Additional information
Weight | 0.214 kg |
---|---|
Published Year |
$ 1.76 $ 2.35
Weight | 0.214 kg |
---|---|
Published Year |
বুদ্ধদেব বলেছেন- জীবন দুঃখময়। কথাটা সর্বাংশে সত্য কিনা সংশয় রয়েছে মনে। তবে এটা সত্যি যে, বারে বারে দুঃখ আসে জীবনে। আসে বলতে মানুষ জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতে তার কামনা-বাসনার দ্বারা দুঃখকে ডেকে আনে। যদিও দুঃখকে কেউ চায় না। কিন্তু না চাইতেই মহাসমারোহে হানা দেয় জীবনে। কারণ, আলো-আঁধারের মত সুখ-দুঃখও হাত ধরাধরি করে চলে। তাই কোনমতেই দুঃখকে বাদ দিয়ে শুধু সুখ লাভ সম্ভব হয় না। কিন্তু মানুষ চায় সুখের বন্দরে নোঙ্গর গেড়ে জীবনটা কাটাতে। সেখানে পৌঁছতে গেলে দুঃখের পথ অতিক্রম করেই যেতে হয়। জীবনে দুঃখকে জয় করার মধ্যেই আছে পৌরুষ, আছে বীর্যবত্তা। তাই তাকে শক্তিধারণ করতে হয় দুঃখ জয় করার। “দুঃখ জয়ের গান” পাঠকের অন্তরে সেই প্রেরণা জোগাবে যাতে সে কর্ম-সাধনার মধ্য দিয়ে জীবনটাকে সঙ্গীতমুখর করে তুলতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।
পরিশেষে, বইটির পান্ডুলিপি পাঠ করে মূল্যবান মতামত দিয়েছেন বাংলা সাহিত্যের প্রভাষক নির্জন মজুমদার, কবি দেবী চিত্রলেখা মন্ডল, সাহিত্যিক অমল হালদার, কবি ড. অশোক মিস্ত্রী। তাদের সকলকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। সুস্মিতা ও শ্রেষ্ঠা আমার দুই মেয়ে নিরন্তর স্বপ্ন দেখে চলে কবে বাবার লেখা নতুন বই প্রকাশিত হবে। ওদের প্রেরণা আমার সব সময়ের পাথেয়। প্রথম উপন্যাস প্রকাশ-লগ্নে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। মুদ্রণজনিত ভুল-ত্রুটি পরিহারের যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। তারপরও অজ্ঞাতসারে কিছু প্রমাদ থেকেই যেতে পারে। সেজন্যে পাঠকের কাছে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি প্রত্যাশা করছি।
সন্তোষ কুমার শীল
শ্রীরামকাঠী, পিরোজপুর।
দুঃখ জয়ের গান
কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর (১৯৬৩-২০১৫)। চিকিৎসা বিজ্ঞানে একাডেমিক পড়াশুনা করেন চট্টগ্রামে। লেখালেখি ছিল তার কাছে অফুরন্ত সর্ব আনন্দ ব্যাকুল এক জীবনপ্রবাহের নাম। কথাসাহিত্যের ছোটকাগজ ‘কথা’র সম্পাদক ছিলেন। তার অন্যান্য প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে স্বপ্নবাজি, পদ্মাপাড়ের দ্রৌপদী, গল্পের গল্প ইত্যাদি।
হৃদমাজার
প্রকাশকের কথা-
বাংলা উপন্যাসে এক নতুন সংযোজন : বাংলা উপন্যাস এমনকি বিদেশি কোনো উপন্যাস এরকম কোনো উপ-কাহিনি দিয়ে শুরু এবং পৌরাণিক কাহিনি দিয়ে শেষ হয় বলে জানা নেই আমার। শরীফ শামিল এর উপন্যাস ‘দীর্ঘ রাত্রির বিরুদ্ধে জেগে থাকা’ পড়ে সেরকমই মনে হলো আমার। গত তিন চার বছরে আমার সাহিত্য পত্রিকা ‘অনুপ্রাণন’-এ তাঁর বেশ কয়েকটি গল্প ছেপেছিলাম, ওই গল্পগুলো পড়েই শরীফ শামিলকে মনে হয়েছিল একজন স্বতন্ত্র ধারার লেখক।
তাঁর উপন্যাসে স্বপ্ন আশা-আকাঙ্খা, হতাশা প্রেম কাম, নীরব বিরহ গ্রাম্য আচার-সংস্কার-কুসংস্কার, শোষক শোষিতের দ্বন্দ্ব সংঘর্ষ, লোভ হিংসা, সর্বোপরি মানুষের মনুষ্যত্ব মনস্তত্ত্বকে তিনি অল্প কথায় যেভাবে প্রকাশ করেছেন, তা অসাধারণ বলা যায়। একটি দু’টি বাক্যের মাধ্যমে তিনি একেকটা পরিচ্ছদকে তুলে ধরেছেন এই উপন্যাসে; তাঁর এই উপস্থাপন কৌশলটি এবং কৌতুক ও ব্যঙ্গাত্মক শব্দ প্রয়োগগুলো আমাকে মুগ্ধ করেছে। তাঁর চরিত্রদের কিছু সযাং ভাষা ও আঞ্চলিক ভাষা, মেয়েলি গীত, কাহিনি ও জাউলি গীত উপন্যাসটিকে বিশ্বাসযোগ্য ও প্রাণবন্ত করে তুলেছে। উক্ত উপন্যাসে ঐক্যের বিজয় দেখানো হয়েছে সেটা খ-কালিন বিজয়; চিরকালিন নয়- এটাই উপন্যাসের আরেক সার্থকতা বলে মনে হয়েছে আমার। তাছাড়া উপন্যাসের ভাষা-পরিভাষা অলংকার উৎপ্রেক্ষা উপমা অনুপাস-এর ব্যবহারও মুগ্ধ করার মতো। অতিবাস্তবতা ও যাদুবাস্তবতাকেও সার্থকভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি এই উপন্যাসে।
শরীফ শামিল-এর ‘দীর্ঘ রাত্রির বিরুদ্ধে জেগে থাকা’ উপন্যাসটি পাঠান্তে সকল শ্রেণির পাঠক মুগ্ধ হবেন বলেই আমার বিশ্বাস। তবে পাঠকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।
দীর্ঘ রাত্রির বিরুদ্ধে জেগে থাকা
লেখক পরিচিতিঃ
নিজেকে ঘটা করে পরিচয় করিয়ে কি লাভ । আমার এই উপন্যাস পছন্দ হলে এতেই আমার স্বার্থকতা। সবাই ভালবাসুক এই গল্পটা।সবাই ধারণ করুক এই বইটা।
এই পর্যন্ত বইয়ের সংখ্যা ৯টি
১) আমার মা(ভোরের শিশির প্রকাশন
২) বার্লিনে বন্ধুত্ব(ভোরের শিশির প্রকাশন)
৩) ভুতের স্বর্নতাবিজ( বেহুলা বাংলা প্রকাশন)
৪) অল্প কথার গল্প (দ্যুপ্রকাশন)
৫) লাভার্স পয়েন্ট (বেহুলা বাংলা)
৬)তিন প্রজন্মের কাব্য (ছায়ানীড়)
৭) দার্জিলিং কনফেশন (ছোট গল্প) অনুপ্রাণন
৮) উইনিং সেলস এন্ড মার্কেটিং (বেহুলা বাংলা)
৯) পূর্বজদের গুহায় বুদ্ধের দর্শন।(অনুপ্রাণন)
পূর্বজদের গুহায় বুদ্ধের দর্শন
লেখকের কথা:
বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী “রু” আমার প্রথম প্রকাশিত বই হলেও আমার লেখা প্রথম উপন্যাস ছিল এই “প্রজেক্ট পাই”, যেটা আমি লিখেছিলাম দুই হাজার পনেরো সালে, অর্থাৎ আজ থেকেও আরো প্রায় চার বছর আগে। কিন্তু নানা কারণে এই উপন্যাসটা আর প্রকাশ করা হয়ে ওঠেনি। তবে কোথাও প্রকাশ না করলেও উপন্যাসটার কথা আমার মাথায় সবসময়ই ছিল। এ-কারণে প্রায়ই “প্রজেক্ট পাই”-এর ফাইলটা বের করে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চোখ বুলাতাম। এ-রকম করতে করতেই একদিন হঠাৎ মাথায় চলে এলো “রু”-এর প্লট। লেখা শুরুও করে দিলাম আমার দ্বিতীয় উপন্যাস “রু”। মাঝখানে অনিবার্য কারণবশত নেয়া একটা লম্বা বিরতিসহ প্রায় দুই বছরের মতো সময় লাগলো “রু” লিখে শেষ করতে। লেখা শেষ হবার বেশ কয়েক মাস পর আমার লেখা দ্বিতীয় উপন্যাসটি অনুপ্রাণন প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হলো আমার প্রথম বই হিসেবে। বইটি অনুপ্রাণনের সে বছরের বেস্টসেলারও হলো। “রু”-এর পর এবার আমার মাথায় এলো আমার প্রথম সন্তান, অর্থাৎ আমার লেখা প্রথম উপন্যাস “প্রজেক্ট পাই”-এর কথা, যে কিনা গত চার বছর ধরে ঘরবন্দী হয়ে আছে। ভাবলাম, এবারে যে তাকেও মুক্তি দিতে হয়!
অবশেষে “প্রজেক্ট পাই”ও মুক্তি পেলো। প্রজেক্ট পাই সম্পর্কে আমি আমার পাঠকদের আগে থেকে তেমন কিছুই বলব না। শুধু এটুকুই বলব, “রু” যেমন আমার এবং আমাদের গল্প ছিল, “প্রজেক্ট পাই”ও ঠিক তেমনি আমার এবং আমাদের গল্প। এখান থেকে আমাকে এবং আমাদেরকে খুঁজে নেয়া এবং আমাদের মাঝখানে নিজেদেরকেও খুঁজে নেয়ার দায়িত্ব আমি আমার পাঠকদের ওপরই ছেড়ে দিচ্ছি।
Ñতানভীর আহমেদ সৃজন
আগস্ট ২০১৯
প্রজেক্ট পাই
শীতের সকালে হুট করেই সবচেয়ে নিকটের বন্ধু ও ছোট ভাই হাসানের নিকট কিম্ভূতকিমাকার পোষাকে উপস্থিত সুমন ভাই। তার ফোনালাপে সদ্য গড়ে উঠা প্রেমিকা মুমুর বিয়ে ভাঙতে যেতে হবে নোয়াখালী। যেই মেয়েকে কখনোও তিনি দেখেননি। কিন্তু নোয়াখালীতে পা রাখতে না রাখতেই শুরু হয় একের পর এক বিপত্তি ও হাস্য-রসাত্মক সব ঘটনা। কখনোও বিপত্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায় তার প্রেমিকার বড় ভাই ও বড় ভাইর চ্যালা-প্যালারা, কখনোবা তিন বিটকেল কালাম, মাসুম ও জহির। এছাড়াও ঝামেলা পাঁকাতে সদা প্রস্তুত সুমন ভাইরই আপন মামাতো ভাই।
এই সকল নাটকীয়তার মাঝেই উপন্যাসের বাঁকে বাঁকে চলতে থাকে পাঁচ বন্ধুর বিচিত্র উদ্ভট সব কাণ্ডকারখানা। চলতে থাকে নির্মল ভালোবাসা-বাসি সুমন ভাই ও মুমুর মাঝে। শেষ পর্যন্ত কি ভালোবাসার বিজয় হয়? সুমন ভাই কি শেষ পর্যন্ত সফল হতে পেরেছিলেন? জানতে হলে পড়তে হবে “অপারেশন নোয়াখালী”।
অপারেশন নোয়াখালী
আবু তাহের সরফরাজ। সবার মাঝে থেকেও সে আলাদা। দৃশ্যের ভেতরও অদৃশ্য। বেঁচে থাকতে চান লেখালেখির মাঝে।
যখন আঁধার যখন কুয়াশা
জন্ম ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানার সুরাশ্রম গ্রামে। পিতামহের প্রতিষ্ঠিত নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শুরু। তারপর নান্দাইল রোড হাই স্কুল, আঠাবাড়ি ডিগ্রি কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়া শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজকল্যাণ ও রাষ্ট্র বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন। এরপর চাকরিজীবনে বি.এড ও এম.এড ডিগ্রি লাভ করেন।
লেখালেখির শুরুটা খুব পরিকল্পিত না হলেও চাকরিজীবনের বেঁচে যাওয়া সময়ে কঠিন অধ্যবসায় ও অবিরাম লেখালেখির অভ্যাসটি জোরালেভাবেই তৈরি হয়েছে। বহুমাত্রিক এই লেখকের সাহিত্যের প্রায় প্রতিটি শাখাসহ একাডেমিক গ্রন্থ নিয়ে মোট ৯৫ গ্রন্থ ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে।
ঘূর্ণিবায়ূ ও ধূসর কাবিন
শাহিনুর, যাত্রাদলের এক সুন্দরী নর্তকী। বিধবা এ মেয়েটি ভিন্ন জাতের এক গানওয়ালার প্রেমে পড়লে ধর্ম ও সমাজ থেকে ছিটকে পড়ে। তার নাচ দেখতে এসে প্রেমে পড়ে যায় কিশোর বদি। শাহিনুরও এই কিশোরের প্রেমে হারিয়ে ফেলে জীবনের খেই। একসময় ভেঙে যায় ‘দি মাঝি অপেরা’। হারিয়ে যায় শাহিনুর। পর্দার আড়ালে থেকে এই নর্তকী তার প্রেমিকার প্রতিষ্ঠা পেতে অবদান রাখে। দীর্ঘ তেরো বছর পর জীবনের মঞ্চে আবার শাহিনুরের আবির্ভাব।
‘কৃষ্ণপক্ষের আলো’ নদী তীরবর্তী প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর এক অসাধারণ আলেখ্য। ঔপন্যাসিক আশ্চর্য কুশলতায় উঠিয়ে এনেছেন আবহমান বাঙলার অন্ত্যজ শ্রেণির শিল্প, সাহিত্য, ধর্ম, রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা। সুনিপুণভাবে চিত্রিত হয়েছে বাঙালি জাতির মহান অর্জন মুক্তিযুদ্ধের প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির সূক্ষ্ম দিকসমূহ। ধর্মান্ধতা, সাম্প্রদায়িকতা, পুরুষতান্ত্রিকতার নগ্ন থাবা লেখকের ক্ষুরধার তীর্যক আঁচড়ে অতি চমৎকাররূপে বাঙময় হয়ে উঠেছে।
বিয়োগাত্মক এ গল্পে কেন্দ্রীয় চরিত্র শাহিনুর পতিত শ্রেণির এক বঞ্চিতা নারী। গল্পকার তার মুনসিয়ানা দিয়ে বাস্তবসম্মতভাবে পতিত এ নারীকে পাঠকের কাছে উপস্থাপন করেন মহীয়সী রূপে।
শিল্পের সব ধারায় কাজ করলেও আনোয়ার হোসেন বাদল মূলত এক শক্তিমান কবি ও কথাশিল্পী। তার প্রকাশিত প্রত্যেকটি উপন্যাস নিঃসন্দেহে শিল্পগুণসমৃদ্ধ এবং সুখপাঠ্য। কৃষ্ণপক্ষের আলো বাংলাসাহিত্যে এক অমূল্য সম্পদ হয়ে থাকবে প্রত্যাশা রইলো।
সৈয়দ মাজহারুল পারভেজ
বহুমাত্রিক লেখক ও সাহিত্যজন
কৃষ্ণপক্ষের আলো
হুমায়ুন কবির।
জন্ম ১৯৫৯ সালে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার দেউটি গ্রামে। বাবা জালাল আহমেদ ও মা জফুরা বেগম। লেখালেখির শুরু ছাত্রাবস্থায়। মাঝে দীর্ঘ বিরতি। আবারও ফিরে এসেছেন লেখালেখিতে। কবিতা, উপন্যাস, গল্পগ্রন্হসহ তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা আটটি। ইতোপূর্বে প্রকাশিত তার উপন্যাস ‘ কানফুল, আনছার আলীর গৃহত্যাগ এবং কবিতা অন্তহীন দীর্ঘশ্বাস পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে। সাহিত্যকর্মে অবদানের জন্য জিগীষা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ তাকে জিগীষা সাহিত্য সম্মাননা -২০১৯ প্রদান করেছে।
সাবেক সরকারি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বর্তমানে দৈনিক বাংলার সাহিত্য সম্পাদক। তিনি সালমা ফৌজিয়া সুমি, ডা. শারমিন ফৌজিয়া ও সাইফুল কবির সোয়েবের বাবা। স্ত্রী নাজমুন নাহার লক্ষ্মী গৃহিণী।
প্রকাশিত বই সমুহঃ-
কবিতা-
আমি তাকে ফিরছি খুঁজে
অন্তহীন দীর্ঘশ্বাস
উপন্যাস-
দায়
কানফুল
মেঘনাপারের শেফালী
আনছার আলীর গৃহত্যাগ
গল্পগ্রন্থ-
শাহজাদী উপাখ্যান
আমিও ডিকশনারি দেখেছি কিন্তু পাইনি।
জ্বিনকন্যা নার্গিসের প্রেম
জন্ম বিক্রমপুরের দিঘলী গ্রামে। ছোটবেলা থেকে নানা সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে জড়িত। বর্তমানে বিক্রমপুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদের কার্যকরী সদস্য। দৈনিক আমাদের সময়ের প্রাক্তন সাব-এডিটর।
গন্তব্যহীন দুঃখবিলাস
জন্ম ১মে ১৯৬৮, বরিশালের পিরোজপুর জেলার বোথলা গ্রামে। শৈশব থেকে লেখালেখি শুরু। ছোটদের জন্যও লিখেছেন। গল্প, উপন্যাস, সম্পাদনা মিলিয়ে প্রকাশিত বই পঞ্চাশটি। টিভি নাটকও লিখেছেন তিনি।
বুশরার একরাত
লেখক পরিচিতি :
আশরাফ জুয়েল। জন্ম: ৩০শে সেপ্টেম্বর ১৯৭৭, চাপাইনবাবগঞ্জ, বাংলাদেশ। বাবার চাকরির সুত্রে শৈশব কেটেছে যাযাবরের মতো। জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ, বগুড়া থেকে এমবিবিএস পাশের পর ঢাকাতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পোস্ট গ্রজুয়েশন করে বর্তমানে চিকিৎসা পেশায় কর্মরত। ‘মস্তিষ্ক নাকি হৃদয়’। মূলত এই প্রশ্নের উত্তর খুজতেই লেখালেখিতে পুনর্জন্ম।
যুদ্ধ ছাড়া শুদ্ধতা অসম্ভব
সত্তর দশকের কবি সৈয়দ আবদুস সাদিক। এক প্রত্যাশিত সন্ধিক্ষণে বাংলা কবিতার মঞ্চে হাজির হয়েছেন গ্রহণ পূর্ণিমার ছায়াচারী হিসেবে। তাঁর কবিতার শরীর শব্দ সম্পদে ভরপুর। উপমা, শিল্প-সৌন্দর্যবোধ ও মিথ মিলে কাব্যমাঠ যেমন উর্বর, গড়ন-কৌশলেও ভাষা হয়ে ওঠেছে তেমনি অনন্যমাত্রার। তাঁর কবিতায় মন-ময়ূখজুড়ে সমাজ ও স্বদেশ প্রেমের ক্যানভাস আবার বিষয়বস্তুর নিরীখটা জুড়ে যেনো প্রেমই প্রধান। প্রেমই প্রকৃতি এই আকুতি, এই উচ্চারণ সর্বোপরি রসমগ্নতাও গভীরভাবে বিম্বিত। কোথাও বিশুদ্ধ নৈয়ায়িক দুর্বোদ্ধতা থাকলেও, পাঠস্বাদে তা প্রতীকী কাব্যানুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। তিনি এ কাব্য’র এ মাঠে রোপন করেছেন বিভিন্ন স্বাদের ফ্রয়েডীয়, পরাবাস্তব কবিতা সহ সনেট, রুবাই এবং গজল। তবে, নিশ্চয় পাঠক কবির এই কারিশমায় দ্রবীভূত হলেও দ্রোহ আর প্রেমের নানান সমাসবদ্ধ শব্দের উতরোলে, বিরহের ব্যঞ্জনধ্বনিতে, এইসব কবিতার বাহারি রূপ, রস, গন্ধ কবিতাঞ্চলকে করে তুলেছে মন্ময় ও তন্ময়। “তুমি শ্রমণ, আমি ভিক্ষু’ গ্রন্থের ভিন্ন স্বাদ, বিভিন্ন বোধ ও বিচিত্রতা তাকে দিয়েছে বিশিষ্টতা। পাঠ করা গেলে সহজেই সে আবহাওয়া অনুধাবন করা যায়। গ্রন্থটির ‘অনাথ অন্ধকার’ কবিতায় কবি শব্দ, স্বর ও ধ্বনিকে ভিন্ন মাত্রার সুরে প্রকাশ করেছেন এভাবে :
‘এতোকাল কুহকের ভেতর দিয়ে হেঁটে হেঁটে
জেনে গেলাম গন্ধ-বর্ণময় সময়ের ভেতর
অনাথ অন্ধকার খেলা করে;’…
লিটন আব্বাস
তুমি শ্রমণ আমি ভিক্ষু
বাজে অন্তহীন দ্রিমি
ভেসে বেড়াই…
বুকের ভেতরে দ্রিমি দ্রিমি বেজে ওঠে
নিজের বুকে কান লাগিয়ে শুনি সেই শব্দ
কেমন ঘোর, নেশা লাগে!
একটা অসহ্য ভালোবাসার ঘ্রাণ পাই
মানুষ যার জন্যে হন্যে হয়ে ঘুরে মরছে
সেই ভালোবাসা…আহা
তার বর্ণিল শব্দ- ঘ্রাণে ঘূর্ণি খেয়ে খেয়ে
মহাকাশ সমান আনন্দে ঘুর-পাক খাই
যাই, অনন্ত অভিযাত্রায়
কবিতার রূপ ধরে প্রেম নামছে পৃথিবীতে
কসমিক খেলা মেতে উঠেছে
সৌরবিভা বসেছে তাকে কেন্দ্র করে
দেখো, কীভাবে বিষণ্ন-প্রচণ্ডতা জেগে ওঠে !
উজ্জ্বল হাসি হয়ে ছায়াপথে ঘুরে বেড়াই
বেজে যায় অন্তহীন দ্রিমি…
বাজে অন্তহীন দ্রিমি
স্বাগতম
আমার পৃথিবীতে আপনাকে স্বাগতম হে মান্যবর ;
আমি জানি আপনার ব্যস্ততা সীমাহীন,
আবার এ-ও জানি আপনার হৃদয় আকাশের মতো
আর হৃদয়ের ভালোবাসা সাগরের মতো ;
আরো জানি,আপনার ইচ্ছেরা উড়ে বেড়ায়
প্রজাপতি আর সহস্র পাখির মতো,
আমি জানি, আপনার সেই ইচ্ছেপাখির ডানায় চড়েই
আপনি আজ এসেছেন আমার পৃথিবীতে ;
আপনার ওই নিষ্পাপ হৃদয়ে
আমাকে দিয়েছেন এক চিম্টি জায়গা,
আপনার এক পৃথিবী ব্যস্ততাকে উপেক্ষা করে
আমার পৃথিবীতে রেখেছেন আপনার স্বর্ণপা,
আপনাকে পেয়ে, আপনার ব্যবহারে
আমি আবেগে উদ্বেলিত,
সাথে সাথে আমি লজ্জিত
কারণ, আপনাকে সমাদর করার মতো যথেষ্ট ভদ্রতা
আমার জানা নেই,
আমি লজ্জিত, আমি নাদান,
আমার এ অজ্ঞতা,
আমার এ অনাকাঙিক্ষত অপরাধ,
আপনি মার্জনা করুন হে মান্যবর,
আসুন, আপনি আসুন।
বিলম্বিত প্রসব
মাতৃভাষা, সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয়
বিভিন্ন দেশ, জাতি ও সমাজের অস্তিত্ব ও আত্মপরিচয় মুছে দিয়ে চিরকালের জন্য নিজ শাসন ও শোষণের আওতায় নিয়ে আসার জন্য এক একটি জাতি ও উপজাতির নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতিকে আক্রমণ করে দুর্বল করে দিয়ে সুকৌশলে একক একটি ভাষা ও সংস্কৃতি জাতিতে জাতিতে চাপিয়ে দেয়া- সাম্রাজ্যবাদী শোষণ বিস্তারের প্রাথমিক পরিকল্পনারই একটি অপকৌশল। আধুনিক বিশ্বে বাঙ্গালীর জাতীয়তাবাদী চেতনা জাগ্রত করা ও বাংলাকে রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য ’৫২ এর ভাষা আন্দোলন আমাদের জাতীয় ইতিহাস ও ঐতিহ্যের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, যে অধ্যায়ের মধ্যে আমাদের ভাষা, সাহিত্য শুধু নয়, আমাদের সাংস্কৃতিক অস্তিত্ব এবং আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠা ও প্রসারের মহান সংগ্রামেরই ঐতিহাসিক সূত্রপাত। ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের স্মরণে প্রতিবছর ফেব্রুয়ারিতে অমর একুশে বইমেলা- বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে তথা বাঙালী চেতনাকে সম্প্রসারিত ও সুদৃঢ় করে তোলার কাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। আমাদের জাতীয় জীবনে অমর একুশে বইমেলার অপরিসীম ভূমিকাকে গুরুত্বের সাথে আমাদের অনুধাবন করতে হবে এবং এই বইমেলার গুণগত মান এমনভাবে পরিকল্পিত ও সুসংগঠিত করতে হবে যেন এর সুফল সারা বছর জুড়ে আমাদের জাতীয় জীবনে সফলভাবে কার্যকরী থাকে।
ভাষা, শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তির উৎকর্ষ সাধনের যে কোন প্রচেষ্টায় দেশের গণমানসের অন্তর্নিহিত শক্তিকে মানসম্পন্ন কাজে রূপান্তরিত করাটাই জরুরী। তাছাড়া, প্রতিনিয়ত নতুন চিন্তার উন্মেষ ঘটানো এবং সেসব নতুন নতুন চিন্তার বাস্তবায়ন একটি জাতির সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে সুদৃঢ়ভাবে সচল রাখতে এবং সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন মোকাবেলা করতে সবল ও সক্ষম করে তুলতে পারে। একুশে বইমেলাকে ঘিরে সেসব কাঙ্ক্ষিত রূপান্তর ঘটাতে আমরা কতটুকু সক্ষম হচ্ছি- এটাই আমাদের সামনে মূল প্রশ্ন। গণমানসের অনুবাদই প্রতিভার একমাত্র ধর্ম নয়। গনমানসের সংগঠনে সাংস্কৃতিক উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে উপযোগী রূপান্তর ঘটানোর প্রচেষ্টাই একুশে বইমেলার মতো এই বিরাট কর্মকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। কিন্তু, আমরা এই বিরাট কর্মযজ্ঞের মাঝে গনমানসের সংগঠনে রূপান্তর ঘটার মত সৃজনশীল কর্মসূচি গ্রহণ করতে দেখি না। আত্মকেন্দ্রিক পুনরাবৃত্তির মধ্যে একুশে বইমেলাকে বন্দী রাখার মত অপচয় কীভাবে বন্ধ করার যায়- এ নিয়ে আমাদের গভীরভাবে ভেবে দেখা দরকার। সত্যের এই পরিণতি মনে রাখাটা খুবই জরুরী- যে সাধনার অগতি বন্ধ্যত্ব আনে, সেই বন্ধ্যত্বের মাঝেই স্বকীয়তা, স্বাতন্ত্র্য, আত্মমর্যাদা ও আত্মপরিচয়ের বিনাশ ঘটে। আমাদের সচেতন থাকতে হবে যে, একটি জাতির নিজস্ব প্রতিভা ও সৃজনশীলতার চর্চাকে বিপথে পরিচালিত করার অপচেষ্টা নিয়ে সাম্রাজ্যবাদ সবসময় চটকদার কর্মসূচি আমাদের মাঝে হাজির করবে।
গত শতাব্দীর শেষভাগে, নিয়ন্ত্রিত শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চা বনাম মুক্ত ও স্বাধীনভাবে শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চার সুফলতা ও কুফলতা নিয়ে বিতর্কের এক রকম অবসান ঘটায় এখন দেশে দেশে মুক্ত ও স্বাধীন শিল্প ও সাহিত্যের চর্চার পক্ষেই জনমত গড়ে উঠেছে। কিন্তু, মুক্তচিন্তার প্রকাশের কারনে শাসক শ্রেণি বিব্রত হয় বলে শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চার ক্ষেত্রে কোথাও কোথাও নিয়ন্ত্রণ একেবারে উঠে যায় নি। সেন্সরশিপ আরোপ এবং গত কয়েক দশকে মুক্তচিন্তা চর্চাকারীদের উপর কট্টরপন্থীদের সশস্ত্র আক্রমণ ছাড়াও রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নানা বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ ও নিবর্তনমূলক আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ হতে দেখা যাচ্ছে। এসব প্রচেষ্টা শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিকাশের পথে বাধা। শত শত বছরের ইতিহাস এই সাক্ষ্য দেয় যে নতুন ও মুক্ত চিন্তার চর্চা ও সম্পৃক্ততা ছাড়া শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে গনমানুষের নান্দনিক অভিব্যক্তি বাধাহীন বিকাশ লাভ করে না। নিয়ন্ত্রিত বিকাশ যে বাস্তবে ঘটে না এবং অবশেষে বন্ধ্যত্ব ও স্থবিরতার কবলে পরে ধ্বংস হয়ে যায় এর ঐতিহাসিক প্রমাণ যেমন দুঃখজনক তেমনই বাস্তব।
কিন্তু, এটাও মনে রাখতে হবে যে মুক্ত, স্বাধীন ও প্রতিযোগিতামূলক শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চার নামে নৈরাজ্য একেবারেই কাম্য নয়। বলতে গেলে, দেখা যাচ্ছে যে সাহিত্য চর্চা ও প্রকাশনার ক্ষেত্রে দুধরনের প্রবণতা এই ক্ষেত্রটিকে দারুণ ক্ষতির সামনে দাড় করিয়েছে। কর্পোরেট পৃষ্ঠপোষকতা যতই মান বিচারে নিরপেক্ষতার কথা বলুক না কেন, বাস্তব কিন্তু তা বলে না। ফলে এমন একটি সুবিধাভোগী শিল্পী ও সাহিত্যিক চক্র তৈরি হচ্ছে যাদের তৈরি শিল্প-সাহিত্যের মান সম্পর্কে ক্রমাগতভাবে ভুল বার্তা দিয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে একটি গড় মানের মধ্যে আটকিয়ে রাখা হচ্ছে। ফলে প্রতিভাবান শিল্পী ও সাহিত্যিকদের মাঝে এমন একটা হতাশা তৈরি হচ্ছে যে তাদের হাত দিয়ে বাংলা শিল্প ও সংস্কৃতিতে যে উচ্চ স্তরের বিকাশ ঘটানো সম্ভব ছিল সেই পথ দুঃখজনকভাবে রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে যে ঘটনাটি ঘটছে, সেটাও খুব দুঃখজনক। একুশে বইমেলাকে কেন্দ্র করে এর উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্মে একদল শিক্ষানবিস লেখক নিজ খরচে বই প্রকাশ করে এবং তাঁর পক্ষে দল পাকিয়ে নিজেকে কবি-শিল্পী-সাহিত্যিক হিসেবে আত্মপ্রচারনায় লিপ্ত হচ্ছেন। এসব সাহিত্যকর্ম একেবারেই মানসম্পন্ন নয় ফলে প্রজন্ম বাংলা সাহিত্যের মান সম্পর্কে ভুল ধারণা প্রাপ্ত হচ্ছেন। অনুপ্রাণন আশা করে যে, শিল্পী, সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের মধ্যে মননশীল, সৃজনশীল ও মানসম্পন্ন শিল্প ও সাহিত্যের চর্চা ও সাধনার পক্ষে গভীর সচেতনতা নিয়ে একটি মুক্ত ও স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠবে।
সপ্তম বর্ষ প্রথম সংখ্যা
‘পুরো সিরিজটির মধ্যে টের পাই, তুমি শক্তিমত্তা নিয়ে ধেয়ে আসছ।’ বেশ কিছুদিন হয় মারুফ আহমেদ নয়ন ‘ডেকে নিও গোপনে’ পাণ্ডুলিপিটি মেইল করে পড়তে দিলে পাঠপ্রতিক্রিয়ায় উপর-উদ্ধৃত বাক্যটি লিখেছিলাম। আজ সেই পাণ্ডুলিপির পুণঃপাঠে ওই বাক্যটিকে রেখেই কথা বলতে হচ্ছে। নয়ন বয়সে নবীন, তুলনায় ওঁর কবিতা অনেক ম্যাচিউর। অবাক হতে হয়, পাণ্ডুলিপির কবিতাগুলো সদ্য বয়সন্ধিকাল পেরিয়ে আসা একজন কবির লেখা। সে ক্ষেত্রে পোলিশ কবি রেনিয়া স্পাইগেলের কথা মনে পড়ে। যদিও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হলোকস্টের শিকার হয়ে রেনিয়া’র কিশোর বয়সেই দুঃখজনক মৃত্যু হয়েছিল, তা বাদে কবিতার বোধ ও চেতনার দিক থেকে নয়ন যেন রেনিয়ার উত্তরাধিকার। মারুফ আহমেদ নয়নের কবিতায় আবহমান বাংলা কবিতার আবেগ আছে, তবে তা বাড়াবাড়ি পর্যায়ের মনে হয় না। আবেগের লাগাম টেনে ধরে তার যথার্থ ব্যবহারের সক্ষমতা আছে নয়নের। ওঁর কবিতায় চিত্রকল্প ও কল্পচিত্রের ব্যবহারগুলো মুগ্ধ করে। ওঁর ভাষা বয়ন সুন্দর-স্বচ্ছ। কবিতায় অনুকরণ অনুসরণ নিয়ে আজ কথা উঠছে। কারও কবিতার ভাষা বা শৈলী পাঠক সমাজে সামান্য মান্যতা পেলে তাকেই মুদ্রার মতো ভাঙিয়ে লিখছেন অনুজ ও সমসাময়িকরা। সে ক্ষেত্রে মারুফ আহমেদ নয়ন নিজেকে অপর দূরত্বে রাখেন। শিল্পের জন্য কবিতার জন্য যা স্বাস্থ্যকর। আবহমান বাংলা কবিতার মুকুটে মারুফ আহমেদ নয়ন একটি নতুন পালকের সংযুক্তি হিসেবে স্মরণীয় হোক।
মাসুদার রহমান
সোনাপাড়া
১৬/১১/২০২১
ডেকে নিও গোপনে
একটা বিড়াল ছানা
কিভাবে সবার মন জয় করে একটা পরিবারের সদস্য হিসাবে নিজেকে মানিয়ে নেয় তাই প্রাঞ্জলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে এই গল্পে।
ক্লাস সিক্স পড়ুয়া নীলার বাবা বাদামী রংয়ের ঠোঙায় করে কদম ফুলের মত একমুঠ পরিমান বিড়ালছানা নিয়ে এলেন। সেই সুন্দর বিড়ালছানার মজার মজার সব কান্ডকারখানা এখানে বর্ণনা করা হয়েছে। বিড়ালের নামকরণ বিশ্লেষণ, মেহমান মুদ্রাদোষ বশতঃ পা নাড়লেই পাক্কা শিকারীর মত বিড়ালছানার সেই পা জাপটে ধরা, বিড়ালের উলের বল নিয়ে খেলা, ক্যালকুলেটর টিপে ভিতরের সংখ্যাগুলোর নড়াচড়া অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখা ইত্যাদি খুটিনাটি কিছুই বাদ পড়ে নি লেখিকার চোখ থেকে। একজন শিশুর চোখেই তিনি পুরো বিষয়টা দেখেছেন।
ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে সুদীর্ঘ কাল চাকরি করার সুবাদে মজার মজার অভিজ্ঞতা তিনি প্রায়ই শেয়ার করেন। লেখিকা বাচ্চাদের চাইল্ড সাইকোলজি বেশ ভালো ভাবেই বুঝেন। গল্প লিখতে গেলে একজন শিশুর চোখেই বিষয়টা দেখার চেষ্টা করেন।
বিড়াল ছানা স্ন্যাফার
সম্পর্কে জড়ানোর জন্য অভিকর্ষ বলের কোনোই দোষ নেই।
— আলবার্ট আইনস্টাইনক
কথাটি হয়তো এই মহান বিজ্ঞানী মজার ছলে বলেছিলেন। আসলে একজন মানুষ জন্মের পর ধীরে ধীরে তার কাছের মানুষগুলোকে চিনতে শুরু করে। তারপর সে দূরের সম্পর্কগুলোকে জানার চেষ্টা করে। কাছে দূরের এই যোজন বিয়োজনের পারস্পরিক ক্রিয়ার রসায়নে একটা সময় হয়তো কোনো সম্পর্ক মধুময় হয়ে ওঠে, কখনো বা তিক্ত। আবার এই তিক্ত সম্পর্ক সৃষ্টির নিয়ামক হয় মানুষের লোভ, শঠতা ও অহংকার। মাঝেমাঝে কিছু সম্পর্ক সামাজিক বিধিনিষেধের গোলকধাঁধায় পড়ে আবার নিষিদ্ধও ঘোষিত হয়। সেই সম্পর্কেগুলোর হয়তো কোনো নামও হয় না। অথচ নামহীন এমন সম্পর্কের ভার সারা জীবন মনে ভেতরেই থেকে যায়।
মানুষের বৈচিত্র্যময় আন্তঃসম্পর্কের পাপপুণ্যের পরিধি বিশ্লেষণ করে লেখক ‘নিমপাতার পাকোড়া নিষিদ্ধ আলিঙ্গন’ গল্পগ্রন্থে সেইসব নিষিদ্ধ সম্পর্কগুলোকেই আলিঙ্গনের চেষ্টা করেছেন। শুধু মানবিক সম্পর্কের পূর্বাপর অন্বেষণ নয়, সামাজিক অবক্ষয় আর বিচ্ছিন্নতাও এই গল্পগুলো নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।
Nimpatar Pakorar Nishiddho Alingon
নূপুর ও তার ভূতবন্ধুরা- Nupur O tar Vutbondhura
হাসানআল আব্দুল্লাহ। জন্ম: ১৪ই এপ্রিল, ১৯৬৭। গোপালগঞ্জ জেলার গোপিনাথপুর গ্রামে। তিনি প্রবর্তন করেছেন নুতনধারার সনেট। তার মৌলিক কাব্যগ্রন্থর সংখ্যা দশ। বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার কবিতার অনুবাদে প্রকাশ করেছেন বিশ্ব কবিতার কয়েকছত্র। অন্যান্য প্রকাশিত গ্রন্থ- সনেটগুচ্ছ ও অন্যান্য কবিতা, আঁধারের সমান বয়স, এক পশলা সময় প্রভৃতি। ২০০৭ ও ২০১৫ সালে নিউইয়র্কের কুইন্স শহরের পোয়েট লরিয়েট ফাইনালিস্টের সন্মান পেয়েছেন।
বৃত্তের কেন্দ্রেও কবিতার মুখ
রাহমান ওয়াহিদ
জন্ম, বেড়ে ওঠা ও সর্বশেষ অবস্থান: জন্ম বগুড়ার কাহালু থানার পাইকড় গ্রামে, ১৯৫৬ সালের ১৭ জানুয়ারি। শহরের কাটনার পাড়ার করনেশন হাইস্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর ১৯৬৩ সালে বাবার চাকরির সুবাদে পাবনার রেল জংশনের শহর ঈশ্বরদীতে যাওয়া। সেখানে বেড়ে ওঠা এবং স্কুল কলেজ পেরোনো। এরপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্সসহ স্নাতকোত্তর। ১৯৮১ সালে সরকারী চাকরিতে যোগদান। ২০১৫ সালে সরকারী কর্মকর্তা হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত। চাকরির প্রয়োজনে ঢাকাতেই কেটেছে দীর্ঘ ২৭টি বছর। বগুড়ায় মাঝেমধ্যে আসা যাওয়া হতো। ২০১৭ সালের জুলাই থেকে বগুড়ার দক্ষিণ মালগ্রামে নিজ বাড়িতে আমৃত্যু অবস্থান চলছে। দুই কন্যার জনক। তারা সপরিবারে ঢাকায়।
লেখালেখি: ছোটবেলা থেকেই লেখালেখির অভ্যেস। এখনও চলছে। মূলত কবি। কবিতার পাশাপাশি গল্প, উপন্যাস, মুক্তগদ্য ও শিশুতোষ গল্পও লিখছেন। দেশ-বিদেশের সাহিত্য পত্রিকাসহ স্থানীয় প্রধান প্রধান সব ক’টি জাতীয় দৈনিকে নিয়মিত লিখে চলেছেন।
Raahman Wahid
আশরাফ উদ্দীন আহ্মদ
কবি-কথাশিল্পী-প্রাবন্ধিক।
জম্ম- ১৬ কার্তিক, ১৩৮৪ বাং, বোয়ালমারী, ফরিদপুর।
আম্মা- বেগম সালেহা আহ্মদ,
আব্বাÑআফতাব উদ্দীন আহ্মদ,
শিক্ষা- স্নাতকোত্তর (বাংলা ভাষা ও সাহিত্য) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
লেখালেখি কৈশোরেই, ছড়া দিয়ে হাতেখড়ি, কবিতা-ছোটগল্প-উপন্যাস-প্রবন্ধ লেখা মূলত। বাংলা একাডেমী পরিচালিত ১৯৯৬ এর ‘তরুণ লেখক প্রকল্প’ র তৃতীয় কোর্সে অংশ এবং প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘ সীমান্তরেখা ’ ১৯৯৭ সালে প্রকাশ, দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ ‘ চতুর্ভূজ’ (যৌথ) ২০০২ সালে প্রকাশ বইমেলায়, তৃতীয় গল্পগ্রন্থ‘ ভালোবাসা ও এসব নিছক গল্প’ ২০০৬ সালের বইমেলায় প্রকাশ, চতুর্থ গল্পগ্রন্থ ‘পদ্মাপাড়ের গল্প (যৌর্থ) ২০০৭ সালে প্রকাশ বইমেলায়, পঞ্চম প্রকাশ, প্রবন্ধগ্রন্থ ‘কথাকার ও কথাসাহিত্য’ ২০১৬ সালে বইমেলায়, ষষ্ট প্রকাশ, প্রবন্ধগ্রন্থ ‘ মুলধারা সাহিতের রকমফের’ ২০১৯, সপ্তম প্রকাশ, গল্পগ্রন্থ ‘তারপর অন্ধকার দুঃসময়’ ২০১৯, অষ্টম প্রকাশ, গল্পগ্রন্থ ‘ হামিদালীর সুখ-স্বপ্ন ও অন্যান্য গল্প’ ২০২০ সালের একুশে বইমেলায়, নবম প্রকাশ, গল্পগ্রন্থ ‘ সেদিনও উঠেছিলো চাঁদ দিয়েছিলো জ্যোৎস্না’ (প্রকাশিতব্য)।
পৈত্রিক আদিনিবাস পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার শান্তিপুরে, সীমান্ত-সীমান্তের এপার-ওপারের প্রকৃতি ও মানুষ এবং তাদের জীবন ও জীবিকার পিচ্ছিল বিড়ম্বনা গল্পের মূল বিষয়-আশয়। সে সমস্ত চরিত্রগুলো ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে গল্পের আখ্যানে কাহিনীর মেজাজ বা স্বরে, কখনো মনে হয় তারাই গল্পের স্বপ্নবীজ, স্বপ্নের আঙ্গিকে নির্মিত হয়েছে কাঠামো, বাস্তবিকই মানুষ যেন মানুষের আবরণে শুধুই খোলস পাল্টে দন্ডায়মান, চেনা খুবই কঠিন, সেই কঠিনের আধোছায়ায় মোক্ষম যে পৃথিবী, তারই রূপ বর্ণিত হয়েছে গল্পবীক্ষায়।
ভালো লাগে নিভৃতে কবিতা-গল্প লিখতে নিজের মতো করে, সাহিত্যিক অগ্রজ বন্ধুদের পরামর্শে, লিটল ম্যাগাজিন বা দৈনিক সাহিত্য সম্পাদক বন্ধুদের কল্যাণে প্রবন্ধ লেখা, সাহিত্য বিষয়ক প্রবন্ধের প্রতি বরারবই ঝোঁক, সে’ কারণে প্রবন্ধ লেখা। যা লিখি, পড়তে ভালো লাগে সময়ে-অসময়ে, নেশা বলতে পড়া, ইতিহাস-সাহিত্য-নৃতত্বদর্শন নানাবিষয়। পেশা, বেসরকারী চাকুরী, জীবনধারণের জন্য যা আবশ্যক, তার বাইরে অবলম্বন সাহিত্যই । ###
কথাসাহিত্যের বারান্দায়
এইসব গদ্যের জন্ম পৃথিবীর পশ্চিম গোলার্ধে। যেখানে পূবের বাতাস উড়ে যেতে যেতে পারি দেয় দু দুটি মাহাসাগর- আটলান্টিক ও প্যাসিফিক। সেখানে বসে ফেরদৌস নাহার কবিতার পাশাপাশি লিখছেন গদ্য। সেসব থেকে নির্বাচিত আটটি লেখা নিয়ে পশ্চিমে হেলান দেয়া গদ্য । গদ্যগুলো তিনটি পর্বে: চিত্রকলায়, চলচ্চিত্রে, কবিতায়।
পশ্চিমে হেলান দেয়া গদ্য
রফিকুজ্জামান রণি। একাডেমিক নাম- মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। পিতা- মোহাম্মদ কামরুজ্জামান খোকা, মাতা- লাভলী জামান। জন্ম ৩০ ডিসেম্বর, ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দ; চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলায়, দোঘর গ্রামে। লেখালেখির স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন : জেমকন পুরস্কার-২০১৯, চাঁদপুর জেলা প্রশাসক পুরস্কারÑ২০১৮; ‘এবং মানুষ তরুণ লেখক পুরস্কারÑ২০১৯; দেশ পাণ্ডুলিপি পুরস্কার- ২০১৮; নাগরিক বার্তা লেখক সম্মাননা- ২০১৯; চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার- ২০১৪; স্বরচিত কবিতাপাঠে জেলা শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার-২০১৬; জাতীয় সাহিত্য পরিষদ সম্মাননা- ২০১৪; দৈনিক চাঁদপুরকণ্ঠের বিশেষ সম্মাননা-২০১৫; ছায়াবাণী লেখক সম্মাননা- ২০১৬; পাঠক সংবাদ লেখক সম্মাননা-২০১৯, সাপ্তাহিক শপথ প্রদত্ত হিরো অব দ্যা উইক সম্মাননা-২০১৯ এবং ফরিদগঞ্জ লেখক ফোরাম সাহিত্য পদক- ২০১৩ সহ অসংখ্য পুরস্কার-সম্মাননা।
কবি ও কথাসাহিত্যিক রফিকুজ্জামান রণি চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করে কুমিল্লা বঙ্গবন্ধু ল’ কলেজ থেকে আইন বিষয়ক ডিগ্রী লাভ করেন। বর্তমানে তিনি চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। যুক্ত আছেন একাধিক ছোটকাগজ প্রকাশনার সঙ্গেও। তার প্রকাশিত গ্রন্থ দুই : ধোঁয়াশার তামাটে রঙ (কবিতা) এবং দুই শহরের জানালা (ছোটগল্প)।
চৈতি রাতের কাশফুল
Get access to your Orders, Wishlist and Recommendations.
There are no reviews yet.