Additional information
Weight | 0.77 kg |
---|---|
Published Year |
$ 0.71 $ 1.18
কিরণ আকরামুল হক এর “অহেতুক মানুষ” বইয়ের কবিতাগুলি আমাকে পড়তে হয়েছে নানকারণে। প্রথম বই প্রকাশের পর দু’বছর বিরতি দিয়ে কবি নিজেকে প্রস্তুত করেছেন। কবিতার ভেতরের শিল্পকে বুঝতে চেষ্টা করেছেন। রূপক, উপমার সেলাই শিখেছেন। সাথে প্রগতিশীলতার চর্চা থাকায়, ‘অহেতুক মানুষ’ গ্রন্থের প্রায় প্রতিটি কবিতাই কবিতা হয়ে উঠেছে। সমকালীন চিন্তা, বিষয় ভাবনা, আর পরিমিত নির্বাচিত শব্দ-প্রয়োগে অহেতুক মানুষ গ্রন্থের কবিতাগুলিকে কবি কিরণ আকরামুল হক এর ভাবনার পরিণত বুনন বলা যায়। গ্রন্থখানার দারুণ পাঠকপ্রিয়তা আশা করছি।
-ফিরোজ আহমেদ
Weight | 0.77 kg |
---|---|
Published Year |
সঞ্চয় সুমন। ঢাকাবাসী এক কবি। যে শুধু কল্পনার রঙে আঁকে শব্দ খেলার মাঠ। এই গ্রন্থটি কবির প্রথম কাব্যফসল।
গুপ্ত সমরে মুক্তির ঠিকানা
প্রাক-কথন
একটি সফল নাটক উচ্চারণ করে সময়ের সত্য, মানুষের অন্তর্গতে শায়িত থাকা সম্পর্কের সুস্পষ্ট স্বর।
নিজের শরীরে ধারণ করে জীবনের বহুমাত্রিক রং, যাপনের বর্ণমালা।
নাটক ‘ঈশান রাজকুমার’ এমনতর বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল।
ইতিহাস-নির্ভর রচনার ক্ষেত্রে লেখকের কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে। ঐতিহাসিক ঘটনা গুলির জন্য তাঁকে প্রাচীন পুঁথি, নথি এবং মানুষের মুখে মুখে ফেরা কথা ও কাহিনি থেকে নিজের লেখার উপাদান সংগ্রহ করতে হয়।
এবং এক্ষেত্রে লেখক হয়ে ওঠেন ভ্রামণিক। সময়ের সম্মুখে নয়, তিনি যাত্রা করেন অতীত সময়েরদিকে। পৌঁছাতে হয় পার-হয়ে-আসা-সময়ের হলুদ বৃত্তান্তগুলির কাছে। যে-লেখক তাঁর পুরোনো জন্মকালের মুহূর্তগুলিকে যত নিবিড় করে ছুঁতে পারেন, তিনিই তত সফলভাবে ঐতিহাসিক সত্যকে অধিগত করতে পারেন। সত্যের সেই বৃত্তান্তকে হাজির করতে পারেন তাঁর পাঠকের কাছে।
ইকবাল রাশেদীন শক্তিশালী কবি। কবির মননজাতবোধ এবং সুদূরপ্রসারী দৃষ্টি দিয়ে তিনি ছুঁয়েছেন দু’শো পঞ্চাশ বছর আগের পৃথিবীকে। নিজের পরিশ্রমী গবেষণা দিয়ে তুলে এনেছেন ইতিহাসের বুকে ধুসর হয়ে যাওয়া ঘটনাক্রমকে। কবি থেকে নাট্যকার হয়ে ওঠা খুব সহজ কাজ নয়, সেই অসহজ কাজটিই ইকবাল করে দেখিয়েছেন তাঁর ‘ঈশান রাজপুত্র’নাটকে।
আমার মনে হয়েছে, নাটকের জাহাজটি একটি দেশ এবং ঈশান রাজকুমার সেই দেশের যোগ্য নেতৃত্ব। এবং সেইসাথে নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র ঈশান আসলে ডানামেলা এক পাখি। যার দেশ নেই, সীমান্তনেই। আছে কেবল পৃথিবীময় একজগত বাড়ি। সেই বাড়ির বাসিন্দা হয়ে অন্তরমহল আর অন্দরমহলের কথাই সে উচ্চারণ করেছে আত্ম মগ্নস্বরে।
ইকবাল রাশেদীন কবি বলেই হয়তো এই আত্মমগ্নস্বরের নির্মাণে তিনি অনায়াস। এবং নাট্যকার হিসাবে তাঁর কৃতিত্ব এখানেই যে, এই আত্মমগ্ন স্বর শুধু তাঁর ‘আত্মমগ্নস্বর’ হয়েই থাকেনি, পাঠক/দর্শক ও খুঁজে পাবেন তার নিজের মতো করে নিজের ‘আত্মমগ্নস্বর’।
রেহান কৌশিক
পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
১৬ ডিসেম্বর ২০১৭
ঈশান রাজকুমার
সৈয়দ সাইফুর রহমান সাকিব। জন্ম: ১৯৭৮ সালে বরিশাল জেলা সদরে করিমকুটির নামক স্থানে। তার লেখার বিষয় মূলতঃ কবিতা। সময় নাট্যদলের সাথে একযুগ পার করেছেন। গানও লিখতেন কিন্তু বন্ধুবরের প্রয়ানে, অভিমানে আর সেপথ মারাননি। বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয়ে কর্মরত থাকলেও নিজেকে একজন কবিতার শতরঞ্জি মোড়ানো শ্রমিক বলেই মনে করেন। এটি কবির প্রথম বই।
রূপোর দ্যুতি
আলী রেজা। জন্ম: ১৯৫৭। মুক্তিযুদ্ধে আলোড়িত কবি, সত্তর দশকে মূলত ছোটকাগজে লেখালেখি শুরু করেন। সদ্য অবসরে যাওয়া একটি রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠানের বিপণন ব্যবস্থাপক। এটি কবির প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ।
আলী রেজা
বিলাল হোসেন-
জন্ম: ১ জানুয়ারি, ১৯৭৪।
জন্মস্থান- মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার রাজারচর কাজিকান্দি গ্রামে।
প্রকাশিত বই-
১. কাব্যগ্রন্থ- বিরুপা’র শূঁড়িবাড়ি(২০১৪)
২. অণুগল্প সংকলন- পঞ্চাশ(২০১৫)
৩. মহাপ্রভু ও অন্যান্য অণুগল্প(২০১৬)
৪. কাব্যগ্রন্থ- একজ্বলাপঙক্তি(২০১৬)
স¤পাদিত বইসমূহ-
সেরা ১০০ অণুগল্প(২০১৫) (প্রিন্ট ভার্সন)
ই-বুক স¤পাদনা-
দেখবে এসো তিলের বাগান
মেঘ অদিতি। কবি ও গল্পকার হিসেবে ‘দু’বাংলাতে পরিচিত। জন্ম: ৪মে, জামালপুর। বর্তমানে গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে কর্মরত। প্রকাশিত গ্রন্থ: ‘জলডুমুরের ঘুম (কাব্য)’ ‘অস্পষ্ট আলোর ঘোড়া (গল্প)’ ‘অদৃশ্যতা হে অনিশ্চিতি (কাব্য)’ এবং ‘সময় শূন্যতার বায়োস্কোপ (মুক্তগদ্য)।
প্রবেশিধকার সংরক্ষিত
কামরুজ্জামান কাজল বয়সে অনেক নবীন হওয়া সত্ত্বেও [জন্ম ২৫ মার্চ ১৯৯১] এবং অণুগল্প চর্চায় খুব বেশিদিন অতিবাহিত না করলেও ‘দলছুট শালিকগণ’ নামে যে বইটি প্রকাশিত হল;-এর বৈচিত্র্যপুর্ণ বিষয়বস্তু এবং অণুগল্প সম্পর্কিত ধারণার সাথে লেখকের যে নিবিড় ঐক্য স্থাপিত হয়েছে- বইটির পাঠশেষে এই কথাটাই মনে করবেন বিজ্ঞপাঠকগণ।
পাবনার ঈশ্বরদী থেকে আসা এই যুবকের ইতিপুর্বে ‘ শ্যাম পাহাড়ের আড়ালে’ নামে একটি কাব্যগ্রন্থও প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৬’র একুশে বইমেলায়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এগ্রিকালচারে স্নাতক শেষ করে লেখক বর্তমানে শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্তিকা বিজ্ঞানে মাস্টার্স করছেন।
‘দলছুট শালিকগণ’ কামরুজ্জামান কাজলের প্রথম অণুগল্পগ্রন্থ। অণুগল্পের ভিত্তি, বিকাশ এবং প্রচারে এই বইটি একটি মাইলফলক হিসেবে ভবিষ্যতে উচ্চারিত হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।
দলছুট শালিকগন
তুহিন দাস, কবি ও লিটলম্যাগ কর্মী। জন্ম: ১১ জানুয়ারি ১৯৮৫, জল ও কবিতার শহর বরিশালে। ছোটবেলা থেকেই লেখালেখি শুরু করেন। প্রথম কবিতার শিরোনাম ‘সমাধিপৃষ্ঠা’। ২০০০ সালে ‘আরণ্যক’ সাহিত্যপত্র সম্পাদনা শুরু করেন। সম্পাদনার জন্যে ২০১১ সালে ‘চিহ্ন সন্মাননা’ পেয়েছেন। বর্তমানে ‘আরক’ পত্রিকা ও প্রকাশনায় কর্মরত আছেন। তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ছয়, ‘বনসাই প্রকল্পের মানুষ’ ‘অসুখময় দিনরাত্রি’ ‘বিষাদনীলঘোড়া’ ‘কাজল বিক্রেতার স্বপ্ন’ ‘বাগান সিরিজ’ ও ‘দূরের পাড়া কাছের বাড়ি’।
কাঠের মুখ
সাঈদা মিমি। জন্ম: ২৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৮। বরিশালে। শৈশবের পুরোটাই এবং অর্ধেক কৈশোর কেটেছে পদ্মাপাড়ে, মানিকগঞ্জের ঘোনাপাড়া গ্রামে। লেখালেখির শুরু ছাত্রজীবনে। প্রথম প্রকাশিত হয় ইত্তেফাকে। ফ্রীল্যান্স সাংবাদিকতা, স্কুল মাস্টারিং, বায়িং হাউজের এডমিন, হাউজিং কোম্পানির এক্সিকিউটিভ ইত্যাদি বিচিত্র কর্মজীবন মেষে অতঃপর গৃহিণী। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘সব নিয়ে গেছে এক সময়ের লুটেরা বাতাস’ ‘ফারাও কুমারী’ ও ই-বুক ‘কীর্তনখোলা’।
একজন মৃতের ডাইরি
লেখক পরিচিতি :
সুলতানা শাহরিয়া পিউ। জন্ম: ২রা অক্টোবর। লেখালেখি, আবৃত্তি ও সঙ্গীতচর্চা তার শখ। অনুপ্রাণন সম্পাদনা পর্ষদ এর সদস্য, বর্তমানে দীপ্ত টেলিভিশনের স্ক্রিপ্ট রাইটার হিসেবে কর্মরত আছেন। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: ‘মেঘের সাথে কথা’। অনুবাদ কাব্যগ্রন্থ: ‘নিমগ্ন জলধারা’। স্ক্রিপ্ট সঙ্কলন: ‘আমরা করব জয়’। গীতিকবিতার অনুবাদ: ‘অচিন’। গল্প সংকলন: ‘মেঘের দেশে ফিরে যাবার গল্প’।
আমার দিনগুলো রইলো অসম্পূর্ণ
কাজী রহমান। পরবাসী লেখক নিজের পছন্দ মতো বাঁচতে দু-যুগ আগে মার্কিন মুলুকে চলে আসেন স্ত্রী ও প্রথম শিশুকন্যা সাথে নিয়ে। বড় হয়েছেন পুরনো ঢাকার গেন্ডারিয়া’য়। জ্ঞান হবার পরপরই নিজেকে আবিষ্কার করেছেন ঘরের পাশের গ্রন্থাগারে, বিভিন্ন শিশু সংগঠন আর সমাজসেবামূলক সংগঠনের আলোছায়ায়। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার দুরন্ত কিশোর স্বাধীনতার যুদ্ধ দেখেছেন কাছ থেকে আর আতঙ্কের দিন গুনেছেন সারাক্ষণ মুক্তিযোদ্ধা দু’ভাইয়ের ঘরে ফেরার অপেক্ষায়। গ্রাজুয়েশন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কর্মজীবন কেটেছে বিদেশী এয়ার লাইন্সের কর্মকর্তা হিসেবে।
তারাধুলো জল ও নস্টালজিয়া
সিদ্দিক প্রামানিক। জন্ম: ২১শে আগস্ট ১৯৭৯, কুস্টিয়ার কুমারখালী থানার চরভবানীপুরগ্রামে। বাংলা সাহিত্যে মাস্টার্স শেষ করে বর্তমানে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন এবং বাম প্রগতিশীল সংগঠনের সক্রিয় সংগঠক ও সংস্কৃতকর্মী। প্রথম বই ‘হাঙরের সমুদ্রে মননশীল মাছ’।
উন্মাদের কনসার্ট
ফরিদ আহমেদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর। শিক্ষকতা করেছেন ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমানে টরেন্টোতে ।
ফরিদ আহমেদ
সম্পাদকীয়-
অনুপ্রাণন: বাংলা সাহিত্যে ছোটগল্পের পথ-পরিক্রমা
অনুপ্রাণনের পক্ষ থেকে ছোটগল্পের এই বিশেষ আয়োজন বা বিশেষ সংখ্যা প্রকাশকে কেন্দ্র করে প্রথমেই যে প্রশ্নটা উঠতে পারে যে, কোনটাকে আমরা ছোটগল্প বলবো? বিশ্বসাহিত্যে কথাসাহিত্যের বিশেষ ধারা ছোটগল্পের সংজ্ঞা ও ধারণার মাঝে যেভাবে বদল হয়েছে বাংলা সাহিত্যে ঠিক সেভাবে হয়নি।
বাংলা সাহিত্যে কথাসাহিত্যের বিশেষ ধারা ছোটগল্পের আবির্ভাব ঊনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে। বহুল স্বীকৃত ধারণা এটাই যে, ছোটগল্প বলতে সাধারণত তাকেই বোঝায় যে কথা বা কাহিনী যা আধঘণ্টা থেকে এক বা দু’ঘণ্টার মধ্যে এক নাগাড়ে পড়ে শেষ করা যায়। কিন্তু গল্প বা উপন্যাস আকারে ছোট হলেই কী তাকে ছোটগল্প বলা যাবে? না, কারণ আমরা এটা বোঝার চেষ্টা করেছি যে, ছোটগল্পের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এতে বিন্দুতে সিন্ধুর বিশালতা থাকতে হবে, অর্থাৎ অল্প কথায় অধিক ভাব ব্যক্ত করতে হবে। উপন্যাসের সঙ্গে এর মৌলিক পার্থক্য এখানেই। ছোটগল্পে উপন্যাসের বিস্তার থাকে না, কিন্তু থাকে ভাবের গভীরতা ও ব্যাপকতা। উপন্যাস পড়ে পাঠক পরিতৃপ্তি লাভ করে, কিন্তু ছোটগল্প থেকে পায় কোনো চিন্তা অথবা কোনো ভাবের শক্তিশালী ইঙ্গিতমাত্র। কাহিনীর কোনো বিশেষ রূপ বা কোনো বিশেষ অংশকে অবলম্বন করে ক্ষুদ্র কলেবরে নিগূঢ় ভাব অথবা চিন্তা যেখানে নিগূঢ় সত্যের ব্যঞ্জনার সার্থক অবস্থান থাকে তবে এর মাঝেই ‘ছোটগল্প’ সার্থকভাবে হয়ে উঠতে পারে।
ছোটগল্পের প্রকৃতি সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১) তাঁর ‘বর্ষাযাপন’ কবিতায় যা বলেছেন, সেই সংজ্ঞার মাঝে ছোটগল্প আর আবদ্ধ নেই। কেননা ছোটগল্প ছোট প্রাণ, ছোট ব্যথা ছোট ছোট দুঃখকথা, নিতান্তই সহজ সরলের মাঝে আর আবদ্ধ নেই। তবে ঐ যে ‘শেষ হয়ে হইল না শেষ’ কথাটা হয়তো থাকবে বহুকাল যতদিন ছোটগল্প দ্রুপদী সত্যেকে লতিয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টায় নিয়োজিত থাকবে।
বিশ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত রচিত ছোটগল্পগুলোকে বিষয়বস্তুর দিক থেকে কয়েকটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যেমন:
১) প্রেমের গল্প, ২) সামাজিক গল্প, ৩) ঐতিহাসিক গল্প, ৪) প্রকৃতি ও মানুষ সম্পর্কিত গল্প, ৫) রূপক বা সাঙ্কেতিক গল্প, ৬) অতিপ্রাকৃত, ৭) ব্যঙ্গ বা হাস্যরসাত্মক, ৮) মনস্তাত্ত্বিক গল্প, ৯) গার্হস্থ্যবিষয়ক গল্প, ১০) বিজ্ঞানবিষয়ক গল্প, ১১) উদ্ভট গল্প, ১২) মনুষ্যত্বের প্রাণিবিষয়ক গল্প, ১৩) বস্তুনিষ্ঠ গল্প, এবং ১৪) বিদেশি পটভূমিকায় রচিত গল্প।
যদিও বাংলা ছোটগল্পের প্রথম আভাস পাওয়া যায় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের (১৮৩৮-১৮৯৪)—যুগলাঙ্গুরীয় (১৮৭৪) ও রাধারাণী (১৮৭৫) গল্পে এবং পরে যোগ দেন পূর্ণচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের, সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের (১৮৩৪-১৮৮৯), ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় (১৮৪৭-১৯১৯), স্বর্ণকুমারী দেবী (১৮৫৫-১৯৩২) ও নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত; কিন্তু প্রকৃত অর্থে বাংলা সাহিত্যে প্রথম সার্থক ছোটগল্পকার হলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং ‘দেনা-পাওনা’ (১৮৯০) গল্পটিই প্রথম সার্থক ছোটগল্প হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে।
রবীন্দ্রনাথের সমসাময়িক ছোটগল্পকারদের মধ্যে প্রথমেই উল্লেখযোগ্য কেদারনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (১৮৬৩-১৯৪৯) নাম। এর পরের ছোটগল্পকার হলেন প্রমথ চৌধুরী (১৮৬৮-১৯৪৬), প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় (১৮৭৩-১৯৩২), শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের (১৮৭৬-১৯৩৮), চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮৭৭-১৯৩৮), মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায় (১৮৮৮-১৯২৯), বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮৯৪-১৯৫০), তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮৯৮-১৯৭১), কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬), শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় (১৯০০-১৯৭৬), মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯০৫-১৯৫৬), প্রবোধকুমার সান্যালের (১৯০৫-১৯৮৩) ইত্যাদি কথাসাহিত্যিকদের নাম উল্লেখযোগ্য।
বিভাগ-পূর্বকালে ছোটগল্প রচনায় খ্যাতি লাভ করেছিলেন এমন আরো কয়েকজন লেখক হলেন—দক্ষিণারঞ্জন মিত্রমজুমদার, রাজশেখর বসু, সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায়, সতীনাথ ভাদুড়ী, বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়, মনোজ বসু, প্রেমেন্দ্র মিত্র, সৈয়দ মুজতবা আলী প্রমুখ।
১৯৪৭ সালে দেশভাগের কারণে তৎকালীন পূর্ববঙ্গ তথা বর্তমান বাংলাদেশের সাহিত্যে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়, অল্পকালের মধ্যেই এ-দেশীয় লেখকদের সৃষ্টিশীল রচনায় তা পূর্ণ হয়ে ওঠে। সাহিত্যের অপরাপর শাখার মতো ছোটগল্পের শাখাটিও ক্রমাগত ঋদ্ধতর হয়।
বাংলাদেশে ছোটগল্প রচনার ধারা বেগবান হয় চল্লিশের দশকে। এ সময় গল্পের বিষয়বস্তু হিসেবে গৃহীত হয় গ্রাম ও নগর জীবনের কাহিনী। অনেক গল্পে স্থান পায় দেশবিভাগের মর্মান্তিক পরিণতি। আবার দেশ বিভাগের আগেকার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও তেতাল্লিশের মন্বন্তরও কোনো কোনো গল্পের উপজীব্য হয়। আবুল মনসুর আহমদ (১৮৯৮-১৯৭৯), আবু রুশদ (১৯১৯-) এবং সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ (১৯২২-১৯৭১) ছোটগল্পের প্রথম পর্বের তিন খ্যাতিমান লেখক। আবুল মনসুর প্রধানত হাস্যব্যঙ্গাত্মক অথচ গভীর সমাজমনস্ক ছোটগল্পের রচয়িতা। ধর্মীয় গোঁড়ামি ও ভ-ামি তাঁর তীক্ষè সমালোচনার লক্ষ্য। প্রায়শ সমাজবিরোধী ব্যক্তিরা তাঁর গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হয়েছে। আবু রুশদ ছোটগল্পে নগরজীবনের প্রথম সার্থক ভাষ্যকার। নাগরিক জীবনের জটিলতা এবং দৈনন্দিন জীবনের ছোটখাটো বিষয় নিয়ে তিনি বহু গল্প রচনা করেছেন। বাংলাদেশের গ্রাম, এর পশ্চাৎপদতা, কুসংস্কার, ধর্মীয় গোঁড়ামি ইত্যাদি বিষয় বাঙময় হয়ে উঠেছে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর গল্পে। এ সময়ের আরও দুজন গল্পকার ফজলুল হক (১৯১৬-১৯৪৯) ও সোমেন চন্দ (১৯২০-১৯৪২) গল্প রচনায় অসাধারণ কৃতিত্ব দেখিয়েছেন।
পঞ্চাশের দশকে পূর্ববঙ্গের রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে সাহিত্যজগতে লক্ষ করা যায় অভূতপূর্ব অগ্রগতি। পশ্চিম পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে বাঙালির আত্মচেতনার বিকাশ ঘটে ১৯৫২-এর ভাষা-আন্দোলনে। এর ফলে তখন সমাজ ও সাহিত্য উভয়ই প্রবলভাবে আলোড়িত হয়। ভাষা-আন্দোলনের পরের বছরই এর গৌরবময় স্মৃতিকে ধারণ করে কবি হাসান হাফিজুর রহমানের (১৯৩২-১৯৮৩) সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় একুশের সংকলন একুশে ফেব্রুয়ারি। এতে সমকালীন সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য অবদান উপস্থাপিত হয়। এর অনুসরণে পরবর্তীকালে বহুসংখ্যক পত্রপত্রিকা প্রকাশিত হতে থাকে। সমকাল, কণ্ঠস্বর, পূর্বমেঘ, উত্তরণ, ছোটগল্প, পূর্বপত্র, সাম্প্রতিক, গণসাহিত্য, বিপ্রতীপ প্রভৃতি একুশে ফেব্রুয়ারিই সার্থক উত্তরাধিকারী। এ চেতনায় ছোটগল্পও সমৃদ্ধ হতে থাকে প্রচুর গল্পকারের লেখনী-প্রভাবে।
এ সময় ছোটগল্পে নবীন-প্রবীণ লেখকদের হাতে বিচিত্র বিষয়ের রূপায়ণ ঘটে। ইব্রাহীম খাঁ (১৮৯৪-১৯৭৮), মাহবুব-উল আলম (১৮৯৮-১৯৮১), আবুল ফজল (১৯০৩-১৯৮৩), আবু জাফর শামসুদ্দীন (১৯১১-১৯৮৮), শওকত ওসমান (১৯১৭-১৯৯৮), সরদার জয়েনউদ্দীন (১৯১৮-১৯৮৬), আবদুল হক (১৯১৮-১৯৯৭), শামসুদ্দিন আবুল কালাম (১৯২৬-১৯৯৮), আবু ইসহাক (১৯২৬-২০০৩), আশরাফ সিদ্দিকী (১৯২৭-), আলাউদ্দিন আল আজাদ (১৯৩২-২০০৯), জহির রায়হান (১৯৩৩-১৯৭২) প্রমুখ এ সময়কার উল্লেখযোগ্য গল্পকার। এঁদের মধ্যে বিষয়বৈচিত্র্যে, শিল্পচেতনার অনন্যতায় এবং প্রকাশভঙ্গির প্রাতিস্বিকতায় উল্লেখযোগ্য হয়ে ওঠেন শওকত ওসমান ও আলাউদ্দিন আল আজাদ। এ দুজনের মাধ্যমেই পঞ্চাশের দশকে বাংলাদেশের ছোটগল্প অর্জন করে সামাজিক বাস্তবতার এক নতুন মাত্রা। গ্রামীণ ও শহুরে জীবন চিত্রণে এবং বিচিত্র চরিত্র নির্মাণে শওকত ওসমানের কৃতিত্ব অবিস্মরণীয়। আলাউদ্দীন আল আজাদের মধ্যে দুই বিপরীতধর্মী শিল্পচেতনার সমন্বয় লক্ষণীয়। নরনারীর মনোজাগতিক বিশ্লেষণে, যৌনতা চিত্রণে এবং সামাজিক চরিত্র উন্মোচনে আজাদ সমান দক্ষতার পরিচয় দেন।
এ প্রসঙ্গে আরও দুজন গল্পকারের দুটি গল্প বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য—শাহেদ আলীর ‘জিবরাইলের ডানা’ (জিবরাইলের ডানা, ১৯৫৩) এবং মাহবুব-উল আলমের ‘মফিজন’ (মফিজন, ১৯৫৪)। গল্প দুটিতে মানুষের অভাবক্লিষ্ট জীবন, ধর্মের রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক শোষণ, সামাজিক নিষ্ঠুরতার প্রেক্ষাপটে নারীর হৃদয়বৃত্তির প্রকাশ এবং গ্রামবাংলার অবহেলিত নারীসমাজকে সামাজিক, পারিবারিক ও ব্যক্তিক মর্যাদাদানের বিষয় চমৎকারভাবে চিত্রিত হয়েছে। এভাবে ভাষা-আন্দোলনের পরবর্তী পর্যায়ে ছোটগল্পে সমাজ ও জীবনের স্বরূপ নানাভাবে প্রতিফলিত হতে থাকে; বিভিন্ন গল্পে প্রচারিত হতে থাকে মানবতাবাদ, সমাজসচেতনতা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা।
ষাটের দশক থেকে ছোটগল্পের দুটি বিশেষ দিক লক্ষণীয় হয়ে ওঠে: সমকালীন ঘটনার ব্যাপক প্রতিফলন এবং ব্যক্তিসত্তার বিভিন্নমুখী বিশ্লেষণ। ভাষা আন্দোলনের পর থেকে পূর্ববঙ্গের রাষ্ট্র ও সমাজ তরঙ্গবিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। ১৯৫৮-এর সামরিক শাসন, ১৯৬৯-এর গণআন্দোলন, ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচন এবং ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকে অবলম্বন করে সমৃদ্ধ হয়েছে বাংলাদেশের ছোটগল্প। লায়লা সামাদ (১৯২৮-১৯৮৯), সুচরিত চৌধুরী (১৯২৯-১৯৯৪), আবদুল গাফফার চৌধুরী (১৯৩১-), হাসান হাফিজুর রহমান (১৯৩২-১৯৮৩), সৈয়দ শামসুল হক (১৯৩৫-), শওকত আলী (১৯৩৬-), জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত (১৯৩৯-), হাসান আজিজুল হক (১৯৩৯-), হাসনাত আবদুল হাই (১৯৩৯-), রাহাত খান (১৯৪০-), আবদুল মান্নান সৈয়দ (১৯৪৩-), আখতারুজ্জামান ইলিয়াস (১৯৪৩-১৯৯৭), সেলিনা হোসেন (১৯৪৭-) প্রমুখ গল্পকারের আত্মপ্রকাশ ঘটে ষাটের দশকের রাজনৈতিক-সামাজিক প্রেক্ষাপটে। এঁদের মধ্যে বিষয়বস্তু, প্রকরণ ও ভাষাশৈলীর ক্ষেত্রে নতুনত্ব আনয়নের জন্য সৈয়দ শামসুল হক, শওকত আলী, জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, হাসান আজিজুল হক, আবদুল মান্নান সৈয়দ ও আখতারুজ্জামান ইলিয়াস বিশেষভাবে স্মরণীয়। এঁরা গল্প রচনায় প্রয়োগ করেন বিশ্লেষণধর্মিতা, অন্তর্মুখী ব্যঞ্জনা, আঞ্চলিক জীবন ও উপভাষা।
শহুরে মধ্যবিত্ত জীবনের সঙ্কট ও গ্রামীণ জীবনকে আধুনিক শিল্পচেতনায় উপস্থাপনে সৈয়দ শামসুল হক বিশেষ কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন। নরনারীর সম্পর্ক, মনস্তাত্ত্বিক জটিলতা প্রভৃতি প্রাধান্য পেলেও শওকত আলী শেষ পর্যন্ত সমষ্টি মানুষের জীবনকেই রূপায়িত করার প্রতি অধিকতর মনোযোগী হন। তিনি নিম্নজীবী-হতদরিদ্র মানুষের কাহিনী বর্ণনায় বিশেষ সিদ্ধি অর্জন করেন।
বাকসংযম কাব্যময়তা ও প্রতীকতা সৃষ্টিতে এবং সমাজজীবনের গভীর প্রদেশ উন্মোচনে হাসান আজিজুল হকের সাফল্য অসাধারণ। গল্পকার হিসেবে ব্যাপক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সম্মানও অর্জন করেন তিনি। বাস্তব ও পরাবাস্তবের আলোছায়া, মানবচরিত্রের রহস্যময়তা এবং সংক্ষুব্ধ সমকাল—জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত ও আবদুল মান্নান সৈয়দের গল্পের মৌল উপাদান। ছোটগল্পের স্বল্প পরিসরেও অস্তিত্বের সঙ্কট, জীবনের ক্লিন্নতা ইত্যাদি বিষয়কে প্রকাশ করতে গিয়ে জ্যোতিপ্রকাশ গল্পের আঙ্গিক ও ভাষা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। দুর্বিনীত প্রধান (১৯৬৫), বহে না সুবাতাস (১৯৬৭), সীতাংশু তোর সমস্ত কথা (১৯৬৯) প্রভৃতি তাঁর প্রধান গল্পগ্রন্থ। জটিল বর্ণনারীতি, ব্যতিক্রমধর্মী শব্দব্যবহার, কাব্যিক পরিচর্যা ইত্যাদি বাংলাদেশের ছোটগল্পে এসেছে আবদুল মান্নান সৈয়দের মাধ্যমে। প্রতীকতা, পরাবাস্তবতা ও আধুনিক অস্তিত্ববাদের নিরিখে ব্যক্তি-সমাজের যোগসূত্র অনুসন্ধান তাঁর গল্পকে দিয়েছে বিশিষ্টতা।
ষাটের দশকে আত্মপ্রকাশ ঘটেছে এরকম গল্পকারদের মধ্যে আখতারুজ্জামান ইলিয়াস সর্ব অর্থেই ব্যতিক্রমধর্মী। গ্রাম-নগর উভয় প্রেক্ষাপটেই তিনি ছিলেন সাবলীল। পুরান ঢাকা তাঁর গল্পে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। তাঁর গল্পের চরিত্রসমূহ লোভ-লালসা, ভালোবাসা-ঘৃণা, হিংস্রতা-ক্রুরতায় অর্জন করে সর্বজনীনতা। বাংলাদেশের ছোটগল্পে একটি নতুন গল্পভাষা নির্মিত হয় তাঁর হাতে। তাঁর গদ্যের ইতিবাচক পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফল তাঁর সার্থক ছোটগল্পগুলো। একেবারে চলিত কথ্যভঙ্গিকে মার্জিত চলিত গদ্যের সঙ্গে মিশিয়ে তিনি এক বেগবান ভাষা সৃষ্টি করেন, যা উভয় বাংলার প্রচলিত আদর্শ গদ্যরীতি থেকে আলাদা এবং যা একান্তই তাঁর। আলোচ্য গল্পকারবৃন্দ ছাড়াও যাঁরা স্বাতন্ত্র্যের পরিচয় রেখেছেন তাঁরা হলেন সাইয়িদ আতীকুল্লাহ, বশীর আল হেলাল, রাহাত খান, হাসনাত আবদুল হাই, সেলিনা হোসেন প্রমুখ।
ষাটের দশক বাংলাদেশের ছোটগল্পে এক উল্লেখযোগ্য অধ্যায়। রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে এ দশক অত্যন্ত তাৎপর্যবহ। শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক পত্র-পত্রিকাও এ সময় থেকেই প্রচুর পরিমাণে প্রকাশিত হতে থাকে। দেশে আসতে শুরু করে বিদেশি প্রগতিশীল সাহিত্যের অনূদিত গ্রন্থাদি। গল্পকারের সংখ্যাপ্রাচুর্যেও এ দশক সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পরবর্তী সময়ে ষাটের দশকের ধারাই আরো গতিশীল হয় এবং মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত নতুন নতুন গল্পকারের আবির্ভাবে সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে ছোটগল্পের জগৎ। হেলেনা খান (১৯২৯-), শহীদ আখন্দ (১৯৩৫-), আবুবকর সিদ্দিক (১৯৩৬-), মাহমুদুল হক (১৯৪০-), বুলবন ওসমান (১৯৪০-), বিপ্রদাশ বড়–য়া (১৯৪২-) হাজেরা নজরুল (১৯৪২-), আহমদ ছফা (১৯৪৩-২০০১), ঝর্ণা দাশ পুরকায়স্থ (১৯৪৫-), ফরিদা হোসেন (১৯৪৫-), কায়েস আহমেদ (১৯৪৮-১৯৯২), হুমায়ুন আহমেদ (১৯৪৮-) প্রমুখ গল্পকারের আত্মপ্রকাশ মুক্তিযুদ্ধ-পূর্ববর্তীকালে হলেও মুক্তিযুদ্ধের পরেই তাঁরা খ্যাতি অর্জন করেন। অন্তিম ষাটের এ প্রজন্মকে স্বাধীনতা-পূর্ববর্তী ও স্বাধীনতা-পরবর্তী দুই প্রজন্মের সেতুবন্ধ বলে অভিহিত করা যায়। এঁদের মধ্যে আবুবকর সিদ্দিক (ভূমিহীন দেশ, ১৯৮৫; চরবিনাশকাল, ১৯৮৭; মরে বাঁচার স্বাধীনতা, ১৯৮৭), মাহমুদুল হক (প্রতিদিন একটি রুমাল, ১৯৯৪), আহমদ ছফা (নিহত নক্ষত্র, ১৯৬৯), কায়েস আহমেদ (অন্ধ তীরন্দাজ, ১৯৭৮; লাশকাটা ঘর, ১৯৮৭) প্রভৃতি গল্পকার বিষয় ও ভঙ্গির ক্ষেত্রে মৌলিক পরিচয় দিয়েছেন।
১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা লাভের পরে ছোটগল্পে অনিবার্যভাবে যুক্ত হয় মুক্তিযুদ্ধের বিষয়টি। যুদ্ধ এবং যুদ্ধপরবর্তী বাস্তবতার আলোকে রচিত হয় বিপুলসংখ্যক ছোটগল্প। তবে ষাটের দশকের ছোটগল্পে আঙ্গিক ও ভাষার ক্ষেত্রে যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলেছিল, সত্তরের দশকে তা লক্ষিত হয় না। মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে ছোটগল্পে সর্বাধিক লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে এর বিষয়বৈচিত্র্য। মহসিন শস্ত্রপাণি (১৯৪৫-), সাযযাদ কাদির (১৯৪৭-), শান্তনু কায়সার (১৯৫০-), হরিপদ দত্ত, মুস্তাফা পান্না (১৯৫২-), ভাস্কর চৌধুরী (১৯৫২-), মঞ্জু সরকার (১৯৫৩-), সুশান্ত মজুমদার (১৯৫৪-), ইমদাদুল হক মিলন (১৯৫৫-), আহমদ বশীর (১৯৫৫-), ইসহাক খান (১৯৫৫-), আহমদ মুসা (১৯৫৭-), মঈনুল আহসান সাবের (জ. ১৯৫৮) প্রমুখ স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রথম দশকের গল্পকার। মহসিন শস্ত্রপাণি (জনশ্রুতি, ১৯৭৯), মুস্তাফা পান্না (লোকসকল, ১৯৮৪), মঞ্জু সরকার (অবিনাশী আয়োজন, ১৯৮২) প্রমুখ যুদ্ধ-পরবর্তী বাংলাদেশের গ্রামীণ জীবনের অভাব-বঞ্চনা-শোষণের চিত্র তুলে ধরেন। সুশান্ত মজুমদার (ছেঁড়াখোঁড়া জমি, ১৯৮৫; রাজা আসেনি বাদ্য বাজাও, ১৯৯৪; শরীরে শীত ও টেবিল গু-াপা-া, ১৯৯৮), আহমদ বশীর (অন্য পটভূমি, ১৯৮১), মঈনুল আহসান সাবের (পরাস্ত সহিস, ১৯৮২; অরক্ষিত জনপদ, ১৯৮৩; আগমন সংবাদ, ১৯৮৪) স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশের নাগরিক জীবনের বিশিষ্ট রূপকার।
সত্তরের দশকে মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতা, স্বপ্নভঙ্গের বেদনা, সামরিক শাসনের দুঃসহ বাস্তবতা, দারিদ্র্য, বেকার সমস্যা, নারীনির্যাতন, সন্ত্রাস প্রভৃতির প্রভাব পড়ে ছোটগল্পে। স্বাধীনতার পর থেকে আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা এবং অন্যান্য দেশের শ্রেষ্ঠ সাহিত্যগ্রন্থগুলো দেশে অবাধে আসতে শুরু করে। অন্যদিকে মিডিয়া-টেকনোলজির অভাবিত উন্নতির ফলে তথ্য ও অন্যান্য বিষয়ে লেখক-পাঠক উভয়ের অভিজ্ঞতার পরিধি বৃদ্ধি পায়। সাহিত্যের ক্ষেত্রে এ নতুন অভিজ্ঞতাও যুক্ত হতে থাকে। তাই অন্তিমসত্তর থেকে আশির দশকের এবং সাম্প্রতিক বাংলা গল্পে বিষয়বস্তু, প্রকাশভঙ্গি ও ভাষার ক্ষেত্রে বেশ পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। এমনকি কোনো কোনো গল্পকারের গল্পকে ছোটগল্পের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিকও বলা চলে। আবু হাসান শাহরিয়ার, অনামিকা হক লিলি, সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, বিশ্বজিত চৌধুরী, মহীবুল আজিজ, ওয়াহিদ রেজা, আনিসুল হক, মনির জামান, মামুন হুসাইন, সেলিম মোরশেদ, হুমায়ুন মালিক, সেলিম মোজাহার, শাহনাজ মুন্নী, রাজীব নূর, ফাহমিদুল হক, অদিতি ফাল্গুনি, আহসান ইকবাল, প্রশান্ত মৃধা প্রমুখ সত্তরের শেষ থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক ধারা পর্যন্ত সৃষ্টিশীল গল্পকার হিসেবে খ্যাত।
এঁদের মধ্যে মামুন হুসাইনের কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। আশির দশকের এ গল্পকার প্রচলিত বাংলা গল্পে সম্পূর্ণ নতুন একটি ধারার সূচনা করেন। বিষয়ভাবনা ও প্রকাশভঙ্গিতে বাংলা ছোটগল্পে তাঁর পূর্বে এমন আর কাউকে দেখা যায়নি। ১৯৯৫ সালে প্রকাশিত তাঁর গল্পগ্রন্থ শান্ত সন্ত্রাসের চাঁদমারি ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করে। তাঁর গল্পে বাস্তব ও কল্পজগতের সঙ্গে নিজস্ব দার্শনিক বোধ মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। তাঁর গল্পগুলো কেবল প্রচলিত ধারার ব্যতিক্রমই নয়, সেগুলোতে বাংলাদেশের জীবন আশ্চর্য রকমভাবে বাঙ্ময় হয়ে উঠেছে।
অষ্টম বর্ষ প্রথম সংখ্যা
প্রশিক্ষণ পরিচিতি:
প্রশিক্ষণ পরিচিতি বইটিকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার আর প্রয়োজন নেই হয়তো। ইতোমধ্যে এই বইয়ের তৃতীয় সংস্করণ ও চতুর্থ মুদ্রণ শেষ হয়েছে। কিন্তু প্রায় পাঁচ বছর আগে চতুর্থ মুদ্রণ শেষ হলেও বিভিন্ন কারণে চতুর্থ সংস্করণ ও পঞ্চম মুদ্রণ দীর্ঘ সময় লেগে গেল।
বাংলাদেশে বাংলা ভাষায় প্রশিক্ষণ পরিচিত একমাত্র বই যেটি সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষকগণ ১৯৯৮ সাল থেকে ব্যবহার করে আসছেন। আরও আনন্দের বিষয় যে, এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নন-ফরম্যাল এডুকেশন বিষয়ের জন্য পাঠ্য এবং কয়েকটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রেফারেন্স বই হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। দেশের প্রায় সবগুলো প্রশিক্ষণ একাডেমিতেও এই বইয়ের ব্যবহার ও অন্তর্ভুক্তি রয়েছে।
কী আছে এই বইয়ে?
প্রায় সাড়ে ছয় শত পৃষ্ঠার বইটিতে প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট ষোলোটি অধ্যায় রয়েছে। একজন প্রশিক্ষক কীভাবে নিজেকে তৈরি করবেন, কীভাবে দক্ষতা বাড়িয়ে শ্রেষ্ঠ প্রশিক্ষক হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলবেন তার কলাকৌশল সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা রয়েছে। এই বইয়ে রয়েছে ৭৫টি প্রশিক্ষণ পদ্ধতিসহ বিভিন্ন কনসেপ্টের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ। যেমন- প্রশিক্ষণ, ফ্যাসিলিটেশন, শিখন, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ চাহিদা নিরূপণের কলাকৌশল, প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল/মডিউল প্রণয়নের তাত্ত্বিক ও ব্যাবহারিক ধারণা, যোগাযোগ, উপস্থাপন, প্রশিক্ষণ মূল্যায়নের তাত্ত্বিক ও ব্যাবহারিক ধারণা। প্রশিক্ষক কীভাবে একটি প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালনা করবেন এবং প্রশিক্ষণ কোর্সের পর প্রতিবেদন লেখার কলাকৌশলেরও বিশদ বর্ণনা এই বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সর্বশেষে রয়েছে ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কিত একটি সমৃদ্ধ পরিভাষা।
প্রশিক্ষণ পরিচিতি - Proshikkhon Parichiti
গাঢ় প্রগাঢ়–
তোমার গলার স্বর বেজে ওঠে কালিক ভাষায়
আমি ঊর্ধ্বাকাশে তাকালে ঝরে পড়ে
নিষ্ঠ পেন্ডুলামের নির্মোহ দোল।
নস্টালজিক বিভাস
রাজন্য রুহানি। পরিবারের দেওয়া সনদসাক্ষ্য নাম মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। জন্ম: ২রা নভেম্ভর ১৯৮০, জামালপুর জেলা শহরের হাটচন্দ্রায়। কলেজে পা দেবার সাথে সাথেই সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন। স্থানীয় কয়েকটি দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকার বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। মফস্বল সাংবাদিকতার পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে না পেরে বারবার কবিতার কছেই ফেরা। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং। ১৯৯৮ থেকে কবিতার ভাঁজপত্র শব্দদূত সম্পাদনার সাথে যুক্ত। ঐ বছরই অন্যান্য লেখক সহযোগে আলোচনাগ্রন্থ- ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ; আতিয়ার রহমানের ৭টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। এটি লেখকের প্রকাশিত এককবই।
গল্প সমাপ্তির গান
প্রেমের গল্প
—একটা লতা চাই, যাকে বেয়ে বেয়ে নিচে নামতে পারি। তুই হবি সেই লতা, বল?
এই বলে চোখের দিকে তাকিয়ে রইল সূর্য। যার দিকে সে তাকিয়ে ছিল তার মাথায় দুই বিনুনি। চোখে কাজল। লম্বা গলা আর তিরতির করে কাঁপতে থাকা নাকের বাঁশি। থুঁতনিতে তিল।
সূর্য থুঁতনি ধরে আবার বলল—এই লতা, তুই আমার লতা হবি?
বিকেলের আলো যাই যাই করেও যেন যেতে পারছে না, লতা কি বলে, সেটা সে দেখবে—দেখবেই। ছাদের ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছিল বিন্দুপাখি। প্রশ্নটা তাদের কানেও পৌঁছেছিল কি না কে বলবে—কিন্তু তারা অনেকখানি নেমে এল নিচে। তারপর আরও কত জায়গায় কুজায়গায় যে প্রশ্নের এই রেশ চলে গিয়েছিল বিকালবেলাটি তার হিসাব দিতে পারবে না। যেমন—লতাদের ছাদের একপাশে কবুতরের ঘর। তাদের মধ্যে চাঞ্চল্য দেখা দিল। পুবকোণার দেয়ালের পাশে কয়েকটি সন্ধ্যামালতি ফুটব ফুটব করছিল কিন্তু সূর্যর প্রশ্নে লতা কি উত্তর দেয় তা শোনার জন্যে আগেভাগেই ফুটে গেল।
সূর্য থুঁতনি ধরেই ছিল। লতা মুখ নিচু করেই ছিল। ছাদের ভেতরে এত বাতাসের যাওয়া আসা তবু লতার গরম লাগতে লাগল। নাকের ডগায় চিকচিক করতে লাগল ঘাম।
ধীরে ধীরে চোখ তুলে লতা যখন কথা বলবে, হয়েছে কি, গলা দিয়ে আর কথা বের হয় না। জিব শুকিয়ে গেছে। গলা দিয়ে ফিসফিসানো শব্দ বের হল। আর সেই শব্দের ভেতর থেকে বের হয়ে আসে—সূর্য ভাইয়া! আমার খুব ভয় করে।
সূর্য কলেজ। লতা নাইন। কিন্তু এই মুহূর্তে সূর্য যেন আরও বড় হয়ে গেল। ভয় করে? আমি ত আছি।
বলে লতাকে বুকের ভেতরে লুকিয়ে ফেলল।
সিঁড়ির কাছে চামেলি ফুলের ঝাড়। ঝাড়ের ভেতরে অন্ধকার। অন্ধকারের ভেতরের কে ফুঁপিয়ে উঠল—
পাতা। লতার বোন। হাতে ধরা প্রেমপত্র। সূর্য ভাইয়া—I Love You।
যুগলবন্দী
মঞ্জু সরকার, বাংলাদেশের অন্যতম কথা সাহিত্যিক। জন্ম ১ সেপ্টেম্বর ১৯৫৩, রংপুর। ছোটগল্প উপন্যাস ও শিশু-কিশোর গ্রন্থ মিলিয়ে প্রকাশিত গ্রন্থ অর্ধশতাধিক। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছেÑ মৃত্যুবাণ, উচ্ছেদ উচ্ছেদ খেলা, যৌথ একাকিত্ব, তমস, নগ্ন আগন্তুক, ছোট্ট এক বীরপুরুষ ইত্যাদি। বাংলা একাডেমি, ফিলিপস, ব্যাংক সাহিত্যসহ বিভিন্ন পুরস্কার পেয়েছেন।
রূপান্তরের গল্পগাথা
ভূমিকা
‘সীমান্তিনী’ আমার লেখা দীর্ঘ কবিতার মধ্যে অন্যতম। বারোটি কবিতা নিয়ে এই বইটি। কবিতায় প্রকাশ পেয়েছে প্রেমের পাশাপাশি পাহাড়ি সৌন্দর্য, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী গারো, হাজং প্রভৃতি আদিবাসীদের সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও তাদের জীবনধারা। পাহাড়ি নারীর সৌন্দর্য, বালুকণা, সমুদ্র, আঁকাবাঁকা-উঁচুনিচু পথের দৃশ্যও এই বইতে চিত্রিত হয়েছে। প্রতিটি কবিতার পাতা রাঙানো হয়েছে ভালোবাসার রঙে।
কিসিঞ্জার ভূঁইয়া
০১ সেপ্টেম্বর, ২০২০
সীমান্তিনী
রোবটদের গল্প
মা ঘুমপাড়ানি গান শোনায়। মাসিপিসির ছড়া শোনায়। দৈত্যদানবের গল্প শোনায়। তবুও ঘুম আসে না মিতুর। ঘুমোতে একটুও ভালো লাগে না তার। শুধু খেলাতে ইচ্ছে করে। হঠাৎ একদিন কী যেন হয়। খুব ঘুম পায় তার। চোখের পাতা মেলতেই পারে না। ঘুমের কোলে ঢলে পড়ে সে। কত কথা হয় ঘুমের সাথে ওর। মিতু বলে, তুমি এতোদিন আসোনি কেন? ঘুম বলে, আমি তো তুমি চাইলেই আসতে পারি। তোমার মনের ভেতরেই আমি থাকি। আমার বোনের নাম স্বপ্ন। সে তোমার কথা বলে আমায় চুপি চুপি। তারপর আমি তোমার কছে চলে আসি। স্বপ্ন? সে কোথায়? এই তো তোমার কাছেই। দেখতে পাচ্ছো না তুমি? মিতু এবার ঘুম আর স্বপ্নের সঙ্গে উড়ে উড়ে মেঘপরিদের দেশে যায়। তারপর! তারপর তো অনেক অনেক মজা। আরো অনেক মজা আছে। নিসর্গ ও কুনোব্যাঙ কী বন্ধু হতে পেরেছিল? মেঘের ভেলায় চড়ে সেদিন কে এসেছিল? পুষি টুসি দুবোন কাশবনে কী শুধুই মজা করছিল? কু ঝু কেমন করে লোভী সাপকে শিক্ষা দিল? সন্টিমন্টি কীভাবে ভিনদেশি একটি দোয়েল পাখির বন্ধু হলো? কবুতর ছানা পারি কীভাবে বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসা পেল? আর ভূতের রেলগাড়ি! খুব ভয়ের ব্যপার! গা ছমছম করবে! ছোট্ট বন্ধুরা, সবকিছু জানতে হলে তো মজার মজার গল্পগুলো পড়তে হবে!
ঘুমের যদি হতো ছুটি - Ghumer Zodi Hoto Chuti
আমার এই গল্পে বাংলাদেশকে চেনার সুযোগ থাকবে পাঠকের। পরিজন ছাড়া যেমন পরিবার হয় না। অধিবাসী ছাড়া তেমন দেশ হয় না। আমার ছোটগল্পগুলো জীবনকে বোঝার গল্প। সমগ্র জীবন আমরা ছুটে বেড়াই প্রাপ্তির আশায়। ভাঙাগড়ার এই খেলায় মানুষ সবসময়ই হারে। এই হারার অনুভূতি কখনো মানব-মানবীর কাছে হার হয়ে ধরা দেয়, কখনো জয় হয়ে। বইটির নাম দিতে চেয়েছিলাম সমগ্র বাংলা। পরে ভাবলাম বইটি পড়ে পাঠকই বুঝে নিক এই গল্পের নামের সার্থকতা।
—রিয়াদুল হক
দার্জিলিং কনফেশন
শাশ্বত নিপ্পন। জন্ম: মেহেরপুর, মে ১৮, ১৯৭০। পেশা: শিক্ষকতা ও সাংবাদিকতা। এবং সংস্কৃতিকর্মী ও নাট্যকর্মী। তার আরো দুটি প্রকাশিত গ্রন্থ রয়েছেÑ অনতিক্রম (২০১৩), পুনরুত্থান (২০১৪)।
অশনির ছন্দ
আমাকে শেখায় নিরক্ষর হাওয়া, আলাভোলা স্রোত
ছাতিম ফুলের ঘ্রাণে নারীগন্ধ চিনি
অনেক পিছিয়ে পড়ে নরম মাটিতে দেখি
খরগোশ রেখে গেছে পায়ের অস্পষ্ট ছাপ, আমার বাংলায়
কার ভিটে পড়ে আছে গ্রামের দক্ষিণে?
কিছুদূরে হা-করা মুখের নদী, কখনো সে অজগর
কখনো বা ঋতুমতী বউয়ের আদর
নিষাদের ডালপালা
Get access to your Orders, Wishlist and Recommendations.
There are no reviews yet.