাতিক– যেমন : শামীম রেজা, জফির সেতু, জিললুর রহমান, মোস্তাক আহমাদ দীন, খোকন কায়সার, ওবায়েদ আকাশ, অলকা নন্দিতা, খালেদ মাহবুব মোর্শেদ, আসিফ নূর, সিরাজুল হক সিরাজ, মামুন মুস্তাফা, শাহানা আকতার, হিমেল বরকত, ভাগ্যধন বড়–য়াসহ কয়েকজনের প্রোফাইল যুক্ত হয়েছে জীবনের পথে চলায় তাঁদের সঙ্গে যুক্ততা আর অন্তর্গত স্বপ্নময় ঈপ্সাগুলোকে যাপনের জন্যে।
বলা থাকা ভালো, এ ধারাটি এখানেই সমাপ্ত নয়। গ্রন্থের কলেবর সীমার মাঝে রাখতে এর দ্বিতীয়খণ্ডের কাজও প্রস্তুয়মান।
চার গ্রহের বাসিনা - Char Groher Basinda
সৈয়দ রায়হান বিন ওয়ালী। লেখক নাম: সৈয়দ ওয়ালী। জন্ম: ১৭ই জানুয়ারি ১৯৬৭। জন্মস্থান: পুরাতন ঢাকা। পিতা: সৈয়দ ওয়ালী হোসেন সুলতান। মাতা: সোহেলি ফেরদৌসী। পৈত্রিক ভিটে: কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি উপজেলার ইসলামপুর গ্রাম।
বেড়ে উঠা: সৈয়দ ওয়ালীর শৈশবের প্রথম কয়েক বছর কাটে পুরাতন ঢাকার বংশালে। তবে দেশ স্বাধীন হবার বছর খানেক পর পারিবারিক আর্থিক সংকটের কারণে পিতার নানী-বাড়ি গাজীপুরের কালিয়াকৈর-জমিদার- বাড়ির গ্রামীণ পরিবেশে কাটে শৈশব ও কৈশোরের পরবর্তী কয়েক বছর। যার সুবাদে সে শহর ও গ্রামের দ্বৈত জীবনের অভিজ্ঞতায় বেড়ে উঠার সুযোগ পায়। যে দ্বৈত-জীবনের অভিজ্ঞতার বিবিধ বৈশিষ্ট তার বিভিন্ন কবিতায় গদিয়ান। শিশুকাল থেকে সাহিত্যের অন্যান্য মাধ্যমের প্রতি তীব্র টান অনুভব করলেও মূলত যৌবনে এসেই সৈয়দ ওয়ালী ধীরে ধীরে কবিতা জগতের প্রতি মুগ্ধ হতে থাকে এবং নিজের কবিতা সৃজনের তৃষ্ণা নিজের ভেতর অনুভব করতে থাকে, যে তৃষ্ণা পরিশেষে তাকে কবিতা চর্চায় নিমগ্ন করে; সৃষ্টিশীলতা শুরুর বছর বিচারে যা ইংরেজি বর্ষপঞ্জির ১৯৮৯/১৯৯০। সেই থেকেই সৈয়দ ওয়ালী কবিতার ভাব ভাষা ছন্দ ও শৈলী নিয়ে বিচিত্র পরীক্ষা নিরীক্ষা করা ও এইসব উপাদানের যথাযথ সমন্বয়ের মাধ্যমে সৃজন করে চলেছেন তার কবিতার নিজস্ব ও স্বতন্ত্র এক জগৎ, যা আজ অবধি চলমান।
প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থঃ ‘তুমি ও তোমাদের হাত ছুঁয়ে ছুঁয়ে’, ‘বিনত খসড়া’।
……………………………
জলজ স্বাক্ষর
আত্মবিস্মৃত এবং আত্মবিস্মৃতিপ্রবণ এক জনসম্প্রদায়ের নাম ‘বাঙালি’। বাঙালি বারবারই তার আত্মপরিচয় ভুলে গিয়েছে, ভুলে থেকেছে, ভুলতে চেয়েছে এবং ভুলে যেতে চায়। আত্মপরিচয়ের ক্ষেত্রে বাঙালি কখনো উচ্চাভিলাষী, কখনো হীনমন আবার কখনো-বা বিভ্রান্ত। এই জনসম্প্রদায় আত্ম ভুলে বারবারই অপরের রঙে নিজেকে রাঙিয়ে নিয়েছে, অপরের পরিচয় গায়ে মেখে গৌরব বোধ করেছে ও করছে। এমনকি, তাকে কোথাও বাঙালি বলে চিহ্নিত করা হলে কিংবা বাঙালি বলে চিহ্নিত হয়ে পড়লে সে হীনমন বোধ করেছে এবং করে থাকে। তথাপি ‘বাঙালি’ শব্দটির প্রতি এই জনসম্প্রদায়ের রয়েছে এক অদ্ভুত মোহ। যদিও-বা সে ধার করা পরিচয়টিকেই তার আত্মপরিচয় হিসেবে প্রাধান্য দেয়, কিন্তু সবকিছুর সাথেই আবার ‘বাঙালি’ শব্দটিকেও জুড়ে রাখতে চায়। হয়তো-বা এটা করেও সে আড়ালে, নিভৃতে একান্তে ভীষণ লজ্জা বোধ করে থাকে আর নিজের কাছে থেকেই নিজের মুখ লুকাতে চায়। এমনই হীনমন এই জনসম্প্রদায়। ইতিহাসের কোনো কালে যদি এমন দেখা যায় যে, এই জনসম্প্রদায় বাঙালিত্বের জয়গান করছে ও নিজেকে সেই নামরূপে জাহির করছে, তবে, তার বহুসহস্রাব্দের ঐতিহাসিক অবস্থান বিচারে মনে হতে পারেজ্জতা নিতান্তই কালের ভ্রান্তি কিংবা দীর্ঘ স্বপ্নের মাঝে সামান্যকালের অঘটনজনিত ছেদ। কিন্তু, এটি তো অকাট্য সত্যি যে, তার বাঙালিত্ব প্রকৃতই তার অস্তিত্বের ভিত্তি, সত্তার আধার। ফলে একে মুছে ফেলাও যায় না। কখনো-বা মুছে ফেলতে চায় কিন্তু, পারে না, এর কারণও এই যে, বাঙালিত্ব তার শিকড় যা তার রক্তে বিস্তৃত এবং ভূমিতে প্রোথিত। এ-ই তার দ্বিধা আর দ্বন্দ্বের যুপকাষ্ঠ। বাঙালি তার অস্তিত্বের সূত্রপাতে, উত্থানে, বিকাশে ও বিস্তারে সভ্যতার বিশেষ বৈশিষ্ট্যে এবং ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে সমাজ বিকাশের কার্যকারণগত জটিলতায় প্রায় জীবন্মৃত। সভ্যতা বিকাশের কালপরিক্রমা ও সংঘটনাসমূহের দ্বিধান্বিত পরিনামমুখ বাঙালিকে এমন এক দ্বিধায় আটকে রেখেছে যে, তার এই অবস্থার একটাই শিরোনাম হতে পারে ‘ত্রিশঙ্কু’। এ-ই তার সংকট।
বাঙালির আত্মপরিচয়ের সংকটই প্রধান প্রতিপাদ্য এই আলোচনায়। কেমন তাদের আত্মপরিচয়ের স্বরূপ? বাঙালি, একটি জনসম্প্রদায় যাদের আত্মপরিচয় চিহ্নিত হয় ‘বাঙালি’ পারিভাষিক শব্দটি দিয়ে। এই জনসম্প্রদায় কবে বাঙালি বলে চিহ্নিত হলো আর কীরূপে ও কীসের ভিত্তিতেই-বা এই বাঙালিত্ব চিহ্নিত হলো তা যথেষ্ট অনুসন্ধানের বিষয়। তথ্য পাই যে আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতকের দিকে ঐতরেয় আরণ্যকে ‘বঙ্গা’ শব্দটির উল্লেখ পাওয়া যায়। পাণিনির অষ্ট্যাধ্যায়ীর ভাষ্যে খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে ‘সুহ্মাঃ, পুণ্ড্রাঃ, বঙ্গাঃ’র উল্লেখ দৃশ্যমান রয়েছে। এবং সহস্রাব্দের পুরোনো চর্যাগীতিতেও বাঙ্গালী, বঙ্গাল (দঙ্গাল?) নামের দেশের উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু, সেইকালে বা সেইকাল থেকেই ‘বাঙালি’ নামের কোনো জাতিত্ববোধের জনসম্প্রদায় পাওয়া যায় না, যদিও সেকালে জনসম্প্রদায়ের অস্তিত্ব বিরল ছিলো না। ফলে অনুমান সহজ যে আদিতেই ‘বাঙালি’ শব্দটি জাতীয়তা কিংবা জাতিসত্তার পরিচয়জ্ঞাপক কোনো পরিভাষা ছিলো না। বরং এই শব্দটি একটি জনসম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক পরিচয়-পরম্পরার সাক্ষ্য বহন করে। জাতিসত্তা চিহ্নিত করণের ও জাতীয়তা নির্ধারণের নিমিত্তে মানুষের যে চেতনা, জ্ঞানপ্রবণতা ও মনোভঙ্গি তা একেবারেই নতুন; অদূর অতীতের উনিশ, বিশশতকের মানুষের আধুনিক উন্মাদনার ফল হলো জাতীয়তাবোধ। আরো স্পষ্ট করে বলা যায় যে, তা আসলে পাশ্চাত্যের কিছু দেশ থেকে আসা একটি ধারণা। এ-ও স্বীকার্য যে মানুষের সাংস্কৃতিক, ভাষাতাত্ত্বিক কিংবা নৃতাত্ত্বিক আত্মপরিচয়ের ঠিকুজি অনুসন্ধান তাদের হাতেই শুরু। আর আমরা তাদের উপনিবেশের থাবায় পড়ে তাদেরই উদ্যোগে প্রায়, তাদের জ্ঞান-বিজ্ঞান, সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক তৎপরতার কল্যাণ বা অপকল্যাণে আমাদের আত্ম-অহংকারের ভিত্তি খুঁজতে গিয়ে এই ‘বাঙালি’ পরিভাষাটি পেয়েছি আমাদের জাতি-পরিচয়ের স্মারক রূপে। জ্ঞান সাধক আহমদ শরীফ উল্লেখ করছেন এভাবে যে, ‘সুতরাং আজকের সংহত বাঙালী জাতি গড়ে উঠেছে বিদেশী বিজাতি-বিভাষীর শাস্ত্র-সংস্কৃতি, জীবন-জীবিকার সম্পৃক্ত জীবনচর্যা গ্রহণ করেই।’১ এ-ই আসলে ভারতবর্ষের মানুষের এবং বাঙালির উপনিবেশ যাপনের ফল। উপনিবেশের কারণে বাহিরের জ্ঞানের সংস্পর্শে বাঙালিরা নিজের জ্ঞানচেতনাও পেয়েছে এবং নিজস্বতায় চিন্তা করতে গিয়ে তার কিছু দ্বিধাও এসেছে অনিবার্যতায়। বাঙালির এখনো দ্বিধাঙ্কিত প্রশ্ন এই যে, এই বাাঙালি জাতিত্বের ভিত্তি কি? ভিত্তি কি তার শিকড়ভূমি, সংস্কৃতি নাকি ভাষা? কেন না, পাশ্চাত্যের জ্ঞান এই বিষয়ক নির্দিষ্টতা দেয় না। বিশ^জুড়েই, জাতিসত্তা কিংবা জাতীয়তার ভিত্তি কী হবে তার কোনো বিষয়গত ও তাত্ত্বিক নির্দিষ্টতা নেই। যদিও বিষয়টি স্থির নয়, তবু, সাংস্কৃতিক ভিত্তিকেই অধিক গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারে নানা কারণেই। বাঙালির জন্য বিবেচনা এই যেজ্জবঙ্গ বা বঙ্গাল প্রাচীন, তার মানুষের পরম্পরা প্রচীন ফলে তার সংস্কৃতিও প্রাচীন। বঙ্গালের মানুষের ভাষাটির নাম যে বাঙলা ছিলো এই সাক্ষ্য পাওয়া দূরহ। ভাষাতাত্ত্বিক বিচারে ‘বাংলা’ নামে যে ভাষাটির পরিচয় মেলে সেটি অন্তত বাঙালির প্রকরণ পরম্পরার চেয়ে পুরোনো নয়। প্রায় দেড় হাজার বছর পূর্বে বাংলা নামের ভাষাটির প্রতিষ্ঠিত লিখিত ও কথ্যরূপ পাওয়া যায়। কিন্তু, বাঙালির সাংস্কৃতিক প্রবাহ ঠিক কতো পুরোনো তা নির্দিষ্ট করে নির্ণয় করা যায় না। সেটি সুনির্দিষ্ট করে নির্ধারণ করা না গেলেও ঐতিহাসিক নিদর্শনগত ভিত্তির গণনা যে তা প্রায় পাঁচ সহস্রাব্দেরও পুরোনো। খ্রিস্টপূর্ব পনের’শ অব্দের কাছাকাছি সময়ে ভারতবর্ষে আর্যগণের আগমনেরও অনেক আগের নানান সাংস্কৃতিক উপাদান, বিশ^াস ও লোকচর্চা বাঙালির বর্তমান সংস্কৃতিতে এখনো বিরাজমান। ফলে, সংস্কৃতিই কি নয় বাঙালির যথার্থ আত্মপরিচয়ের স্মারক? সুতরাং, বলা যায় বাঙালির যথার্থ পরিচয় তার সংস্কৃতিতেই মেলে। তবু ভাষাভিত্তিক পরিচয়টিও অগ্রাহ্য করা যায় না। আর আধুনিককালে এসে জাতিপরিচয়ের ভিত্তিকারণ হিসেবে ধর্মকে গ্রহণ করার প্রবণতাও এই বিষয়ক গ্রাহ্যতা-অগ্রাহ্যতার সীমানা ভেঙেছে। এরই ফলে বাঙালির আত্মপরিচয়ের বিবেচনাটিই আজ বিভ্রান্তির করালে, হুমকির মুখে। বলা যায় তার আত্মপরিচয়ের ঠিকুজি যেন লুট হয়েছে।
বাঙালির আত্মপচরিয়ের সংকটটি অন্য আর কিছুই নয়, তার সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত বিভ্রান্তির পরিনাম যা বিভিন্ন কালে ঔপনিবেশিক শক্তির প্রভাব বলয়ে থেকে বাঙালির সমাজচৈতন্যে প্রবেশ করেছে। বাহিরের শক্তি যেমন বাঙালির সাংস্কৃতিক, ভাষাভিত্তিক আত্মপরিচয়টিকে ভুলিয়ে দিতে চেয়েছে এবং চাইছে, তেমনই বাঙালি নিজেও অনেকাংশেই তার বাঙালিত্বকে আর মনে রাখতে চায় না বা অন্যভাবে চিনতে চায় নিজেকে। তারা অন্য কোনো পরিচয়ের গৌরব…
বাঙালির দ্বিধার চলক
কবিতায় ভালোবাসার রূপ দিতে ভালো লাগে। ল্যাণ্ডস্কেপের কবিতাগুলি নানাভাবে বিভাজিত। তাই সকল সৌন্দর্য প্রায় একত্রে সন্নিবেশিত হয়েছে। অবৈতনিক আশ্রয়ের ভিতর গ্রন্থিত হয়েছে রুলটানা কাগজে আঁকা কিছু অবাস্তব বারুদ। যদি স্ফুলিঙ্গ ছাড়া জ্বলে ওঠে, ভালো। তোমার প্রজাপতি, আমার বাগান। তা হোক, সমুদ্রলিপি এখানেই রচিত হলো এবং আরো কিছু রয়ে গেলো পরবর্তীকালের জন্য। রয়ে গেলো একটি চন্দ্রগ্রস্ত মুখ। ঘোরগ্রস্ত চোখ, বাংলা ভাষা-ভাষী তো বটেই পৃথিবীর অন্যান্য ভাষা-ভাষীদেরও যদি পছন্দ হয়। কারণ গ্রন্থের সবগুলি কবিতা স্নিগ্ধ কিংবা সুখপাঠ্য হবে এমন নয়। মানুষের জীবনেরও সবগুলো অধ্যায় সুন্দর হয় না।
রাই সরিষার কাল
লেখক পরিচিতি :
মনির ইউসুফ। জন্ম: অসম্ভ্রান্ত কৃষি ও জেলে পরিবারে। ঈদগাহ, ইসলামাবাদ, কক্সবাজার। ছোটবেলা থেকেই লেখালেখির প্রতি তীব্র আকর্ষণ। সময় যাপন কবিতার ঘোরে।
প্রতিকবিতা ও অবাধ্য গোলাপ
লেখক পরিচিতি :
মারুফ রায়হান। জন্ম করাচিতে। পৈতৃক নিবাস খুলনার ফুলতলায়। আশির দশকের প্রথমার্ধে ছাত্রাবস্থায় নাট্যান্দোলন, লেখালেখি ও সাংবাদিকতায় জড়িয়ে পড়েন, সেই শুরু। প্রধানত কবিতাই লিখেন। এ পর্যন্ত ১৫টি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া গুণীজনদের নিয়ে লিখেছেন বেশ কিছু বই। সাক্ষাৎকার মূলক বই আছে দু’টি। প্রবন্ধের বই আছে তিনটি।
হৃদয় ও রাজপথ
হায়াসিন্থ হাউজ
বিশিষ্ট ছড়াকার, উপন্যাসিক, গবেষক, সম্পাদক প্রবীর বিকাশ সরকার এর জন্ম ১৯৫৯ সালে, বাংলাদেশের সিলেট জেলার সুনামগঞ্জে। ১৯৭৬ সালে চাঁদের হাট সংগঠনের সাহিত্য সম্পাদক থাকাকালীন সাহিত্যচর্চার সূচনা। ১৯৮৪ সালে জাপান গমন। তার আরো ১১টি প্রকাশিত গ্রন্থ রয়েছে।
জানা অজানা জাপান (তৃতীয় খণ্ড)
Get access to your Orders, Wishlist and Recommendations.
There are no reviews yet.